• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo
৫ দিনে ‘বড়ে মিয়া ছোটে মিয়া’র আয় ১২৬ কোটি টাকা
বলিউডের জনপ্রিয় দুই তারকা অক্ষয় কুমার ও টাইগার শ্রফ। গত ১০ এপ্রিল মুক্তি পেয়েছে তাদের অভিনীত সিনেমা ‘বড়ে মিয়া ছোটে মিয়া’। সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন আলী আব্বাস জাফর। মুক্তির পর থেকেই বক্স-অফিসে রীতিমতো ঝড় তুলেছে সিনেমাটি। মুক্তির ৫ দিনে ১২৬ কোটি টাকা ঘরে তুলেছে ‘বড়ে মিয়া ছোটে মিয়া’।  বর্তমানে ভারতের সাড়ে ৩ হাজার পর্দায় প্রদর্শিত হচ্ছে অক্ষয়-টাইগারের ‘বড়ে মিয়া ছোটে মিয়া’। মুক্তির প্রথম দিনে চলতি বছরে সবচেয়ে বেশি আয় করা বলিউড সিনেমার তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থান দখল করেছে এটি। মুক্তির প্রথম দিনই ১৫ কোটি রুপি আয় করে সিনেমাটি।   বলি মুভি রিভিউজ ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে মুক্তির প্রথম দিনে ‘বড়ে মিয়া ছোটে মিয়া’ আয় করে ১৫ কোটি রুপি, দ্বিতীয় দিন ৭ কোটি রুপি, তৃতীয় দিন ৮.২৫ কোটি রুপি, চতুর্থ দিন আয় ৮.৭৫ কোটি রুপি, পঞ্চম দিনে আয় করে ৩ কোটি রুপি। ভারতে ‘বড়ে মিয়া ছোটে মিয়া’র মোট আয় ৪২ কোটি রুপি। অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী সিনেমাটির মোট আয় ৯৬.১৮ কোটি রুপি। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকার বেশি। জানা গেছে, ২৫ বছর আগে ‘বড়ে মিয়া ছোটে মিয়া’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন অমিতাভ বচ্চন ও গোবিন্দ। সেসময় বক্স-অফিসে ব্যাপক সফলতা পায় সিনেমাটি। বলা যায়, রীতিমতো বাজিমাত করেছিল অমিতাভ-গোবিন্দের ‘বড়ে মিয়া ছোটে মিয়া’। এবার একই নামের সিনেমা ‘বড়ে মিয়া ছোটে মিয়া’-তে অভিনয় করে রীতিমতো পর্দা মাতাচ্ছেন অক্ষয়-টাইগার। আর এই সিনেমাতেই একসঙ্গে প্রথম অভিনয় করলেন তারা। প্রসঙ্গত, অ্যাকশন-থ্রিলার ঘরানার এই সিনেমায় অক্ষয়-টাইগার ছাড়া আরও অভিনয় করেছেন— পৃথ্বীরাজ সুকুমারন, সোনাক্ষী সিনহা, মানসী চিল্লার, মনীষ চৌধুরানী প্রমুখ। এটি প্রযোজনা করেছেন রাকুল প্রীত সিংয়ের বর জ্যাকি।    
১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:০৭

বলিউডে ঈদের সিনেমা ‘বড়ে মিয়া ছোটে মিয়া’
প্রতিবছরই ঈদ উপলক্ষে বলিউডে একাধিক সিনেমা মুক্তি পায়। তবে চলতি বছরের ঈদুল ফিতরে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ‘বড়ে মিয়া ছোটে মিয়া’ সিনেমাটি। ২৫ বছর আগে একই নামের সিনেমা অভিনয় করেছিলেন অমিতাভ বচ্চন ও গোবিন্দ।  সেসময় বক্স-অফিসে ব্যাপক সফলতা পায় সিনেমাটি। বলা যায়, রীতিমতো বাজিমাত করেছিল অমিতাভ-গোবিন্দের ‘বড়ে মিয়া ছোটে মিয়া’।     এবার ঈদে একই নামের সিনেমায় ‘বড়ে’ ও ‘ছোটে’ মিয়া হয়ে আসছেন বলিউডের দুই প্রজন্মের দুই অ্যাকশন হিরো অক্ষয় কুমার ও টাইগার শ্রফ। এই সিনেমাতেও  একসঙ্গে প্রথম অভিনয় করলেন তারা। সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন আব্বাস জাফর।  এদিকে অক্ষয়কে ‘বড়ে’ সম্বোধন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টাইগার লিখেছেন, ‘আমি যে বছর জন্মেছি, সে বছর বলিউডে পা রেখেছেন আপনি। তবে আমি নিশ্চিত, আপনি এখনও লাফ দিয়ে আমার চেয়ে উঁচুতে উঠতে পারবেন।’   