• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘ভাষার অধিকার থেকে স্বাধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টির পেছনের যে ইতিহাস সেই ইতিহাসে গর্জে ওঠা যে শব্দমালা তারমধ্যে এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের উচ্চকণ্ঠ উচ্চারিত হয়েছিল। সেই থেকে শুরু করে অদ্যাবধি জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টির পেছনের মূল কারিগর খেটে খাওয়া সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ।  তিনি বলেন, মাতৃভাষার আলিঙ্গন, ব্যবহার- সেটি ঘরের হোক, বাইরের হোক, ভাষা সুরক্ষায় সাধারণের যে দরদ ও আন্তরিকতা সেটিই বাঙালি জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রধান ভিত্তি। ভাষাভিত্তিক আলোড়নটি স্বাধিকারের পর্যায় নিয়ে যাওয়ার মূলকারণ ভাষার মধ্যে যে হৃদ্যতা সেটি অনন্য। সেটি ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণে প্রতিটি শব্দমালায় এবং উচ্চারণে প্রস্ফুটিত হয়েছিল। সে কারণেই সাধারণ মানুষ সেটি গ্রহণ করেছে। জাতীয়তাবাদী শক্তির মূল জায়গায় ভাষার শক্তি ছিল প্রগাঢ়। মশিউর রহমান আরও বলেন, আমাদের সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ আধুনিকতাকেও গ্রহণ করেছে। সামরিক শাসনকে বর্জন করেছে। পুঁজিবাদের ছোবল, অন্য ভাষার ছোবল, অন্য সংস্কৃতির হানা এসব থাকবে ঠিকই কিন্তু সাধারণের শক্তির কাছে সবসময় সবকিছু পরাভূত হবে। এমনকি সামরিক শাসন ও অগণতান্ত্রিক শাসনও। তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নতুন প্রজন্মকে মানবিক ও দক্ষ করে গড়ে তুলছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস অবশ্য পাঠ্য করে থেমে থাকেনি। যখনই আমরা বুঝতে পেরেছি ভাষার ব্যবহারের শক্তির সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সংযোগ আছে, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিষয় রয়েছে- তখনই আমরা আইসিটিকে পাঠ্য করেছি। আমরা উদ্যোক্তা সৃষ্টিকে অবশ্য পাঠ্য করেছি। নতুন নতুন বিষয়কে কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করছি। ভাষার শক্তি দিয়ে আধুনিকতাকে, বিজ্ঞানকে গ্রহণ করছি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ৩৫ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে এই আলোড়নটি তৈরি করতে চায়। এর মূল লক্ষ্য বিজ্ঞানমুখী, প্রযুক্তিমুখী, আধুনিক এক ভিন্ন বাংলাদেশ তৈরি যেটি আগামী দিন বিশ্বে নেতৃত্ব দেবে। কলকাতার রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. পবিত্র সরকার বলেন, শুধু দেশ নয়, ভাষা সুরক্ষায় সারাবিশ্ব নিয়ে ভাবতে হবে। বিচ্ছিন্নভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। কারণ দেশের ভাষা ব্যবস্থা ভাষাকে প্রভাবিত করছে। একটা দেশে যখন অনেকগুলো ভাষা থাকে তখন সিঁড়ির মতো তাদের ধাপে ধাপে অবস্থান থাকে। একটা আরেকটার পাশে লেগে থাকে। কিন্তু আমাদের মাথার উপর চেপে আছে ইংরেজি। ভাষাকে ব্রাহ্মণত্বের পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। জাত মুছে দিতে হবে। ভাষার ক্ষমতায়নের দ্বারা এটি করতে হবে। নানা জায়গায় ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ভাষার লিপি থাকতে হবে। সাহিত্য থাকতে হবে। এর ডিজিটাইজেশন থাকতে হবে। যত রকম শিক্ষা আছে সেটি মাতৃভাষায় নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মাতৃভাষায় সমস্ত রকম শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। ডাক্তারি, আইন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ সকল শিক্ষা আমার মাতৃভাষায় শেখাব। অর্থাৎ প্রমিত ভাষায় শেখাব। ফ্রান্স, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামসহ অনেক ছোট ছোট দেশ এটা করেছে। কিন্তু ইংরেজিটাও শেখাব সেটা যখন দরকার হবে। আমাদের ইচ্ছা থাকলে এটা সম্ভব। বাংলাদেশের পক্ষে এটা অসম্ভব হবে না। কারণ বাংলাদেশ প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানে অনেক উন্নতি করেছে। ড. পবিত্র সরকার আরও বলেন, আমরা ভাষাকে যেন জগাখিচুড়ি না করি। সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। প্রমিত বাংলা ভাষার প্রতি আমাকে তাকাতে হবে। আমার ভাষা অন্যদের দ্বারা দমিত হচ্ছে কিনা বা কাউকে দমিত করছে কিনা সে বিষয়েও সজাগ থাকতে হবে। ভাষা নিয়ে আমাদের বহুমুখী লড়াই চলছে। এই লড়াইয়ে আমরা সকলে শামিল আছি। ভাষাকে ভালোবেসে একসঙ্গে যদি এই লড়াই করি তাহলে আমরা অবশ্যই জয়ী হব। প্রবন্ধকার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম ভাষা সৃষ্টির আন্দোলন সম্পর্কে বিষদ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমেই স্বাধীন বাংলাদেশ ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বীজ রোপিত হয়েছিল। সভায় অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. হাকিম আরিফ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুস সালাম হাওলাদারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনবৃন্দ, বিভিন্ন দপ্তরের বিভাগীয় প্রধান, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।  
