সব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের আজকের মধ্যে অপসারণের আহ্বান
দেশের সব মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সকল কমিশনের প্রধানকে আজকের মধ্যে অপসারণের আহ্বান জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী হাসনাত আবদুল্লাহ।
তিনি এই দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে তার ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তার পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো:
‘দেশের সকল মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং সকল কমিশনের প্রধানকে আজকের মধ্যে অপসারণ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, আইন কমিশন সহ সকল কমিশনে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো বসে আছে। আজকের মধ্যেই সকল ফ্যাসিস্ট আমলাদের পদত্যাগ নিশ্চিত করতে হবে এবং সৎ, যোগ্য ও দেশপ্রেমিক আমলাদের নিয়োগ দিতে হবে।’
মন্তব্য করুন
৫০ জনের মধ্যে ৪৮ জনই আসেন তদবির নিয়ে: উপদেষ্টা আসিফ
প্রতিদিনই নিজের কাছে বিভিন্ন ধরনের তদবির আসে দাবি করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে এ কথা জানান তিনি। ওই পোস্টে আসিফ মাহমুদ জানান, প্রতিদিন তার সঙ্গে ৫০ জন দেখা করতে এলে তাদের ৪৮ জনই আসেন বিভিন্ন ধরনের তদবির নিয়ে।
এ উপদেষ্টা লিখেন, ‘দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই বলেছিলাম, ব্যক্তিগত তদবির-আবদার নিয়ে কেউ আসবেন না। এখনো প্রতিদিন যদি ৫০ জন দেখা করতে আসেন, তার মধ্যে ৪৮ জনই আসেন নানারকম তদবির নিয়ে। আমাদেরও নতুন বাংলাদেশের উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়তে হবে। ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে গিয়ে দেশের স্বার্থে ত্যাগের মানসিকতা, কাজ করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে শহীদদের স্পিরিটকে ধারণ করে।’
ওই পোস্টে তিনি আরও লিখেন, ‘দেশ পুনর্গঠন ও রাষ্ট্র সংস্কারে আপনার প্রস্তাবনা, কেমন বাংলাদেশ চান, তা জানান। সংস্কারের কমিশনগুলোকে সহযোগিতা করুন। আমরা যে যেই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি, সেখানে কীভাবে ইতিবাচক সংস্কার করা যায়, সে পরামর্শ দিন।’
আরটিভি/এসএইচএম
দেশ ছাড়ার গুঞ্জনে যা বললেন আসিফ নজরুল
আগে বেশ সরব থাকলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্বে আসার পর কর্মব্যস্ততায় বেশ কিছুদিন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সামনে আসেননি অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। আর এ সুযোগে গুজব ছড়িয়ে পড়ে স্ত্রী ও তিন সন্তানসহ সহসাই যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাচ্ছেন তিনি। গুজবের এই ডালপালা যাতে আর না ছড়াতে পারে সেজন্য সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ফেসবুক লাইভে আসেন উপদেষ্টা। কথা বলেন গুঞ্জনসহ নানা ইস্যু নিয়ে।
