• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo
টিকটক ট্রলে দুর্বিষহ যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশি নারীদের জীবন
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় একটি যোগাযোগমাধ্যম টিকটক। বিশেষ করে রক্ষণশীল পরিবারের নারীরা এটি ব্যবহার করে বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলে থাকেন। তাদের বেশিরভাগ মতামতই নারীবাদকেন্দ্রিক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশি নারীদের স্বাধীন মত প্রকাশের ঠিক এই ব্যাপারটিই পছন্দ নয় হাসান সাঈদ নামে ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশি এক তরুণের। বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নারীদের অনলাইনে বুলিং করায় মত্ত সে। তার ভয়াবহ বুলিংয়ের শিকার হয়ে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে প্রবাসী বহু নারীর জীবন।  যুক্তরাজ্যে এমন বেশ কয়েকজন নারীর সন্ধান পেয়েছে বিবিসি। হাসানের ট্রলের শিকার ওই নারীদের অনেকে সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছেন, তাদের মানসিক অবস্থা এতটাই বিপর্যস্ত যে মাঝেমধ্যেই আত্মহত্যার চিন্তা নাড়া দিয়ে উঠছে মাথায়।   মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। তাতে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের পুলিশ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী ওই নারীরা। সুযোগে ক্রমেই আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে প্যারিসের উপকণ্ঠে বসবাসরত বাংলাদেশি ওই তরুণ। এমনকি অনেক নারীকে ধর্ষণ ও হত্যারও হুমকি দিচ্ছে সে।   যুক্তরাজ্যের ইয়র্কশায়ারে বসবাস করেন সুলতানা (ছদ্মনাম)। তিনি জানান, নারীবিদ্বেষ ও বাজে সম্পর্কের বিষয়ে টিকটকে আওয়াজ তোলেন তিনি।  ২০২১ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রলের শিকার হন তিনি। মূলত ট্রলের শিকার হওয়া তার এক বন্ধুর পক্ষে কথা বলার পর তিনিও হাসানের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন। হাসানের ট্রল এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল যে সামাজিকভাবে হেয় হয়ে মানসিকভাবে একেবারে ভেঙে পড়েন সুলতানা। নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছিল, মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। আমি কান্না করেছি। খেতে পারিনি, ঘুমাতে পারিনি। মনে হচ্ছিল, এখানে আর থাকতে চাই না।’ তিনি বলতে থাকেন, ‘আমি কাজে ছিলাম। এ সময় আমার কয়েকজন টিকটক ফলোয়ার আমাকে খুদে বার্তা পাঠান। তারা জিজ্ঞাসা করছিলেন, আমি হাসানের সেই ভিডিওগুলো দেখেছি কি না। সেই ভিডিও ও পোস্টগুলোতে লোকজন কমেন্ট করছিল। আমাকে নিয়ে তারা হাসাহাসি করছিল। এ ধরনের নিপীড়ন দুই বছর ধরে চলে। এটা এমন এক অভিজ্ঞতা, যা তিনি কখনো ভুলতে পারব না।’ সুলতানা বলেন, ‘আমার মানসিক স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে। সুস্থ হতে থেরাপি নিয়েছি। ট্রলের ঘটনাগুলো আমার অসুস্থতা বাড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি তা আমাকে পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিস-অর্ডারের দিকে ঠেলে দিয়েছে।’ ভুক্তভোগীরা বলেন, নারীদের স্বাধীন মতামত প্রকাশ পছন্দ করেন না রক্ষণশীল অনেক পুরুষ। নারীদের যেকোনোভাবে থামিয়ে দিতে চান তারা। এ জন্য অনলাইন বুলিংকে বেছে নেয় তারা। হাসান সাঈদ নামে প্যারিস প্রবাসী ওই যুবক ওই দলভুক্ত একজন।  হাসান মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তার শিকারদের ব্যক্তিগত ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করেন। এরপর সেগুলো গ্রিন স্ক্রিনে নিয়ে ট্রল ভিডিও তৈরি করেন। পরবর্তীতে টিকটক লাইভে এসে ভুক্তভোগী নারীদের চেহারা ও অন্যান্য বিষয়ে মজা করেন। নারীদের ধর্ষণ ও হত্যার হুমকিও দেন তিনি। হাসানের আরেক শিকার মাসুমা নামে যুক্তরাজ্যের ওয়েলসের এক নারী। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি তিনি টিকটিকে রান্নার ভিডিও বানান এবং অনলাইনে একটি দোকান চালান। একদিন এমন একটি লাইভ চলার সময় হাসান সেখানে উপস্থিত হন এবং তাকে তার অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানাতে বলেন। মাসুমা তাতে রাজি না হলে হাসান তাকে ‘ফাঁসিতে ঝোলানোর’ হুমকি দেন। এরপর মাসুমা একটি ভিডিও শেয়ার করে অন্যদের এ যুবকের বিষয়ে জানান এবং তার একাউন্টের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করার আহ্বান জানান। তাতে হাসান আরো রেগে যান এবং তাকে নিয়ে আজেবাজে ভিডিও বানানো শুরু করেন। একটি ভিডিওতে মাসুমাকে দেখিয়ে বলেন যে তিনি একজন যৌনকর্মী। মাসুমার অনুসারীরা রিপোর্ট করলে টিকটিক থেকে তার ওই ভিডিও সরিয়ে ফেলা হয়। তবে ওই ঘটনা জীবনের বড় এক ক্ষতি করে গেছে বলে মনে করেন এ তরুণী। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু নারীরাই নয়, হাসানের অনলাইন বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন পুরুষরাও। এসব ট্রলের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা বিভিন্নভাবে প্রতিকার পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। এমনই একজন কামরুল ইসলাম। হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করে এসব বুলিং বন্ধ করার আহ্বান জানান এ ভুক্তভোগী। এতে উল্টো ক্ষিপ্ত হয়ে কামরুলের পুরো পরিবার নিয়ে ট্রল শুরু করেন হাসান। এসব ভিডিও সরাতে পরে কামরুল টিকটক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু তারা তাকে সাফ জানিয়ে দেন, এসব তাদের কমিউনিটি গাইডলাইন লঙ্ঘন করেনি। তাই ভিডিওগুলো সরানো হবে না। কামরুল এরপর পুলিশের কাছেও অভিযোগ করেন। এতেও ট্রল না থামায় তিনি ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্যারিসে যুক্তরাজ্যের দূতাবাসে যোগাযোগ করেন। দূতাবাস ফরাসি আইনজীবী ম্যাথিউ ক্রোইজেতের সঙ্গে কামরুলের যোগাযোগ করিয়ে দেয়। কামরুলের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে প্যারিসের সরকারি কৌঁসুলির দপ্তরে অভিযোগ করেন এ আইনজীবী। কিন্তু এ মামলার কোনো রায় এখনো হয়নি। মামলার হালনাগাদ তথ্য জানতে প্যারিসের কেন্দ্রীয় পুলিশ স্টেশন ও আদালতে যোগাযোগ করে বিবিসি। কিন্তু এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত কোনো প্রতিউত্তর পাওয়া যায়নি।  
০৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:৩৩

যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের ৩ হাজার কোটি টাকার সম্পদ
বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যে প্রায় ২০০ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পদ রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় দাঁড়ায় প্রায় ২ হাজার ৭৬৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এ ছাড়াও যুক্তরাজ্যে তিনি ৩৫০টিরও বেশি সম্পত্তি নিয়ে গড়ে তুলেছেন রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে লন্ডনের উত্তর-পশ্চিম এলাকায় একটি প্রপার্টি ১১ মিলিয়ন পাউন্ডে বিক্রি হয়। রিজেন্টস পার্ক এবং লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড থেকে একদমই কাছে অবস্থিত ওই প্রোপার্টিটি যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের সবথেকে ধনী এলাকায় অবস্থিত। এই প্রপার্টির মালিক বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। বর্তমানে ওই প্রোপার্টির দাম ১৩ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি।  বাংলাদেশে যে মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে, এর অধীনে কোনো নাগরিক, বাসিন্দা ও সরকারি কর্মচারী বছরে ১২ হাজার ডলারের বেশি দেশের বাইরে পাঠাতে পারেন না। এ ছাড়াও নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ ও অনুমোদন ছাড়া কোনো করপোরেশনও বিদেশে অর্থ স্থানান্তর করতে পারে না। ২০১৬ সাল থেকে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো যুক্তরাজ্যে প্রায় ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ৩৫০টিরও বেশি প্রোপার্টির রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। এসব প্রোপার্টির মধ্যে রয়েছে লন্ডনের একদম কেন্দ্রে থাকা বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট থেকে শুরু করে টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকার কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্টও। ইংল্যান্ডের সবথেকে বড় বাংলাদেশি কমিউনিটির বাস এই টাওয়ার হ্যামলেটসেই। লিভারপুলে কিছু ছাত্রাবাসও রয়েছে তার। গত ডিসেম্বরে প্রাক-নির্বাচনী