• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo
জাবিতে রাতভর ৩ হলের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শহীদ রফিক জব্বার হল সংলগ্ন রাস্তায় নির্মিত দেয়াল ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে ৩ হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।  মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাত ৭টা থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চলছিল। এতে অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সংঘর্ষে জড়ানো হল হলো- শহীদ রফিক জব্বার হল, শেখ রাসেল হল, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হল। জানা যায়, গত বছরের ২৭ জানুয়ারি ওই রাস্তায় স্থায়ী দেয়াল নির্মাণ করেন শহীদ রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীরা। ৪ দফা দাবিতে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ওই দেয়ালটি নির্মাণ করা হয়। তাদের দাবিগুলো হলো- শহীদ রফিক জব্বার হলের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও খেলার মাঠ নির্দিষ্টকরণ, হলের সকল অব্যবস্থাপনা দূর করে স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা সংস্কার ও হলের মসজিদে স্থায়ী ইমাম নিয়োগ, ডাইনিংয়ের অব্যবস্থাপনা দূরীকরণ ও কমনরুমের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত এবং হলের সামনে দিয়ে তাজউদ্দীন আহমদ হল ও শেখ রাসেল হলের বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, শহীদ রফিক জব্বার হল সংলগ্ন রাস্তায় দেয়াল নির্মাণের ফলে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ও শেখ রাসেল হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে অসুবিধাসহ নানা ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এরই মধ্যে সোমবার থেকে দেয়ালটি ভাঙ্গার দাবিতে গণস্বাক্ষর গ্রহণ কর্মসূচি শুরু করে দুই হলের শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি জানাজানি হলে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দেয়ালটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি অঙ্কনের চেষ্টা করে রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীরা। এ সময় শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থীরা দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি অঙ্কনে বাধা দিলে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে শেখ রাসেল ও শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের শিক্ষার্থীরা মিলে রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিলে তারা ভেতরে চলে যায়। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে কয়েক দফায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ, পটকা ফুটানো ও পাল্টাপাল্টি ধারওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে রফিক জব্বার হলের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী রেজাউল ও নিশাত গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নেব।
০৬ মার্চ ২০২৪, ০৮:৪৪

মিয়ানমারে রাতভর গোলার শব্দ, টেকনাফ সীমান্তে আতঙ্ক
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে টেকনাফের হোয়াইক্যং ও হ্নীলা ইউনিয়ন সীমান্তে থেমে থেমে রাতভর গোলার শব্দ শোনা গেছে। এতে সীমান্তের লোকজন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।  শনিবার (২ মার্চ) রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত টেকনাফের কয়েকটি পয়েন্টে সীমান্তে ভারী মর্টার শেলের শব্দ পাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।  সীমান্তের লোকজন জানায়, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মিদের সঙ্গে চলছে সংঘর্ষ। এতে টেকনাফের হোয়াইক্যং উত্তর পাড়া, লম্বাবিল, উনচিপ্রাং,কাঞ্জর পাড়া, হ্নীলা মোলভী পাড়া, ওয়াব্রাং, ফুলের ডেইল, চৌধুরী পাড়া, জালিয়া পাড়া এলাকায় সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গুলি ও মর্টার শেলের শব্দ পাওয়া গেছে। হোয়াইক্যং ও হ্নীলা সীমান্তের পূর্বে মিয়ানমার কুমিরহালি, নাইচদং, কোয়াংচিগং, শিলখালী, নাফপুরা এই গ্রামগুলোতে গৃহযুদ্ধ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীরদ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদীতে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা টহল বৃদ্ধি করেছেন। টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, রাতে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার থেকে থেমে থেমে ভারী মর্টার শেলের শব্দ শুনতে পাই। এসব গোলার শব্দ এখন নিয়মিত ঘটনার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলম বলেন, সীমান্তে গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। লোকজনকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। কোস্ট গার্ড চট্টগ্রাম পূর্ব জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তাহসিন রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ওপারের চলমান যুদ্ধের পরিস্থিতিতে নাফনদ দিয়ে সীমান্তে অনুপ্রবেশের সম্ভবনা থেকে আমরা (কোস্ট গার্ড) নাফনদে টহল জোরদার রেখেছি। নতুন করে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা ইতিমধ্যে দুইশতাধিকের বেশি অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাকে প্রতিহত করেছি।  
