• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সরকারি দুই দপ্তরের সমন্বয়হীনতার কারণে পাকা সড়ক নদীর পেটে 

  ০৭ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:১৯
সরকারি দুই দপ্তরের সমন্বয়হীনতার কারণে পাকা সড়ক নদীর পেটে 

টাঙ্গাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও এলজিইডির সমন্বয়হীনতার কারণে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার বৈরান নদীর পেটে যাচ্ছে বন্দহাদিরা গ্রামের এক কিলোমিটার পাকা সড়ক। এ দুই দপ্তরের সমন্বয়হীনতার একদিকে যেমন রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় হচ্ছে অন্যদিকে যানচলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

সরজমিনে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) টাঙ্গাইলের উত্তরে বৈরান নদী খনন করছে। প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন ফেজে ধনবাড়ি উপজেলার মুশুদ্দী থেকে গোপালপুর উপজেলার হাটবৈরান পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার খনন শেষ করে গত জুনে। চলতি অর্থবছরে ভাটিতে আরও ১০ কিলোমিটার খনন শুরু হচ্ছে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও এলজিইডির সমন্বয়হীনতার কারণে গোপালপুর উপজেলার বৈরান নদীর পেটে যাচ্ছে বন্দহাদিরা গ্রামের এক কিলোমিটার পাকা সড়ক। ইতোমধ্যেই সড়কের এক কিলোমিটার নদী গর্ভে চলে গেছে। বন্ধ হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। হুমকিতে পড়েছে বহু স্থাপনা।

বন্দহাদিরা গ্রামের ব্যবসায়ী আজাহার আলী অভিযোগ করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার গোয়ালবাড়ি ঘাট ব্রিজের উত্তরে এক প্রভাবশালীর জবরদখল করা জমি রক্ষার জন্য পূর্ব দিকে ধনুকের মতো বাঁকিয়ে নদী খনন সম্পন্ন করেন। আর এতেই পাকা সড়ক ভেঙে নদীতে চলে যাচ্ছে। দ্রুত এর ব্যবস্থা না নিলে অনেক স্থাপনা নদীতে চলে যাবে।

হাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোজাম্মেল হোসেন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফিল্ড অফিসার এবং ঠিকাদারের প্রতিনিধিকে বলেও নদীর স্বাভাবিক প্রবাহের চ্যানেলে খনন করানো যায়নি। ফলে বর্ষাকালে নদীর স্রোত এখানে বাঁক খেয়ে ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি করে। এতে নদীতীর ও এলজিইডির পাকা রাস্তায় ভাঙন দেখা দেয়। এক কিলোমিটার পাকা রাস্তা ইতোমধ্যে নদীগর্ভে চলে গেছে।

তিনি আরও বলেন, নগদাশিমলা বাজার থেকে হাদিরা হয়ে ধনবাড়ি উপজেলা সদরে সরাসরি যানচলাচল বন্ধ দুই মাস ধরে। শুষ্ক মৌসুমে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে বন্দহাদিরা গ্রামের অনেক বাড়িঘর আসছে বর্ষায় নদীগর্ভে চলে যাবে।

গোপালপুর উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং হাদিরা গ্রামের বাসিন্দা মো. গোলাম ফারুখ বলেন, অপরিকল্পিত খননে সড়কের অংশবিশেষ নদীগর্ভে চলে গেছে। এতে এলাকাবাসীর নিদারুণ ভোগান্তি হচ্ছে।

হাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কাদের তালুকদার জানান, নদী ভাঙন রোধের কাজ কে করবে তা নিয়ে দুই সরকারি সংস্থার মধ্যে মতভেদ দেখা দিয়েছে। যার কারণেই আজও এ সমস্যা।

এলজিইডির প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ জানান, খননকাজে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদারের খামখেয়ালির কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় অর্ধ-কোটি টাকা ব্যয়ে এলজিইডি নগদাশিমলা-হাদিরাবাজার রাস্তা সংস্কারে হাত দিয়েছে। কিন্তু বন্দহাদিরা এলাকায় নদী ভাঙনের কারণে সড়ক সংস্কারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, ঝড় গেলে-তো আর আম পাওয়া যায় না। নদী খনন এনলাইনমেন অনুযায়ী না হয়ে থাকলে এলজিইডি তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারতো। কিন্তু তারা সেটা জানায়নি। এখন এলজিইডিকেই রিটেইনিং ওয়াল করে নদীর ওই স্থানের ভাঙন রোধ করতে হবে।

জিএম/এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh