• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
টাকা দিলেই রোহিঙ্গারা পেত নাগরিকত্ব সনদ
টাকা দিলেই রোহিঙ্গারা পেতেন নাগরিকত্ব সনদ। হয়ে যেতেন বাংলাদেশের নাগরিক। মাত্র ৩০ হাজার টাকায় মিলত এনআইডি ও জন্ম নিবন্ধন সনদ। একটি চক্র তাদের ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধন সনদ সরবরাহ করছে। টাকার বিনিময়ে এসব ভুয়া সনদপত্র দিচ্ছেন পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের কম্পিউটার অপারেটররা বলে জানিয়েছে পুলিশ। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ। গ্রেপ্তাররা হলেন, দিনাজপুরের বিরল পৌরসভার কম্পিউটার অপারেটর আব্দুর রশিদ, বিরলের রাণীপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের কম্পিউটার অপারেটর সোহেল চন্দ্র, তাদের সহযোগী শহিদুল ইসলাম মুন্না, রাসেল খান ও মোস্তাফিজুর রহমান। তারাই মূলত রোহিঙ্গাদের এসব দোকানে নিয়ে আসতেন। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সংবাদ সন্মেলন করে এসব তথ্য জানানো হয়।  এতে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি প্রধান) মোহাম্মদ হারুন অর–রশীদ বলেন, গ্রেপ্তার রশিদ ও সোহেল পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সচিবের আইডি ব্যবহার করে এনআইডি সার্ভার ও জন্ম নিবন্ধনের সার্ভারে প্রবেশ করে এসব কাজ করতেন। তাদের কাছে গ্রাহক এনে দিতেন মাঠ পর্যায়ে কাজ করা বাকি তিনজন। ডিবি প্রধান বলেন, চক্রটি ভোটার আইডি কার্ড, জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরির কথা বলে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহক সংগ্রহ করত। বিজ্ঞাপনের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে নামে সাইবার টিমের কর্মকর্তারা। একপর্যায়ে চক্রটির সন্ধান পান তারা। অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, চক্রের মূলহোতা আব্দুর রশিদ দিনাজপুরের বিরল পৌরসভার কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত এবং সোহেল চন্দ্র বিরলের ১০নং রাণীপুকুর ইউনিয়ন পরিষদে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। তারা কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের ওই ইউনিয়নের নাগরিক দেখিয়ে জন্মনিবন্ধন সনদ বানিয়ে দিতেন। চক্রের অন্য সদস্যরা কাজের ধরণ অনুযায়ী টাকা পেত।  এছাড়াও কুষ্টিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের অন্যান্য পৌরসভা ও ইউনিয়নে তাদের লোকজন রয়েছে। যারা পাঁচ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে ভুয়া জন্ম নিবন্ধন দিয়েছেন।
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:২১

মিয়ানমারে ফিরে যেতে আরাকান আর্মির দিকে তাকিয়ে রোহিঙ্গারা
রাখাইনে চলমান সংঘাতের কারণে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য ওপারে সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে মিয়ানমারের অনেক রোহিঙ্গা। তবে তাদের এদেশে ঢোকার ব্যাপারে বিরোধিতা করছে উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। তারা বলছেন, নিজ দেশ ছেড়ে এবার ভুল করা যাবে না।  শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) ক্যাম্পে আয়োজিত কনভেনশনে রোহিঙ্গা নেতারা বলেছেন, আরাকান আর্মি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করলে এখনই তারা ফিরে যাবেন মিয়ানমারে। দেশটির অভ্যন্তরে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির তুমুল সংঘর্ষ চলছে। ইতোমধ্যে রাখাইন রাজ্যের বেশ কিছু এলাকা দখলে নিয়েছে সংগঠনটি। ফলে বুচিডংসহ রাখাইনের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে। এদিন উখিয়া ক্যাম্পের কয়েকজন রোহিঙ্গা জানান, রাখাইনে দুই পক্ষের হামলায় রোহিঙ্গারা প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই তারা বাংলাদেশে চলে আসার জন্য নিয়মিত যোগাযোগ করছেন এখানকার রোহিঙ্গাদের সঙ্গে। তবে এবার নিপীড়নের শিকার হলেও কোনো অবস্থাতেই জন্মভূমি না ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন রোহিঙ্গা নেতারা। তারা বলছেন, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে এসে ভুল করেছেন তারা। সেটা দ্বিতীয়বার যেন অন্যরা না করেন। মিয়ানমারে এখন জান্তারা দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফলে এখনই স্বদেশে ফিরে যাওয়া জরুরি। এক রোহিঙ্গা  বলেন, আমরা আর কোনও রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আসতে দিতে চাই না। বরং এখনই সময় সেখানে আমাদের চলে যাওয়ার। এসময়ে যেতে পারলে খুবই ভালো হয়। সেই সুরে সুর মিলিয়ে আরেক রোহিঙ্গা বলেন, কষ্ট পেলেও, জুলুমের শিকার হলেও মিয়ানমারেই থাকা দরকার ওপারের রোহিঙ্গাদের। তারা থাকতে পারলে পরে আমরাও যেতে পারবো। মিয়ানমারে দ্রুত ফিরে যাওয়ার জন্য এদিন সকালে উখিয়ার লম্বাশিয়া ক্যাম্পে সম্মেলন করেন এফডিএমএন রিপ্রেজেন্টেটিভ কমিটি। এতে নির্বাচিত বিভিন্ন ক্যাম্পের ৪ হাজার প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। আরাকান আর্মিকে ইঙ্গিত করে কমিটির নেতা মাস্টার ছৈয়দ উল্লাহ বলেন, সংগঠনটি রোহিঙ্গাদের অবস্থান স্পষ্ট করলে তারা এখনই চলে যেতে প্রস্তুত। তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমারের আরকানে আমাদের আত্মীয়স্বজন, মা-বাবা, ভাই-বোন আছে। তাদের ওপর অনেক নির্যাতন হচ্ছে। তাদের প্রতি আহ্বান থাকবে, তারা যেন কোনদিনও দেশ ছেড়ে চলে না আসে। জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে প্রত্যাবাসন ইস্যুতে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলাপ করে উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় একজোট হয়ে আমরা মিয়ানমারে ফিরে যাব।’ ছলিম উল্লাহ নামে এক রোহিঙ্গা বলেন, ‘আমাদের দেশ আছে। মিয়ানমারের আরকান আমাদের দেশ। আমরা দেশে ফিরে যেতে চাই।’ এদিকে শরণার্থী কমিশন বলছে, নতুন করে যেকোনো অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসান কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আরও রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢোকার আশঙ্কা রয়েছে। তবে আমাদের বর্ডার গার্ড (বিজিবি) অত্যন্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। বিজিবির টেকনাফ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লে. কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, রোহিঙ্গাদের সম্ভাব্য প্রবেশ নিয়ে সতর্ক অবস্থানে আছে বিজিবি। সীমান্ত এলাকায় কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। একজন রোহিঙ্গাকেও প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। আমরা সব সময়ই সজাগ আছি।  
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:৪৭
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়