ঘোষণায় সাইফুজ্জামান তার মোট সম্পদের পরিমাণ ২৫৮ দশমিক তিন মিলিয়ন টাকা (দুই দশমিক চার মিলিয়ন ডলার) এবং তার স্ত্রী রুখমিলা জামানের মোট সম্পদের পরিমাণ নয় লাখ ৯৩ হাজার ডলার বলে জানান। তিনি বাংলাদেশে সম্পদের ঘোষণাপত্রে তার যুক্তরাজ্যের সম্পদের পরিমাণ দেখাননি। মন্ত্রী হিসেবে ২০২২-২৩ সালে তার বেতন প্রায় ১০ হাজার পাউন্ড হিসাবে দেখানো হয়। যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর প্রায় আড়াইশ প্রপার্টির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছে ব্লুমবার্গ। যখন এই প্রপার্টিগুলো কেনা হয়, তখন যুক্তরাজ্যজুড়ে তীব্র আবাসন সংকট চলছিল এবং এর ৯০ ভাগই ছিল সদ্য তৈরি নতুন বাড়ি। এই লেনদেনগুলি এমন একটি সময়ের মধ্যে ঘটেছিল যখন বৃটিশ সরকার বিদেশি সম্পত্তির মালিকানাকে আরও স্বচ্ছ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হকের সঙ্গে কথা বলছে ব্লুমবার্গ। মেজবাউল হক সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো মন্তব্য না করে বলেন, ‌‘বাংলাদেশে বসবাসরত অবস্থায় একজন ব্যক্তির বিদেশে সম্পদ অর্জনের কোনো বিধান নেই। সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, আমরা ব্যক্তিদের এ ধরনের কিছু করার অনুমতি দিই না।’ ব্লুমবার্গ তাদের প্রতিবেদনে উল্লিখিত কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, যাদের মধ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর জন্য সম্পত্তি কেনার সঙ্গে জড়িত আর্থিক সেবা ও আইনি প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে। যে সংস্থাগুলো এর জবাব দিয়েছে তারা জানায়, এক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। তবে বাণিজ্যিক গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে বিস্তারিত মন্তব্য দেয়নি তারা। বাংলাদেশের বাইরে তার সম্পত্তির মালিকানা বা তার সম্পদের ঘোষণা নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রী ও তার স্ত্রীর কাছ থেকে ব্লুমবার্গ কোনো সাড়া পায়নি। তবে, ২০১৪ সালে ভূমি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছিলেন, ‘আমি খালি হাতে এসেছি এবং আমি খালি হাতে চলে যাব।’ পরে ২০১৯ সালে তিনি ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।  
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২:৪০

যুক্তরাজ্যে উপনির্বাচনে ঋষি সুনাকের ভরাডুবি
যুক্তরাজ্যে দুটি জেলায় উপনির্বাচনে বড় ‘ধাক্কা’ খেলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। দুই আসনে উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন লেবার পার্টি নেতা। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বার্তা সংস্থা এপি। শুক্রবার উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে দেখা যায়, দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের কিংসউডের হাউস অব কমন্সের আসনে জয়ী হয়েছেন লেবার পার্টির প্রার্থী ড্যামিয়েন ইগান। দেশটির কেন্দ্রের ওয়েলিংবরোক শহরের আসনটি জিতেছেন দলটির নেতা জেন কিচেন। এপির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে এ দুই আসনে বড় ব্যবধানে জিতেছিলেন রক্ষণশীলরা। বৃহস্পতিবারের বিশেষ নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হয়েছে। নির্বাচনে লেবার পার্টির দু’জন নেতাকে বিজয়ী করেছেন ব্রিটিশ ভোটাররা। জানা গেছে, গত মাসে কিংসউডের আসন ছেড়েছেন কনজারভেটিভ দলের নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্রিস স্কিডমোর। এদিকে যৌন অসদাচরণের অভিযোগে ওয়েলিংবরোকের সাবেক সংসদ সদস্য পিটার বোনকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে।
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:৪২

যুক্তরাজ্যে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের
রাশিয়ার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার ধারাবাহিকতায় যুক্তরাজ্যে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র; যা গত ১৫ বছরের মধ্যে প্রথম। এর আগে ২০০৮ সালে আরএএফ লেকেনহেথে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। পরবর্তীতে মস্কোর পক্ষ থেকে স্নায়ুযুদ্ধের হুমকি কমে যাওয়ায় সরিয়ে ফেলা হয় সেগুলো। পেন্টাগনের নথিপত্র যাচাই করে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রস্তাবের অধীনে হিরোশিমায় নিক্ষিপ্ত বোমার চেয়ে তিনগুণ শক্তিশালী ওয়ারহেডগুলো সাফোকের আরএএফ লেকেনহেথে স্থাপন করা হবে। নথি ঘেঁটে দেখা যায়, যুক্তরাজ্যের এই সামরিক ঘাঁটির জন্য নতুন অস্ত্র কেনার আদেশ দিয়েছে পেন্টাগন। এই তালিকায় আছে শত্রুপক্ষের আক্রমণ থেকে সামরিক কর্মীদের রক্ষা করার জন্য ব্যালিস্টিক শিল্ডসহ নতুন বেশ কিছু সরঞ্জাম। আর সেখানে কাজ করা মার্কিন সেনাদের জন্য আগামী জুন মাসে শুরু হবে নতুন আবাসন ব্যবস্থা নির্মাণকাজ। আরএএফ লেকেনহেথের কাছে ৫০ কিলোটনের বি৬১-১২ গ্র্যাভিটি বোমা থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে—যার ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা ১৯৪৫ সালে হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়েও তিনগুণ বেশি। যুক্তরাজ্যের এই বিমান ঘাঁটির জন্য নতুন অস্ত্র ক্রয়ের চুক্তি প্রকাশ হওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র সেখানে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপন করতে চাইছে। পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে সরাসরি কিছু না বলেও যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উল্লেখিত স্থানে পারমাণবিক অস্ত্রের উপস্থিতি নিশ্চিত বা অস্বীকার করার ব্যাপারে যুক্তরাজ্য এবং ন্যাটোর একটি দীর্ঘস্থায়ী নীতি রয়েছে। ন্যাটো বাহিনী এবং রাশিয়ার মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যকে প্রস্তুত থাকার জন্য সম্প্রতি আটলান্টিকের উভয় প্রান্তের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের কাছ থেকেই সতর্কতা এসেছে। এ সপ্তাহের শুরুতে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর বিদায়ী প্রধান জেনারেল স্যার প্যাট্রিক স্যান্ডার্স বলেন, সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুত হতে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ৭৪ হাজার কর্মকর্তার মধ্যে কমপক্ষে ৪৫ হাজারকে মোতায়েন রাখতে হবে। জনগণকেও যুদ্ধের জন্য ডাকা হবে কারণ, সেনাবাহিনীর আকার বেশ ছোট। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ক্রেমলিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের উত্তেজনা ক্রমেই বাড়তে থাকে। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্র বাড়ানো এবং সেগুলোকে আরও উন্নত করার কর্মসূচি গ্রহণ করে ন্যাটো।  তবে, যুক্তরাজ্যে পুনরায় মার্কিন পারমাণবিক বোমা মোতায়েনের পরিকল্পনা ভালোভাবে নেয়নি রাশিয়া। তারা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনাকে উসকানি হিসেবে দেখবে মস্কো। একইসঙ্গে তা মোকাবিলায় পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ক্রেমলিন।
২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:৪৬

পাকিস্তানে অপহৃত তাজের জন্য যুক্তরাজ্যে অবস্থান কর্মসূচি
করাচিতে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার হাতে জোরপূর্বক নিখোঁজ হওয়া বেলুচ ব্যবসায়ী তাজ মুহাম্মদ সারপারাহের পরিবার লন্ডনের ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে পাঁচ দিনের অবস্থান শিবিরে অবস্থান নিয়েছে। বেলুচিস্তান পোস্টে এ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে। তাজ মুহাম্মদ সারপারাহের স্ত্রী, সন্তান, আত্মীয়স্বজন এবং যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বেলুচ রাজনৈতিক কর্মীরা এই বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন। এই বিক্ষোভ অবস্থান কর্মসূচি ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। নিখোঁজ তাজ মুহাম্মদ সারপারাহের স্ত্রী এবং বেলুচ জাতীয় নেতা বাবা খায়ের বখশ মারির ভাগ্নি সালিয়া মারি বলেছেন, তিনি গত চার বছর ধরে পাকিস্তানে তার স্বামীকে অবৈধভাবে আটক এবং জোরপূর্বক গুমের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। তিনি পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের সহায়তার অভাব এবং তার স্বামীকে আদালতে হাজির করতে ব্যর্থতার বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বেলুচিস্তান পোস্টের খবরে বলা হয়, পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো সন্তোষজনক সহায়তা