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:৫২

কুয়েতে শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
‘অমর একুশে ফেব্রুয়ারি, ২১ আমার অহংকার’ এই প্রতিপাদ্যে শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস কুয়েত।  জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিত করেন এবং দূতাবাসে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে বীর শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান।  দূতাবাসের মাল্টি পারপাস হলে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত ও একমিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।  কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান এর সভাপতিত্বে ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন ডিফেন্স এ্যাটাশে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান, আবুল হোসেন (মিনিস্ট্রি), কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) ও দূতালয় প্রধান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কাউন্সেলর (পাসপোর্ট ও ভিসা) ইকবাল আক্তার, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কুয়েতের কান্ট্রি ম্যানেজার আবু বক্কর সিদ্দিক, সোনালী ব্যাংক প্রতিনিধি লুৎফর রহমান, দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, সেচ্ছাসেবক, শ্রমিক লীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, প্রবাসী সংবাদকর্মী, কুয়েতে প্রবাসী বাংলাদেশি ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।  
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৫১

ভিয়েতনামে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন
ভিয়েতনামের হ্যানয়স্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাসযোগ্য মর্যাদায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়েছে।  বুধবার সকালে দূতাবাসে দিবসটির প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। সবশেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যবৃন্দ এবং মহান একুশের ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। একইদিন সন্ধ্যায় দূতাবাসের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে হ্যানয়স্থ বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনীতিকবৃন্দ, ইউনেস্কো অফিস প্রধান এবং ভিয়েতনামে অবস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের থিম সংগীত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয় এবং পরে এ দিবস উপলক্ষে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ লুৎফর রহমান এবং হ্যানয়স্থ ইউনেস্কো অফিস প্রধান জনাথন ডব্লিউ বেকার। রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ লুৎফর রহমান তার বক্তব্যের শুরুতে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা শহীদগণ এবং ভাষা আন্দোলনের পথিকৃৎ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রদূত রহমান বলেন, আজকের দিনটি আমাদের জন্য একদিকে কষ্টের, অন্যদিকে সম্মান ও গৌরবের। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাতৃভাষা বাংলার অধিকার আদায়ে আমাদের এক ঝাঁক তরুণ রাজপথে তাদের জীবন উৎসর্গ করে। আমরা রক্তের বিনিময়ে মায়ের ভাষার অধিকার ফিরে পেয়েছি যা বিশ্বে বিরল। অন্যদিকে দিবসটি গৌরবের। আমাদের রক্তে অর্জিত ভাষার অধিকারের সম্মানে ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং ২০০০ সাল থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রকর্তৃক একযোগে পালিত হয়ে আসছে। আমাদের এই বিরল অর্জনের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রাষ্ট্রদূত রহমান।   হ্যানয়স্থ ইউনেস্কো প্রতিনিধি জনাথন বেকার দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘বহুভাষার মাধ্যমে শিক্ষা : প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে জ্ঞান চর্চার স্তম্ভ’ উল্লেখ করে বলেন, বিশ্বে অনেক শিশু মাতৃভাষায় শিক্ষার গ্রহণের অধিকার থেকে বঞ্চিত। অথচ মাতৃভাষা ভিত্তিক বহুভাষিক শিক্ষাব্যবস্থা একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষাক্ষেত্রে পরিপূর্ণ বিকাশের সবচেয়ে শক্তিশালী স্তম্ভ। এটি নিজ ভাষায় দক্ষতার সাথে পড়াশুনা করার পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাষায় দক্ষতা লাভের দ্বার উন্মোচন করে। জাতিসংঘ উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্য-৪ (অন্তর্ভুক্তিমূলক, গুনগত এবং জীবনব্যাপী শিক্ষা লাভের সুযোগ) বাস্তবায়নের পথ সুপ্রসারিত হয়।  আলোচনা পর্ব শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অন্যান্যদের মধ্যে, উক্ত অনুষ্ঠানে হ্যানয়স্থ ভারতের দূতাবাসের উপস্থায়ী প্রতিনিধি সুভাষ গুপ্ত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সম্মানে তার স্বরচিত কবিতা তার মাতৃভাষায় আবৃত্তি করে শোনান।  অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মিশনের কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান নাসির উদদীন।
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২৩:৪৮

ফিনল্যান্ডে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন
মহান ভাষা শহীদের স্মরণের মধ্যে দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় ফিনল্যান্ডে উদযাপিত হলো মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে পাকিস্তানি শাসকের বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে যারা জীবন উৎসর্গ করেছিল, যাদের আত্মত্যাগে বাঙালি পেয়েছিল ভাষার অধিকার। তাদের স্মরণে দলমত নির্বিশেষে দেশটির বিভিন্ন কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ দিবসের প্রথম প্রহর রাত ১২:০১ মিনিটে ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকির অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। এইসময় উপস্থিত সুধীজন শহীদ বেধিতে পুষ্পাঞ্জলি প্রদানের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন এবং মহান ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ ও আত্ম জাগরণের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে গভীর শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করেন। দিবসের দ্বিপ্রহরে ছিল শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন হেলসিংকি শহরের ডেপুটি মেয়র ড্যানিয়েল সাজোনোভ। সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় ড্যানিয়েল সাজোনোভ ৫২ ভাষা শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি তার বক্তব্যে বিদেশী কম্যুনিটির ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় হেলসিংকি সিটির নানা পদক্ষেপের কথা জানান। এরপর ভিডিও বক্তব্য রাখেন ফিনিশ পার্লামেন্টের সদস্য আত্তে কালেভা তিনি ফিনল্যান্ডের বিভিন্ন কমিউনিটির মানুষদের প্রতি তার ব্যক্তিগত এবং তার দলের পক্ষে শুভেচ্ছা জানান। তিনি তার বক্তব্যে তার ব্যক্তিগত, সিটি কর্পোরেশন এবং সরকারের তরফে ফিনল্যান্ডে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণে সার্বিক সহযোগিতার কথা পুনরায় ব্যক্ত করেন। ভাষা শহীদ দিবস আয়োজক কারীদের পক্ষে ভূইয়া এন জামান বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার মর্যাদা দেয়ার দাবি জানান পাশাপাশি ফিনল্যান্ডসহ ইউরোপে সরকারিভাবে ভাষা শহীদ দিবস পালন এবং বাংলা ভাষাকে হেলসিংকি শহরের তথ্যভাষা হিসেবে প্রচলনেরও জোর দাবী জানায়। আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশি কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব শাহরিয়ার মাহমুদ, অনুরূপ কান্তি দাস। আলোচনা সভা শেষে আয়োজনের পৃষ্ঠপোষক তাসলিমা জামান আগত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২:২৬

মিয়ানমারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন
বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ইয়াঙ্গুনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে। দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করণ, দূতালয়ে নবনির্মিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন। এর বাইরেও ইয়াঙ্গুনের একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে আলোচনা সভা ও সেমিনারের আয়োজন। দ্বিতীয় পর্বে আয়োজন করা হয় একটি বর্ণাঢ্য বহুজাতিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানে ১২ দেশের ১৬টি ভাষাভাষী মানুষের অংশগ্রহণে বিভিন্ন পরিবেশনার মাধ্যমে তাদের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়।  মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন দূতালয়ে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যের শুরুতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। রাষ্ট্রদূত হোসেন ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত মাতৃভাষা বাংলার অধিকার প্রতিষ্ঠায় তৎকালীন তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান যে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তা বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষা এবং বহুভাষিকতার প্রচারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ঐতিহাসিক পটভূমি ও তাৎপর্য উল্লেখ করেন। এই বছরের দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘বহুভাষার মাধ্যমে শিক্ষা : প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে জ্ঞান চর্চার স্তম্ভ’ তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বলেন, এই দিনটি শুধুমাত্র আমাদের মাতৃভাষাকে সম্মান করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষই নয়, আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়ে ভাষা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তারও স্বীকৃতি দেয়।   