• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
সরিষার বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার ফলন ধানের চেয়ে বেশি হবে বলে আশা করছেন সরিষা চাষিরা। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার একটি পৌরসভা ও আট ইউনিয়নের চাষিরা বর্তমানে সরিষার পরিচর্যা নিয়ে ব্যাপক সময় পার করছেন। জমি থেকে পাকা সরিষা সংগ্রহ করতে পারলেই কৃষকদের দুশ্চিন্তা দূর হবে। মাঠে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখে খুশি কৃষকরা। সরেজমিনে জেলার শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিস্তীর্ণ মাঠগুলো সরিষা ফুলের হলুদ রঙে রঙিন দেখা গেছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর শ্রীপুর উপজেলায় ২৮৯ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষকের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন জাতের সরিষার আবাদ হলেও টরি-৭, বারি-১৪, বীনা-৯ সহ কয়েক জাতের আবাদ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। অনেকেই আমন ধান সংগ্রহের পর জমি ফেলে না রেখে সরিষা চাষ করেছেন। এতে একই জমিতে বছরে তিনবার ফসল উৎপাদন হচ্ছে। উপজেলার বলদিঘাট গ্রামের চাষি ফজলুল হক বলেন, দেশে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েই চলছে, তাই তেলের চাহিদা মেটাতে আমি সরিষার চাষ করছি। প্রতি বছর নিজেদের জন্য ১০ শতক জমিতে সরিষা চাষ করতাম। কিন্তু স্থানীয়দের চাহিদা পূরন করতে এবার আরো ১র শতক বেশি সরিষার চাষ করেছি। তেলের চাহিদা মেটাতে আমি বেশি করে সরিষার চাষ করছি। কাওরাইদ ইউনিয়নের বিধাই কৃষক রমিজ উদ্দীন জানান, জমি তৈরি করা থেকে ফলন ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রায় ৭ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার টাকা। যদি আবহাওয়া ভালো থাকরে তিনি প্রায় ২০ মণ সরিষার পাবেন বলে আশা করছেন। উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের শৈলাট গ্রামের চাষী আব্দুল জলিল জানান, অল্প খরচ ও স্বল্প সময়ে সরিষার ফলন ঘরে তোলা যায়। ঝড় বৃষ্টি না হওয়ায় চলতি মৌসুমে সরিষার ফলনও হয়েছে বেশ। রোদে শুকিয়ে গুদামজাত করে পরে বিক্রি করতে পারলে সরিষার বাজারদর আরো বেশি পাওয়া যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। কিন্তু সংসারে টাকা খরচের কারণে ফসল তুলার সাথে সাথেই বিক্রি করে দিতে হবে। পৌরসভার উজিলাব গ্রামের কৃষক নাজিম উদ্দিন বলেন, বারি-১৭ গাছের উচ্চতা হয় দেড় থেকে ২ ফুটের মতো। আগে সরিষা গাছ বড় হলেও ফলন কম হতো। নতুন জাতের ছোট আকারের এ সরিষা গাছের গোড়া থেকে মাথা পর্যন্ত সরিষা আসছে। বীজ বপনের ৭০ দিনের মধ্যেই খেত থেকে সরিষা সংগ্রহ করা যায়। এবার প্রতি বিঘা জমি থেকে ৬-৭ মণ সরিষা উৎপাদনের আশা করছেন। আশা করছি অন্য বছরের তুলনায় এবার সরিষার ফলন ভালো হবে। চাষি জামাল উদ্দিন জানান, বিঘা প্রতি জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা। মণ প্রতি সরিষা বিক্রি করা যায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা দরে। গড়ে প্রতি বিঘাতে সাত মণ সরিষা উৎপাদন হলে বিঘা প্রতি ১৫-১৬ হাজার টাকা লাভ করা যায়। সরিষা আবাদে সেচের প্রয়োজন না হওয়ায় কম সময়ে সরিষা আবাদ করা যায়। তবে, সরিষার বড় শত্রæ জাব পোকা হলেও এবার এ পোকার আক্রমণ দেখা যাচ্ছে না। একাধিক কৃষক জানান, অন্যান্য ফসলের মতো সরিষা আবাদে তেমন শ্রমের প্রয়োজন হয় না। জমি