• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
মিলনকে হত্যার ভয়াবহ বর্ণনা দিলেন যৌনকর্মী রোজিনা
ফরিদপুর বাস টার্মিনাল থেকে লাগেজবন্দি অবস্থায় মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তার হওয়া যৌনকর্মী রোজিনা আক্তার কাজল (৩২)। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোর্শেদ আলম। তিনি বলেন, উদ্ধার হওয়া মরদেহটি পাবনা জেলার নতুন গোহাইলবাড়ি গ্রামের মিলন প্রামানিকের। তিনি রাজবাড়ি জেলার বিভিন্ন ইট ভাটায় শ্রমিকের কাজ করতেন। দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে যাতায়াতের সুবাদে রোজিনা আক্তার (৩০) নামে এক যৌনকর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর টাকা পয়সার লেনদেন নিয়ে ঝগড়ার একপর্যায়ে মিলনকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন রোজিনা। তবে স্বীকারোক্তিতে রোজিনা বলেন, মা তুলে বাজে ভাষায় গালি দেওয়ায় রাগের মাথায় আমি একাই তারে মারছি। তার কাছে টাকা পাইতাম। সেই টাকা ছাড়ানোর জন্য ঝগড়া হয়। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে ফরিদপুর পৌর বাস টার্মিনালে ফেলে যাওয়া একটি লাগেজ থেকে অজ্ঞাতনামা মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর সিসি টিভি ফুটেজ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রোজিনা বেগমের পরিচয় শনাক্ত করা হয় এবং ঢাকার কদমতলীর জুরাইনের দেওয়ান বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা রুজুর পর কোতোয়ালি থানার এসআই শামীম হাসানের নেতৃত্বে ঘটনা তদন্তে নামে পুলিশ। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ বাজার থেকে মাহেন্দ্র গাড়ি শনাক্ত করে ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে লাগেজ বহনকারী রিকশাচালককে আটক করার পর পাওয়া যায় রোজিনার সন্ধান। তবে দৌলতদিয়ার যৌনপল্লির রুবেল মাতুব্বরের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় রোজিনার ঘরে অভিযান চালিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রোজিনাকে জুরাইনের দেওয়ান বাড়ির ষষ্ঠতলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। যে কারণে ও যেভাবে হত্যাকাণ্ড : রোজিনাকে গ্রেপ্তারের পর তিনি পুলিশকে জানান, নিহত মিলন তার ঘরে মাঝেমধ্যেই যেতেন। ঘটনার আগের দিন মিলন তার ঘরে যান। রাত ২টার দিকে তাদের মাঝে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে রোজিনার মা তুলে গালি দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে রোজিনা তার পরিহিত ওড়না গলায় প্যাঁচ দিয়ে তাকে হত্যা করেন। মৃত্যু নিশ্চিত হলে খাট থেকে নামিয়ে মরদেহটি কম্বল, বড় বেডশিট ও বালিশের কাভার দিয়ে মুড়িয়ে তার ঘরে থাকা বড় একটি লাগেজের মধ্যে রাখেন। পরে মরদেহ গুম করতে প্রথমে ৬০০ টাকা ভাড়ায় একটি রিকশায় করে মাহেন্দ্র স্ট্যান্ডে নেন। সেখান থেকে ৬০০ টাকা ভাড়ায় মাহেন্দ্রতে উঠিয়ে দৌলতদিয়া থেকে ফরিদপুর বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে আসেন। সেখানে ঢাকাগামী বিকাশ পরিবহনে একটি টিকিট কাটেন এবং লাগেজটি গাড়ির মালামাল রাখার বাক্সে রেখে নাস্তা করার কথা বলে পালিয়ে যান। তবে গাড়ি ছাড়ার নির্ধারিত মুহূর্তে মালিক না পেয়ে গাড়ির লোকেরা লাগেজটি বাস টার্মিনালে রেখে যান। যেভাবে যৌনপল্লিতে রোজিনা : রোজিনার ভাষ্য অনুযায়ী তিনি প্রায় একযুগ ধরে গোয়ালন্দ ঘাটের দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে রয়েছেন। ১৪ বছর বয়সে তার বাবা-মা তাকে বিয়ে দেন। তবে বিয়ের কিছুদিন পর তাদের তালাক হয়ে যায়। তারপর দৌলতদিয়া যৌনপল্লির চা বিক্রেতা হাকিমের সঙ্গে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। হাকিম মারা যাওয়ার পর তিনি সুজন নামে আরেকজনকে বিয়ে করেন। এভাবেই দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে চলছিল তার জীবন। অন্যদিকে পাবনার মিলন প্রামানিক ইট ভাটায় কাজের সুবাদে রাজবাড়ী থাকতেন। মাঝে মাঝে যৌনপল্লিতে যেতেন। সেখানে রোজিনার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা ও কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:১৫

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচন / এসব অরাজকতার মধ্যে আর কখনও যাব না : রোজিনা
আর মাত্র কয়েকদিন পরেই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। ইতোমধ্যে নির্বাচনে অংশ নিতে প্যানেল তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। অন্যদিকে বর্তমান সমিতি থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন জয়-সাইমন। এর আগে শিল্পী সমিতির কার্যকরী সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি নেন চিত্রনায়িকা রোজিনাও।  তাই আসন্ন নির্বাচনে তিনি অংশ নেবেন কিনা সেটা নিয়ে উঠেছে নানান প্রশ্ন। তবে এসব প্রশ্নের জবাবে রোজিনা জানান, এ ধরনের অরাজকতার মধ্যে আর কখনও যাবেন না তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে নির্বাচনের নানান বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন এই নায়িকা।    রোজিনা বলেন, কখনোই এসব অরাজকতার মুখোমুখি হয়নি আমি। আর এগুলো ফেস করতে যাব না। আমি চলচ্চিত্রের মানুষ, তাই আমাদের চলচ্চিত্রের মঙ্গল ও শিল্পীদের ভালো চাই। ভবিষ্যতে কখনও যদি ভালো লোক নির্বাচনে আসে এবং সে রকম পরিবেশ তৈরি হয় তাহলে সেখানে আমি সাপোর্ট দেব। কিন্তু এ ধরনের অরাজকতার মধ্যে আর কখনও যাব না।     তিনি আরও বলেন, মাঝে মাঝে কাজের জন্য এফডিসি গেলে তখন দেখি শিল্পী সমিতিতে একটি লোকও নেই। পাতা পড়তে থাকে, বাতি নেই। এমনকি আলোও জ্বলে না।  মিশা-জায়েদ কমিটির কথা উল্লেখ করে রোজিনা বলেন, প্রথমবার যখন আমরা জায়েদ খানকে নিয়ে নির্বাচন করি তখন জায়েদ খানকে দুটি রুম আলাদা করতে বলি। সেসময় বাথরুম একটা ছিল। পরে শিল্পীদের কথা চিন্তা করে নতুন বাথরুম তৈরি করা হয়। সমিতিকে সুন্দর একটি পরিবেশ দেওয়া হয়।  এদিকে আসন্ন নির্বাচনে সভাপতি পদে নির্বাচনে লড়বেন জনপ্রিয় অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল। এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, তিনি অনেক বড় মনের মানুষ। সংগঠন চালাতে পারবে। শিল্পীদের সবসময় সহযোগিতা করে। তার মতো লোকই সংগঠনে দরকার। তিনি সমিতির প্রধান হলে আরও সহযোগিতা করবে। পাশাপাশি রোজিনা এটাও জানান, যদি ডিপজলের প্যানেলে ডাক পান, তাহলে নির্বাচনের করার কথা ভেবে দেখবেন তিনি। এ প্রসঙ্গে নায়িকা জানান,  অরাজকতা না থাকলে আপত্তি নাই। তবে দ্বন্দ্বের মধ্যে আর যাবেন না তিনি।   
৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:০৭
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়