ইয়াঙ্গুন ইউনিভার্সিটি অফ ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজেস-এর সাথে যৌথভাবে আয়োজিত ‘মাতৃভাষার গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে রাষ্ট্রদূত প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর দাও উই হ্নিন, প্রফেসর উইন মায়ো টিন্ট, ড. উইন মিং উং এবং অ্যাকশন এইডের মিয়ানমারের কান্ট্রি ডিরেক্টর শিহাব উদ্দিন আহমেদ আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। আলোচকরা মাতৃভাষার গুরুত্ব এবং সমসাময়িক সমাজে তাদের সংরক্ষণ ও প্রচারের কৌশল তুলে ধরেন। দিবসটির অন্যতম বিশেষ আকর্ষণ ছিল বর্ণাঢ্য বহুজাতিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেখানে ভারত, চীন, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, রিপাবলিক অব কোরিয়া, লাও পিডিআর, ভিয়েতনাম, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, সুইডেন, নিউজিল্যান্ড, মিয়ানমার এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা তাদের নিজ নিজ সংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপন করে। অনুষ্ঠানে ৩০টি দেশের রাষ্ট্রদূত, অন্যান্য কূটনীতিক, মিয়ানমারে বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ, দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ দুই শতাধিক অতিথি উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ২০শে ফেব্রুয়ারি, ইয়াঙ্গুন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সহযোগিতায়, দূতাবাস একটি স্কুল প্রোগ্রামের আয়োজন করে যেখানে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত স্কুলের বাচ্চাদের সাথে মাতৃভাষার গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেন এবং তাদের মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণে উত্সাহিত করেন।
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:০৪

বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্যারিসে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন
যথাযথ মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ‘মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালিত হয়েছে।  আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উপর আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বই মেলা ও চিত্র প্রদর্শনী’র মাধ্যমে ব্যতিক্রমী মাত্রা যোগ হয় প্যারিস এর সেইন্ট ডেনিস মিউনিসিপালিটি স্থায়ী শহীদ মিনারে। সেন্ট ডেনিসের সহকারী মেয়র ও বাংলাদেশ থেকে আগত যুগ্ম সচিব মাফুজা আক্তার স্থায়ী শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে এর আনুষ্ঠানিকতার উদ্বোধন  করেন। পরে সিকানু বাঙালি এসোসিয়েশন এর সভাপতি সরুফ ছদিওল, উপদেষ্টা ও আয়েবার মহাসচিব তুলুস এবং প্যারিসের স্থায়ী শহীদ মিনারের প্রধান সমন্বয়কারী কাজী এনায়েত উল্লাহ ইনু, বীর  মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক, ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কাশেম, ফ্রান্স বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সালেহ আহমেদ চৌধুরী, একুশ উদযাপন পরিষদ ফ্রান্সের আহবায়ক সুব্রত ভট্টাচার্য শুভ ও সদস্য সচিব এমদাদুল হক স্বপন, আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপকমিটির সদস্য আলী হোসেন সহ ফ্রান্স প্রবাসী বাঙালি সংগঠন, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী ফ্রান্স, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ফ্রান্স, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন, ইউরো বাংলা প্রেসক্লাব কেন্দ্রীয় কমিটি, বরিশাল বিভাগীয় সমিতি ফ্রান্স, জালালাবাদ এসোসিয়েশন ফ্রান্স, ইকোনমিক চেম্বার ফ্রান্স, নরসিংদী জেলা কমিউনিটি ইন ফ্রান্স, দোহা নবাবগঞ্জ এসোসিয়েশন, ইপি এস বাংলা, যুব ইউনিয়ন, গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিউনিটি ফ্রান্সসহ প্যারিসের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের ব্যক্তিবর্গ  ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের পদচারণে মুখরিত হয়ে ওঠে শহীদ মিনার অঙ্গন। সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন ভাষা আন্দোলন ছিলো আমাদের মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নিজস্ব জাতিসত্তা, স্বকীয়তা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষার আন্দোলন। ভাষা আন্দোলনের মহিমা ও তাৎপর্য আজ শুধু আমাদের দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আজ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি লাভ করেছে এবং সারা বিশ্বে প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে।  নতুন প্রজন্মের মাঝে একুশের সুদূরপ্রসারী চেতনাকে ছড়িয়ে দেয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:২৮

ইতালিতে পালিত হয়েছে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৪’
ইতালির রোমস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৪’ পালন করেছে। দিবসের বিশেষ কর্মসূচির অংশ হিসেবে দূতাবাস চত্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় দূতাবাসের আয়োজনে দূতাবাস প্রাংগণে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে সব শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম তার বক্তব্যে মাতৃভাষার অস্তিত্ব রক্ষা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মত্যাগকারী শহীদদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রকাশ করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, ভাষা সংগ্রামের পথ ধরেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশের গৌরবময় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতির পরিপ্রেক্ষিতে এ দিবস পৃথিবীর সব দেশের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রাখছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।  এ ছাড়াও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সকাল ৯টায় ইতালির রাজধানী রোমে অবস্থিত আইজাক রবিন পার্কে স্থাপিত স্থায়ী শহীদ মিনারে বাংলাদেশ দূতাবাস, রোম-এর উদ্যোগে পুষ্পাঞ্জলী অর্পণের আয়োজন করা হয়। ভাষা শহীদদের সম্মানে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে মহিমান্বিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রয়াসে ইতালীয় সরকারের সহায়তায় রবিন পার্কে ২০১১ সালে শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়। প্রথমেই রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ইতালিস্থ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন এবং বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীরাও একে একে দলবদ্ধভাবে শৃংখলার সঙ্গে এ সময় ফুল দিয়ে তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সকলের সামনে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানের পরবর্তী পর্যায়ে দিবসটি উপলক্ষে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর নির্মিত বিশেষ প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। ভাষা শহিদদের রুহের মাগফেরাত ও দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:১১

বাহরাইনে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
বাংলাদেশ দূতাবাস বাহরাইনে যথাযথ মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ‘মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালিত হয়েছে। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় দূতাবাস প্রাঙ্গনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির সূচনা করেন চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স এ. কে. এম. মহিউদ্দিন কায়েস । আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উপর আয়োজিত চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকৃত বাহরাইনের ৩০ টি স্কুলের ৯০ টি চিত্রকর্ম দিয়ে দূতাবাস প্রাঙ্গনে অত্যন্ত সুন্দর এক চিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলাদেশ দূতাবাস দিবসটি পালনে এক ব্যতিক্রমী মাত্রা যোগ করে। এ চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণের ফলে তারা বাঙ্গালির রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারে এবং এ চিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে ভাষা আন্দোলনের মহিমা ও তাৎপর্য সকলের কাছে আরো বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠে। চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স কায়েস চিত্র প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করেন। এরপর, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, এবং উন্মুক্ত আলোচনার আয়োজন করা হয়। চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স এ. কে. এম. মহিউদ্দিন কায়েস তার বক্তব্যের শুরুতে  ভাষা আন্দোলনে এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলন ছিলো আমাদের মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নিজস্ব জাতিসত্তা, স্বকীয়তা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষারও আন্দোলন। ভাষা আন্দোলনের মহিমা ও তাৎপর্য আজ শুধু আমাদের দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে তা আজ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি লাভ করেছে এবং সারা বিশ্বে প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। নতুন প্রজন্মের মাঝে একুশের সুদূরপ্রসারী চেতনাকে ছড়িয়ে দিতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের অনুরোধ করেন। তিনি নতুন প্রজন্মকে আধুনিক প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের পাশাপাশি বাংলা ভাষা শেখার প্রতি উৎসাহিত করেন। এছাড়াও তিনি প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশিদেরকে অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স ও দল-মতের বিবেদ ভূলে একযোগে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও আত্মমর্যাদাশীল ‘সোনার বাংলাদেশ’ তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘র্স্মাট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে কাজ করার জন্য উদাত্ত আহবান জানান। দিবসটি উপলক্ষ্যে বাহরাইনস্থ ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (BSMR)-বাংলাদেশ স্কুল’-এর ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে তারা কবিতা আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন করেন। চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকল ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে উপহার বিতরণ করেন। পরিশেষে, ভাষা শহিদদের পাশাপাশি বাঙালির স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের সকল পর্যায়ে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনকারী সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। বাহরাইনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ, কর্মচারীগণ ও প্রবাসী বাংলাদেশীরা  অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:৫৫

রিয়াদে রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের নিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত
সৌদি আরবের রিয়াদে নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বুধবার দূতাবাসের অডিটোরিয়ামে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক ও সৌদি অফিশিয়ালদের নিয়ে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।  অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)। এতে বিশেষ অতিথি জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মোহাম্মদ আল জারকানি ও কূটনৈতিক কোরের ডীন জিবুতির রাষ্ট্রদূত দায়া আদদীন সাঈদ বামাখারামা বক্তব্য প্রদান করেন। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টফি ফারনড, সৌদি আরবের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান বিষয়ক জাতীয় কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল হানি মানসি এবং ওআইসির রাজনৈতিক বিষয়ক সহকারী মহাসচিব ইউসেফ আল দুবেহ বক্তব্য প্রদান করেন। রাষ্ট্রদূত ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে মাতৃভাষা বাংলা রক্ষা করার বিষয়ে বাঙালি জাতির অবদানের কথা বিদেশীদের কাছে তুলে ধরে তিনি বলেন, দিবসটি পৃথিবীর ইতিহাসে মাতৃভাষা রক্ষার দাবীতে সংগ্রাম ও ভাষার অধিকার আদায়ের এক উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত। ভাষা আন্দোলনে ও মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা বর্ণনা করে রাষ্ট্রদূত বলেন, দ্রুতই পৃথিবী থেকে বিভিন্ন ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে, সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। বাংলাদেশ সরকার মাতৃভাষা রক্ষার্থে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য তাদের মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করেছেন। মাতৃভাষা রক্ষায় দেশ কাল ভেদে পৃথিবীর সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি। ২১ শে ফেব্রুয়ারি-কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতিতে অবদান রাখায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা। অনুষ্ঠানে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নৃত্য পরিবেশন করে। এসময় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে একটি তথ্যচিত্র ও ১২টি ভাষায় একুশে ফেব্রুয়ারির গান পরিবেশন করা হয়। এছাড়া “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও ভাষা আন্দোলন” শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। দূতাবাসের কাউন্সেলর মো. বেলাল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন রিয়াদস্থ ব্যবসায়ী এম আর মাহবুব, প্রফেসর মো. নুরুন্নবী, শাহজাহান চঞ্চল। এছাড়া ও মিশন উপপ্রধান মো. আবুল হাসান মৃধা বক্তব্য রাখেন।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২:৪৩
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়