• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo
রোজা রেখে যেসব কাজ করা সুন্নত
ইবাদতের সবচেয়ে বড় মৌসুম হলো রমজান। এ মাসে প্রতিটি আমলের প্রতিদান যেমন হাজার গুণ বেড়ে যায়, তেমনি একজন মুমিনের জন্য সব পাপ থেকে বেঁচে নিজেকে একজন মুত্তাকি হিসাবে গড়ে তোলারও সুবর্ণ সুযোগ হয়। এ মাসের রোজার অন্যতম ফজিলত হলো আল্লাহ তায়ালা নিজেই এর প্রতিদান দেবেন। রোজার মাসে আল্লাহ তায়ালা জাহান্নামিদের মুক্ত করে জান্নাতে প্রবেশ করান। এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, প্রতিদিন ইফতারের সময় আল্লাহ কিছু মানুষকে (জাহান্নাম থেকে) মুক্ত করে দেন। (মুসানদে আহমাদ, হাদিস, ২১৬৯৮) রমজানের ফরজ ইবাদত রোজার পূর্ণতার জন্য বেশকিছু সুন্নত আমল রোজাদারের জন্য জরুরি। এখানে এমন কিছু সুন্নত আমলের বিবরণ তুলে ধরা হলো— রোজা রেখে অন্যের সঙ্গে ভালো ও উত্তম আচরণ করা উচিত। রোজাদারের পক্ষ থেকে কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ কখনো কাম্য নয়। উল্টো যদি কেউ রোজাদারের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে বা গালি দেয় কিংবা তার সঙ্গে ঝগড়া করতে আসে তাহলে রোজাদাররা তার দুর্ব্যবহারের প্রতি-জবাবে ভাল ব্যবহার করবেন এবং বলবেন। ‘আমি রোজাদার’।  এক হাদিসে আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘সিয়াম হচ্ছে ঢালস্বরূপ। অতএব, কেউ যেন মন্দ কথা না বলে, মূর্খ আচরণ না করে। যদি কোনো লোক তার সঙ্গে ঝগড়া করে কিংবা তাকে গালি দেয় তাহলে সে যেন বলে দেয়, আমি রোজাদার, আমি রোজাদার। (বুখারি, মুসলিম) সেহরি খাওয়া রোজাদারের জন্য সেহরি খাওয়া সুন্নত। হজরত আনাস বিন মালেক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা সেহরি খাও; কারণ সেহরিতে বরকত রয়েছে। (বুখারি, হাদিস, ১৯২৩ মুসলিম, হাদিস, ১০৯৫) বিলম্বে সেহরি খাওয়া বিলম্বে সেহরি খাওয়া সুন্নত। হজরত আনাস রা. যায়েদ বিন সাবেত রা. থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সেহরি খেলাম। এরপর তিনি নামাজে দাঁড়ালেন। আমি বললাম, আযান ও সেহরির মাঝে কতটুকু সময় ছিল? তিনি বলেন, পঞ্চাশ আয়াত তেলাওয়াত করার সমান সময়। (বুখারি, হাদিস, ৯২১) তাড়াতাড়ি ইফতার করা সময় হয়ে যাওয়ার পর দ্রুত ইফতার করা সুন্নত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মানুষ ততদিন পর্যন্ত কল্যাণে থাকবে, যতদিন তারা অবিলম্বে ইফতার করে। (বুখারি, হাদিস, ১৯৫৭, মুসলিম, হাদিস, ১০৯৮) কাঁচা খেজুর দিয়ে ইফতার করা সুন্নত। যদি কাঁচা খেজুর না পাওয়া যায় তাহলে শুকনো খেজুর দিয়ে। যদি শুকনো খেজুরও না থাকে তাহলে পানি দিয়ে।  হজরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজ পড়ার আগে কয়েকটি কাঁচা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। যদি কাঁচা খেজুর না থাকত তাহলে শুকনো খেজুর দিয়ে। যদি শুকনো খেজুরও না থাকত, তাহলে কয়েক ঢোক পানি দিয়ে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস, ২৩৫৬, সুনানে তিরমিজি, হাদিস, ৬৯৬) ইফতারের দোয়া পড়া ইফতার শুরুর আগে হাদিসে বর্ণিত ইফতারের দোয়া পড়া সুন্নত। ইফতারের সময় এ দোয়াটি পড়া যেতে পারে— بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ ইফতারের দোয়া বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন। অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিজের মাধ্যমে ইফতার করেছি। (মুআজ ইবনে জাহরা থেকে বর্ণিত, আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৮) তারাবি পড়া রোজাদারের জন্য তারাবি নামাজ পড়া সুন্নত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি রমজানে ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় কিয়ামে রমজান অর্থাৎ তারাবির নামাজ আদায় করবে তার পূর্ববর্তী গোনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে। (বুখারি, (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), হাদিস, ১৮৭৯) দান-সদকা করা রোজা রেখে বেশি বেশি দান-সদকা করা সুন্নত। কার, রাসূল সা. রমজানে অন্য যেকোনো মাসের তুলনায় বেশি দান করতেন।
২৫ মার্চ ২০২৪, ১৭:৩৩

রাসুল (সা.) রোজা অবস্থায় যেসব কাজ বর্জন করতে বলেছেন
সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাস রমজান। এ মাসে রোজা রাখা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক। রোজার অনেক ফজিলত রয়েছে। রোজাদারকে আল্লাহ নিজ হাতে পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। আর বেশ কিছু কাজ আছে যেগুলো রোজা অবস্থায় তো বটেই সবসময় করতে নিষেধ করেছেন স্বয়ং রাসুল (সা.)। সেগুলো হচ্ছে- অনর্থক ও নির্লজ্জ কথা-কাজ, গালাগাল, পরনিন্দা, চোগলখুরি ও প্রতারণা। রাসুল (সা.) বলেন, শুধু পানাহার পরিহারের নাম রোজা নয়, বরং অনর্থক ও অশ্লীলতা পরিহারের নাম হচ্ছে সিয়াম। অতএব যদি তোমাকে কেউ গালি দেয় কিংবা তোমার সঙ্গে কোনো মূর্খতাসুলভ কাজ করে, তাহলে তুমি বলবে, আমি সায়েম, আমি রোজাদার। (সহিহ ইবনে খুজায়মা, হাদিস : ১৯৯৬; সহিহুল জামে, হাদিস : ৫৩৭৬) মহানবী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ পরিহার করল না, তার পানাহার পরিহারে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। (বুখারি, হাদিস : ১৯০৩) গিবত ভয়াবহ পাপ। মহান আল্লাহ বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণ্যই মনে করো।’ (সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ১২) রাসুল (সা.) বলেন, তোমরা কি জানো গিবত কী? সাহাবায়ে কেরাম বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলুল্লাহ (সা.) বেশি অবগত। তিনি বলেন, তোমার কোনো ভাইয়ের এমন কোনো বিষয় উল্লেখ করা, যা সে অপছন্দ করে। বলা হলো, (এ ব্যাপারে) আপনার অভিমত কী যে আমি যা বলি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে? তিনি বলেন, তুমি যা বলো, তা যদি তোমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে, তাহলে তুমি তার গিবত করলে। আর যদি তার মধ্যে না থাকে তাহলে তুমি তার প্রতি অপবাদ দিলে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৭৪) মহানবী (সা.) বলেছেন, মিরাজের রাতে আমি এমন এক সম্প্রদায়ের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলাম যাদের নখগুলো তামার তৈরি, যা দ্বারা তারা অনবরত তাদের মুখমণ্ডল ও বক্ষদেশে আঁচড় কাটছে। তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এরা কারা হে জিবরিল! তিনি বলেন, এরা ওই সব লোক, যারা মানুষের গোশত খেত (গিবত করত) এবং তাদের মান-সম্মানে আঘাত হানত। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৭৮) চোগলখুরি হচ্ছে বিবাদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একজনের কথা অন্যজনকে বলা। এটা বড় পাপ। রাসুল (সা.) বলেন, চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (তিরমিজি, হাদিস : ৯৮১) অন্য একটি হাদিসে এসেছে, একদা নবী করিম (সা.) দুটি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বলেন, এই দুই ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। অথচ তাদের বড় কোনো পাপের কারণে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না। তাদের একজন পেশাব থেকে সতর্কতা অবলম্বন করত না। আর অপরজন চোগলখুরি করে বেড়াত। (বুখারি, হাদিস : ২১১) প্রতারণা মুসলমানের কাজ নয়। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পকর্ম, কৃষিকাজসহ সর্বপ্রকার আচার-ব্যবহার, পরামর্শ-উপদেশ ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে ধোঁকা-প্রতারণা ও প্রবঞ্চনা পরিত্যাগ করা অপরিহার্য। কেননা এটা বড় গোনাহের কাজ। প্রতারক উম্মতে মুহাম্মদির অন্তর্ভুক্ত নয়।  রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আমাদের (মুসলমানদের) ধোঁকা দেয়, সে আমাদের  দলভুক্ত নয়। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৩১০)
২৫ মার্চ ২০২৪, ১৯:০২

রক্তদানে কি রোজা নষ্ট হয়? 
সিয়াম সাধনার এই মাসে সংযম পালনে ভুলবশত কিছু বাড়াবাড়ির শিকার হই আমরা। বিভিন্ন বিধান পালনের ক্ষেত্রে কী করা যাবে, আর কী করা যাবে না, বা করা গেলেও তার সীমা কতটুকু তা অনেকেই জানি না। ফলে বহু মানুষ অযথা কষ্ট ভোগ করে।  আমাদের সমাজে রোজা নিয়ে বহুল চর্চিত এরকম একটি প্রশ্ন হচ্ছে, রোজা রেখে কাউকে রক্তদান করলে রোজা নষ্ট হবে কি না। শরীয়ত নির্ধারিত রাস্তাগুলো দিয়ে কোনো কিছু মস্তিষ্ক ও উদরে প্রবেশ করলেই শুধু রোজা ভাঙ্গবে। রক্তদানের কারণে যেহেতু কোনও বস্তু দেহের ভেতরে ঢোকে না, তাই তাতে রোজা নষ্ট হওয়ার প্রশ্নই আসে না। তাই শরীয়ত মোতাবেক শরীর থেকে রক্ত বের হয়ে যাওয়া রোজা ভঙ্গের কারণ নয়।  অতএব, দুর্ঘটনা বশত: রক্ত বের হওয়া, অন্যকে রক্ত দেওয়া রোজা ভঙ্গের কারণ নয়। অবশ্য মুখ ভরে বমি হওয়া কিংবা অল্প অল্প বমি মুখ ভরে হওয়ার সমান সাব্যস্ত হওয়া রোজা ভঙ্গের কারণ। রক্ত বমির ক্ষেত্রেও একই মাসআলা। আবার রোজা রেখে নিজে রক্ত নিলে যেহেতু এ রক্ত শরীরের উল্লেখযোগ্য চার নালির কোনো নালি দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে না, বরং শরীরের অন্যান্য ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে প্রবেশ করে; সুতরাং রোজাবস্থায় নিজে রক্ত গ্রহণ করলেও রোজা নষ্ট হবে না। তবে, রক্তদানে শরীর দুর্বল হয়ে রোজা ভঙ্গের আশঙ্কা থাকলে, তা মাকরূহ বলে বিবেচিত। হযরত সাবিত আল বানানী থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, ‘হযরত আনাস বিন মালেক (রা)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে যে, রোজাদারের জন্যে সিঙ্গা লাগিয়ে শরীর থেকে রক্ত বের করাকে আপনি কি অপছন্দ করেন? জবাবে তিনি বলেন, না আমি অপছন্দ করি না। তবে দুর্বল হয়ে পড়ার ভয় থাকলে ভিন্ন কথা।’ (সহীহ আল বোখারী ১:২৬০)  নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে রোজা রেখে সিঙ্গা লাগিয়েছেন। তা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।  সিঙ্গার মাধ্যমে শরীরের বিষাক্ত রক্ত বের করা হয়। তাই রোজা রেখে নিজের টেস্ট বা পরীক্ষার জন্য কিংবা কোনো রোগীর চিকিৎসার প্রয়োজনে রক্ত দিলে রোজার কোন ক্ষতি হবে না। তবে রক্ত দিতে গিয়ে দুর্বল হয়ে রোজা ভেঙ্গে ফেলার আশঙ্কা থাকলে, সে অবস্থায় রক্ত দেওয়া মাকরুহ হবে। (সহীহ আল বোখারী, হাদিস নং-১৯৩৮, মুসলিম শরিফ, হাদিস নং-১১০৬, আবু দাউদ শরিফ, হাদিস নং-২৩৭২)    
১৯ মার্চ ২০২৪, ১২:১৯

যে ব্যক্তির রোজা আল্লাহর কাছে মূল্যহীন
রমজানের বিশেষ ফজিলত সম্পর্কে মুসলমানগণ অবহিত আছে। অবহিত আছে এই মাসের বিশেষ করণীয় সম্পর্কে। রসুলুল্লাহ (সা.) এই মাসটি অধিক গুরুত্বের সঙ্গে পালন করতেন। এই মাসে ইবাদত-বন্দেগিতে তিনি সময় বেশি দিতেন। কোরআন তিলাওয়াত ও দান-সদকা সবই অধিক পরিমাণে পালন করতেন।  রোজা ফারসি শব্দ, অর্থ উপবাস থাকা। কোরআন-হাদিসে এটিকে সিয়াম বলে। রোজা শব্দটিই প্রচলিত। সাওম বা সিয়াম শব্দের অর্থ বিরত থাকা। শরিয়তের পরিভাষায়, সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাওয়া, পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকাকে সাওম, সিয়াম বা রোজা বলে।  তবে শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকলেই রোজার হক আদায় হয়ে যাবে না। পানাহার থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি সকল প্রকার পাপ কাজ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে হবে এবং অন্যান্য আমল ও ইবাদতে নিজেকে মশগুল রাখতে হবে, তবেই রোজার পূর্ণ হক আদায় হবে।  