• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo
বিয়েতে রাজি না হওয়ায় বরের দুলাভাইকে হত্যা
বাগেরহাটে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় বরের দুলাভাইকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে কনের পরিবারের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জেলার মোল্লাহাট উপজেলার আংড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, নিহত আজিজুল হক (৪৫) খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার ইছামতি গ্রামের শাহাদাত মোল্লার ছেলে এবং বরের বোন জামাই। মোল্লাহাট উপজেলার আংড়া  গ্রামে শাহদাত মুন্সির মেয়ের সঙ্গে মোহাম্মাদ আলী গাজীর ছেলে হাফিজুর রহমান গাজীর বিয়ের কথা হয়েছিল। এদিন বরপক্ষ কনেকে দেখতে তাদের বাড়িতে যায়। কিন্তু ছেলের মেয়ে পছন্দ না হওয়ায় তারা ফিরে আসারা সময় তাদের ওপর হামলা করে কনে পক্ষ। এতে বরের দুলাভাই আজিজুল নিহত হন। বরের বাবা মোহাম্মাদ আলী গাজী বলেন, আমরা আগেই বলেছিলাম ছেলের মেয়ে দেখে পছন্দ হলে বিয়ে হবে। সেই শর্তে আজ আমরা মেয়ে দেখতে গিয়েছিলাম। কিন্তু মেয়ে দেখে ছেলের পছন্দ না হওয়ায় আমরা চলে আসছিলাম। তখন তারা আমাদের ওপর হামলা করেছে। এতে আমার বড় জামাই আজিজুল হক নিহত হয়েছেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। ঘটনা জানাতে কনেপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।   মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আশরাফুল আলম বলেন, আজিজুল হকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উভয়পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।  
১২ এপ্রিল ২০২৪, ২৩:৫৭

প্রেমে রাজি না হওয়ায় স্কুলছাত্রীকে অপহরণ, অতঃপর... 
রংপুর থেকে অপহরণের শিকার এক স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব। এ সময় দুই অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ভোরে যশোরের ঝিকরগাছা থেকে ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার দুজন হলেন- রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের বানুপাড়া এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে শাহাজাহান ওরফে সানি (২০) ও শাহিন মিয়া (২৮)। মামলা সূত্রে জানা যায় গেছে, হারাগাছ ইউনিয়নের অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল গ্রামার স্কুলে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে অপহরণ করেন শাহাজাহান ওরফে সানি ও তার ভাই শাহিন মিয়া। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে ৩ মার্চ হারাগাছ থানায় মামলা করেন স্কুলছাত্রীর বাবা। পরে এ মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে র‌্যাব-৬ যশোর ক্যাম্প। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ভোরে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গোলবাকপুর এলাকা থেকে সানি ও শাহিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের জিম্মায় থাকা ভিকটিমকেও উদ্ধার করা হয়। ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর বরাতে র‌্যাব জানায়, স্কুলে যাওয়া আসার পথে সানি প্রায়ই তাকে উত্ত্যক্ত করতেন এবং প্রেমের প্রস্তাব দিতেন। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে অপহরণ করে নানাবাড়িতে আটকে রাখেন। র‌্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