আসিফ নজরুল বলেন, আমি কেন মিডিয়াতে অনুপস্থিত, এ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের জল্পনা-কল্পনা হচ্ছে। কেউ কেউ আজগুবি কথাও বলছেন, আমি নাকি বিদেশে চলে যাচ্ছি। সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা এমনকি চিন্তাও আমার মাথায় নেই। আমি মনে করি, এ ধরনের তথ্য, গুজব, গুঞ্জন বা আজগুবি তথ্য যারা ছড়াচ্ছেন, তারা জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, সেটাকে বিতর্কিত করতে অসৎ উদ্দেশ্যে করছেন। এসব কথায় আপনারা কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।
তিনি বলেন, আমি কয়েক দিন আগেও পত্রিকাতে ইন্টারভিউ দিয়েছি। তবে এটা ঠিক আমি মিডিয়াতে কম আসি। আমার অনেক কাজ। আমার মনে হয়েছে আমার কার্যক্রমে যদি কোনো অগ্রগতি হয়, সেটা আমি আপনাদের জানাব। অহেতুক কেন মিডিয়ায় আসব? এখন তো আমি আর টক শোর মানুষ না। এখন আমাকে অনেক কাজ করতে হবে, কাজটাতে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আমার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয়ের দুই ক্ষেত্রেই কিছু অগ্রগতি হচ্ছে, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আপনাদের অগ্রগতিগুলো জানাব।
আসিফ নজরুল বলেন, যারা এ ধরনের গুজব, গুঞ্জন রটাচ্ছেন; তাদের কোনো ধরনের ইনভেস্টিগেশন ছাড়া এ ধরনের গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ করছি। না হলে মানুষ তো আপনাদের মিথ্যাবাদী ভাববে, আপনাদের কথা বিশ্বাস করবে না। এগুলো করা উচিত না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য, রাষ্ট্র সংস্কার করার জন্য বরং আপনারা আমাদের পজিটিভলি সাজেস্ট করবেন। ভুল হলে বলবেন। একদম সম্পূর্ণ আজগুবি, অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয় কোনো তথ্য দেওয়ার তো কোনো মানে হয় না। এটা এক ধরনের চরিত্র হননও। আমি আশা করি, আমার বক্তব্যের মাধ্যমে সব বিভ্রান্তির অবসান ঘটবে।
আরটিভি/আইএম
চাকরিতে নিয়োগে আবেদন ফি বাতিলের আহ্বান হাসনাতের
পিএসসির সংস্কার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে চাকরির পরীক্ষা ও নিয়োগ কার্যক্রম চালু এবং বেকারত্বের প্রেক্ষাপটে প্রহসনমূলক আবেদন ফি বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমি যেকোনো সময় আত্মহত্যা করতে পারি। ঠিক যতগুলো কারণে আমার বন্ধু মনজু গতকাল এসএম হলে আত্মহত্যা করেছে, আত্মহত্যা করার জন্য আমার কাছেও ঠিক ততোগুলো কারণ আছে।
উদ্যোম তারুণ্য-পেরোনো প্রান্তিক বয়সে এসে, সেন্ট্রাল লাইব্রেরির নির্জনতায় বসে মাঝে-মাঝে আমি ভাবি- আমি এখন পরিচয়হীন, পরিচর্যাহীন-বেকার। আমি না ছাত্র, না পেশাজীবী। না কারো দায়িত্ব নেওয়ার যোগ্যতা আমার এখন হয়েছে, না আমার দায়িত্ব নিতে সমাজের আর আগ্রহ আছে। অর্থাভাবে ভীষণভাবে জর্জরিত। আত্মবিশ্বাস ভয়াবহ তলানিতে। মানসিকভাবেও ভীষণ বিপর্যস্ত। কাটছাঁট করে এই দুর্মূল্যের বাজারে সত্তর টাকায় সারাদিন পার করতে হয়। ‘কড়া’ হয়েছে বলে ক্যান্টিন বয় যখন গরু দিতে চায়, টাকা বাঁচাতে শুষ্ক হাসি দিয়ে ডায়েটে থাকার অযুহাতে সবজি নিয়ে আসতে বলতে হয়। লজ্জাশরমের মাথা খেয়ে মাঝে মাঝে মাছ কিংবা মাংসের একটু ঝোলের জন্য ক্যান্টিন বয়কে বলতে গিয়েও থেমে যাই। ডিম-আলু-ডাল জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে। বর্তমান বাজারদরে এগুলোও এখন সাধ্যের বাইরে।’