কিন্তু আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ দেখতে পাই, যারা রোজা রেখেও আরেকটি ফরজ ইবাদত নামাজ ছেড়ে দেয়। রোজা রাখা সত্ত্বেও অন্যের ওপর জুলুম থেকে বিরত হয় না। সুদ, ঘুষ ও হারাম ভক্ষণের মতো ভয়াবহ পাপ থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রাখতে পারে না। রোজা রেখেও কিছু মানুষ মাপে কম দেয়। রোজার মতো মহান আমলটি করা সত্ত্বেও গিবত ও পরনিন্দা, চোগলখুরি, অপর ভাইয়ের সম্মানহানি ইত্যাদিতে কিছু মানুষ ব্যস্ত সময় কাটায়। সত্যি কথা হলো, এ ধরনের রোজাদারদের রোজার কোনো মূল্য আল্লাহর কাছে নেই। বরং এটি নিছকই কিছু সময় ক্ষুধার্ত থাকা। আর কিছু নয়। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রোজা রেখেও অশ্লীল কাজ ও পাপাচার ত্যাগ করতে পারল না, তার পানাহার ত্যাগ করার কোনো মূল্য নেই।’ (বুখারি, হাদিস, ৬০৫৭, ইবনে মাজাহ, হাদিস, ১৬৮৯) হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেক হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘রোজা হলো বান্দার জন্য ঢালস্বরূপ, যতক্ষণ না এটাকে সে ভেঙে না ফেলে।’ বলা হলো, ‘এটা কীভাবে ভাঙা হয়?’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘মিথ্যা অথবা গিবত তথা পরনিন্দার মাধ্যমে।’ (আল মুজামুল আওসাত: ৪৫৩৬) হজরত আবু হুরাইরা (রা.) আরেক বর্ণনায় বলেন, নবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘অনেক রোজাদার এমন আছে, রোজা থেকে তার প্রাপ্য কেবলই ক্ষুধার্ত থাকা ও পিপাসার্ত থাকা। এবং অনেক রাতের নামাজ আদায়কারী এমন আছে, যাদের এ নামাজের অংশ শুধুই দাঁড়িয়ে থাকা।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান: ৩৪৮১)  অর্থাৎ রোজার শিষ্টাচার বজায় না রাখার কারণে এবং রোজার সম্মান বিনষ্ট করার কারণে আল্লাহর কাছে সেটা আর গৃহীত হয় না। ফলে সেটা একেবারেই মূল্যহীন হয়ে যায়। রোজা তাকওয়া অবলম্বনের মাধ্যম : আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য রোজার বিধান দেওয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে দেওয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া (আল্লাহভীরুতা) অবলম্বন করতে পারো। (সূরা বাকারা, আয়াত, ১৮৩) যেহেতু রোজা আল্লাহর বিধান এবং আমাদের জন্য তা ফরজ করা হয়েছে, তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে রোজা পালন ও রোজার অন্যান্য হক যথাযথভাবে আদায় করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, রোজা একমাত্র আমার জন্য এবং আমিই এর প্রতিদান দিব। (মুসলিম, হাদিস, ২৭৬০) রমজান পেয়েও যে হতভাগা : জিবরাঈল আলাইহিস সালাম বলেছেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক যে রমজান পেয়েও নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারল না। তার কথার সাথে একমত পোষণ করে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমিন বলেছেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে রমজানের হক আদায় করার তাওফিক দান করুন এবং নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামমের অভিশাপ থেকে বাঁচার তাওফিক দান করুন। আমিন।  
১৮ মার্চ ২০২৪, ১৯:৪১

টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করলে কি রোজা ভেঙে যায়?
