• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo
ঋণ ও আমানতের সুদহার বাড়ল
বর্তমানে যে পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণের সুদহার নির্ধারণ করছে, তা হলো ‘এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট’ তথা– সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল হিসেবে পরিচিত। এর ফলে ঋণের সুদহার সহনীয় পর্যায় মার্জিনের হার কমিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবুও বেড়েছে ঋণ ও আমানতের সুদহার দুটোই বেড়েছে। প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি এপ্রিল মাসে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে (এনবিএফআই) আমানত রাখলে সুদ মিলবে সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ আর ঋণ নিলে গুনতে হবে ১৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ সুদ। বুধবার (৩ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশে ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ। নতুন নি‌র্দেশনা অনুযায়ী, ‘স্মার্ট’ হারের সঙ্গে আমান‌তে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ এবং ঋ‌ণে ৫ শতাংশ হারে মার্জিন বা সুদ যোগ করে এপ্রিল মাসে ঋণ ও আমান‌তে সুদহার নির্ধারণ কর‌বে। ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্মার্টের সঙ্গে (বর্তমানে স্মার্ট ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ) সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হবে। আগে এই মার্জিন ছিল সাড়ে ৫ শতাংশ। ফ‌লে নতুন হিসেবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুদহার এর সর্বোচ্চ সীমা হবে ১৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আমানতের সুদহারের ক্ষেত্রে বর্তমান স্মার্ট ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশের সঙ্গে মার্জিন যোগ হবে ২ শতাংশ। এতে ক‌রে আমানতের সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা দাঁড়াবে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এতে সুদহারের বিষয়টি ছাড়া অন্য কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। সেই হিসেবে এর আগের প্রজ্ঞাপনের অন্যান্য শর্তাবলি অপরিবর্তিত থাকবে। প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবছরের ৬ মাসের গড় সুদহার (স্মার্ট রেট) ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। গত ফেব্রুয়ারিতে তা ছিল ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং সবশেষ মার্চে স্মার্ট রেট প্রায় এক শতাংশ বেড়ে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশে উঠেছে।
০৩ এপ্রিল ২০২৪, ২৩:২৭

বন্ডের সুদহার বৃদ্ধি, ১০ বছরে রেকর্ড
সরকারি-বেসরকারি খাতের সুদহার দ্রুত বাড়ছে। গত মঙ্গলবার ট্রেজারি বন্ডের সুদ বেড়ে সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ১৭ শতাংশে উঠেছে। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির পর যা সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার ২০ বছর মেয়াদি বন্ডে সুদহার বেড়ে ১২ দশমিক ১৭ শতাংশে উঠেছে। এ রকম সুদে ৫৩০ কোটি টাকা নিয়েছে সরকার। গত মাসে ২০ বছর মেয়াদি বন্ডে সুদ ওঠে ১১ দশমিক ১৬ শতাংশে। আর মঙ্গলবার ১৫ বছর মেয়াদি বন্ডে সুদ উঠেছে ১২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। এ পরিমাণ সুদে সরকার নিয়েছে ৩৬২ কোটি টাকা। গত মাসে এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সুদ ছিল ১১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। সাম্প্রতিক সময়ে বন্ডে সর্বোচ্চ সুদ ওঠে ৯ জানুয়ারি। ওই দিন পাঁচ বছর মেয়াদি বন্ডে সরকার ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদে টাকা নেয়। গত মাসে বিল ও বন্ড মিলে সর্বোচ্চ সাড়ে ১১ শতাংশ সুদে উঠেছিল ৩৬৪ দিন মেয়াদি বিলে। এ সময়ে বাজারে তারল্য কমাতে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সরকারের ঋণ কমানো হয়েছে ৩৪ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। একই সময়ে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ৩১ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা নিয়েছে সরকার। এ হিসেবে প্রথম ছয় মাসে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ ৩ হাজার ১১ কোটি টাকা কমেছে।  সঞ্চয়পত্রেও গত নভেম্বর পর্যন্ত সরকারের ঋণ কমেছে ৩ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা। গত অর্থবছরও কমেছিল ৩ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা। গত অর্থবছর সঞ্চয়পত্রে কমলেও ব্যাংক থেকে সরকার রেকর্ড ১ লাখ ২২ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি দিয়েছিল ৯৭ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা। আর বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে নেয় ২৫ হাজার ২৯৬ কোটি টাক।