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘অজানা এক লুপ্ত নক্ষত্রের মতো হারিয়ে যাওয়ার আগে, ভবিষ্যতের অপ্রত্যাশিত সব বিস্ময়ের মুখোমুখি হতে আমাদের স্বপ্ন ও আত্মবিশ্বাস-এ আমাদের সুস্থির থাকতে হবে। দীর্ঘ খড়া কাটিয়েও আবার যেমন প্রকৃতিতে বৃষ্টি নামে, শুকিয়ে যাওয়া নদীতেও আবার যেমন ঢেউ উঠে, আমরাও জানি, কষ্ট পেতে পেতে কোনো একদিন আবার আমরা সূর্যের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে সুস্মিত শিশিরের মতো সবার মাঝে আবারও প্রকাশিত হবো।স্বতেজে। তাই, সমাজের কাছে অনুরোধ- অপেক্ষা করুন। আমাদের সময় দিন। আমরা যা, আমাদের সেভাবেই মেনে নিন। কে কী হয়েছে- এসব উদাহরণ টেনে এনে, আমাদের কী হতে হবে- এসব বলা বন্ধ করুন। পাশাপাশি, আর কোনো হাসনাত যেন তেলহীন প্রদীপের মতো ধীরে ধীরে নিভে গিয়ে মনজু না হতে হয় সেজন্য দেখা হলেই ‘এখন কি করো’ প্রশ্নটা না করে, ‘এখন কেমন আছো?’-এ প্রশ্নটা করুন। একজন চাকরিপ্রার্থী ছাড়া অন্য কেউ কখনোই বুঝতে পারবে না যে, এই যন্ত্রণার মাত্রা কতটা অসহনীয়।’
তিনি বলেন, ‘খাবার খরচ, চাকরির অ্যাপ্লিকেশন ফি, পকেট খরচ, প্রিলি-রিটেনের বইয়ের দাম নিয়ে ভাবতে ভাবতে শরীর ঠাণ্ডা হয়ে আসে। রাত গভীর হয়,কাটাবন মসজিদের ফজরের আযান কানে আসে, মাস বাড়তে থাকে; এদিকে পাল্লা দিয়ে মুখে রুচি আর পেটে ক্ষুধা দুইটাই বাড়তে থাকে। শুনেছি অভাবে নাকি মানুষের ক্ষুধাও বাড়ে! যে-সব বন্ধুবান্ধব ম্যাট্রিকের পর পড়াশোনা না করে বিদেশে চলে গিয়েছে, তারা এখন প্রতিষ্ঠিত। ঘর-সংসার করে থীতু হচ্ছে। বাপ-মা'কে হজ্জে পাঠাচ্ছে। এলাকায় জায়গাজমি কিনে তেজারত বাড়াচ্ছে। মাঝে মাঝে ফোন উঠিয়ে তাঁদের কাছে টাকা-পয়সা চাওয়ার কথা মনে হয়। দুই-একবার ফোন হাতে নিয়েও রেখে দেই। আত্মমর্যাদার বায়বীয় চাদরে মোড়ানো লাজুকতা ভুলে গিয়ে যখন বন্ধুদের কাছে ফোন দিইও, অপরপ্রান্তের বন্ধু থেকে নিজের সম্পর্কে যে উচ্চ ধারণা পাই, তা শুনলে যে উদ্দেশ্যে ফোন দিয়েছি সে প্রসঙ্গ আর উঠাতে সাহস হয় না। সেসব বন্ধু-বান্ধব ধরেই নিয়েছে দেশ সেরা বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করে আমরা এখন অর্থ, বৈভব ও জাগতিক সম্মানে বিপুলভাবে পরিতৃপ্ত।’
হাসনাত বলেন, ‘পরিস্থিতি হয়েছে এমন, পকেটে নাই টাকা, কিন্তু চারদিক থেকে অস্বস্তিকর সম্মানের ছড়াছড়ি। আসলে ফাঁকা পকেটে সম্মান বেশি হয়ে গেলে সেটা বদহজম হয়ে যায়। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ বছর যেসব পড়িয়েছে, আর এখন চাকরির পরিক্ষায় আমাদের থেকে যা জানতে চাওয়া হচ্ছে- সেসবের মধ্যে আকাশ-পাতাল ব্যবধান।’
তিনি বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতিতে হতাশার মেঘ ক্রমশ ঘনীভূত হয়। একটার পর একটা শুক্রবার আসে, চাকরির পরীক্ষা আসে, শহরের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে সিট পাল্টায়, পকেটের এডমিট কার্ডটা পাল্টায়, কিন্তু এমসিকিউ-এর গোল্লার-বৃত্তে আটকে থাকা কপালটা আর কলমের খোঁচায় পাল্টায় না। কপাল কবে পাল্টাবে- সে প্রশ্নের উত্তরে আমার জীবন সন্ধানী মন এখন নিশ্চুপ। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তো বলার অপেক্ষা রাখে না। কখন কি হয়, কিছুই বলা যায় না। চলমান পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে ক্রমশ হতাশার নিশ্বাস ফেলতে হয়! পরিবার, সমাজ ও আশেপাশের মানুষের ‘এখন কি করো? আর কবে? আর কতদিন?’ প্রশ্নের উত্তর এড়াতে ঈদেও হলে থেকে যেতে হয়। পরিচিত মানুষের ফোন কল এড়িয়ে যেতে পারলে মনটা স্বস্তিতে ভরে উঠে।’