সকালে টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা আমাদের সবারই অভ্যাস। পবিত্র রমজানের সকালেও অনেকেই টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করেন। কারও কারও মনে সন্দেহও জেগে ওঠে, টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভেঙে যায় না তো? আমাদের সমাজে প্রচলিত কিছু কুসংস্কারের কারণে রোজাদাররা বিভিন্ন বিষয় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন। এতে করে তিনি নিজে যেমন কষ্টে থাকেন, সেইসাথে তার চারপাশের মানুষকেও বিড়ম্বনায় ফেলেন। তারমধ্যে একটি হচ্ছে দাঁত ব্রাশ করা। অনেক ফকিহ বলেছেন, টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভাঙে না। কারণ, টুথপেস্ট তো আমরা খাই না। তবে ব্রাশ করার সময় সতর্ক থাকতে হবে যে পেস্ট পেটে চলে না যায়। কোনো কোনো ফকিহ আবার বলেন, টুথপেস্ট দিয়ে ব্রাশ করলে রোজা মকরুহ হয়ে যায়। ভেঙে যাওয়ার কথা কেউ বলেননি। কারও মনে সন্দেহ হলে সাহরি খেয়ে ভালো করে পেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করে নেওয়া যায়। ইফতারের পরও চাইলে পেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা যায়। দিনের বেলা তারা পেস্টের বদলে মিসওয়াকও ব্যবহার করতে পারেন। রমজান মাসে অনেকেই রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ করেন না, মিসওয়াকও করেন না। এটা মোটেই ঠিক নয়। সারা দিন প্রতি ওয়াক্ত নামাজের আগে মিসওয়াক ব্যবহার করা যায়। রাসুল (সা.) মিসওয়াক ব্যবহার করতেন। তাই মিসওয়াক করা সুন্নত। হাদিসে আছে, মিসওয়াক করে নামাজ পড়লে তা উত্তম। সুনানে আবু দাউদে যায়েদ বিন খালেদ আলজুহানী (রা.) বরাতে এক হাদিসে তিনি বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি—আমার উম্মতের জন্য কষ্টের আশঙ্কা না হলে তাদের ওপর মিসওয়াককে প্রতি নামাজের জন্য ফরজ করে দিতাম।’ রোজা রেখে কুলি করা, নাকে পানি দিয়ে পরিষ্কার করা, পরিচ্ছন্ন হওয়ার জন্য গোসল করা, মিসওয়াক করা—এসবে সমস্যা নেই।
১৭ মার্চ ২০২৪, ১০:৩২

রোজা রেখে ইনহেলার ব্যবহার করা যাবে?
