• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সংসদ ভবনের লেকে ভাসবে গয়না নৌকা

  ০২ নভেম্বর ২০২০, ২১:৪৭
coronavirus, sujon,
গয়না নৌকা

জাতীয় সংসদ ভবনের লেকে গয়না নৌকা ভাসতে যাচ্ছে। প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৭ ফুট লম্বা এবং ৫ ফুট চওড়া আয়তনের দুটি নৌকা ভাসবে। আগামী বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) নৌকা দুটি ভাসাবে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সংসদ ভবনের লেকে ভাসমান নৌকায় চড়তে কোনো টাকা লাগবে না, তবে তা সাধারণ মানুষের জন্য নয়, ভিআইপি ও বিদেশি পর্যটকরা কোনো টাকা খরচ না করেই ভ্রমণ করবেন সংসদ ভবনের লেক।

জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতীয় সংসদ ভবনের লেকে নৌকা দুটি ভাসানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। সংসদ ভবনের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে গয়না নৌকার কৃষ্টি-কালচার ও ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরতে নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের মাঝারি আকৃতির এই নৌকা এক সময় হাওড় অঞ্চলে মূলত যাত্রী পারাপারের কাজেই ব্যবহার করা হতো। একসঙ্গে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন পর্যন্ত যাত্রী বহন করার ক্ষমতা রয়েছে এই নৌকার। তবে রাজশাহী অঞ্চলে গয়না নৌকা বেশ বড় আকারে তৈরি করা হয়। আকারে যেমন বড় তেমনি এই নৌকায় বেশি সংখ্যক যাত্রীও উঠতে পারতো। বর্তমানে এই ধারার নৌকা বিলুপ্তির পথে। তবে জাতীয় সংসদ ভবনে গয়না নৌকা আগামী ৫ নভেম্বর থেকে দেখতে পাবেন দর্শনার্থী ও ভ্রমণ পিপাসুরা।

এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার আরটিভি নিউজকে বলেন, সংসদ ভবনের লেকে নৌকা ভাসাতে হবে কেন? নৌকা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। কিন্তু নৌকা দেখাতে এতো খরচ করতে হবে কেন? যারা নৌকা দেখেনি তারা কী মঙ্গলগ্রহ থেকে এসেছে? এছাড়া নৌকা একটি দলেরও প্রতীক। জাতীয় সংসদ ভবনের লেকে নৌকা ভাসানোর বিষয়টি হচ্ছে, দলবাজির প্রতিফলন। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে খুশি করানো এবং বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তা নিজের স্বার্থসিদ্ধি করার জন্য সংসদ ভবনের লেকে নৌকা ভাসাচ্ছেন। এটি দুর্ভাগ্যজনক।

তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে মানুষ কষ্টে আছেন। আমাদের দেশের মানুষেরও আর্থিক টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে। এরমধ্যেই সংসদ ভবনের লেকে নৌকা ভাসানোর জন্য ৪০ লাখ টাকা ব্যয় করতে হবে। এভাবে আমাদের অর্থ অপচয় করা মোটেও ঠিক নয়। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে বাংলাদেশের ঐতিহ্য অনেকেভাবেই তুলে ধরা যায়।

পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ ও বিপণন) মো. জিয়াউল হক হাওলাদার আরটিভি নিউজকে বলেন, নৌকা দুটি আগামী ৫ নভেম্বর উদ্বোধন করা হবে। নৌকা দুটি দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরবে। একই সঙ্গে বিদেশি পর্যটকরা ইচ্ছে করলে নৌকায় পড়ে জাতীয় সংসদ ভবনের লেক ঘুরতে পারবেন। অনেক বিদেশি পর্যটক ও দেশের নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা গয়না নৌকা দেখেনি। তারা সহজেই যেন গয়না নৌকা দেখতে পায়, সেজন্য সংসদ ভবনের লেকে গয়না নৌকা ভাসানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তবে বাংলাদেশ নদী মাতৃক দেশ হলেও দিনদিন যেমন নদীর সংখ্যা কমেছে, তেমনি কমেছে নৌকার সংখ্যাও। দেশের ১৭৯ রকমের নৌকার মধ্যে মাত্র ৬০ থেকে ৭০ রকমের নৌকা এখন নদীতে দেখা যায়। সেজন্য নতুন প্রজন্মের কথা চিন্তা করে জাতীয় জাদুঘরের ১২ নম্বর গ্যালারিটি সাজানো হয়েছে ৬০টি রকমের নৌকার মডেল দিয়ে। পানসী, সাম্পান, রপ্তদী, লক্ষ্মীবিলাস, বজরা, বাছারি, সুড়ঙ্গা, এক মালাইয়া, বালাসী নৌকা, পঞ্চবটি, জং, দোসাল্লাই, পাকালিয়া নৌকা, পাতাং, ঘাসী, গয়না, সথুরা গড়, পাতিলা, পলারী, বিলাসী নৌকা, বেলাল, করপাইয়া বাচারি, বিল্পী, লাকালিয়া, তালের নাও কোন্দা, লম্ব-পদি, নায়রি, ফেটি, বালার, বানকি, গোঘী, জাইলা ডিঙি, পিনাশ, রপতানি বা পালটাই, কেরায়া ইত্যাদি নৌকার মডেল। ছোট বা বড় সব ধরনের নৌকারই বিভিন্ন অংশের আলাদা আলাদা নাম রয়েছে।

এফএ/ এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
টিপু-প্রীতি হত্যা: অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ ২৯ এপ্রিল
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল আওয়ামী লীগ নেতার
জনগণের জানমাল রক্ষার্থে বিএনপির সমাবেশের দিনে কর্মসূচি দিই: কাদের
ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় শাহবাগ থানায় জিডি
X
Fresh