অনলাইনে বেড়েছে কেনাকাটা, সঙ্গে প্রতারণা আর ভোগান্তিও (ভিডিও)
দেশে অনলাইন ব্যবসার বাজার আট হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ভার্চুয়াল কেনাকাটায় সাধারণের আগ্রহের সাথে বেড়েছে ভোগান্তি আর প্রতারণার ঘটনা। ক্রেতাদের অভিযোগ, নকল পণ্য, নিম্ন মান, সঠিক সময়ে না পাওয়া, আর টাকা খোয়া যাওয়া নিয়ে। কিছু অভিযোগ স্বীকার করে বিক্রেতারা বলেন, বড় অনিয়মে ব্যবস্থা নেয়া হয়। এ খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী ভোক্তাদের।
ঘরে বসেই এখন পাওয়া যায় দেশী বিদেশী পোশাক, গহনা, ইলেকট্রনিক পণ্য, কসমেটিক্স থেকে প্রতিদিনের বাজার সদাই পর্যন্ত। অনলাইন ব্যবসার প্রসারের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। ই ক্যাবের তথ্যমতে দেশে প্রায় ১২শ’ প্রতিষ্ঠান অনলাইন ব্যবসা করছে। বার্ষিক লেনদেন প্রায় আট হাজার কোটি টাকা।
ভার্চুয়াল কেনাকাটা জীবনকে সহজ করলেও কিছু সমস্যা বয়ে এনেছে। ভুক্তভোগীদের প্রধান অভিযোগ পণ্যের মাণ আর সময় মতো ডেলিভারি না পাওয়া নিয়ে।
তারা বলেন, ছবি দেখে কিংবা ভিডিও দেখে আমরা একটা প্রডাক্ট অর্ডার করি অনলাইন থেকে। কিন্তু যেটা দেখে অর্ডার করেছি হাতে পাওয়ার পরে দেখেছি আরেকটা প্রডাক্ট দিয়ে দিছে বা অন্য রঙ্গের দিয়ে দিছে।
অগ্রিম টাকা দিয়ে পণ্য না পাওয়া এমনকি টাকা নিয়ে ক্রেতাকে ব্লক করার ঘটনাও ঘটেছে।
এমন এক ভুক্তভোগী বলেন, আমি একটা পেজ থেকে পাকিস্তানি ড্রেস অর্ডার করি। তারা আমাকে পাকিস্তানি ড্রেসের নাম করে খুবই খারাপ মানে একটা ড্রেস দিয়েছিল। পরে আমি তাদের সাথে যোগাযোগ করি, তাদের বলি আমি আপনাদের ড্রেস ফেরত দিতে চাই এবং কুরিয়ার চার্জও দিয়ে দিতে চাই। কিন্তু তারা এইটা ফেরত নিবে না।
এমন আরেক ভুক্তভোগী বলেন, আমি একটা শাড়ি অর্ডার করেছিলাম হাতে পাওয়ার পরে দেখি এটা একটা গজ কাপড়।
ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে লাইভে যে পণ্য দেখানো হয়, অনেক সময়ই বাস্তবে তার মিল পাওয়া যায় না।
আরেক জন বলেন, নকল প্রসাধনীর সরবরাহর একটা প্রবণতা দেখা যায়। এটার সবচেয়ে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় আমাদের, কারণ এতে শরীরের অনেক ক্ষতি হয়ে থাকে। অনেক রোগ হয়ে থাকে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনলাইন কেনাকাটার অভিজ্ঞতা জানতে চাওয়া হলে ক্রেতারা বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করেন। এরমধ্যে, স্টাইল মার্ট, প্রিয় শপ.কম, মীর বাজার, ফ্যাশন এক্স, কায়রা, ব্লুমিং ব্যাড, দারাজ, রেহম্যান কালেকশান, ইলুইন, সাবু শপ, ইন্ডিয়ান ফ্যাশন ডিজানাইর এর নাম রয়েছে। অভিযোগের ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে যোগাযোগ করেও কোন জবাব পাওয়া যায়নি।
তবে ছবি আর সরবরাহ করা পণ্যের মধ্যে তারতম্যের কথা স্বীকার করেন কিছু ব্যবসায়ী।
'ঘুড়ি' ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফাইজুন্নুর আখন্দ রাসেল বলেন, মোবাইলের স্ক্রিনে ছয় থেকে সাতটা অ্যাপস থাকলে খুব হিজিবিজি লাগবে। আমাদের ঘুড়ি অ্যাপসটা ব্যবহার করলে আপনি ছয়টা অ্যাপ এর কাজ করতে পারলেন। আমাদের অ্যাপ এর মাধ্যমে গ্রাহক প্রতারিত হওয়া কোনও সুযোগ নেই। কারণ আমরা কোনও কাস্টমসর এর কাছ থেকে টাকা অগ্রিম নিচ্ছি না।
দোকান অনলাইনের স্বত্বাধিকারী মীর সাবের হোসেন বলেন, আমাদের বেশির ভাগ প্রডাক্ট ভারত থেকে আসে। মাঝে মাঝে কিছু সমস্যা হয়। সেগুলো খুব দ্রুতই আমরা সমাধানের চেষ্টা করি।
অনলাইনে পণ্য কেনাকাটার অনিয়ম বন্ধে অভিযোগ কেন্দ্র গঠন ও তড়িৎ ব্যবস্থা নিতে সেল গঠনের দাবী ভুক্তভোগীদের।
এসএ/এসএস
মন্তব্য করুন