অন্যদিকে টাইগারকে উদ্দেশ করে অক্ষয় লেখেন, যে বছর আমার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছে, সে বছরই তুমি জন্ম নিয়েছো। তাই তো এই সিনেমাটি আমার জন্য অনেক বেশি আবেগের।’  জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘বড়ে মিয়া ছোটে মিয়া’ সিনেমায় দুই নায়িকা ছিলেন রাভিনা ট্যান্ডন ও রামাইয়া কৃষ্ণন। প্রথম সিনেমাটি মূলত কমেডি ঘরানার ছিল। কিন্তু এবারের সিনেমাটি অ্যাকশনে ভরপুর। এই সিনেমায় অক্ষয়-টাইগারের নায়িকা হয়েছেন মানুষী চিল্লার এবং আলায়া ফার্নিচারওয়ালা।  বলাই যায়, ‘বড়ে মিয়া ছোটে মিয়া’র রিমেক সিনেমাটি ভিন্ন মাত্রা যোগ করতে চলেছে। চলতি বছর ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাচ্ছে অক্ষয়-টাইগার অভিনীত সিনেমা ‘বড়ে মিয়া ছোটে মিয়া’।  
১০ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:২৮

ঘানি টেনে তেল বের করা সেই দুদু মিয়া পেলেন গরু সহায়তা
বগুড়া সারিয়াকান্দির ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের ছাইহাটা গ্রামের বৃদ্ধ দুদু মিয়াকে (৬২) গরু সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে।  মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিকেলে এ সহায়তা প্রদান করেছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা কর্নেল জগলুল আহসান।  তিনি এ উপজেলার নারচী ইউনিয়নের বাঁশগাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। দুদু মিয়া ও তার স্ত্রী হালিমা বেগম দীর্ঘ ৯ বছর ধরে নিজেদের কাঁধে জোয়াল নিয়ে তেলের ঘানি টেনে সরিষা থেকে তেল বের করে অনেক কষ্টে সংসার চালাতেন। এ বিষয়ে গত ১৪ মার্চ আরটিভিতে সরাসরি ভিডিও চিত্র প্রকাশ করা হয়। দুদু মিয়ার আগে ছিল গোয়ালভরা গরু এবং বসতভিটাসহ বেশ কিছু কৃষিজমি। বেশ কয়েকবছর আগে তিনি বাঙালি নদী ভাঙনের শিকার হন। সামান্য জমি কিনে ছাইহাটা গ্রামে বসবাস শুরু করেন। গত কয়েকবছর আগে তার একমাত্র নাতনির দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসার জন্য তিনি তার এ ভিটেমাটিও বিক্রি করেন। বিক্রি করেন তার তেলের ঘানি টানা সবগুলো গরু। পরে তিনি নিজেই গরুর বদলে তেলের ঘানির জোয়াল কাঁধে নেন। সারাদিন যা তেল পান তা বাজার বা গ্রামে বিক্রি করে চলতো তার সংসার। এ কাজে তার স্ত্রী হালিমা বেগম তাকে সহযোগিতা করতেন। তিনিও কাঁধে জোয়াল নিয়ে তেলের ঘানি টানতেন। এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সংবাদে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা কর্নেল জগলুল আহসান তাকে একটি গরু কিনে দিয়েছেন এবং তেলের ঘানিটি মেরামত করতে নগদ অর্থ প্রদান করেছেন। বৃদ্ধ দুদু মিয়া বলেন, ‘গরুডা পায়া হামি খুবই খুশি হছি। আল্লাহ যেন কর্নেল সাহেবের ভালোই করেন। আজ থেকে হামার ঘার থেকে জোয়াল নামল। হামার চির ভোগান্তির অবসান হলো। আর হামার নিজের কাঁধে জোয়াল টানা নাগবি নে।’ অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা কর্নেল জগলুল আহসান বলেন, বৃদ্ধ দুদু মিয়াকে এ সহযোগিতা প্রদান করতে পারায় আমিও খুবই খুশি। এতে তার চির কষ্টের অবসান হয়েছে। বেশ কয়েকবছর ধরেই আমি গ্রামের অসহায় মানুষদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি।
