• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ম্যালওয়্যার সংক্রমণ
বাংলাদেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ম্যালওয়্যার সংক্রমণ। এসব ম্যালওয়্যার সম্ভাব্য র‍্যানসমওয়্যার ঝুঁকির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এক বছরের মধ্যে দেশের চারটি বড় প্রতিষ্ঠান র‍্যানসমওয়্যার হামলার শিকার হয়েছে। এর মধ্যে দুটিই সরকারি প্রতিষ্ঠান। তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাইবার নিরাপত্তায় যথেষ্ট নজরদারি ও দক্ষতার অভাবে দেশের সাইবার জগতের ঝুঁকির বিষয়টি প্রায়ই আলোচনায় আসছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশে র‍্যানসমওয়্যারের হুমকি নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের অধীন সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংস্থা ‘বিজিডি ই-গভ সার্ট’। র‍্যানসমওয়্যার: আ ডেটা-ড্রাইভেন থ্রেট অ্যানালাইসিস অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে ২০২২ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশে র‍্যানসমওয়্যারের হামলা ও সম্ভাব্য ঝুঁকি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে র‍্যানসমওয়্যার হামলা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। বিজিডি ই-গভ সার্টের হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে এ ম্যালওয়্যার সংক্রমণের ঘটনা বেড়েছে প্রায় ৭১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। র‍্যানসমওয়্যার হচ্ছে একধরনের ক্ষতিকর সফটওয়্যার প্রোগ্রাম বা ম্যালওয়্যার, যা কোনো কম্পিউটার, স্মার্টফোন বা ডিজিটাল যন্ত্রে সংরক্ষিত তথ্যে ঢুকতে বাধা দেয় তার ব্যবহারকারীকে। ম্যালওয়্যার সংক্রমিত হলে যন্ত্র ‘লক’ হয়ে যেতে পারে। একইসঙ্গে যন্ত্রে থাকা তথ্য চুরি করে নিতে পারে ম্যালওয়্যার ছড়ানোর পেছনে কলকাঠি নাড়া হ্যাকার বা সাইবার দুর্বৃত্তরা। কাঙ্ক্ষিত তথ্য হাতিয়ে নিয়ে তা মুছে ফেলতে পারে তারা। বিশেষ চাবি দিয়ে এনক্রিপ্ট করে ফেলতে পারে। কম্পিউটারে ঢুকতে বা সেখানে রাখা তথ্য ফিরে পেতে তখন সাইবার অপরাধীরা অর্থ দাবি করে থাকে। এজন্যই এর নাম র‍্যানসমওয়্যার। সাধারণত বড় কোনো প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানসহ আর্থিক খাতগুলো র‍্যানসমওয়্যারের প্রধান লক্ষ্যবস্তু হয়ে থাকে। বিজিডি ই-গভ সার্টের প্রতিবেদনে বাংলাদেশে র‍্যানসমওয়্যার হামলায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত চারটি খাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। খাতগুলো হলো আর্থিক, অ্যাভিয়েশন (উড়োজাহাজ চলাচল), ওষুধ ও শিল্প। ক্ষতিগ্রস্ত খাতের কথা বলা হলেও র‍্যানসমওয়্যার হামলার শিকার কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। অবশ্য ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বিজিডি ই-গভ সার্টের প্রকাশ করা ‘র‍্যানসমওয়্যার ল্যান্ডস্কেপ বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে র‍্যানসমওয়্যার হামলার শিকার প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। বিজিডি ই-গভ সার্টের ২০২৩ সালের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি র‍্যানসমওয়্যার হামলার শিকার হয়। ‘লকবিট ৩.০’ নামের একটি সাইবার অপরাধী গোষ্ঠী দাবি করে, তারা এই হামলা করেছে। কোম্পানির নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে ৭৫০ গিগাবাইট ডেটা দখলের কথা বলে তারা। এতে কোম্পানির কর্মীদের ব্যক্তিগত তথ্যও ছিল। গত বছরের মার্চে দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় পরিবহন সংস্থায় র‍্যানসমওয়্যারের হামলা হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ‘মানি মেসেজ’ নামের একটি সাইবার অপরাধী গোষ্ঠী এ হামলা করে। সংস্থাটির ১০০ গিগাবাইট তথ্যের সার্ভার দখলে নিয়ে গোষ্ঠীটি মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করে। এর মধ্যে ছিল ব্যক্তিগত ও গোপনীয় তথ্য। সে সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সার্ভার র‍্যানসমওয়্যারের হামলার শিকার হয়েছে। তবে বিমান এয়ারলাইনস এ হামলার কথা স্বীকার করেনি। দেশের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান গত বছরের জুনে এএলপিএইচভি/ব্ল্যাকক্যাট নামের একটি সাইবার অপরাধী দলের র‍্যানসমওয়্যার হামলার শিকার হয়। হ্যাকাররা ১৭০ গিগাবাইট সংবেদনশীল তথ্য দখলে নেওয়ার দাবি করে। সূত্র জানায়, র‍্যানসমওয়্যার হামলার শিকার এই আর্থিক প্রতিষ্ঠান একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক। একই মাসে র‍্যানসমওয়্যারের হামলার শিকার হয় দেশের আরেকটি শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী। ‘আকিরা’ নামের হ্যাকার দল এ হামলার দায় নেয়। তারা বলে, অর্থ দাবির আলোচনায় যেতে চায়নি শিল্পগোষ্ঠীটি। তাই তাদের কাছে থাকা তথ্য তারা ডার্ক ওয়েবে প্রকাশ করে দেয়। ডার্ক ওয়েব হলো ইন্টারনেট জগতে অবৈধ কর্মকাণ্ডের মার্কেটপ্লেস। র‍্যানসমওয়্যার হামলা প্রসঙ্গে বিজিডি ই-গভ সার্ট বলছে, সিস্টেমের দুর্বলতার সুযোগে বাইরে থেকে কেউ কোনও কোড দিয়ে সিস্টেমে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছে। র‍্যানসমওয়্যার আক্রান্তের ঝুঁকি রয়েছে, এমন তিনটি উল্লেখ্যযোগ্য ম্যালওয়্যার তারা চিহ্নিত করেছে।  