তিউনিসিয়ায় নৌ-দুর্ঘটনায় নিহত ৮ বাংলাদেশির পরিচয় মিলেছে
ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া উপকূলে ঘটে যাওয়া নৌ-দুর্ঘটনায় নিহত ৮ বাংলাদেশির পরিচয় মিলেছে। নিহত বাংলাদেশিদের মধ্যে মাদারীপুর জেলার ৫ জন এবং গোপালগঞ্জের ৩ জন। নৌকাটি থেকে আরও ২৭ জন বাংলাদেশিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়, যাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক একজনের অবস্থা।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের এক ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়, উদ্ধারকৃত বাংলাদেশিদের সার্বিক কল্যাণ ও মৃত্যুবরণকারীদের তথ্য নিশ্চিত করতে দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মো. রাসেল মিয়ার নেতৃত্বে একটি টিম ১৯ ফেব্রুয়ারি তিউনিসিয়ার জারজিস শহরে পৌঁছান। তারা ইতোমধ্যে নৌ-দুর্ঘটনায় জীবিত উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে হতাহত বাংলাদেশিদের প্রাথমিক পরিচয় নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাংলাদেশি নাগরিকের নাম মনতোষ সরকার বলে জানা গেছে। মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার আমগ্রাম ইউনিয়নের মনোরঞ্জন সরকারের ছেলে তিনি।
এছাড়া নৌ-দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশিরা হলেন–
১) সজল, গ্রাম- শেনদিয়া, ডাক- খালিয়া, উপজেলা : রাজৈর, জেলা : মাদারীপুর।
২) নয়ন বিশ্বাস, বাবা : পরিতোষ বিশ্বাস, গ্রাম : কদমবাড়ি উত্তরপাড়া, ডাকঘর : কদমবাড়ি, উপজেলা : রাজৈর, জেলা : মাদারীপুর।
৩) মামুন সেখ, গ্রাম : সরমঙ্গল, ডাকঘর : খালিয়া (টেকেরহাট ১ নম্বর ব্রিজ), উপজেলা : রাজৈর, জেলা : মাদারীপুর।
৪) কাজি সজীব, বাবা : কাজী মিজানুর, মা : রেণু বেগম, গ্রাম : তেলিকান্দি, ইউনিয়ন : বাজিতপুর নতুন বাজার, উপজেলা : রাজৈর, জেলা : মাদারীপুর।
৫) কায়সার, গ্রাম : কেশরদিয়া, ইউনিয়ন : কবিরাজপুর, উপজেলা : রাজৈর, জেলা : মাদারীপুর।
৬) রিফাত, বাবা : দাদন, গ্রাম : বড়দিয়া, ইউনিয়ন : রাগদী, উপজেলা : মুকসুদপুর, জেলা : গোপালগঞ্জ।
৭) রাসেল, গ্রাম : ফতেহপট্টি, ইউনিয়ন : দিগনগর, উপজেলা : মুকসুদপুর, জেলা : গোপালগঞ্জ।
৮) ইমরুল কায়েস আপন, বাবা : মো. পান্নু শেখ, মা : কামরুন্নাহার কেয়া, গ্রাম : গয়লাকান্দি, ইউনিয়ন : গঙ্গারামপুর গোহালা, উপজেলা : মুকসুদপুর, জেলা : গোপালগঞ্জ
দূতাবাসের পক্ষ থেকে নিহত বাংলাদেশিদের বিস্তারিত তথ্য নিশ্চিত করে স্থানীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের মৃতদেহ দেশে পাঠানোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এই লক্ষ্যে তিউনিসিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছে দূতাবাস। এছাড়াও দুর্ঘটনায় জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিদের দেশে পাঠানোসহ তাদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে দূতাবাসের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি একটি অভিবাসী দল নৌকায় করে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় লিবিয়ার জুয়ারা উপকূল থেকে ইউরোপের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। যাত্রাপথে নৌকাটি তিউনিসিয়া উপকূলে পৌঁছালে মধ্যরাত ৪টা ৩০ মিনিটে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। নৌকাটিতে মোট ৫৩ জন ছিল। এদের মধ্যে ছিলেন ৫২ জন যাত্রী এবং একজন ছিলেন নৌকার চালক।
দুর্ঘটনার পর ৫৩ জনের মধ্যে ৪৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন। বাকিদের মধ্যে ৮ জন পাকিস্তানের, ৫ জন সিরিয়ার ও ৪ জন মিসরের নাগরিক। আর নিহতদের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক। নিহত অপর ব্যক্তি পাকিস্তানের নাগরিক বলে জানা গেছে।
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:১৩