থেকে পাকা সরিষা সংগ্রহ ও মাড়াই করে ফসল ঘরে তোলার জন্য পরিবারে পুরুষের পাশাপাশি নারী, বৃদ্ধ ও শিশু সদস্যরাও নিয়মিতভাবে কাজ করেন। চাষীরা এবার বাজারদর বেশি পাওয়ার আশা করছেন অনেকেই। শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন, শ্রীপুর উপজেলায় সরিষা চাষাবাদে কৃষকেরা প্রথম দিকে তেমন আগ্রহ দেখায়নি। তবে তারা যখন জানতে পারলেন স্বল্প খরচে বেশি ফসল উৎপাদন করা যায়। পরেই তারা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠে। উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের মধ্যে উন্নত জাতের বীজ বিতরণ ও কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া জমিতে সরিষার আবাদ করলে ওই জমিতে সরিষার পাতা পড়ে জমির খাদ্য চাহিদা অনেকাংশে মিটিয়ে থাকে।
১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:৩১

হিলিতে বেড়েছে সরিষার চাষ
দেশি বাজারে সয়াবিন, সরিষা, পামেলসহ বিভিন্ন প্রকার তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত এলাকায় বেড়েছে সরিষার চাষ। আমন ধান কাটাই-মাড়াইয়ের পর ৩ মাস ফেলে না রেখে বাড়তি আয় করতে একই জমিতে সরিষা চাষে ঝুঁকছেন এখানকার কৃষকরা। কৃষকদের সরিষা চাষে উৎসাহিত করতে বিনামূল্যে সার ও বীজ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। উত্তরের জনপদ দিনাজপুর। দিনাজপুরের হিলিতে মাঠে মাঠে হলুদের সমাহার, প্রকৃতি সেজেছে হলুদ সাজে, প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে প্রকৃতি প্রেমিদের। মাঠে-ঘাটে, গ্রাম-গঞ্জে আর রাস্তায় সরিষার ফুলের সুভাষ ছড়াচ্ছে, মুগ্ধ হচ্ছে পথচারীরা। দেশে ভেষজ তেলের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম। এসব ভেষজ তেল আমদানি করতে হয় বেশিরভাগ দেশের বাহির থেকে। বাহির থেকে আমদানিকৃত তেলের মূল্য বৃদ্ধি দিন দিন বেড়েই চলছে। তেলের দাম স্বাভাবিক রাখতে এবং চাহিদা মেটাতে সরিষার চাষ বৃদ্ধি করেছে সরিষার চাষিরা। তেলের দাম বাড়ায় সরিষার আবাদ বেশি করছেন তারা।  হিলির জালালপুর গ্রামের কৃষকরা বলেন, এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করতে কৃষকের খরচ হয় তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় কৃষকরা সরিষা উৎপাদন করে থাকে ৬ থেকে ৭ মণ। সরিষা চাষের উপযোগী আবওহায়া ভালো থাকায় ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা। তবে উৎপাদন খরচ কম ও দাম ভালো পাওয়ায় সরিষা চাষে ঝুঁকছেন এসব এলাকার কৃষকেরা। হাকিমপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকতা আরজেনা বেগম বলেন, কৃষকদের সরিষা চাষে উৎসাহিত করতে বিনামূল্যে সার ও বীজ দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে অন্য ফসলের তুলনায় সল্প সময়ে লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা দিন দিন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২৯ হাজার ৫৫শ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে ৩ হাজার ৩৫শ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮০ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ করা হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে মোট ৩ হাজার ২০০ জন কৃষককে বিনামূল্যে সরিষার বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে।
০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:১৩
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়