টিকটক-লাইকিতে খ্যাতি পেতে অপরাধে জড়াচ্ছে 'কিশোর গ্যাং' (ভিডিও)
কম সময়ে খ্যাতির তকমা লাগাতে টিকটক লাইকিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভোর কিশোরদের একটি অংশ। খারাপ কনটেন্ট বানিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ চেষ্টা করছে অনেকে। ইন্টারনেটে শিক্ষণীয় দিকগুলোতে মন না দিয়ে অপসংস্কৃতিরচর্চা উঠতি বয়সীদের বিপথে নিচ্ছে বলে মত সমাজবিজ্ঞানীদের।
খ্যাতি পাওয়ার চেষ্টায় এক শিশুর গলায় দা ঠেকিয়ে মাদক সেবন করিয়ে ভিডিও ধারণ করেন সুনামগঞ্জের তাহেরপুরের একদল কিশোর। ওই কিশোররা তা ছড়িয়ে দেয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটক, লাইকি ও ইউটিউবে। সস্তা জনপ্রিয়তা পাবার আশায় শিশুটিকে নিয়ে আরও বেশ কয়েকটি ভিডিও ধারণ করা হয়। সম্প্রতি এ ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় গ্রেপ্তার হয় কিশোর গ্যাং এর মনির, সাগর, রনিসহ আট জন।
জনপ্রিয়তা পাবার আশায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, টিকটক লাইকিতে জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করছে কিশোরদের একটি অংশ। অনেক সময় দশ থেকে পনের জনের গ্রুপ হয়ে এলাকায় হর্ন বাজিয়ে দ্রুত বেগে বাইক চালানো ও রাস্তা আটকিয়ে ভিডিও ধারণ করছে বখাটেরা। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারামারিতেও জড়াচ্ছে তারা। রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ শহরগুলোতে ছোট ছোট গ্রুপ হয়ে এমন উচ্ছৃঙ্খলতায় মেতে উঠছে উঠতি বয়সীর অনেকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক জিয়া রহমান আরটিভি নিউজকে বললেন, আমাদের যুবরা বিশ্বর বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের অশিক্ষণীয় নানা ভিডিও দেখছে এবং তারা এই ভিডিওগুলো দেখে দেখে নিজের মত করে অশিক্ষণীয় এই ভিডিও তৈরি করছে। এতে করে, মাদকাসক্ত হচ্ছে যুবকরা, এছাড়া নারীদেরকেও নানাভাবে উত্যক্ত করা হচ্ছে। সবকিছু মিলে আমরা দেখছি এক ধরনের ভয়ংকর পরিস্থিতিতে যাচ্ছে কিশোর ও যুবসমাজ।
তিনি বলেন, আকাশ সংস্কৃতির নেতিবাচক কনটেন্টগুলো থেকে উঠতি বয়সীদের দৃষ্টি ফেরাতে নেই কোনও উদ্যোগ। ফলে তাদের বিচরণ বাস্তবতার চেয়ে ভার্চুয়াল জগতেই বেশি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক তৌহিদুল হক আরটিভি নিউজকে বলেন, যেসব তরুণীরা হতাশাগ্রস্ত, একাকীত্বে ভুগছে কিংবা পারিবারিক নানা সমস্যায় আছে এবং অতি অল্প সময়ের মধ্যে স্টার হতে চায় যেকোনো উপায়ে। তারাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করে অনাকাঙ্ক্ষিত এই ধরনের ভিডিও তৈরি করছে।
সামাজিক শিষ্টাচার, নীতি নৈতিকতা ও মূল্যবোধ তরুণদের মাঝে জাগ্রত করতে পরিবার ও সমাজসহ সবার সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মত এই সমাজবিজ্ঞানীর।
এসএ/এসএস
মন্তব্য করুন