• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo
গৃহবধূকে নির্যাতনের পর হত্যা, স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন পলাতক
গাজীপুরের শ্রীপুরে দুই সন্তানের জননী গৃহবধূ আমেনা খাতুনকে (২১) নির্যাতনে হত্যার পর লাশ টয়লেটের ভেতর ফেলে স্বামীসহ শ্বাশুড়ি ও দেবর পালিয়েছে।  শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে উপজেলার মাওনা ইউনয়নের চকপাড়া (সলিংমোড়) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। নিহত গৃহবধূ আমেনা খাতুন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কুটিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং মাওনা ইউনিয়নের সলিংমোড় এলাকার আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। স্বামী আনোয়ার হোসেন মাওনা ইউনিয়নের সলিংমোড় এলাকার মঞ্জুর আলীর ছেলে। সে পেশায় রাজমিস্ত্রি। নিহতের মা মনোয়ারা বেগম তার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ করেন। গৃহবধূর স্বামী আনোয়ার হোসেন (২৫), শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম (৫০), দেবর দেলোয়ার (২২) এবং মামি শাশুড়ি রেনু আক্তার (৩৮) ঘটনার পর পলাতক রয়েছেন। নিহতের মা মনোয়ারা বলেন, বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামীসহ তার শ্বশুর বাড়ীর লোকজন মেয়েকে লোকজন নির্যাতন করত। তাদের অব্যাহত নির্যাতনে স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার একাধিকবার সালিস বৈঠক করেও কোন সুরাহা করতে পারেনি। শনিবার বেলা সোয়া ১১টায় মেয়ে মামি শাশুড়ি রেনু আক্তার ফোন করে জানায় আমেনা মারা গেছে। খবর পেয়ে মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে এসে দেখি বাড়ীতে কেই নাই। ঘরের ভেতরে টয়লেটে মেয়ের লাশ পড়ে আছে। আশপাশের লোকজনের কাছে শুনেছি শুক্রবার (২২ মার্চ) দিবাগত রাতে স্বামীসহ তার শ্বশুর, শাশুড়ি, দেবর এবং মামি শাশুড়ি আমার মেয়েকে অনেক নির্যাতন করে বাড়ীর পাশে রাস্তায় ফেলে রাখে। প্রতিবেশীদের সহযোগীতায় স্থানীয় আদম আলী গ্রহবধূকে রাস্তা থেকে তুলে এনে বাড়িতে দিয়ে গেলে আবার মারধর করে হত্যা করে লাশ টয়লেটে রেখে তারা পালিয়ে যায়। অভিযুক্তরা তাকে সবসময় নির্যাতন করত। তারা আমার মেয়েকে খুন করে আমার পাঁচ বছর বয়সী ছেলে এবং দেড় বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে পালিয়েছে। শ্রীপুরের মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মিন্টু মোল্লা বলেন, বসতবাড়ির একটি ঘরের টয়লেটের ভেতর থেকে গৃহবধূ আমেনার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল করে লাশের থুঁতনির নিচে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক থাকায় রহস্য ও সন্দেহ রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
২৩ মার্চ ২০২৪, ১৯:২৩

শীতে কাঁপছে যমুনা তীরবর্তী লোকজন