২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:০৬

সুদহার আরও বাড়ল
বাংলাদেশ ব্যাংক পলিসি রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ শতাংশ করেছে। এতে সুদের হার আরও বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য মুদ্রানীতিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) ব্যাংকের সভাকক্ষে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন।  উল্লেখ্য, সুদের হারকে ‘রেপো রেট’ বলা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সুদের হারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ঋণ দিয়ে থাকে তাকে পলিসি রেট বা রেপো রেট বলা হয়। রেপো রেট বেড়ে যাওয়ায় ঋণ নেওয়া আগের চেয়ে ব্যয়বহুল হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এমন এক সময়ে মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হলো যখন মূল্যস্ফীতি ও বিদেশি মুদ্রা সংকটের কারণে দেশের অর্থনীতি ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে আছে। এর সঙ্গে নতুন করে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে লোহিত সাগরের সংকট। এ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশ কমলেও অসুবিধা নেই মন্তব্য করে সভায় গভর্নর বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বরাবর অগ্রাধিকার দেওয়া হলেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সমস্যা রয়েছে। তবে অর্থনৈতিক বিষয়গুলো দেখছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্য বিষয়গুলো দেখার বিষয়ে নতুন অর্থমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে না নামা পর্যন্ত সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের নির্বাচনি ইশতেহারের সঙ্গে এই মুদ্রানীতি সামঞ্জস্যপূর্ণ। সভায় উপস্থিত ছিলেন, ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কর্মকর্তারা, গবেষণা বিভাগের নির্বাহী পরিচালকসহ অনেকে। গত বছর ব্যাংক ঋণ হার বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা পুরোপুরি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়নি। স্রেফ সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কতটুকু নিয়ন্ত্রণ করা যাবে তা অনেকের মনেই প্রশ্ন।  গত ছয় মাসে দেশে ব্যাংক ঋণের সুদহার প্রায় ৩ শতাংশ বেড়েছে। ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে চলতি জানুয়ারিতে ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার উঠেছে ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশে। সে সময়ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কথা বলে ঋণের সুদহার বাড়ানো হয়েছিল। যদিও সুদহার বৃদ্ধির প্রভাব মূল্যস্ফীতিতে দেখা যায়নি। অর্থনীতিবিদদের মতে কেবল সুদহার বাড়িয়ে-কমিয়ে দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ অর্থনৈতিক অন্য সংকটগুলো কাটিয়ে উঠতে হলে সংস্কার দরকার। বিশেষ করে ব্যাংক খাতের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যকর সুপারভিশন জরুরী।  সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধু নীতি সুদহার বাড়ানোর ফলে মূল্যস্ফীতি কমার সম্ভাবনা ক্ষীণ। অর্থনীতির সংকট কাটাতে মূল্যস্ফীতিসহ দেশের আর্থিক খাতে বড় ধরনের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাছাড়া নীতি সুদহার বাড়ানোয় ব্যাংকগুলো এখন ঋণের সুদহার বাড়াবে। ফলে অর্থ সরবরাহ আরো সংকুচিত হবে। এতে ব্যাংকগুলো ঋণপ্রবাহ আরো কমে আসবে। উচ্চ সুদহারের কারণে বেসরকারি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হবে। এতে কর্মসংস্থান আরও কমার আশঙ্কা প্রকট হবে। কেবল ব্যাংক ঋণের সুদহার বাড়ানোর মধ্যেই সব সমস্যার সমাধান দেখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমনটাই দাবি করে অর্থনীতিবিদরা বলেন, সেটা যে তেমন সাফল্য আনতে পারেনি মূল্যস্ফীতির লাগামহীন অবস্থাতেই তা স্পষ্ট আমাদের কাছে। তারা বলেন, সুদহার বাড়িয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেটি মূল্যস্ফীতিকে আরো উসকে দেয় কিনা সেদিকে নজর রাখতে হবে। এতে উদাহরণ হিসেবে দাঁড়করান ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, শ্রীলংকার মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বেশি ছিল এক সময়। তখন তারা তাদের সুদের হার বেঁধে রাখেনি। তারা আরো বিচক্ষণতার সঙ্গে মুদ্রানীতি ব্যবহার করেছে।
১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ২১:৪৩
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়