২০ মার্চ ২০২৪, ১৪:৫৫

চায়ের দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, দগ্ধ ১
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি চায়ের দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হারুন মিয়া (৫০) নামে একজন দগ্ধ হয়েছেন। শুক্রবার (১৫ মার্চ) দুপুরে সদর উপজেলার ফতুল্লার ইসদাইর বুড়ির দোকান এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দগ্ধ হারুন মিয়াকে উদ্ধার করে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এবং প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। হারুন মিয়ার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের কাঠেরপুল এলাকায়। স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, দুপুরে জুমার নামাজ শেষে দোতলা বাড়ির নিচ তলায় থাকা চায়ের দোকান খুলতে যায় হারুন। এ সময় চুলা জ্বালাতে গেলে বিস্ফোরণ ঘটে এবং দোকানে আগুন ধরে যায়।  পরে আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে আগুন নিভিয়ে দগ্ধ অবস্থায় হারুনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আগুনে হারুন মিয়ার শরীর বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে।
১৫ মার্চ ২০২৪, ১৯:৩১

৩ গুণীজনের ওয়াজেদ মিয়া স্বর্ণপদক অর্জন
দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় ‘ওয়াজেদ মিয়া স্বর্ণপদক-২০২৪’ পেয়েছেন তিন গুণীজন। সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ কবি, কথাসাহিত্যিক ও লোকসাহিত্য গবেষক রাজু অনার্য, ক্রীড়ায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাবেক ফুটবলার ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কোচ সুজিত কুমার ব্যানার্জী (চন্দন) এবং সংগঠক হিসেবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের এক্সিকিউটিভ মেম্বার ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জাকির হোসেন চৌধুরী এই পদক পেয়েছেন। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়ার ৮২তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা শেষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এই তিন গুণীজনকে সংবর্ধনা ও পদক দেওয়া হয়। জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এই আলোচনা সভা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন। পদক পাওয়া গুণীজনেরা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, এই স্বীকৃতি তাদের কাজের গতিকে আরও বেগবান করবে। নিজ নিজ কাজের ক্ষেত্রে আরও এগিয়ে যেতে উৎসাহ পাবেন তারা। ওয়াজেদ মিয়ার জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনায় ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সভাপতি এ. কে. এম কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত কুমার নন্দী। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস সালাম, ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. মশিউর রহমান প্রমুখ।  
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২:১৩

ড. ইউনূসের পক্ষে ১২ মার্কিন সিনেটরের চিঠি কি অজ্ঞতাপ্রসূত?