অনেকেরই শ্বাসজনিত রোগ থাকে, যেমন অ্যাজমা ও ফুসফুসের প্রদাহজনিত সিওপিডি ও কাশি থাকে। এ ধরনের সমস্যায় সাধারণ ইনহেলার ব্যবহার করা হয়। যা মুখ দিয়ে গ্রহণ করতে হয়। এ কারণে অনেক রোগীরই প্রশ্ন-রোজা রেখে ইনহেলার ব্যবহার করা যাবে কি না। সম্প্রতি এ ব্যাপারে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজধানীর ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সাইফ হোসেন খান। এবার তাহলে রোজা রেখে ইনহেলার ব্যবহার করার ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক। ইনহেলার কী- এটি হচ্ছে শ্বাসের মাধ্যমে ওষুধ গ্রহণের জন্য ছোট্ট একটি যন্ত্র। এতে সালবিউটামল বা সালমেটেরল বা স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ থাকে। এই ওষুধ এমনভাবে প্রক্রিয়াজাত থাকে, যা গ্যাস হিসেবে মুখ দিয়ে গ্রহণ করতে হয়। ওষুধ মিশ্রিত গ্যাস শ্বাসনালীতে প্রবেশ করার পর শ্বাসনালির সংকোচন প্রতিরোধ হয়। ইনহেলার ব্যবহার করলে কী রোজা ভেঙে যাবে: রোজা রেখে ইনহেলার ব্যবহার করা নিয়ে মতবিরোধ ছিল। তবে বিশ্বের বিভিন্ন ইসলামিক পণ্ডিত একমত হয়ে জানিয়েছেন, যদি কারও শ্বাসজনিত দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা থাকে যেমন, অ্যাজমা ও সিওপিডি থাকে, তাহলে তিনি ইনহেলার ব্যবহার করতে পারবেন এবং এতে রোজা ভাঙবে না। এ বিষয়টি বিভিন্ন মেডিকেল জার্নালেও প্রকাশ হয়েছে। এছাড়া কেউ যদি রোজার সঠিক অংশ হিসেবে ঠিকভাবে ওষুধ গ্রহণ না করেন, তাহলে ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে পারে। তখন ওই ব্যক্তির পক্ষে রোজা রাখা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। তবে মূল কথা হচ্ছে, ইনহেলার খাদ্যের পরিপূরক নয়। ইনহেলার ব্যবহারের নিয়ম- অধিকাংশ অ্যাজমা ও সিওপিডির ওষুধ দিনে দুবার গ্রহণ বা সেবন করতে হয়। এ জন্য রোজার সময় চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করে সেহরি ও ইফতারের সময় ইনহেলার নেয়ার সময় নির্ধারণ করে নিতে পারেন। আবার সালবিউটামলজাতীয় ইনহেলার যেসব উপসর্গ অনুযায়ী সেবন করতে হয়, সেসব রোজা রাখা অবস্থায় নিলে তাতে রোজা ভাঙে না। ধর্মীয়ভাবে এ ক্ষেত্রে যেহেতু কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, এ জন্য চিকিৎসার অংশ হিসেবে এই ধরনের রোগীকে যদি কোনো চিকিৎসক ইনহেলার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন, তাহলে সেটি পালন করা উচিত।
১৬ মার্চ ২০২৪, ১০:৩৯

সাকিবের রোজা না রাখা প্রসঙ্গে যা বললেন মুশফিক
গত বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে ধর্মীয় ইস্যুতে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিবকে। লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে তিন উইকেট শিকার করেন তিনি। তবে মাঠে পানি পান করায় আবারও আলোচনায় এসেছেন সাকিব। ম্যাচ শেষে সাকিবকে নিয়ে কথা বলেন মুশফিকুর রহিম। মুসলমানদের জন্য চলছে সংযমের মাস, মাহে রমজান। ইসলামের বিধান অনুযায়ী, পবিত্র এই মাসে প্রতিটি মুসলমানকে থাকতে হয় রোজা। সূর্যোদয়ের আগে থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যাবতীয় পানাহার থেকে বিরত থাকারই নিয়ম। তাই গতকাল (বুধবার) প্রথম ওয়ানডেতে মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদী মিরাজকে মাঠেই ইফতার সারতে দেখা গিয়েছিল। তবে ইফতারের সময় হওয়ার কিছু আগে মাঠে পানি খেতে দেখা গিয়েছিল তানজিম হাসান সাকিবকে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসা মুশফিকুর রহিমের কাছেও জানতে চাওয়া হয় সাকিবকে নিয়ে।  