• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo
যে কারণে মামা-মামি ও মামাতো বোনকে খুন করেন রাজীব
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ভাগিনা রাজীবের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল মামা বিকাশের। এর জের ধরেই শুরু হয় মনোমালিন্য। এরপর টাকা দেওয়ার কথা বলে মামার বাসায় যায় ভাগিনা রাজীব। এরপর পালাক্রমে মামাতো বোন, মামি ও মামাকে হত্যা করে রাজীব। মরদেহ উদ্ধারের ১২ ঘণ্টার মধ্যেই হত্যাকারীকে ধরে ফেলে পুলিশ। পরে পুলিশের কাছে এই ট্রিপল হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছে হত্যাকারী। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস কনফারেন্সে এ কথা জানান জেলার পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মণ্ডল। এর আগে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে তাড়াশ থেকেই ভাগিনা রাজীব কুমার ভৌমিককে (৩৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাজীব সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার তেলিপাড়া গ্রামের মৃত বিশ্বনাথ ও নিহত বিকাশের বড়বোন প্রমিলা রানীর ছেলে। আগের দিন যখন বিকাশদের খোঁজ মিলছিল না তখন তার মাসতুতো ভাই ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে রিপোর্ট করতে থানাতেও যায় রাজীব। পুলিশ সুপার বলেন, আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, হত্যাকারী রাজীব কুমার ভৌমিক (৩৫) এবং ভিকটিমরা পরস্পর আত্মীয়। ভিকটিম বিকাশ চন্দ্র সরকারের বড়বোন প্রমিলা রানীর ছেলে রাজীব। হত্যাকারীর বাবা সরকারি চাকরি করতেন। তার মারা যাওয়ার পর বাবার পেনশনের টাকা দিয়ে ২০২১ সাল থেকে মামা বিকাশ চন্দ্র সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে খাদ্যশস্য কেনাবেচার ব্যবসায় যুক্ত হয়। ভিকটিম বিকাশ চন্দ্র সরকার তার ভাগিনা রাজীর কুমার ভৌমিককে ব্যবসার পুঁজি হিসেবে ২০ লাখ টাকা দেন। এরপর ব্যবসা চলমান থাকাকালীন হত্যাকারী রাজীব কুমার ভৌমিক তার মামাকে বিভিন্ন ধাপে ব্যবসার লভ্যাংশসহ প্রায় ২৬ লাখ টাকা ফেরত দিলেও চলতি বছরে এসে হত্যাকারী রাজীবের কাছে মামা বিকাশ চন্দ্র সরকার অতিরিক্ত ৩৫ লাখ টাকা দাবি করেন। এরপর বিকাশ চন্দ্র সরকার গত ২২ জানুয়ারি দাবিকৃত টাকা ৭-৮ দিনের মধ্যে ভাগিনাকে ফেরত দেওয়ার জন্য অনেক চাপ দেয় এবং টাকার জন্য রাজীব ও তার মাকে (ভিকটিমের বোন) ফোনে অনেক বকাবকি করে। হত্যাকারী রাজীব কুমার ভৌমিক টাকা ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং মামার বকাবকিতে মনঃকষ্ট পাওয়ায় তার মামাসহ পুরো পরিবারকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই অংশ হিসেবে গত শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেল ৪টা ৪৮ মিনিটে মামাকে ফোন করে পাওনা টাকা নিয়ে বাসায় আসতে চায় রাজীব। ভিকটিম বিকাশ চন্দ্র সরকার তাড়াশের বাইরে থাকায় তার ভাগিনাকে টাকা নিয়ে সরাসরি তার তাড়াশের বাসায় এসে মামির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাসাতেই থাকতে বলেন। তিনি বলেন, রাজীব যখন বাসায় যায় তখন তার মামি সন্ধ্যা পূজা করছিলেন। হত্যাকারী রাজীব কুমার বাসায় মামার অনুপস্থিতির সুযোগে তার মামি এবং মামাতো বোন পারমিতা সরকারকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এর একপর্যায়ে ভাগিনা রাজীবকে কফি খাওয়ানোর জন্য তার মামি বাসার নিচে দোকানে কফির প্যাকেট কিনতে গেলে হত্যাকারী রাজীব ব্যাগে করে রাস্তা থেকে ২৫০ টাকা দিয়ে কিনে আনা লোহার রড দিয়ে তার মামাতো বোনের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে। এতে মামাতো বোন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। ইতোমধ্যে তার মামি কফি কিনে বাসায় প্রবেশ করলে তার মামিকেও একইভাবে রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে। মামি এবং মামাতো বোন পারমিতা সরকারকে হামলার পর সে চলে যেতে চায়। এর মধ্যেই তার মামা বাসায় চলে আসে। কিছুক্ষণের মধ্যে তার মামা বাসায় ঢুকলে তার মামাকেও প্রথমে রড দিয়ে আঘাত করে। এরপর তার মামাকে গলাকেটে হত্যা নিশ্চিতের পর লাশ টেনে বেডরুমে নিয়ে যায়। এরমধ্যে তার মামি ও মামাতো বোনের গোংরানির শব্দ আসলে পরে গিয়ে তাদেরকেও গলা কেটে হত্যা নিশ্চিত করে বাইরে তালা দিয়ে চলে যায়। যাওয়ার পথে রাজীব লোহার রড একটি পুকুরে ফেলে যায় এবং রক্তমাখা হাঁসুয়াসহ ব্যাগটি নিজ বাড়িতে রাখে। তিনি আরও বলেন, আমরা বিকাশের ফোনের একটি কল রেকর্ড থেকে প্রথম সূত্র পাই। এরপর ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্য খাটিয়ে এবং সার্বিকভাবে মোটামুটি নিশ্চিত হওয়ার পরে রাজীবকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর রাজীব আমাদের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে। তবে এটাই সত্য যে এভাবে পালাক্রমে রাজীব একাই তিনজনকে হত্যা করে। এরপরও আমরা সবকিছু যাচাই-বাছাই করছি। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো প্রক্রিয়াধীন।
০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:২০

টাকার জন্য মামা-মামি ও মামাতো বোনকে হত্যা
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ভাগিনা রাজীবের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল মামা বিকাশের। এর জের ধরেই শুরু হয় মনোমালিন্য। এরপর টাকা দেওয়ার কথা বলে মামার বাসায় যায় ভাগিনা রাজীব। এরপর পালাক্রমে মামাতো বোন, মামি ও মামাকে হত্যা করে রাজীব। মরদেহ উদ্ধারের ১২ ঘণ্টার মধ্যেই হত্যাকারীকে ধরে ফেলে পুলিশ। পরে পুলিশের কাছে এই ট্রিপল হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছে হত্যাকারী। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস কনফারেন্সে এ কথা জানান জেলার পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মণ্ডল। এর আগে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে তাড়াশ থেকেই ভাগিনা রাজীব কুমার ভৌমিককে (৩৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাজীব সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার তেলিপাড়া গ্রামের মৃত বিশ্বনাথ ও নিহত বিকাশের বড়বোন প্রমিলা রানীর ছেলে। আগের দিন যখন বিকাশদের খোঁজ মিলছিল না তখন তার মাসতুতো ভাই ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে রিপোর্ট করতে থানাতেও যায় রাজীব। পুলিশ সুপার বলেন, আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, হত্যাকারী রাজীব কুমার ভৌমিক (৩৫) এবং ভিকটিমরা পরস্পর আত্মীয়। ভিকটিম বিকাশ চন্দ্র সরকারের বড়বোন প্রমিলা রানীর ছেলে রাজীব। হত্যাকারীর বাবা সরকারি চাকরি করতেন। তার মারা যাওয়ার পর বাবার পেনশনের টাকা দিয়ে ২০২১ সাল থেকে মামা বিকাশ চন্দ্র সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে খাদ্যশস্য কেনাবেচার ব্যবসায় যুক্ত হয়। ভিকটিম বিকাশ চন্দ্র সরকার তার ভাগিনা রাজীর কুমার ভৌমিককে ব্যবসার পুঁজি হিসেবে ২০ লাখ টাকা দেন।  