হাসনাত আরও বলেন, ‘নিজের কষ্ট, অসন্তোষ, রাগ কিংবা ভালোবাসা- আমরা কাউকে কিছুই এখন বলতে পারছি না, মুখ বুজে সমুদ্র গিলতে হচ্ছে! দিন যত যাচ্ছে পরিবার,সমাজ ও নিজের প্রত্যাশার পারদ ক্রমশ ক্ষীণ হচ্ছে। এতোদিন উড়তে থাকা আমি এবং আমার স্বপ্ন, এই সংকটে আটকে পড়ে ধুলোমলিন বেশে নিয়তির মুখোমুখি হতে চলেছে। লাগামছাড়া ব্যর্থতা ও সংকটের ত্রাহি ত্রাহি রবই শুধু নয়, আমাদের এখন সবার সামনে নিদারুণ উপহাসের পাত্রও হতে হচ্ছে। কাছে আসার 'রঙিন দিনেরা', ক্রমাগত দূরে যাওয়ার ধূসর বিবর্ণ গল্পে পরিণত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আর ঠিক তখন, ঠিক তখনই, জীবন থেকে মৃত্যুই পরম কাঙ্ক্ষিত বলে মনে হয়। ঠিক তখনই হাসনাতরা মনজু কিংবা রুপা কর্মকার হতে চায়। মনজু যেমন শরতের শিশিরের মতো রোদ উঠার আগেই নিঃশব্দে মিলিয়ে গিয়েছে, মনে হয়, ঠিক সেভাবে লোকচক্ষুর অন্তরালে নিভৃতে মিলিয়ে যাই। এক’পা,দু’পা করে মিলিয়ে যাওয়ার পথ ধরতে ইচ্ছে হয়। তবে, কোথাও যেন বাধা পড়ে যাই!’
এই সমন্বয়ক বলেন, ‘সত্যজিৎ রায়ের অপুর সংসার মুভিতে অপুকে বলতে শোনা যায় -তার মধ্যে মহৎ কিছু একটা করার ক্ষমতা আছে, সম্ভাবনা আছে, কিন্তু সেটা সে পারছে না। আবার এই না পারাটাও শেষ কথা নয়, ট্রাজিডিও নয়। সে মহৎ কিছু পারছে না, তার দারিদ্র্য যাচ্ছে না, তার অভাব মিটছে না, কিন্তু এত কিছুর পরেও সে জীবনবিমুখ হচ্ছে না, সে পালাচ্ছে না, স্কিপ করছে না, মনজুর মতো আত্মহনন করছে না বরং সে বাঁচতে চাইছে, সে বলছে- বাঁচার মধ্যেই সার্থকতা, বাঁচার মধ্যেই আনন্দ। He wants to live. এই পয়েন্টটাতে এসে আর জীবনবিমুখ হতে পারি না। আসলেই, বেঁচে থাকতে পারছি এটাই তো সার্থকতা।’
হাসনাত বলেন, ‘সমাজের প্রত্যাশার বাইরে এসে বাঁচতে হবে। একটা থেঁতলে যাওয়া ব্যাঙও মাটির সঙ্গে অর্ধেক লেপ্টে থাকা দেহটা নিয়ে শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত লাফানোর চেষ্টা করে, দুষ্টু ছেলের হাতে ধরা পড়ে পাখা হারানো লাল ফড়িংটাও চেষ্টা করে নীল আকাশে আবার উড়ে বেড়ানোর। আর আমি তো মানুষ, শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। ভয় কি? আবার শুরু করবো। সমাজ-পরিবার ও আশেপাশের মানুষের প্রত্যাশায় বেঁচে থাকা বন্ধ করে, নিজের আশার উপর নির্ভর করে বাঁচবো।
আত্মহত্যা করতে জীবন আমাকে হয়ত শত শত যৌক্তিক কারণ দেখাচ্ছে; কিন্তু আমি জীবনকে শুধু একটা কারণ দেখিয়েই বেঁচে থাকবো। আর সেটা হলো ‘আশা’। থেমে না গিয়ে এই সম্বলটুকু নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা। ইংরেজিতে একটা কথা আছে ‘Every man dies but not everyman lives’. মৃত্যুকে দেখিয়ে দেব আমি জীবন থেকে পালিয়ে যাইনি, যাঁরা বেঁচেছে, আমি তাদের একজন।’