১৫ মার্চ ২০২৪, ১৩:৩৯

প্রেমের বিয়েতে পরিবার রাজি না হওয়ায় ৭ তলা থেকে লাফ 
ফেনীতে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের ৭ তলা থেকে পড়ে রাকিব হোসেন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে স্থানীয় পৌরসভার সুলতানপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত রাকিব পৌর ৭ নম্বর ওয়ার্ড সৈয়দনগর এলাকার সেলাম মিয়ার ছেলে।  নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নিজ এলাকার এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল রাকিবের। কিছুদিন ধরে প্রেমিকার সঙ্গে বিয়ের জন্য পরিবারকে চাপ দিতে থাকে সে। বিয়ের উপযুক্ত সময় না হওয়ায় পরিবার থেকে বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।  বুধবার সকালে ঘর থেকে বের হওয়ার সময়ও বিয়ে না করালে মারা যাবে বলে বের হয়ে যায় রাকিব। এর কিছুক্ষণ পর ভ্যাট অফিসের নির্মাণাধীন হোয়াইট হাউজ ভবনে ৭ তলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। নিহত রাকিবের বড় ভাই বাবু বলেন, রাকিব সহজসরল প্রকৃতির ছিল। শুনেছি সে এলাকার একটি মেয়েকে পছন্দ করতো। ওই মেয়ে সম্পর্কে আমাদের এক ভাইয়ের মেয়ে। এ ছাড়াও তাদের এখনো বিয়ের জন্য উপযুক্ত বয়স না হওয়ায় আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দেইনি। তাছাড়া রাকিব এমন সিদ্ধান্ত নেবে এটি আমারা কেউই বুঝতে পারেনি। ভবনের মালিক মো. এনামুল হক বলেন, ছেলেটিকে প্রায়ই ভবনের আশপাশে ঘুরাঘুরি করতো। ঘটনার সময় ভবনের দারোয়ান ছিলো না৷ সম্ভবত এ সুযোগে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে সে ভবনের ভেতর ঢুকে পড়ে। তবে তার এ অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর খবরে আমরা সবাই মর্মাহত হয়েছি। ফেনী মডেল থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, একটি নির্মাণাধীন ১২ তলা ভবনের ৭ তলা থেকে পড়ে এ যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তার মরদেহ উদ্ধার করে ফেনী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, ছেলেটি মানসিকভাবে কিছুটা অসুস্থ ছিল। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।
১৪ মার্চ ২০২৪, ১৭:৫৭

সংখ্যা বাড়িয়ে দর্শকের গালি খেতে রাজি নন পূর্ণিমা
ঢাকাই সিনেমার লাস্যময়ী অভিনেত্রী পূর্ণিমা। ৪২ বছর বয়সে এসেও রূপের দ্যুতি ছড়াচ্ছেন এই নায়িকা। ক্যারিয়ারে অসংখ্য হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। রুপালি পর্দার পাশাপাশি ছোট পর্দাতেও বিচরণ রয়েছে তার। শুধু অভিনয় নয়, উপস্থাপনাতেও বেশ নজর কেড়েছেন পূর্ণিমা। তবে এখন আর নিয়মিত অভিনয়ে দেখা যায় না তাকে। বর্তমানে স্বামীর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছেন পূর্ণিমা। সেখান থেকেই দেশের এক গণমাধ্যমে নিজের কাজের নানান বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি। এ সময় অভিনেত্রী জানান, সংখ্যা বাড়িয়ে দর্শকের গালি খেতে রাজি নন তিনি। পূর্ণিমা বলেন, দীর্ঘ বিরতির পর আমার অভিনীত সিনেমা ‘আহারে জীবন’ মুক্তি পাচ্ছে। একসময় বছরে অনেকগুলো