নদী ভাঙনে প্রতি বছর দেড় লাখ মানুষ গৃহহীন হয় (ভিডিও)
প্রাথমিক হিসাবে এ বছর বন্যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। দেশে নদী ভাঙনে প্রতি বছর গড়ে দেড় লাখ মানুষ গৃহহীন হয়, ক্ষতিগ্রস্ত হন কমবেশি ১০ লাখ মানুষ। নদী বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত বলেন, সঠিক পরিকল্পনার অভাবেই নদী ভাঙন কমানো যাচ্ছে না। পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম জানান, সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সরকার।
নদী ভাঙনের ভয়াবহতা যে কতটা বিধ্বংসী হতে পারে তা না দেখলে বোঝা যায় না। মাদারীপুরের শীবচরের বন্দরখোলা ইউনিয়নের মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের বহুতল ভবনটি চোখের নিমিষেই পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়।
চলতি বছর প্রথম নয় মাসে কেবল শরীয়তপুরের নড়িয়াতেই সাড়ে চারশো ছোট বড় স্থাপনা নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের হিসাবে চলতি বছর চার দফা বন্যায় সারাদেশে ৩৩৪ উপজেলার ৬৬ শতাংশ বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এর মধ্যে ৫৪টি ইউনিয়নের ২ থেকে ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। চোখের পলকে জমি, ঘর সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন হাজারো মানুষ।
ব্লক যদি না দেয় এই বালু তো দুরের কথা এই এলাকার দুই পারের কিছুই থাকবে না। আমাদের গ্রামটা রক্ষা করলে আমরা বেঁচে যেতাম। স্কুল-মাদরাসা, হাট-বাজার সব নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে।
প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করেও কেন ভাঙন রোধ করা যায় না, সে প্রশ্ন ভুক্তভোগীদের।
দীর্ঘ দিন নদীর গতি প্রকৃতি নিয়ে কাজ করছেন ড. আইনুন নিশাত। তিনি বলেন, নদী চলবে তার নিজস্ব গতিতে। তবে মানুষের ক্ষতি করে, এমন নদীর গতি পথ পাল্টে দেয়া কিংবা শাসন করা যেতে পারে। আমাদের কতগুলা গথবাধা ডিজাইন আছে। তারপর নির্মাণ কাজও সঠিক নয়।
তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত লজ্জার সাথে বলছি যে যারা এ নদী ভাঙন রোধের পরিকল্পনা করে তাদের নদী সম্পর্কে জানা বোঝার প্রচুর অভাব আছে।
নদী শাসনকে কঠিন কাজ বলে স্বীকার করেন পানি সম্পদ উপমন্ত্রী। তিনি জানান, সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী সমাধানের পথে হাঁটছে সরকার। তিনি বলেন, আগাম প্রস্তুতি রেখেছিলাম বলে তিনবার বন্যা হয়ে ভেঙেছে, কিন্তু পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কেউ কাজ করেনি বা যায়নি এ ধরণের রিপোর্ট আপনারাও প্রকাশ করেননি। যে অঞ্চল ঝুঁকিপূর্ণ আছে সবগুলোতেই আমরা পর্যায়ক্রমিকভাবে প্রকল্প নিচ্ছি এবং দ্রুততার সাথে, স্বচ্ছতার সাথে যেন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখছি।
২০০৫ সালে নদী রক্ষা দিবসে সমর্থন দেয় জাতিসংঘ। এরপর ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ নদী দিবস পালন করছে।
---------------------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : নারীকে সহজ টার্গেট মনে করে অপরাধীরা (ভিডিও)
---------------------------------------------------------------------
আর/এমকে
মন্তব্য করুন