পোস্টের প্রথম কমেন্টে হাসনাত লিখেছেন, ‘আমি একজন চাকরিপ্রার্থী হিসেবে গত বছর এই লেখাটি লিখেছিলাম, যেখানে চাকরিপার্থীদের কষ্ট ও হতাশা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। একজন চাকরিপ্রার্থী ছাড়া অন্য কেউ কখনোই বুঝতে পারবে না যে, এই যন্ত্রণার মাত্রা কতটা অসহনীয়। আমি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানাই, পিএসসির সংস্কার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে চাকরির পরীক্ষা ও নিয়োগ কার্যক্রম চালু করুন। এছাড়া, বেকারত্বের প্রেক্ষাপটে প্রহসনমূলক আবেদন ফি বাতিল করুন।’
আরটিভি/এসএপি
মাজারে দান করা নিয়ে যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ
মাজারে সদকা দেওয়া, দান ও মানত করার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করেছেন জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ।
সম্প্রতি নিজের ভেরিফায়েড ইউটিউব চ্যানেলে এক দর্শকের প্রশ্নের জবাবে মাজারে দান করা প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘মাজারে যত বেশি টাকা দেবেন তত বেশি গাঁজাখোরদের গাজা কিনতে সুবিধা হবে। কারণ মাজারের আশপাশে বেশিরভাগ গাঁজাখোররাই থাকে।’
তিনি বলেন, ‘এই যে মিরপুর ও গুলিস্তানে মাজার আছে, আমি যতটুকু জানি, যদি ভুল না হয়, এসব মাজারের টাকা সরকারিভাবে নিয়ে যাওয়া হয়। গাঁজাখোররা নিতে পারে না, কারণ তালা মারা আছে।’
আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘মনে রাখবেন, আপনি আল্লাহকে খুশি করার জন্য গরিব মানুষকে দান করবেন। ওই মাজারে দান করার ব্যাপারে কোরআন-হাদিসে কোনো নির্দেশনা নেই। বরং সেখানে মানত করলে গুনাহ হবে। এটা মানত করার কোনো জায়গা না। মানত করতে হবে সঠিক ও শুদ্ধ পদ্ধতিতে। যেভাবে নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দেশনা দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘ধরে নিলাম, কবরে যিনি শায়িত আছেন তিনি অনেক নেককার ও বুজুর্গ মানুষ, আপনি টাকা দান করলে তিনি কি পাবেন? না, তিনি পাওয়া দূরের কথা, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তার পরিবার বা আত্মীয়স্বজনও পান না। পাবে সেই গাঁজাখোররা। সুতরাং কোনো মুসলমান সেসব জায়গায় টাকা দিতে পারে না।’
এই ইসলামী আলোচক বলেন, ‘মাজারের পাশে অনেক গরিব থাকে, আপনি তাদের দান করবেন। ইসলাম আমাদের এমনই নির্দেশনা দিয়েছে। কোনো পীর সাহেব যদি মাজারে দান করার ফতোয়া দেন, তাহলে বুঝবেন এটা তার ব্যবসা।’
তিনি আরও বলেন, ‘দান কোথায় করতে হবে তা আল্লাহ তাআলা বলে দিয়েছেন, নিশ্চয় সদকা হচ্ছে ফকির ও মিসকিনদের জন্য এবং এতে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য, আর যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য; (তা বণ্টন করা যায়) দাস মুক্ত করার ক্ষেত্রে, ঋণগ্রস্তদের মধ্যে, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের মধ্যে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, মহা প্রজ্ঞাময়। (সুরা তওবা ৬০)
এ আট খাতের মধ্যে মাজারের কথা উল্লেখ নেই। কোরআন-হাদিসে মাজারে দান করার কোনো নির্দেশনা নেই, তাই মাজারে দান করলে গুনাহ হতে পারে।
আরটিভি/এসএপি
