• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

নিরীহ মানুষগুলোকে কেন হত্যা করল প্রদীপ জানে না কেউ (ভিডিও)

টেকনাফ প্রতিনিধি, শাহিন শাহ, আরটিভি নিউজ

  ১০ আগস্ট ২০২০, ১৩:৪৩
No one knows why Pradeep killed innocent people
সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার ও সঙ্গীরা

ইয়াবা ডনদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করে চুনোপুটিদের ক্রসফায়ারে দিতেন টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার। নিজের স্বার্থের জন্য মানুষকে ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায় করা ছিল তাঁর নেশা। যার কারণেই টেকনাফে মাদক ব্যবসায় না কমে বেড়েছে কয়েক গুণ।
২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে টেকনাফ থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পরই ইয়াবাকারবারীদের নির্মূলের ঘোষণা দেন প্রদীপ। শুরু হয় ক্রসফায়ার নামক মৃত্যু খেলা। স্থানীয়রা বলছেন, তাঁর আমলে ক্রসফায়ারে নিহত ১৬১ জনের মধ্যে শীর্ষ ইয়াবাকারবারী ছিল হাতেগোনা কয়েকজন, কিছু ছিল চুনোপুটি বাকিরা সবাই নিরীহ।
ভুক্তভোগী একজন বলেন, ২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর কক্সবাজারে ক্রসফায়ারের নিরাপদ জোন মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ বাহারছড়ার নোয়াখালীয়াপাড়া সৈকত এলাকা থেকে আমার ভাই হানিফের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আমি আজও জানি না ঠিক কী কারণে মারা হলো আমার ভাইকে। এসব কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন হানিফের বোন মিনারা বেগম। তিনি আরও বলেন, আমার ভাইয়ের হত্যাকারীর বিচার চাই আমি।
আনোয়ার হোসেনের (২২) স্ত্রী নাহিদা বলেন, ২৭ জুলাই আমার বাবার বাড়ি খারাংখালীতে আমার স্বামী বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরেন লাশ হয়ে। কোন কারণে আমার স্বামীকে মারা হয়েছে? তা আমি আজও জানি না। আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে ওকে হারিয়ে। এখন আমি কী করব, আমি এর বিচার চাই।
খারাংখালী মহেশখালীয়াপাড়ার সিএনজিচালক আব্দুল জলিলের স্ত্রী পুলিশকে পাঁচ লাখ টাকা দিয়েও বাঁচাতে পারেনি স্বামীকে। আব্দুল জলিলের স্ত্রী বলেন, ওসি বলেছিলেন তোমার স্বামীকে ছাড়তে পাঁচ লাখ টাকা লাগবে। আমি তাকে বলি পাঁচ লাখ টাকা আমি কই পাব। আমার কাছে পাঁচ টাকাও নেই।
কন্জরপাড়ার শাহাবউদ্দিনের ভাগ্যেও জুটেছিল ক্রসফায়ার। তার মায়ের অভিযোগ পাঁচ লাখ টাকা দিতে না পারায় বুকের ধনকে কেড়ে নিয়েছে পুলিশ।
টেকনাফ পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের শেষ নেই।
স্থানীয় এক শিক্ষক বলেন, তিনি চারবার বরখাস্ত হওয়া একজন চিহ্নিত পুলিশ কর্মকর্তা। তার হাতে বিনা বিচারে মানুষ মারার দায়িত্ব কিভাবে দেয়া হয়? তাকে প্রধানমন্ত্রীর কাছ পর্যন্ত কে নিয়ে গেল? পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কি কিছুই দেখেন না? আমাদের গোয়েন্দা বিভাগ কি এতোই দুর্বল?
৩১ জুলাই অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ওসি প্রদীপের রাজত্বের ছন্দপতন ঘটলেও ক্রসফায়ার বা বিচার বহির্ভূত হত্যার শেষ কবে, জানতে চায় টেকনাফবাসী।
এসএ/সি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh