• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
logo
ইসলামের দৃষ্টিতে স্বামী-স্ত্রীর বয়সের ব্যবধান কত হওয়া উচিত
সংসার জীবনে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পারিক সুসম্পর্ক ও ভালবাসার মর্যাদা ব্যাপক। কুরআন ও হাদিসের বর্ণনাসহ রাসুল (সা.)-এর পবিত্র জীবনে এর অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে। দাম্পত্য জীবনে সাধারণ আচার-আচরণে রয়েছে সাওয়াব, কল্যাণ ও ভালোবাসার হাতছানি। যা হতে পারে দুনিয়ার সব মানুষের জন্য গ্রহণীয় ও অনুকরণীয় আদর্শ। অসম বিয়ের কারণে বর্তমানে দেশে একটি দম্পতিকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। নিজের মেয়ের ১৮ বছরের বান্ধবীকে বিয়ে করে আলোচনার শীর্ষে আছেন ৬০ বছরের এক ব্যক্তি। আসুন দেখে নিই স্বামী-স্ত্রীর বয়সের ব্যবধান নিয়ে ইসলাম কী বলে। ইসলামে স্বামী-স্ত্রীর বয়সের ভারসাম্য রাখার ইঙ্গিত রয়েছে বয়স স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আচরণগত স্বভাব ও দৈহিক বিষয়ের প্রভাবক। যদিও এ ক্ষেত্রে কোরআনের সরাসরি নির্দেশনা না থাকলেও ইঙ্গিত আছে। সুরা সাদের ৫২ নং আয়াতে বলা ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং (জান্নাতে) তাদের পাশে থাকবে সমবয়সী আয়তনয়না (জান্নাতি রমণী)।’ অন্যদিকে সুরা ওয়াকিয়ার ৩৫-৩৮ আয়াতে এসেছে, মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি জান্নাতি রমণীদের উত্তমরূপে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তাদের করেছি চিরকুমারী, সোহাগিনী, সমবয়স্কা।’  সুতরাং, স্বামী-স্ত্রীর বয়স কাছাকাছি হওয়া বাঞ্ছনীয়। বয়সের বেশি ব্যবধানে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। যে কারণে বিবাহে বয়েসের ভারসাম্য প্রয়োজন। রাসুল (সা.)-এর কন্যা ফাতেমা (রা.)-কে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন আবু বকর (রা.) এবং ওমর (রা.)। খলিফাদ্বয়ের উদ্দেশ্য ছিল—তাঁরা রাসুল (সা.)-এর জামাতা হওয়ার সম্মান অর্জন করবেন। রাসুল (সা.) বলেন, সে [ফাতেমা (রা.)] অনেক ছোট। তাঁদের বয়স অনেক বেশি ছিল। রাসুল (সা.) বয়সের কথা বিবেচনা করে তাঁদের আবেদন নাকচ করে দেন। উল্লেখিত ঘটনা থেকে বোঝা যায়, মেয়ের বয়স কম হলে স্বামীর বয়স অতিরিক্ত বেশি হওয়া উচিত নয়। বয়সের বেশি অসমতায় বিয়ে দেওয়াও ঠিক নয়। (ইত্তিহাফুস সায়েল বিমা লিফাতিমাতা মিনাল মানাকিবি ওয়াল ফাদাইল, পৃষ্ঠা : ৩৪-৩৬)। উল্লেখ্য, ইসলামে সবচেয়ে আদর্শ বিয়ে হয়েছিল আলী (রা.) ও ফাতেমা (রা.)-এর বিয়ে। সে সময় ফাতেমা (রা.)-এর বয়স ছিল সাড়ে ১৫ বছর। (সিয়ারু আলামিন নুবালা, পৃষ্ঠা : ৪২৩)। তবে ইবনে সাদের মতে, সে সময় তাঁর বয়স ছিল ১৮ বছর। আর আলী (রা.)-এর বয়স ছিল ২১, মতান্তরে ২৫ বছর। বিশেষজ্ঞরা বলেন, স্ত্রী যদি স্বামীর চেয়ে বয়সে একটু ছোট হয় তাহলে ভালো। আর নারীর শারীরিক কাঠামো থাকে দুর্বল। ফলে সে আগে বৃদ্ধা হয়ে যায়। যদি দুই-চার বছরের পার্থক্য থাকে তাহলে সমতা আসে। (হুকুকুল জাওজাইন, পৃষ্ঠা ৩৭০)। তবে শরিয়তে বয়সে তারতম্যময় বিবাহ নিষিদ্ধ নয়। আবার ইসলাম এ বিষয়ে কাউকে উৎসাহও দেয়নি। এ ক্ষেত্রে প্রশস্ততা ও অবাধ স্বাধীনতা আছে। কিন্তু বিষয়টি নির্ভর করে বাস্তবতা, সমাজ, সংস্কৃতির ওপর। প্রশ্ন উঠতে পারে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর চেয়ে ২৫ বছরের বড় খাদিজা (রা.) এবং ৪৪ বছরের ছোট আয়েশা (রা.)-কে কেন বিয়ে করেছিলেন? প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী, ইসলাম প্রচার এবং ইসলামের জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর চেয়ে ১৫ বছরের বড় খাদিজা (রা.) কে বিয়ে করেন। বংশমর্যাদা, সহায়-সম্পদ, বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই খাদিজা (রা.) ছিলেন সমাজের মধ্যে শীর্ষস্থানীয়া। তাঁর জীবদ্দশায় রাসুল (সা.) অন্য কোনো নারীকে বিবাহ করেননি। (ইবনে হিশাম ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৮৯-১৯০; ফিকহুস সিরাহ, পৃষ্ঠা ৫৯)। আর রাসুল (সা.) যখন তাঁর সবচেয়ে কম বয়সী স্ত্রী আয়েশা (রা.)-এর সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক শুরু করেন, তখন তাঁদের বয়স ছিল যথাক্রমে ৫৩ ও ৯। যদিও বিবাহ আরো আগেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মহানবী (সা.) আয়েশা (রা.)-কে প্রধানত যেসব কারণে বিয়ে করেছিলেন— ১. আয়েশা (রা.)-এর পিতা আবু বকর (রা.)-এর অতি আগ্রহ ছিল যে তিনি [আবু বকর (রা.)] যেভাবে ঘরের বাইরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গী হয়ে যাবতীয় খেদমত আঞ্জাম দেন, অনুরূপ ঘরের ভেতরও যেন তাঁর পরিবারের কেউ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খেদমত করতে পারেন। তাই আবু বকর (রা.) মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আত্মীয়তার সম্পর্কে রূপান্তর করেন। ২. সব ইতিহাসবিদ এ ব্যাপারে একমত যে, আয়েশা (রা.) ছিলেন তৎকালীন আরবের অন্যতম মেধাবী নারী। তাই মহানবী (সা.) তাঁকে বিবাহ করার মাধ্যমে ইসলামের বিধি-বিধান, বিশেষ করে নারীদের একান্ত বিষয়াদি উম্মতকে শিক্ষা দিতে চেয়েছেন। ৩. মহানবী (সা.) তাঁকে বিয়ে করেছেন ওহির নির্দেশ অনুসরণ করে। ওহির মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাঁকে বিয়ে করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। (বুখারি, হাদিস : ৩৮৯৫)। ৪. শুধু আরবের সংস্কৃতি নয়, গোটা বিশ্বে সেই সময়ে ধর্মীয় নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ—সবার মধ্যে অল্প বয়সী নারীকে বিবাহ করার ব্যাপক প্রচলন ছিল।
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৩১

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের গণতন্ত্রের ব্যবধান যোজন-যোজন : কাদের 
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের গণতন্ত্রের ব্যবধান যোজন-যোজন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।  শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।  এসময় আমরাই গণতন্ত্রের 'ট্রু ফর্ম' অনুসরণ করি- দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, পাকিস্তানের গণতন্ত্র আর বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মধ্যে যোজন-যোজন দূরের ব্যবধান। দুনিয়ার কোনো দেশে তত্ত্বাবধায়ক নেই, কিন্তু পাকিস্তান তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক ধরে রেখেছে। দুই দেশের মধ্যে পার্থক্যটা হলো—আমাদের দেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশি শক্তি, বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব যেভাবে মাতামাতি করে, ভিসানীতির বিষয়  নিয়ে আসে, পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তা হয় না।  পাকিস্তানে চলমান সহিংসতা, নির্বাচনে কারচুপি ইত্যাদির প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের এরপর বলেন, ‘পাকিস্তানের নির্বাচনে সহিংসতা, ভোট কারচুপি, জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। ৯ জনের প্রাণহানিও হয়েছে। দেশটির বেলুচিস্তানে বোমা বিস্ফোরণ কয়েক ডজন মানুষের মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হয়েছে।’  তিনি আরও বলেন, আমি বলছি না, আমাদের গণতন্ত্র শতভাগ পারফেক্ট। গণতন্ত্রের ছবক দেয় যে পশ্চিমা বিশ্ব, তারাও পারফেক্ট না।   এরপর বিএনপির প্রসঙ্গ টেনে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে না এসে যে ভুল করেছে তার খেসারত তাদের অনেক দিন দিতে হবে।’  রাজনীতির মাঠে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যতটুকু জানি তার অনেকগুলো মামলায় জামিন হয়েছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে তার জন্য। হয়তো একটা সময় জামিন হয়ে যাবে। একজন বিনা বিচারে আটকে থাকবে, এটা সরকারও চায় না। জামিন হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না—এটা ঠিক নয়।’  বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা প্রসঙ্গে বলেন, ‘পারিবারিকভাবে আবেদন করুক। স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় কীভাবে সুপারিশ করে—তারপর বলা যাবে।’  এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে দলের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে স্বীকার করে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এবারের নির্বাচনে কৌশলগত কারণে আওয়ামী লীগের অনেক লোক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করেছে। ফলে নির্বাচন ঘিরে নিজেদের মধ্যে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি, মতবিরোধ, দ্বন্দ্ব-সংঘাতের মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। দলের অভ্যন্তরে এসব হানাহানি ও কোন্দলের অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন করাই আওয়ামী লীগের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ।’  সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে বিভেদ ভুলে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘সবকিছু ভুলে গিয়ে উপজেলা নির্বাচন, মেয়র নির্বাচন পর্যায়ক্রমে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে যেন মনোমালিন্য কোনো সংঘাত সৃষ্টি না হয়—সে জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সবার মধ্যে ঐক্যবদ্ধ আবহ তৈরির জন্য এই বিশেষ বর্ধিত সভার আয়োজন।’  
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:০৪
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়