গত কয়েকদিনের শৈত্যপ্রবাহে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন বগুড়ার সারিয়াকান্দির দুর্গম চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষরা। যমুনা নদী সংলগ্ন হওয়ায় এসব এলাকায় শীতের তীব্রতা একটু বেশি। বিভিন্ন সময়ে যমুনা নদীর ভাঙনের শিকার বেশকিছু এলাকাবাসী তাদের ভিটেমাটি এবং কৃষিজমি হারিয়ে এখন নিস্ব। পেটের ভাত জোগাড় করতে তাদের প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয়। তাই তারা কিনতে পারেন না ভালো কোনো শীতের গরম কাপড়। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়ন সম্পূর্ণ নদীগর্ভে। আর ৫টি ইউনিয়নের আংশিক নদীগর্ভে। তাই এ উপজেলার বিশাল আয়তনের জনগোষ্ঠী চরবাসী। চরবাসী এসব এলাকার লোকজন বারবার যমুনা নদী ভাঙনের শিকার হয়ে তাদের ভিটেমাটি এবং কৃষিজমি হারিয়ে কেউ কেউ দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। কয়েক দিনের তীব্র শীতে এসব মানুষরা এখন শীতে কাঁপছে।  সজিরন বেওয়া (৭০)। জীবনে ৯ বার যমুনা নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন। ভিটেমাটি এবং কৃষিজমি হারিয়ে এখন বাস করছেন অন্যের জমিতে। কাজলা ইউনিয়নের চর ঘাগুয়া চরে তার বসবাসের অযোগ্য বাড়ি। গত কয়েকবছর আগেই তার স্বামী মারা গেছেন। ৪ ছেলের মধ্যে ১ ছেলেও মারা গেছেন চিকিৎসার অভাবে। ৩ ছেলে অন্যের জমিতে দিন মজুরের কাজ করেন। অনেক কষ্টে এলাকার লোকদের সহযোগিতায় ২ মেয়েকে তিনি বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেদের অভাবের সংসারে তার ভাত হয়নি। সারাদিন অন্যের জমির মরিচ তুলে দিয়ে যা আয় হতো, তা দিয়ে কিনতেন ডাল-চার। বয়সের ভারে আর মরিচ তুলতে পারেন না। এখন বিভিন্ন মানুষের কাছে দশ-পাঁচ টাকা হাত পেতে পেটের ভাত জোগাড় করেন। কয়েক দিনের প্রচণ্ড শীতে তিনি কষ্ট করছেন। শরীরে কোনো গরম কাপড় নাই। গ্রামের চেয়ারম্যান মেম্বারদের কাছে বেশ কয়েকবার গরম কাপড় প্রার্থনা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। এদিকে গত কয়েক দিন ধরেই এ উপজেলায় গভীর রাত থেকে শুরু কওে পরদিন প্রায় দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে। কুয়াশার জন্য রাতে ৩০ ফিট দূরের কোনো কিছু চোখে দেখা যায়না। সন্ধ্যা ৭টা হতে কুয়াশা শুরু হয়ে পরদিন দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। কুয়াশার জন্য উপজেলার বিভিন্ন সড়কে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে সকাল ১০টা পর্যন্ত। রাতে প্রচণ্ড কুয়াশার জন্য গাছের পাতা হতে টপটপ করে বৃষ্টির মতো পানি পরছে।  কৃষকরা হালকা শীতের কাপড় পরেই ছুটছে খেতের দিকে, এনজিওকর্মীরা রেইনকোট পরে মোটরবাইকে বেরিয়ে পড়েছে কিস্তি আদায়ের কাজে, গরুর মালিকরা দুধ দোহন করে নিয়ে ছুটছে বাজারের দিকে। দিনমজুর এবং শ্রমিকরা বেড়িয়ে পরেছে তাদের নিজ নিজ কাজে। তবে তাদের শরীরে গরম কাপড়ের অভাব ব্যাপকভাবে লক্ষণীয়। অটোভ্যান শ্রমিকরা শীতের বাতাসকে উপেক্ষা করেই ছুটছেন পেটের দায়ে। বয়স্ক মানুষরা প্রচণ্ড শীতে ঘরবন্দি হয়েছেন। সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুর রহমান বলেন, সরকারি যে কম্বলগুলো পাওয়া গিয়েছিল তা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গরিব-দুঃখী মানুষ খুঁজে বের করে তাদের দেওয়া হয়েছে। চরবাসীদেরও এ সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় কম্বল অপ্রতুল হওয়ার জন্য হয়তো কেউ কেউ বাদ পড়তে পারেন। যারা বাদ পড়েছেন, তাদের জন্যও দ্রুত ব্যবস্থা করা হবে।  
২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:০০
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়