ঢাবির হলে যুবককে পিটিয়ে হত্যা, যা বললেন সারজিস আলম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এই হত্যাকাণ্ডে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান।
সারজিস লিখেছেন, মানসিক ভারসাম্যহীন হোক, চোর হোক অথবা দাগী আসামী, কাউকে এভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলার অধিকার বা সাহস কোনো একজন ব্যক্তি কীভাবে পায়? মব জাস্টিসের নামে নরপশুর ন্যায় নির্মমতা কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়৷ আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির এক্সামপল সেট হওয়া প্রয়োজন৷
তিনি আরও লিখেছেন, কে কোথায় পড়ে, কি করে সেটা মুখ্য নয়৷ অন্যায় সবসময় অন্যায়৷ একটা জলজ্যান্ত মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলতে যাদের বুক একবারের জন্যও কাঁপে না তাদের মধ্যে মনুষ্যত্ব থাকতে পারে না৷
সবশেষে সমন্বয়ক লিখেছেন, এই মানুষটার শরীরটা দেখে বুয়েটের অবরারের কথা বারবার মনে পড়েছে৷ সকল অন্যায়কারীর বিচার হোক৷ নির্দোষ কেউ শাস্তি না পাক৷ একবার যদি অন্যায়কারীরা কোনো সূত্র ধরে ছাড় পেয়ে যায়, তবে তা পরবর্তী অসংখ্য অন্যায়ের প্রশ্রয় হিসেবে দৃষ্টান্ত তৈরি করে৷ নতুন বাংলাদেশে সেই সুযোগ যেন কেউ না পায়৷
আরটিভি/আইএম
বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনি, এবার মুখ খুললেন নাহিদ ইসলাম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণপিটুনিতে দুইজনকে হত্যার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক। অতিদ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢালাওভাবে ‘বহিরাগত’ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়, উচিতও নয়। সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন যাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একাডেমিক পরিবেশ বিঘ্ন না ঘটে। একসঙ্গে রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক পরিসর যাতে উন্মুক্ত থাকে এবং জনগণের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিথস্ক্রিয়ারও সুযোগ থাকে। ‘বহিরাগত’ জনগণের থেকে ঢাবি ক্যাম্পাসে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ অতি জরুরি।’
দ্বিতীয়ত, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগসহ এই অভ্যুত্থান ও বিগত বছরগুলোতে যারা ছাত্র-ছাত্রীদের নিপীড়ন করেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিদ্রুত মামলা করতে হবে।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিশন করে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রশাসনের উদ্যোগে নির্যাতনকারীদের তালিকা প্রণয়ন করতে হবে এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
নির্যাতনকারী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অতিদ্রুত আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে উত্তেজিত মবকে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না। তবে শিক্ষার্থীদেরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। মবজাস্টিস গ্রহণযোগ্য নয় এবং কোনো সমাধানও আনবে না।
আরটিভি/আরএ
নেতারা আমাদের ভোগের পণ্য মনে করতেন: যুব মহিলা লীগ নেত্রী
