নারায়ণগঞ্জে চার ধর্মের সমাধিস্থল পাশাপাশি (ভিডিও)
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার মাসদাইর গোরস্থান এলাকায় পাশাপাশি রয়েছে চার ধর্মের সমাধিস্থল। মুসলিম ও খ্রিস্টানদের কবরস্থান, হিন্দুদের শ্মশান আর বৌদ্ধদের শেষকৃত্য হয় এখানে। ধর্মীয় নেতাদের মতে যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নিদর্শন। আর স্থানীয়রা বলছেন এমনটা সারা বিশ্বে বিরল।
বেঁচে থাকতে ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম আলাদা আচার-রীতি পালন করলেও মৃত্যুর পর এক মহামিলনের সঙ্গী হওয়ার নিদর্শন রয়েছে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার মাসদাইর গোরস্থান এলাকায়। মাঝে কোনো স্থাপনা ছাড়াই চার ধর্মের শেষ ঠিকানা এখানে পাশাপাশি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হরকান্ত ব্যানার্জী নামের এক জমিদারের ছেলে তার বাবার মরদেহ অন্য জেলায় শেষকৃত্যের জন্য আসা-যাওয়া করতে ভোগান্তিতে পড়েন। অন্য কেউ যেন এমন ভোগান্তিতে না পড়েন সে কারণে সব ধর্মের শেষ ঠিকানার জন্য জায়গা দান করে যান তিনি। বহু বছর ধরে পাশাপাশি এমন মহামিলন থাকলেও কোন রকম সমস্যা হয়নি বলে জানান ধর্মীয় নেতারা।
ডিআইটি জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, কোরআন এবং হাদিসে যে নীতিমালা দিয়ে গেছেন, তারা যতক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের ওপরে হস্তক্ষেপ করবে না। ততোক্ষণ পর্যন্ত তাদের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্ব মুসলমানদের।
নারায়ণগঞ্জ মহাশ্মশান এর সহ-সভাপতি শংকর সাহা বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি কখনো এখানে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে না। উঠলে এখানকার স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায় প্রশ্রয় দেয় না।
নারায়ণগঞ্জ জেলা খ্রিস্টান এসোসিয়েশন এর প্রেসিডেন্ট পিন্টু পলিকাপ পিউরিফিকেশন বলেন, কেউ বলতে পারবে না এখানে মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধদের মাঝে ভাগ আছে।
চার ধর্মের এই সমাধিস্থল সবার জন্য গৌরবের ও ঐতিহ্যের বলে জনান নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র আফসানা আফরোজ বিভা। তিনি আরও জানান, এর দেখভাল সিটি করপোরেশন করছে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ আফসানা আফরোজ বিভা বলেন, বিশ্বের কোথাও চারটি ধর্মের লোকের একসাথে সমাধিস্থল নেই। সেই জন্য আমরা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে দাবি করছি যাতে এটি গিনেস বুকে নাম লেখানো হয়।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ চিত্র আরও উজ্জ্বল করবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি এমনটাই মনে করেন সচেতন মহল।
জিএম/পি
মন্তব্য করুন