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে সমালোচনা এখন তুঙ্গে। সম্প্রতি তাঁকে ‘হয়রানি’ করা হচ্ছে বলে দাবি করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ১২ জন সিনেটর। এই নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর একটি চিঠিও দিয়েছেন তারা। গত ২২ জানুয়ারি ইস্যুকৃত চিঠিটি পড়ে জানা যায়, ড. ইউনূসের প্রতি কথিত ক্রমাগত হয়রানি বন্ধের দাবি জানান তারা। তবে এতে করে একটা জিনিস স্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, তাদের এ প্রতিবাদের সঙ্গে কৌশলে বাংলাদেশ ও এর সরকারবিরোধীদের পক্ষ নিয়ে তাদের পক্ষে দাবি জুড়ে দিয়েছেন তারা। তাছাড়াও সরকারবিরোধীদেরকে কৌশলে ‘সরকারের সমালোচক’ তকমা দিয়ে ঐ ১২ সিনেটর বলেছেন, তাদেরকে লক্ষ্য করে আইন ও বিচার ব্যবস্থার অপব্যবহার বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছেন তারা। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর পাঠানো এ চিঠিতে মার্কিন সিনেটররা লিখেছেন, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে ১৫০টিরও বেশি অপ্রমাণিত মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রমে অনিয়ম হয়েছে। দেশের শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে  নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। যে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে। আর এখানেই রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিচারিক অপব্যবহার দেখতে পাচ্ছেন ১২ মার্কিন সিনেটর। এবারে ঘোলা জল কিছুটা পরিষ্কার করা হোক!   ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে এ মামলা সরকার করেনি। বরং শ্রমিকেরাই করেছেন এ মামলা। ছুটি নগদায়ন এবং শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের বিভিন্ন বকেয়া পাওনার দাবিতে ২০১৬ সালে প্রথম মামলা করেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ১৪ কর্মী, সরকার নয়। পরে বকেয়া পাওনা চেয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে ৯৩টি মামলা করেন তার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি গ্রামীণ টেলিকমের বর্তমান কর্মীরা।  ঢাকার শ্রম আদালতে সব মিলিয়ে ১০৭টি মামলা করা হয়। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এখানে সরকারকে কোথা থেকে খুঁজে পেলে মার্কিন সিনেটররা? আসলে বাংলাদেশ সরকারকে চাপে রাখার যে মার্কিন খোলামেলা অপচেষ্টা অনেকদিন ধরে করে আসছে; বিশেষ করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে, এখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে ১২ মার্কিন সিনেটরের এসব বানোয়াট বিবৃতি সেই মিশনেরই অংশ।  আমাদের কাছে এর যথেষ্ট প্রমাণও রয়েছে।নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ কাগজে কলমেও প্রমাণিত হয়েছে। ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় গত ১ জানুয়ারি ২০২৪ এ রায় দেন ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা।  ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে ওই মামলা করেন। লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। এবারে আমরা যদি একটু পিছনে ফিরে তাকাই, তাহলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়ে উঠবে। ১৯৯৭ সালে কোম্পানি আইন অনুযায়ী গঠিত হয় “গ্রামীণ টেলিকম”। কোম্পানি গঠনের শর্ত মোতাবেক গ্রামীণ টেলিকম তাদের অর্জিত লভ্যাংশের ৫% হারে শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ তহবিলে দেওয়ার কথা। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ টেলিকম কোম্পানি “গ্রামীণ ফোনের” ৩৪.২০% শেয়ারের মালিক গ্রামীণ টেলিকম। কিন্তু কোম্পানি আইনের শর্তে গ্রামীণ টেলিকম কোনো শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ তহবিল তো গঠন করেইনি, জমাও করেনি লভ্যাংশের ৫%। এ লভ্যাংশের এক দশমাংশ দেওয়ার কথা ছিল জাতীয় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে। কিন্তু নথি ঘেঁটে দেখা যায় ২০১৩-১৭ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে ৫% লভ্যাংশের দশ ভাগের এক ভাগ হিসেবে ৯৪ কোটি ২ লাখ ৯৮ হাজার ৬৮ টাকা জমা দিয়েছে “গ্রামীণ টেলিকম”। ৫ বছরে গ্রামীণ টেলিকমের “শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ তহবিলে” দেওয়ার কথা ৯৪০ কোটি টাকার মতো। ১৯৯৭ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ২৫ বছরে ৫% লভ্যাংশ হিসাবে শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ তহবিলে জমা হওয়ার কথা এর ৫ গুণ টাকা। যার মোটামুটি হিসাব দাঁড়ায় ৪৭০০ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে ওই মামলা করেন। কিন্তু বারবারই মিথ্যাচার করে পার পেয়ে গেছেন তিনি। গ্রামীণ টেলিকম জানিয়েছে, তারা ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের ২৮ নম্বর ধারায় সৃষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানকে তারা বলছে ‘নট ফর প্রফিট কোম্পানি। বস্তুত এই আইনের দোহাই দিয়েই তারা বক্তব্যে উল্লেখ করেছে, “কোম্পানি আইন অনুযায়ী যার (গ্রামীণ টেলিকম) লভ্যাংশ বিতরণযোগ্য নয়।”  কোম্পানি আইনের ২৮ ধারা তলিয়ে দেখলেই তাদের মিথ্যাচারটি ধরা পড়ে। কেননা এই আইনের প্রথম উপধারাতেই আছে, “যদি সরকারের নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রমাণিত হয় যে, সীমিতদায় কোম্পানি হিসাবে গঠিত হওয়ার যোগ্য কোন সমিতি বাণিজ্য, কলা, বিজ্ঞান, ধর্ম, দাতব্য বা অন্য কোন উপযোগিতামূলক উদ্দেশ্যের উন্নয়নকল্পে গঠিত হইয়াছে অথবা গঠিত হইতে যাইতেছে এবং যদি উক্ত সমিতি উহার সম্পূর্ণ মুনাফা বা অন্যবিধ আয় উক্ত উদ্দেশ্যের উন্নতিকল্পে প্রয়োগ করে বা প্রয়োগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করে এবং উহার সদস্যগণকে কোন লভ্যাংশ প্রদান নিষিদ্ধ করে, তবে সরকার উহার একজন সচিবের অনুমোদনক্রমে প্রদত্ত লাইসেন্সের মাধ্যমে এই মর্মে নির্দেশ দিতে পারিবে যে, উক্ত সমিতির নামের শেষে “সীমিতদায়” বা “লিমিটেড” শব্দটি যোগ না করিয়াই উহাকে একটি সীমিতদায় কোম্পানি হিসাবে নিবন্ধনকৃত করা হউক, এবং অতঃপর উক্ত সমিতিকে তদনুযায়ী নিবন্ধনকৃত করা যাইতে পারে।” সুতরাং এখানেই প্রমাণিত হয় যে, এ মামলাতে মিথ্যাচার করা হয়েছে। এবারে আসি চাকরি স্থায়ীকরণ না করা প্রসঙ্গে।  