তাদের বিশ্লেষণ বলছে, আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু বানানোর ক্ষেত্রে ম্যালক্স জাতীয় ম্যালওয়্যারের সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি দেখা গেছে। তবে, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে র‍্যানসমওয়্যার ট্রোজান। ম্যালওয়্যারটিতে ক্ষতিগ্রস্থ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের পরই আছে ইয়েমেন, দক্ষিণ কোরিয়া, মোজাম্বিক, সুদান, ফিলিস্তিন, তাইওয়ান, আফগানিস্তান, চীন ও সিরিয়া। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক সাইবার নিরাপত্তা অনুশীলনের অভাবেই মূলত বাংলাদেশে র‍্যানসমওয়্যার হামলা বাড়ছে। বিজিডি ই-গভ সার্ট গত এক বছরে বাংলাদেশের ২৫ হাজার ৩৮টি আইপি ঠিকানা পেয়েছে, যেগুলো ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত। এছাড়া এসময়ে তারা ৭টি র‍্যানসমওয়্যার ঝুঁকি শনাক্ত করেছে। তবে এর সবকটি হামলায় সফল হয়নি।  
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:৪৬

ফের করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী, চার দফা ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ
দেশে করোনার নতুন উপধরন শনাক্ত হয়েছে। ধীরগতিতে হলেও দেশে এর সংক্রামণ ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন উপধরনই সংক্রমণ বাড়ার কারণ। শীত কমলে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে করোনা সংক্রমণ আরো কয়েক গুণ বাড়তে পারে। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৩৪ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৪৬ হাজার ৯৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এসময় করো মৃত্যু হয়নি। দেশে এ পর্যন্ত ২৯ হাজার ৪৮১ জনের করোনায় মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে, ২০২৩ সালের জুন ও জুলাই মাসের পর করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি স্বস্তিদায়ক ছিল। তবে নতুন বছরের জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহের কয়েকদিন সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের ওপরে। ফলে মাস্ক পরার পরামর্শসহ চার দফা ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সরকারের করোনা বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। তারা বলছে, বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের স্ক্রিনিং, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনা, ভবিষ্যতে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে কোভিড পরীক্ষা, বৈশ্বিক সংক্রমণ পর্যালোচনা করে দেশে নজরদারি বাড়ানোসহ আইসিইউসহ দ্রুত চিকিৎসার সব প্রস্তুতি রাখা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক ও আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ বলেছেন, আশঙ্কা না থাকলেও আমাদেরকে সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। কারণ, দুই তিন মাস পরে হয়তো বাংলাদেশে করোনার মূল সিজন শুরু হবে। তখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেতে পারে। বর্তমান প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি বলেন, এখন এ বিষয়ে আমাদের সার্ভিলেন্স বাড়াতে হবে। কোন ধরনে কারা আক্রান্ত হচ্ছেন তা চিহ্নিত করতে হবে। যারা ডোজ পননি কিংবা এক ডোজ নিয়েছেন তাদেরকে বাকি ডোজগুলো দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।  চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণসহ চিকিৎসার গাইডলাইন আপডেট করতে হবে। সেই সঙ্গে হাসপাতাল, বেড, অক্সিজেন এসব বিষয়ে প্রস্তুতি রাখতে হবে। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন বলেন, করোনা পরিস্থিতি ফের ঊর্ধ্বমুখী লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশের ৫ জনের শরীরে নতুন উপধরন শনাক্ত হয়েছে। সবাই সচেতন না হলে, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে, পরিস্থিতি দ্রুত খারাপের দিকে যেতে পারেন।
২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩:৪২

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বাড়ছে, মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ
করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট জেএন.১-এর সংক্রমণ বেড়েছে। এ অবস্থায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বের বেশ কিছু দেশে কোভিড-১৯-এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট জেএন.১-এর সংক্রমণ বেড়েছে। এ অবস্থায় উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে যেমন হাসপাতাল, চিকিৎসা কেন্দ্র এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি, যাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম, তাদের সতর্কতা হিসেবে মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হলো। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের বাড়তি সতর্ক করে চতুর্থ ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয় বিজ্ঞপ্তিতে। সার্জারি অথবা অন্য কোনও রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে কেবল কোভিড-১৯ লক্ষণ বা উপসর্গ থাকলে কেভিড-১৯ পরীক্ষা করার পরামর্শ দেয় অধিদপ্তর। এর আগে ৪ জানুয়ারি একই পরামর্শ দিয়েছিল করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। 
১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ২১:০২
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়