• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ওসি প্রদীপের অন্ধকার জগত

সাবেক ওসি প্রদীপের নজর ছিল ব্যবসায়ীদের টাকার দিকেই! 

শাহীন শাহ, টেকনাফ, আরটিভি নিউজ

  ০৮ আগস্ট ২০২০, ১৩:৪৩
ওসি প্রদীপের নজর ছিল ব্যবসায়ীদের টাকার দিকেই! 
ওসি প্রদীপ কুমার দাস ।। ফাইল ছবি

ইয়াবা নির্মূলের নামে ক্রসফায়ার নামক বিচার বহির্ভূত মৃত্যু দানবকে পুঁজি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন টেকনাফের অঘোষিত রাজা সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাস। এমন বেপরোয়া আচরণে পার পেয়ে গেলেও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডের পর গ্যাঁড়াকলে পড়েন তিনি। ওসি প্রদীপের অন্ধকার জগতের ধারাবাহিক (প্রথম পর্ব) প্রতিবেদনে আজ থাকছে ব্যবসায়ী নির্যাতনের কথা।

‘যানবাহনের মাধ্যমে তারা ইয়াবা পাচার করে, এই সব যানবাহনকে একেবারে নির্মূল করতে হবে। ওই সব বাড়িতে গাইবি হামলা হবে, কোনও কোনও বাড়িতে গাইবি অগ্নিসংযোগ হবে।’ টেকনাফে ইয়াবা নির্মূলে সাবেক ওসির মুখে এই ধরনের কথার প্রদীপ জ্বললেও তার পেছনে ছিল ভয়ংকর রকমের অন্ধকার জগত। ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বাড়ি-ঘরে গায়েবি হামলার নামে প্রদীপ কুমার দাসের নজর ছিল ব্যবসায়ীদের টাকা পয়সার দিকে।

২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর, হোয়াইক্যং বাজার থেকে রাতের বেলা কোনও কারণ ছাড়া পুলিশ তুলে নিয়ে যায় ব্যবসায়ী আলমকে। প্রায় ১৭ দিন টেকনাফ থানায় আটকে রেখে ২৭ লাখ টাকা নেয়ার পর ইয়াবা ও অস্ত্র মামলা দিয়ে চালান করে দেয়া হয় আলমকে। ভিকটিম মো. আলম বলেন, আমার কাছে থেকে ২৭ লাখ টাকা নেয় এই প্রদীপ। টাকা নেয়ার কারণে আমার যা ব্যবসা ছিল সব নষ্ট হয়ে গেছে।

আরেক ভিকটিম হামজালা মেম্বার। তার বাবা খলিলুর রহমান বলেন, এক বছর আগের কথা। বাড়ি থেকে আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে থানায় আটকে রেখে ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে ইয়াবা মামলায় চালান দেয় ওসি প্রদীপ।

মো. ইউনুছ বলেন, শুধু ব্যবসায়ী আলম বা হামজালাই নয়, তার ভাই জুবায়ের ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মো. আজিমকে ধরে নিয়ে ১০ লাখ টাকা নিয়ে নেয় প্রদীপ। পরে আরও ১০ লাখ টাকা চাইলে অপারগতা প্রকাশ করায় ঈদের পরে কোর্টে চালান দিয়ে দেয়া হয়।

অভিযোগ এখানেই শেষ নয়। ২০১৯ এর শুরুর দিকে ব্যবসায়ী এজাহার মিয়াকে তুলে নিয়ে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে ইয়াবার মামলা দেয়া হয়। টেকনাফে ২২ মাস চাকরিকালীন শত শত ইয়াবা ব্যবসায়ী ও সাধারণ ব্যবসায়ীকে এভাবেই হয়রানি করতেন সাবেক এই ওসি। এছাড়া উদ্দেশ্যমূলকভাবে দেয়া হতো ক্রসফায়ার। একটি ক্রসফায়ারে তিনটি মামলা করে অর্ধশত লোকজনকে মামলায় ঠুকিয়ে দেয়ার অভিযোগ অহরহ রয়েছে সাবেক এই ওসির বিরুদ্ধে।

টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর বলেন, যারা সাধারণ ব্যবসায়ী, তাদের উপরেই চোখ ছিল এই ওসির। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া। এভাবে মানুষকে নিঃস্ব করে দিয়েছেন এই ওসি।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক আরটিভিকে বলেন, এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। কেউ সুনির্দিষ্ট করে অভিযোগ দায়ের করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসএ/সি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh