• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo
যাদের জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা রহমত কামনা করেন
মহান আল্লাহর অনেক গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি গুণবাচক নামের উল্লেখ থাকা সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের ফজিলত ও গুরুত্ব অপরিসীম। এই তিন আয়াতের মধ্যে মহান আল্লাহ তাঁর সুন্দর সুন্দর নাম তুলে ধরেছেন। যেসব ব্যক্তি সকাল ও সন্ধ্যায় এই তিন আয়াত তেলওয়াত করেন তাদের জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা রহমত কামনা করেন। হজরত মাকাল ইবনে ইয়াছার (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সকালে তিন বার ‘আউজু বিল্লাহিস সামিইল আলিমি মিনাশ শাইতনির রাজিম’সহ সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত তেলাওয়াত করবে, তার জন্য মহান আল্লাহ ৭০ হাজার রহমতের ফেরেশতা নিয়োগ করবেন। সে ফেরেশতাগণ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার ওপর আল্লাহতায়ালার রহমত প্রেরণ করতে থাকবে। যদি ওই দিন সেই ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন তবে সে শাহাদাতের মর্যাদা লাভ করবে।  আর যে ব্যাক্তি সন্ধ্যার সময় এ আয়াতগুলো তেলাওয়াত করবে তার জন্যও মহান আল্লাহ ৭০ হাজার রহমতের ফেরেশতা নিয়োগ করবেন। যারা তার ওপর সকাল হওয়া পর্যন্ত রহমত প্রেরণ করতে থাকবে। আর যদি ওই রাতে সেই ব্যক্তির মৃত্যু হয় তবে তিনি শাহাদাতের মর্যাদা লাভ করবে। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস ১৯৭৯৫)।
০৯ মার্চ ২০২৪, ২৩:৪৫

রাতে ঘুমানোর আগে সুরা মুলক পড়ার কারণ
সুরা মুলক একটি স্বতন্ত্র সুরা। এটি আল–কোরআনের ৬৭ নম্বর সুরা। এ সুরা পাঠে অনেক ফজিলত রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোরআনে এমন একটি সুরা আছে যার মধ্যে ৩০টি আয়াত রয়েছে, যা তার পাঠকারী ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করবে এবং তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর সেটি হলো ‘তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলকু (সুরা মুলক)’।’ (সুনানে আত-তিরমিজি ২৮৯১)। প্রতি রাতে সুরা মুলক তিলাওয়াত করা সুন্নাত। রাসুলুল্লাহ (সা.) ‘আলিফ লাম মিম তানজিলুল কিতাব’ (সুরা আস-সাজদা) ও সুরা মুলক তিলাওয়াত না করে কোনো দিন ঘুমাতেন না। (তিরমিজি-২৮৯২) তবে এর মানে এই নয় যে সুরাটি দিনে পড়া যাবে না। এটি যেকোনো সময় পড়া যাবে, তবে রাতের বিশেষ আমল হিসেবে এ সুরা পড়া উত্তম। সুরাটি নামাজের সঙ্গে পড়াও উত্তম। মুখস্থ না থাকলে দেখে দেখে অর্থ বুঝে পড়লে বিশেষ সওয়াব পাওয়া যায়। সুরাটির নামকরণের মধ্যেই এর বিষয়বস্তু ও মর্মার্থ সুস্পষ্ট। আরবি ‘মুলক’ মানে ‘সার্বভৌমত্ব’। আসমান ও জমিনে সার্বভৌমত্বের একমাত্র মালিক ‘আল্লাহ’, তা এ সুরায় স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এ সুরার শুরুতেই আল্লাহ সব ক্ষেত্রে তাঁর সার্বভৌম কর্তৃত্বের কথা ঘোষণা করেছেন। দ্বিতীয় আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে আমল করার দিক থেকে কে উত্তম, তা পরীক্ষা করার জন্য যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন। তিনি পরাক্রমশালী ও ক্ষমাশীল।’ আল্লাহ বলছেন, ‘যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন’। এতে বোঝা যায়, জীবনের মতো মৃত্যুও আলাদা একটি সৃষ্টি; অর্থাৎ শুধু জীবনের অবসান বা অনুপস্থিতিই মৃত্যু নয়। মৃত্যু স্বতন্ত্র একটি সৃষ্টি। এ আয়াত থেকে স্পষ্ট, যিনি মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন, তিনি অবশ্যই মৃত্যু থেকে মুক্ত। অর্থাৎ মৃত্যু তাঁর ওপর কার্যকর হতে পারে না। ৩ ও ৪ নম্বর আয়াতে সাতটি আসমানে ও অন্যান্য ক্ষেত্রে আল্লাহর সৃষ্টির নৈপুণ্যের কথা বলা হয়েছে। এখানে আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিতে কোনো খুঁত বা অসংগতি আছে কি না, তা খুঁজে দেখতে বলেছেন। একবার নয়, বরং আরও একবার (বারবার) খুঁজে দেখতে বলা হয়েছে। কারণ, প্রথমবার মানুষ অবাক হয়ে কোনো কিছু দেখে। তখন কোনো ভুলত্রুটি-অসংগতি চোখে পড়ে না। দ্বিতীয়বার বা বারবার ভালো করে দেখলে ভুল ধরা পড়ে। তাই প্রথম অবাক দৃষ্টির পর দ্বিতীয় অনুসন্ধানী দৃষ্টি দিয়েও খুঁত বা অসংগতি খুঁজতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আল্লাহ সবার কাছে চ্যালেঞ্জ দিয়ে রেখেছেন, যতবারই দেখা হোক না কেন, কোনো অসংগতি ধরা পড়বে না। কোনো অসংগতি না পেয়ে মানুষের দৃষ্টি ক্লান্ত হয়ে লজ্জাবনতভাবে ফিরে আসবে। এ সুরার পঞ্চম আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আমি তোমাদের কাছের আসমানকে প্রদীপমালায় সজ্জিত করেছি। আর সেগুলোকে (প্রদীপ) শয়তানদের মেরে তাড়ানোর উপকরণ বানিয়ে দিয়েছি। এসব শয়তানের জন্য আমি প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি।’ আসমানকে প্রদীপ দ্বারা (অর্থাৎ নক্ষত্ররাজি) যেমন সৌন্দর্যমণ্ডিত করা হয়েছে, তেমনি এগুলোকে আক্রমণের মাধ্যমও করা হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহর এই সৃষ্টির মধ্যে একই সঙ্গে সৌন্দর্যের কোমলতা যেমন রয়েছে, তেমনি আক্রমণের কঠোরতাও রয়েছে। ১৫ নম্বর আয়াতের প্রথম অংশে আল্লাহ বলেছেন, ‘তিনি তো সেই, যিনি ভূপৃষ্ঠকে তোমাদের জন্য সুগম বা অনুগত করে দিয়েছেন।’ এর পরের অংশে আল্লাহ বলছেন, ‘তোমরা এর (ভূপৃষ্ঠ) ওপর চলাফেরা করো এবং আল্লাহর দেওয়া রিজিক খাও। তোমাদের তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হবে।’ সুরা মুলককে ৬ অংশে ভাগ করা হয়েছে— প্রথম অংশে (আয়াত ১-৪) আল্লাহর ক্ষমতা বর্ণনা করা হয়েছে এবং শেষ অংশে (আয়াত ২৮-৩০) আল্লাহর ক্ষমতার তুলনায় আমাদের দুর্বলতার কথা প্রকাশ করা হয়েছে। দ্বিতীয় অংশে (আয়াত ৫-১৫) জাহান্নাম ও জান্নাতের কথা এসেছে। তৃতীয় অংশে (আয়াত ১৬-২২) বলা হয়েছে, বিপদ শিগগির আসন্ন। তার প্রস্তুতির জন্য কতটুকু সময় প্রয়োজন, সেটা বলা হয়েছে পরের অংশে, অর্থাৎ চতুর্থ অংশে (আয়াত ২৩-২৪)। পঞ্চম অংশে (আয়াত ২৫-২৭) প্রকাশ করা হয়েছে যে মানুষ অবাধ্যবশত জানতে চায়, সে বিপদ কবে ঘটবে?
২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ২১:১৪
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়