গত ৫ আগস্ট জনরোষে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। এরপর দলটির নেতাদের অনেকে দেশ ত্যাগ করতে পারলেও সিংহভাগই আত্মগোপনে রয়েছেন। এরই মধ্যে দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-নেত্রীদের নামেও মামলা হওয়া শুরু হয়েছে। তাদেরই একজন ব্রাহ্মণবাড়িয়া যুব মহিলা লীগের সহসভাপতি উম্মে হানি সেতু।
সম্প্রতি সেতুর একটি ভয়েস রেকর্ড সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন, যা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা।
ওই ভয়েস রেকর্ডে সেতু বলেন, ‘দল করেছি কিন্তু কখনও ভালো জায়গায় রাখেনি। নেতারা বাঁকা করে তাকিয়েছেন, কেন তাকিয়েছেন সেটাও বুঝি? দেখতে যথেষ্ট সুন্দরী ছিলাম, বিশ্রী তো আর না! কোন নেতা কোন দৃষ্টিতে তাকিয়েছেন, সেটা জানি। তারা (আওয়ামী লীগ নেতারা) কখনোই বোনের সম্মান দেননি। সবসময় তারা আমাদের ভোগের পণ্য মনে করতেন। যে মেয়ের শরীরে উনারা (নেতারা) হাত দিতে পারতেন, তাকেই ভালো পদ দিতেন।’
তিনি বলেন, ‘আমার নামে তিনটি মামলা হয়েছে। আমিসহ কয়েকজন মামলা খেয়েছি। অনেক সিনিয়র নেত্রীরা আছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। আমি মামলা খেয়ে অনেক কষ্ট করতেছি, তারা ভালো থাকুক। মামলা খেলে তাদের কষ্ট হওয়ার কথা ছিল না, তাদের ঘরে কোনো বাচ্চা নেই। আমার ১৬ মাসের একটি ছোট বাচ্চা আছে। ওই বাচ্চাটাকে ফেলে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পড়ে আছি। একটা মানুষ আমার বাসায় খবর নেয় না, আমার ছোট তিনটা বাচ্চা কী খায়, বাচ্চাগুলো কী করে, বাড়িতে বাজার আছে কি না? তা ফোন দিয়ে কেউ খবর নেয়নি। তাতেও কোনো দুঃখ নেই।’
উম্মে হানি সেতু বলেন, ‘বাংলা কথা বলি, এই নোংরা নেতাগুলোর কারণে আজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ধ্বংস হয়েছে। শুধু ইউনিয়ন লেভেল, উপজেলা লেভেল বা জেলা পর্যায়ে না, কেন্দ্রীয় নেতাদের পর্যন্ত অনেক অনেক নোংরা নোংরা খবর আসতেছে। কেন্দ্রীয় নেতারা নায়িকাদের নিয়ে ফূর্তি করতেন। এগুলো করে বাংলাদেশে গজব নাজিল করেছে আওয়ামী লীগের ওপর।’
তিনি বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মধ্যেও আমাদের অনেক নেতাদের সান্নিধ্যে অনেকেই ছিল, যারা ছিল তাদের কোনো সমস্যা হয়নি। আমরা যারা অবাধ্য ছিলাম, তাদের কথা শুনিনি, আজকে আমরাই মামলা খেয়েছি। দল ক্ষমতায় আসলে সুসময়ের পাখিরা আবার সুবিধা পাবেন। যারা কোলে বসতে পারেন তাদেরই ভালো জায়গা থাকে।’
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকটি গ্রুপ রয়েছে হোয়াটসঅ্যাপে। সেগুলোতে উম্মে হানি সেতু নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে এ ভয়েস রেকর্ড পাঠান। তবে আমাদের মধ্যের কেউ সেই রেকর্ড ফাঁস করেছেন। এটি খুবই দুঃখজনক।
ভয়েস রেকর্ড সম্পর্কে উম্মে হানি সেতু বলেন, ‘আমি মামলা খাইয়া দৌঁড়ের ওপর আছি, আমি কোনো বক্তব্য দিইনি। পারলে প্রমাণ করুন।’
আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন এটি আপনি গ্রুপে দিয়েছেন, প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যখন বদমায়েশি করে তখন মনে থাকে না, এখন আমারে নিয়া নাচতে আইছে।
আরটিভি/এসএপি-টি