ড. ইউনুসের পক্ষে থেকে বলা হয়েছে, “গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হয়।” তারা যুক্তি দিয়ে বলেছে, যেহেতু গ্রামীণ টেলিকমের সকল ব্যবসায়িক কার্যক্রম চুক্তিভিত্তিক, তাই তাদের নিয়োগও চুক্তিভিত্তিক। তবে আইন অনুযায়ী তাদের দাতব্য বা উন্নয়নমূলক কাজ করার কথা। অর্থাৎ তার নিজের কথাতেই নিজের কাজের অসামঞ্জস্য ফুটে উঠেছে। গ্রামীণ টেলিকম তাদের বক্তব্যে  বলেছে, তারা কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে স্থায়ী করে না, বরং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়, এ দাবিটি মিথ্যা ও আইনের দৃষ্টিতে শাস্তিমূলক।  শ্রমিক ঠকানোর জন্য তারা শিখণ্ডী হিসেবে শ্রম আইন ২০০৬ এর চতুর্থ ধারার কথা উল্লেখ করেছে। কিন্তু এ আইন তারা মানেনি। একটু তলিয়ে দেখলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়। শ্রম আইনের ৪(১) ধারা অনুযায়ী শ্রমিকের যে শ্রেণিবিন্যাস দেওয়া আছে, সেখানে ‘চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক’ বলে কোনো কথা নেই, কোনো শ্রেণিবিন্যাসও নেই। এ আইনের ৫, ৬ ও ৭ ধারায় বিভিন্ন শ্রেণির শ্রমিকের কাজের বণ্টন দেওয়া আছে। গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ নীতিমালা যে শ্রমিকদের কীভাবে বঞ্চিত করছে, এটাই তার স্পষ্ট  প্রমাণ। এবারে আসি  লভ্যাংশের টাকার ব্যাপারে। রিভিউ কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রামীণ টেলিকমের আর্থিক প্রবাহ থেকে দেখা যাচ্ছে- এই টাকা প্রথমে গেছে ‘গ্রামীণ উদ্যোগ’ নামের প্রতিষ্ঠানে। সেখান  থেকে গেছে ‘গণশিক্ষা-গ্রামীণ টেক্সটাইল মিল’ ও ‘গ্রামীণ শিক্ষা’ নামক প্রতিষ্ঠানে। আরও টাকা গেছে ‘গ্রামীণ সলিউশনস লিমিটেড’, ‘গ্রামীণ আইটি পার্ক লিমিটেড’, ‘গ্রামীণ-ডানো ফুড লিমিটেড’, ‘গ্রামীণ ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড’, ‘গ্রামীণ ফেব্রিকস ও ফ্যাশন লিমিটেড’ ও ‘গ্রামীণফোন’ নামক কোম্পানিতে। টাকা গেছে ‘গ্রামীণ হেলথ কেয়ার সার্ভিস লিমিটেডে’। এখান থেকে টাকা গেছে ‘গ্রামীণ ভ্যেয়োলা ওয়াটার লিমিটেডে’। টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে ‘গ্রামীণ হেলথ কেয়ার ট্রাস্ট লিমিটেডে। এর টাকা আবার বিনিয়োগ হয়েছে ‘বিএএসএফ গ্রামীণ লিমিটেডে’। টাকা গেছে ‘গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্ট’ নামক কোম্পানিতে। এর টাকা আবার গেছে ‘গ্রামীণ মৎস্য ও পশু সম্পদ ফাউন্ডেশনে’।  অর্থাৎ কোম্পানি আইনের ২৮ ধারা ভঙ্গ করে তারা এক কোম্পানি থেকে আরেক কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছে (অনুদান নয় কিন্তু)।প্রতিটি কোম্পানি ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে, কারণ তাদের অডিট প্রতিবেদনে আরও বাণিজ্যিক বিনিয়োগের তথ্য আছে। অর্থাৎ যে আইনের দোহাই দিয়ে তারা শ্রমিক কল্যাণ তহবিল গঠন করলো না, সেই একই আইন ভঙ্গ করে তারা বাণিজ্যিক বিনিয়োগ করলো। এমনকি শ্রম আইন লঙ্ঘনের সকল অভিযোগ,  মামলা ধামাচাপা দেয়ার জন্য এবং রায় নিজের পক্ষে আনার জন্য নীল নকশা তৈরি করে। পাশাপাশি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে দালালের আশ্রয় নেয়।  এবারে আমার প্রশ্ন হচ্ছে,এতকিছুর পরেও কীভাবে মার্কিন সিনেটররা দাবি করে যে ড. ইউনূসের সাথে অন্যায় হচ্ছে। এবং সে ইস্যুতে দেশের সরকার বরাবর চিঠি পাঠাচ্ছে? বরং এটাই প্রতীয়মান হচ্ছে যে, ন্যায়ের নাম করে তারা অজ্ঞাতভাবেই সরকার বিরোধী কাজ করছে যা আপাত দৃষ্টিতে সরকারবিরোধীদেরকেই সমর্থন করছে। লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:৪৩
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়