০৩ মার্চ ২০২৪, ১৪:৩১

ইবির গণরুমে এবার ছাত্রকে নগ্ন করে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ
বছর না ঘুরতেই এবার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নবীন এক ছাত্রকে নগ্ন করে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের গণরুমে গত বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে তার উপর নির্যাতন করা হয়। ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্তরা হলেন- শারীরিক শিক্ষা ও বিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুদাচ্ছির খান কাফি ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ সাগর। তারা উভয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী। ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের গণরুমে (কক্ষ নম্বর ১৩৬) ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে পরিচয় হওয়ার কথা বলে ডাকে অভিযুক্তরা। কক্ষে প্রবেশের পর অভিযুক্তরা তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে নানা কুরুচিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গি করতে বাধ্য করলে তিনি অস্বীকৃতি জানায়। এতে ওই শিক্ষার্থীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরাসহ কয়েকজন সিনিয়র তাকে বিবস্ত্র করে রড দিয়ে মারধর করে। তারপর বিবস্ত্র অবস্থায় তাকে জোরপূর্বক টেবিলের উপর দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এ ছাড়াও তাকে নাকে খত দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন করে অভিযুক্তরা। ওইদিন রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত কয়েক দফায় তার উপর নির্যাতন চালানো হয়। এ ছাড়াও ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য ভয় দেখানো হয়েছে। তার কক্ষের বিছানাপত্র বাইরে ফেলে দেওয়া হয় বলেও জানিয়েছে ভুক্তভোগী। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরাও লালন শাহ হলের ১৩৬ নং কক্ষে থাকেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মী জানান, ঘটনার পরের দিন (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জিয়া মোড়ে শাখা ছাত্রলীগ কর্মী হাফিজ এবং নাসিম আহমেদ মাসুমসহ কয়েকজন নেতাকর্মী অভিযুক্তদের ডেকে ভুক্তভোগীর সঙ্গে মীমাংসা করে দেয়। এ সময় তারা অভিযুক্তদের চড়-থাপ্পড়ও মারেন। এ ঘটনায় মধ্যস্থতাকারী ছাত্রলীগ কর্মী নাসিম আহমেদ মাসুম বলেন, ঘটনাটি মিটমাট হয়ে গেছে। আমি এ বিষয়ে আর কথা বলতে চাই না। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, গত বুধবার রাতে আমার সঙ্গে যা ঘটেছে তা নির্মম। ঘটনার পরে হলের বড় ভাইয়েরা বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাগর বলেন, এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তাছাড়া আমি ওইদিন হলের বাইরে ছিলাম। ওই রুমে ছিলাম না, পাশের রুমে ছিলাম। অভিযুক্ত মুদাচ্ছির খান কাফির মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। যদি ভুক্তভোগী এ বিষয়ে অভিযোগ দেয় এবং অভিযুক্তরা ছাত্রলীগ কর্মী হয়ে থাকে তবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন বলেন, আমি আনঅফিসিয়ালি বিষয়টি জেনেছি। খোঁজ-খবর নিয়ে আরও বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। তবে ভুক্তভোগী এখনও কোনো অভিযোগ দেয়নি। যদি অভিযোগ দেয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, গত বছরের ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ফুলপরী নামের এক নবীন ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে রাতভর নির্যাতন ও ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠে শাখা ছাত্রলীগ নেত্রী ও পরিসংখ্যান বিভাগের সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম, মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও চারুকলা বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কয়েকটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। এ ছাড়াও বিষয়টি গড়ায় আদালত পর্যন্ত। গত ২১শে আগস্ট ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ছাত্রলীগ নেত্রীসহ অভিযুক্ত পাঁচজনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়। ওই ঘটনার এক বছরের মাথায় এবার ছাত্রকে নগ্ন করে নির্যাতন করা হলো।
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:০৬
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়