ছবি মুক্তি পেলেও এখন আর সেটা হয় না। কারণ, অনেক দিন ধরেই নিয়মিত অভিনয় করছি না। ঈদে একটা সিনেমা মুক্তি পেতে যাচ্ছে। এটি অবশ্যই আমার জন্য খুশির খবর। একজন অভিনয়শিল্পীর সিনেমা যখন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়, অবশ্যই সেটা তার জন্য ভীষণ আনন্দের। আর সেটি যদি ঈদ উৎসবে হয়, তাহলে তো সেই আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে যায়। ‘আহারে জীবন’ সিনেমাটি নিয়ে প্রত্যাশার কথা উল্লেখ করে অভিনেত্রী বলেন, সিনেমাটি নিয়ে প্রত্যাশা অনেক। কারণ, এটি নির্মাণ করেছেন গুণী নির্মাতা ছটকু আহমেদ। করোনাকালের কাহিনি নিয়ে সাজানো হয়েছে সিনেমাটির গল্প। করোনাকালের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই সিনেমায়। সব মিলে ভালো একটি কাজ হয়েছে। হলে বসে দর্শকেরা একটা ভিন্ন এবং পরিছন্ন গল্পের সিনেমা উপভোগ করতে পারবেন।  উপস্থাপনায় নিয়মিত হলেও, চলচ্চিত্রে নিয়মিত কাজ না করার বিষয়ে জানতে চাইলে পূর্ণিমা বলেন, উপস্থাপনা আর সিনেমা তো এক নয়। সিনেমা একটা বড় পরিসরের কাজ। দর্শকের পছন্দের একটা ব্যাপার থাকতে হয়। আমি তো নিয়মিত কাজ করতে চাই। কিন্তু সে ধরনের কাজ তো হাতে আসতে হবে।   যেসব গল্প আসে, সেগুলোর অধিকাংশই আমার জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। চরিত্রের সঙ্গে আমাকে যাবে, সেটিও ভাবতে হবে। তেমন কাজ আসছে না। এলেও অনেক সময় পরিচালক পছন্দ হয় না। দেখা গেল, ছবি এসেছে, বাছবিচার না করেই দৌড়ে গিয়ে চুক্তি করে ফেললাম। ব্যাপারটি তা নয়। আসলে সিনেমার সংখ্যা বাড়িয়ে আমি দর্শকের গালি খেতে রাজি নই। প্রসঙ্গত, ‘আহারে জীবন’ সিনেমার প্রচারণায় অংশ নিতে ঈদের আগেই দেশে ফিরে আসবেন বলে জানান পূর্ণিমা। সিনেমায় অভিনেত্রীর সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন ফেরদৌস।  
১৩ মার্চ ২০২৪, ১৪:০৯

আল্লাহকে রাজি করাতে মানত, কী বলে ইসলাম? 
মানত, খুবই পরিচিত একটি শব্দ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে। কোনও কিছু প্রাপ্তির জন্য, উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য মহান সৃষ্টিকর্তাকে রাজি করানোর উদ্দেশে হরহামেশাই ছোট-বড় বিভিন্ন কিছু মানত করে থাকি আমরা। বিশেষ করে কোনও মূল্যবান কিছু হারিয়ে গেলে তা ফিরে পেতে কিংবা আরাধ্য কোনও কিছু প্রাপ্তির আশায় তার বিনিময়ে দান-সাদকাসহ বিভিন্ন ধরনের মানত করে থাকি আমরা। কিন্তু, কোনও কিছু প্রাপ্তির বিনিময় শর্তে মানত কি জায়েজ? মানতে সত্যিই কি আরাধ্য বস্তু ধরা দেয় জীবনে; পরিবর্তন হয় ভাগ্যের? এ নিয়ে ইসলামই বা কী বলে?    মানত হলো নিজের ওপর কোনও ভালো কাজ আবশ্যক করে নেওয়া। ইসলামপূর্ব আরব সমাজে মানতের প্রচলন ছিল; এখনও এই প্রচলন কমেনি খুব একটা। পৃথিবীর প্রায় সব প্রাচীন ধর্মেই মানতের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। ইসলামিক শরিয়তেও মানতকে নাজায়েজ বা অবৈধ বলা হয়নি। তবে, প্রাপ্তির শর্তে মানত করাকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে; অনেকটা ভিক্ষাবৃত্তির মতো। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) মানত করতে নিষেধ করেছেন। কেননা তা মানুষের কোনও কল্যাণ করতে পারে না। এর মাধ্যমে কেবল কৃপণ ব্যক্তির কাছ থেকে সম্পদ বের হয়। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৩৮০১) তিরমিজি শরিফের ১৫৮৩ নং হাদিসেও এসেছে একই কথা। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা মানত করো না। কারণ, মানত ভাগ্য পরিবর্তন করতে অক্ষম। এর দ্বারা কৃপণ লোকের কিছু আর্থিক খরচ হয় মাত্র।’ পূর্ববর্তী আসমানি ধর্মে মানতের প্রচলন ছিল। পবিত্র কোরআনেও মানতের দৃষ্টান্ত আছে। যেমন—ইরশাদ হয়েছে, ‘স্মরণ করো, যখন ইমরানের স্ত্রী বলেছিল, হে আমার প্রতিপালক! আমার গর্ভে যা আছে তা একান্ত আপনার জন্য আমি উৎসর্গ করলাম। সুতরাং আপনি আমার থেকে তা কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৩৫) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের মধ্যে কাউকে যদি তুমি দেখো, তখন বোলো, আমি দয়াময়ের উদ্দেশে মৌনতা অবলম্বনের মানত করেছি। সুতরাং আজ আমি কিছুতেই কোনো মানুষের সঙ্গে বাক্যালাপ করব না। ’ (সুরা : মারিয়াম, আয়াত : ২৬)  শরিয়তের পরিভাষায় মানত বলতে বোঝানো হয়, ‘কোনো মুকাল্লাফ (শরিয়তের বিধান প্রযোজ্য) ব্যক্তির নিজের ওপর এমন কোনও কাজ আবশ্যক করা, যা শরিয়ত প্রণেতা আবশ্যক করেননি। ’ (আল-ফিকহু আলা মাজাহিবিল আরবায়া : ২/৭৭৯) সুতরাং দেখা যাচ্ছে, শরিয়ত মোতাবেক মানত করা বৈধ। তবে, তার দ্বারা আদতে ভাগ্যের কোনও পরিবর্তন হয় না। এছাড়া, কোনও ভালো কাজের মানত করে থাকলে তা আবশ্যক হয়ে পড়ে মানতকারীর ওপর। এক্ষেত্রেও আছে কিছু বিধিবিধান।    মানতের শর্ত কোনো ব্যক্তির ওপর মানত আবশ্যক হওয়ার শর্ত  হলো সাবালক হওয়া, জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন হওয়া এবং এখতিয়ার বা ইচ্ছাধিকার থাকা। (আল-ফিকহু আলা মাজাহিবিল আরবায়া : ২/৭৭৯) মানত শুদ্ধ হওয়ার জন্য ইসলামী আইনজ্ঞরা আরো কিছু শর্তারোপ করেন। যেমন—নেক কাজের মানত করা, বান্দার সাধ্যের ভেতর হওয়া, নিজের মালিকানাধীন হওয়া, তা পাপের কারণ বা উপলক্ষ না হওয়া ইত্যাদি। মানতের বিধান মানত করলে তা পূরণ করা আবশ্যক। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর তারা যেন তাদের অপরিচ্ছন্নতা দূর করে, তাদের মানত পূর্ণ করে এবং তাওয়াফ করে প্রাচীন ঘরের। ’ (সুরা : হজ, আয়াত : ২৯) অন্য আয়াতে মুমিনের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, ‘তারা মানত পূর্ণ করে এবং সেদিনের ভয় করে, যেদিনের বিপত্তি হবে ব্যাপক।’ (সুরা : দাহর, আয়াত : ৭) মৃত ব্যক্তির মানত কোনো ব্যক্তি মানত করার পর যদি তা পূরণ করার আগেই মারা যায়, তবে তার আত্মীয়-স্বজনের দায়িত্ব হলো তা পূরণ করা। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী (সা.)-এর কাছে এক লোক এসে বলল যে, আমার বোন হজের মানত করেছিল, কিন্তু সে মারা গেছে। তখন নবী (সা.) বললেন, তার ওপর কোনো ঋণ থাকলে তবে কি তুমি তা আদায় করতে না? লোকটি বলল, হ্যাঁ। নবীজি (সা.) এরপর বললেন, কাজেই আল্লাহর হককে আদায় করে দাও। কেননা আল্লাহর হক আদায় করা আরও বড় কর্তব্য। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৬৯৯) তবে, কোনও কোনো ব্যক্তি অন্যায় মানত করলে তা পূরণ করা মানতকারী বা তার উত্তরসূরি কারও জন্যই আবশ্যক নয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্যের মানত করে সে যেন তাঁর আনুগত্য করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর অবাধ্য হওয়ার মানত করে, সে যেন তাঁর অবাধ্য না হয়। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩২৮৯) বহুদিন আগের মানত মানত করার পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলে গেলেও তা পূরণ করা আবশ্যক। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ওমর (রা.) বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি জাহেলি যুগে মসজিদুল হারামের ভেতর এক রাত ইতেকাফ করার মানত করেছিলাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমার মানত পূরণ কোরো। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২০৩২) শরিয়তের সীমার মধ্যে থাকা মানত পূরণের জন্য ব্যক্তি কখনও শরিয়তের সীমা অতিক্রম করতে পারবে না। ইমাম নববী (রহ.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যদি সোমবার রোজা রাখার মানত করে এবং সেদিন ঈদ হয়, তবে সে সর্বসম্মতিক্রমে রোজা রাখবে না। ’ (শরহুন নববী : ৮/১৬) নিজের ওপর কষ্ট চাপিয়ে মানত নয় মানতের মাধ্যমে ব্যক্তি নিজের ওপর কোনও কষ্ট চাপিয়ে নেবে না। কেননা নিজেকে কষ্ট দেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) এক বৃদ্ধ ব্যক্তিকে তার দুই ছেলের ওপর ভর করে হেঁটে যেতে দেখে বললেন, তার কী হয়েছে? তারা বলল, তিনি পায়ে হেঁটে হজ করার মানত করেছেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) তখন বললেন, লোকটি নিজেকে কষ্ট দিক, আল্লাহ তা'আলার এর কোনও দরকার নেই। অতঃপর তিনি তাকে সওয়ার হয়ে চলার জন্য আদেশ করলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৮৬৫) বিকল্প জিনিস দ্বারা মানত পূরণ যদি কোনও ব্যক্তি এমন কোনও বিষয়ের ওপর মানত করে, যা সেই ব্যক্তির জন্য কষ্টসাধ্য, তবে বিকল্প জিনিস দ্বারা মানত পূরণ করা বৈধ। বিশেষত বিকল্প যখন মূলের চেয়ে উত্তম হয়। যেমন— জাবির বিন আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, মক্কা বিজয়ের দিন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, নিশ্চয়ই আমি আল্লাহর জন্য মানত করেছি যে, আল্লাহ যদি আপনাকে মক্কায় বিজয়ী করেন, তবে বায়তুল মুকাদ্দাসে দুই রাকাত নামাজ আদায় করব। নবী (সা.) বলেন, তুমি এখানেই নামাজ আদায় করো। লোকটি তার কথার পুনরাবৃত্তি করল। রাসুল (সা.) বললেন, তুমি এখানে নামাজ আদায় করো। লোকটি আবারও তার কথার পুনরাবৃত্তি করল। নবী (সা.) তখন বললেন, এই ব্যাপারে তোমার স্বাধীনতা আছে। (সুনানে আবি দাউদ,    হাদিস : ৩৩০৫) মানতের কাফফারা মানত পূরণ না করলে ব্যক্তি কাফফারা দেবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, মানতের কাফফারা কসমের কাফফারার মতো। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৩৮৩৪) কসমের কাফফারা সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর এর কাফফারা ১০ জন দরিদ্রকে মধ্যম ধরনের খাবার দান করা—যা তোমরা তোমাদের পরিবারকে খেতে দাও, অথবা তাদেরকে কাপড় দান করা কিংবা একজন দাসকে মুক্ত করা। যার সামর্থ্য নেই তার জন্য তিন দিন রোজা পালন করা। ’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৮৯) আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন। আমিন।
০৪ মার্চ ২০২৪, ০৬:৩৩
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়