এরপর ব্যবসা চলমান থাকাকালীন হত্যাকারী রাজীব কুমার ভৌমিক তার মামাকে বিভিন্ন ধাপে ব্যবসার লভ্যাংশসহ প্রায় ২৬ লাখ টাকা ফেরত দিলেও চলতি বছরে এসে হত্যাকারী রাজীবের কাছে মামা বিকাশ চন্দ্র সরকার অতিরিক্ত ৩৫ লাখ টাকা দাবি করেন। এরপর বিকাশ চন্দ্র সরকার গত ২২ জানুয়ারি দাবিকৃত টাকা ৭-৮ দিনের মধ্যে ভাগিনাকে ফেরত দেওয়ার জন্য অনেক চাপ দেয় এবং টাকার জন্য রাজীব ও তার মাকে (ভিকটিমের বোন) ফোনে অনেক বকাবকি করে।  হত্যাকারী রাজীব কুমার ভৌমিক টাকা ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং মামার বকাবকিতে মনঃকষ্ট পাওয়ায় তার মামাসহ পুরো পরিবারকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই অংশ হিসেবে গত শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেল ৪টা ৪৮ মিনিটে মামাকে ফোন করে পাওনা টাকা নিয়ে বাসায় আসতে চায় রাজীব। ভিকটিম বিকাশ চন্দ্র সরকার তাড়াশের বাইরে থাকায় তার ভাগিনাকে টাকা নিয়ে সরাসরি তার তাড়াশের বাসায় এসে মামির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাসাতেই থাকতে বলেন। তিনি বলেন, রাজীব যখন বাসায় যায় তখন তার মামি সন্ধ্যা পূজা করছিলেন। হত্যাকারী রাজীব কুমার বাসায় মামার অনুপস্থিতির সুযোগে তার মামি এবং মামাতো বোন পারমিতা সরকারকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এর একপর্যায়ে ভাগিনা রাজীবকে কফি খাওয়ানোর জন্য তার মামি বাসার নিচে দোকানে কফির প্যাকেট কিনতে গেলে হত্যাকারী রাজীব ব্যাগে করে রাস্তা থেকে ২৫০ টাকা দিয়ে কিনে আনা লোহার রড দিয়ে তার মামাতো বোনের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে। এতে মামাতো বোন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। ইতোমধ্যে তার মামি কফি কিনে বাসায় প্রবেশ করলে তার মামিকেও একইভাবে রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে। মামি এবং মামাতো বোন পারমিতা সরকারকে হামলার পর সে চলে যেতে চায়। এর মধ্যেই তার মামা বাসায় চলে আসে। কিছুক্ষণের মধ্যে তার মামা বাসায় ঢুকলে তার মামাকেও প্রথমে রড দিয়ে আঘাত করে। এরপর তার মামাকে গলাকেটে হত্যা নিশ্চিতের পর লাশ টেনে বেডরুমে নিয়ে যায়। এরমধ্যে তার মামি ও মামাতো বোনের গোংরানির শব্দ আসলে পরে গিয়ে তাদেরকেও গলা কেটে হত্যা নিশ্চিত করে বাইরে তালা দিয়ে চলে যায়। যাওয়ার পথে রাজীব লোহার রড একটি পুকুরে ফেলে যায় এবং রক্তমাখা হাঁসুয়াসহ ব্যাগটি নিজ বাড়িতে রাখে। তিনি আরও বলেন, আমরা বিকাশের ফোনের একটি কল রেকর্ড থেকে প্রথম সূত্র পাই। এরপর ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্য খাটিয়ে এবং সার্বিকভাবে মোটামুটি নিশ্চিত হওয়ার পরে রাজীবকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর রাজীব আমাদের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে। তবে এটাই সত্য যে এভাবে পালাক্রমে রাজীব একাই তিনজনকে হত্যা করে। এরপরও আমরা সবকিছু যাচাই-বাছাই করছি। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো প্রক্রিয়াধীন।
৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ২৩:২৩
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়