পাননি তিনি এবং তার স্বামীকেও আদালতে হাজির করা হয়নি। মারি আরও বলেন, একজন বেলুচ নাগরিক হওয়ায় তাকে পাকিস্তানি রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো জোর পূর্বক গুম করেছে। তাছাড়া তার মতে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভের উদ্দেশ্য ছিল বেলুচিস্তানে পাকিস্তানি সহিংসতা বন্ধ এবং বেলুচিস্তানে নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধার নিশ্চিত করতে ব্রিটিশ সরকারকে ভূমিকা রাখার দাবি জানানো। জানা গেছে, সারপারাহ বেলুচ পরিবার রাজনৈতিক কর্মী, অন্যান্য মানবাধিকার কর্মী এবং লন্ডনের মিডিয়াকে এই অবস্থান বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ইসলামাবাদের জাতীয় প্রেস ক্লাবে বেলুচ গণহত্যা ও গুমের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভের পর এই অবস্থান ধর্মঘটের ঘোষণা আসে। তাদের আল্টিমেটাম দিয়ে বেলুচ ইয়াকজাহতি কমিটি-কেচ জোর দিয়ে বলেছে যে, এই সপ্তাহে রাষ্ট্রকে বেলুচ জনগণকে স্পষ্ট করতে হবে যে তারা বেলুচ গণহত্যার ইস্যুটি মোকাবেলায় কতটা আন্তরিক।
০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:২৮

যুক্তরাজ্যে আর পরিবার নিতে পারবেন না বিদেশি শিক্ষার্থীরা
যুক্তরাজ্যের নতুন শিক্ষার্থী ভিসার আওতায় বিদেশি শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবারের সদস্যদের আর সে দেশে নিতে পারবেন না। তবে স্নাতকোত্তর গবেষণা কোর্স করা বা সরকারের অনুদানের বৃত্তি পেয়ে কোর্স করা শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর নির্ভরশীল সদস্যদের যুক্তরাজ্যে নিয়ে যেতে পারবেন। নতুন নিয়ম চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। বৈধ অভিবাসনের ঢল ঠেকাতে ২০২৩ সালে একটি আইন পাস করে ব্রিটেনের পার্লামেন্ট। সে আইনের অধীনে এই সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অভিবাসন সীমিত করার পদক্ষেপ হিসেবে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উদ্যোগটি যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হওয়া আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য কঠোর ভিসানীতির একটি অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স (সাবেক টুইটার)-এ একটি পোস্টে বলেছে, ‘অভিবাসন সীমিত করার ক্ষেত্রে আমরা সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এখন থেকে নতুন বিদেশি শিক্ষার্থীরা আর তাদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাজ্যে আনতে পারবে না। তবে স্নাতকোত্তর গবেষণা বা সরকারি অর্থায়নে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ছাড় দেওয়া হবে।’ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও গত মঙ্গলবার এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট করেছেন। ২০২৩ সালের মে মাসে সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান প্রাথমিকভাবে এ বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করেছিলেন। নতুন এই নিয়মের ফলে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষের যুক্তরাজ্যে আসা কমবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রীসভার এক সদস্য।  স্বরাষ্ট্র সচিব জেমস একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই সরকার অভিবাসন কমানোর জন্য ব্রিটিশ জনসাধারণের প্রতি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা রেখেছে। আমরা দ্রুত এই সংখ্যা কমাতে, নিজেদের নিয়ন্ত্রণ রাখতে এবং আমাদের অভিবাসন ব্যবস্থাকে ঠিক রাখতে কঠিন পরিকল্পনা তৈরি করেছি। যা এই বছরজুড়ে কার্যকর হবে।’  জেমস আরও বলেন, এই পরিবর্তনের ফলে অভিবাসন দশ হাজারে দ্রুত নেমে আসবে। যার ফলে ৩ লাখ মানুষ  যুক্তরাজ্যে আসতে পারবে না। সরকার মেধাবী শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যে আনার জন্য একটি বিকল্প পদ্ধতির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে কাজ করবে। যাতে মেধাবী শিক্ষাথীরা তাদের ওপর নির্ভরশীলদের যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসতে পারে পাশাপাশি অভিবাসনের মাত্রাও কমে। সূত্র: এনডিটিভি
০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:৩৬
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়