জবাবে মুশফিক বলেন, আপনারাও অনেক সময় এ রকম করে লেখেন। অন্যান্য মানুষও ভিন্ন কোনো ইস্যুতে লিখতে পারে। আমি সবসময় ভালোটা প্রত্যাশা করব, আপনিও সবসময় ভালো লিখবেন ব্যাপারটা এমন না। একেক মানুষ একেকভাবে চিন্তা করতে পারে, দেখতে পারে, বলতে পারে। ওর প্রেক্ষাপট কী সেটা ভিন্ন। আমিও কিন্তু ওরকম জানি না। এদিন পেসারদের জন্য রোজা রাখাটা কঠিন বলে মন্তব্য করেন মুশফিক। তিনি বলেন,  যেটা বললেন ওর (সাকিব) অবস্থাটা কী, সেটা কিন্তু ভিন্ন। কারণ, স্বাভাবিক যেরকম গরম ছিল, ওর জন্য একটু কঠিন ছিল, ক্র্যাম্প হচ্ছিল। পেস বোলারদের জন্য এটা আরও অনেক কঠিন। আপনি যদি খেয়াল করেন, আজকে প্রায় দু-তিনজনের ক্র্যাম্প হচ্ছিল। এটা মানুষের যার যার ব্যক্তিগত মন্তব্য।’ এমন বিতর্কের বাইরেও অবশ্য তানজিম সাকিব মাঠে নিজের সেরাটাই দিয়েছেন। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা এবং আভিস্কা ফার্নান্দোকে ফিরিয়েছেন দারুণ দুই ডেলিভারিতে। আরেক ব্যাটার সাদিরা সামারাবিক্রমাকেও ফেরান তিনি। ৮ ওভারে ৬১ রান তোলা শ্রীলঙ্কাকে দ্রুত আটকে দিতে কার্যকরী ভূমিকা ছিল তানজিম সাকিবের। 
১৪ মার্চ ২০২৪, ১৪:২০

যে দেশে রোজা না রাখলে গ্রেপ্তার করে পুলিশ
ক্ষমার মহান বার্তা নিয়ে সমহিমায় হাজির হয়েছে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস পবিত্র মাহে রমজান। পবিত্র এই মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ রোজা পালন করেন। এমন অবস্থায় নাইজেরিয়ায় পবিত্র রমজান মাসে রোজা না রাখা মুসলমানদের গ্রেপ্তার করছে দেশটির ইসলামিক পুলিশ। ইতোমধ্যে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূলত আফ্রিকার এই দেশটির একটি প্রদেশে রোজার মাসে দিনের বেলা খাবার খেতে দেখার পর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাইজেরিয়া ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হলেও এখানকার ১২ প্রদেশে শরিয়া আইন চালু করা হয়। এই ১২ প্রদেশে মোট জনসংখ্যার মধ্যে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকই সংখ্যাগরিষ্ঠ। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এসব প্রদেশের মধ্যে একটি হলো কানো। আর এখানকার ইসলামিক পুলিশ ‘হিসবাহ’ নামে পরিচিত এবং প্রতি বছর রমজান মাসে তারা খাবারের দোকান এবং বাজারে তল্লাশি চালিয়ে থাকে। গত মঙ্গলবার গ্রেপ্তারকৃত ১১ জনের মধ্যে ১০ জন পুরুষ এবং একজন নারী। গ্রেপ্তারের পর তারা আর ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা মিস করবে না বলে শপথ করার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। হিসবাহের মুখপাত্র লওয়াল ফাগে বিবিসিকে বলেছেন, আমরা মঙ্গলবার ১১ জনকে পেয়েছিলাম যার মধ্যে একজন নারীও ছিলেন, যিনি চিনাবাদাম বিক্রি করছিলেন এবং তাকে তার জিনিসপত্র থেকে খেতে দেখা গেছে এবং পরে কিছু লোক আমাদের এই বিষয়টি জানায়। তিনি বলেন, অনুসন্ধান ও তল্লাশি অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে অমুসলিমরা এই অভিযানের আওতার বাইরে। লওয়াল ফাগে বলছেন, আমরা অমুসলিমদের গ্রেপ্তার করি না। কারণ এটি (রোজা) তাদের পালন করার বিষয় নয়। শুধু একটি অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হলেই আমরা অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করি। আর তা হচ্ছে, যাদের রোজা রাখার কথা, সেসব মুসলমানের কাছে বিক্রি করার জন্য যারা খাবার রান্না করে। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাদের সম্পর্কে ইসলামিক পুলিশের এই মুখপাত্র বলেন, তারা এখন থেকে রোজা রাখা শুরুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুক্তি পেয়েছে এবং ‘তাদের মধ্যে কারও কারও পরিবার যেন তাদের পর্যবেক্ষণ করে, সে জন্য আমাদের তাদের আত্মীয় বা অভিভাবকদেরও ডাকতে হয়েছিল।
১৪ মার্চ ২০২৪, ১৩:১৩

পাইলট-ক্রুদের রোজা রাখায় নিষেধাজ্ঞা
রোজা ইসলামের মৌলিক ইবাদত হলেও পাকিস্তানে পাইলট ও কেবিন ক্রুদের রোজা না রাখার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির জাতীয় বিমান সংস্থা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ)। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ঠদের একটি বিজ্ঞপ্তিও পাঠিয়েছে তারা। বুধবার (১৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিআইএ পাইলট এবং কেবিন ক্রু সদস্যদের রমজান মাসজুড়ে ভ্রমণ এবং ফ্লাইট চলাকালীন রোজা থেকে বিরত থাকার নির্দেশিকা মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রোজা না রাখার নির্দেশিকাটি পিআইএর ফ্লাইট সুরক্ষা বিভাগের ম্যানেজারের কাছ থেকে এসেছে। তিনি এয়ালাইন্সের সকল কেবিন ক্রু সদস্যের কাছে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন। সেখানে ফ্লাইট চলাকালীন রোজা রাখার নির্দেশিকাগুলোর রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছে, ফ্লাইটে ভ্রমণের সময় রোজা রাখা সম্ভব। তবে এটি ঝুঁকির কারণ হবে পারে। রোজা যদিও ইসলামে একটি সম্মানিত ইবাদত, তারপরও এটি স্বাভাবিক রুটিনকে ব্যাহত করে এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়া এবং ডিহাইড্রেশনের মতো শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন ঘটাতে পারে, যা মনোযোগ, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এবং রিফ্লেক্সেস (সচেতন চিন্তা ছাড়াই সঞ্চালিত কোনও কাজ) প্রভাবিত করতে পারে।  এতে বলা হয়েছে, রোজা কর্পোরেট নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা এবং এয়ারক্রু মেডিকেল সেন্টারের নির্দেশ অনুযায়ী নিরাপত্তার পরিধি কমিয়ে দিতে পারে। রোজা সম্ভাব্যভাবে সতর্কতা হ্রাস করতে পারে এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে দুর্বল করতে পারে। আর এটি জরুরি পরিস্থিতিতে গুরুতর পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।  
১৩ মার্চ ২০২৪, ১৩:৪৮

কত রোজা পর্যন্ত শ্রেণি কার্যক্রম চলবে, আবারও জানাল দুই মন্ত্রণালয়
পবিত্র রমজান মাসে দেশের বিদ্যালয়গুলোতে কতদিন শ্রেণি কার্যক্রম চলবে, তা আবারও জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দুই মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে যে, ২৫ মার্চ পর্যন্ত দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয়গুলো খোলা থাকবে। আর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খোলা থাকবে রমজানের প্রথম ১০ দিন; অর্থাৎ ২১ মার্চ পর্যন্ত শ্রেণি কার্যক্রম চলবে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে।  প্রসঙ্গত, পবিত্র রমজানে বিদ্যালয় খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আজ মঙ্গলবার স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। এরপর মন্ত্রণালয়গুলো তাদের সিদ্ধান্তের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে। এতে স্কুল খোলা রাখার বিষয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত মন্ত্রণালয়ের আগের সিদ্ধান্তই আনুষ্ঠানিকভাবে আবার জানানো হয়েছে। রোজার মধ্যেও নির্ধারিত তারিখ পর্যন্ত বিদ্যালয় খোলা রাখার ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে এক রিটের প্রাথমিক শুনানি হয় গত রোববার। শুনানি শেষে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ রুল দিয়ে পবিত্র রমজানের প্রথম ১০ দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সরকারি-বেসরকারি নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম ১৫ দিন চালু রাখার সিদ্ধান্ত দুই মাসের জন্য স্থগিত করেন। হাইকোর্টের এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ, যা গতকাল সোমবার চেম্বার আদালতে ওঠে শুনানির জন্য। চেম্বার আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। সে অনুসারে আবেদনের ওপর আজ শুনানি হয়।    
১২ মার্চ ২০২৪, ১৮:১১
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়