• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
logo
স্মরণে মহানায়িকা সুচিত্রা সেন 
  রমা দাশগুপ্ত বা সুচিত্রা সেন। যে নামেই তাকে ডাকুন না কেন বাংলা ছবির সর্বকালের সবচেয়ে জনপ্রিয় মহানায়িকা তিনিই। তার সঙ্গে তুলনা করা যায় না কারও। বাংলা সিনেমাকে তিনি নিয়ে গিয়েছিলেন এক অনন্য উচ্চতায়। আজ এই মহানায়িকার দশম মৃত্যুবার্ষিকী। মৃত্যুবার্ষিকীতে আরটিভি অনলাইনের পক্ষ থেকে অভিনেত্রীর প্রতি রইলো অপরিমেয় শ্রদ্ধা। ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল পাবনা জেলা সদরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত ছিলেন পাবনা পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ও মা ইন্দিরা দেবী ছিলেন গৃহবধূ। তিনি ছিলেন পরিবারের পঞ্চম সন্তান ও তৃতীয় কন্যা। তার আরেকটি পরিচয় হলো, তিনি ছিলেন কবি রজনীকান্ত সেনের নাতনী।   সুচিত্রা সেনই বাংলা চলচ্চিত্রের প্রথম অভিনেত্রী, যিনি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। ‘সাত পাকে বাঁধা’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৬৩ সালে মস্কো চলচ্চিত্র উৎসব থেকে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান তিনি। ১৯৫৫ সালে প্রথম হিন্দি ছবি দেবদাসের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেন। ‘আন্ধি’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। ‘আন্ধি’ গুজরাটে মুক্তির পর ২০ সপ্তাহ নিষিদ্ধ ছিলো। ১৯৭৭ সালে জনতা পার্টি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর গুজরাটের সরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হয় ছবিটি। ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পদ্মশ্রী পান। ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বাংলাবিভূষণ সম্মাননা দেওয়া হয় তাঁকে। হিন্দি ও বাংলা মিলিয়ে সর্বমোট ৬১ টি ছবিতে অভিনয় করে নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ১৯৭৮ সালে সুদীর্ঘ ২৫ বছর অভিনয়ের পর তিনি চলচ্চিত্র থেকে অবসরগ্রহণ করেন। ‌‘প্রণয় পাশা’ ছবিটি করার পর তিনি লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান। এরপর তিনি রামকৃষ্ণ মিশনের সেবায় ব্রতী হন। নিজেকে অন্তরালে রাখার সিদ্ধান্ত একান্তই তাঁর নিজের ছিল। এতটাই দৃঢ়তা ছিল সেই সিদ্ধান্তে যে, পরবর্তীতে তাকে দাদাসাহেব ফালকে সম্মাননা প্রদান করতে চেয়েছিল ভারত সরকার। কিন্তু চলচ্চিত্রের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ এ সম্মাননা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন সুচিত্রা সেন।  সম্মাননা নিতে কলকাতা থেকে দিল্লি যেতে চাননি বলেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি হন। অবশেষে সব কল্পনাকে হার মানিয়ে ১৭ জানুয়ারি ভারতীয় সময় সকাল ৮টা ২৫ মিনিট নাগাদ পৃথিবীর বাতাসে শেষবারের মতো নিশ্বাস নেন সুচিত্রা সেন, পাড়ি দেন অনন্তলোকে। পর্দার অভিনয়জীবনে নিজের যে চূড়ান্ত রোমান্টিক রূপটি গড়েছিলেন, স্বেচ্ছা-অন্তরালে সেই রূপটিই ধরে রেখেছিলেন শেষ জীবনেও। লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকেই বিদায় নিয়েছেন তিনি কিন্তু আমরা তাকে সেই মহানায়িকার জায়গাতেই রেখে দিবো চিরকাল।
১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:৩৯
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়