নাতির হাত ধরেই কেন্দ্রে এসে ভোট দিলেন ৯০ বছরের বৃদ্ধা
বর্তমানে দেশে জুড়ে চলছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। রোববার (৭ জানুয়ারি) ছেলে ও নাতির হাত ধরেই কেন্দ্রে এসে ভোট দেন ৯০ বছরের বৃদ্ধা জাহানারা বেগম।
এদিন সকাল ৯টায় খুলনা-৩ আসনের রায়েরমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দিয়েছেন জাহানারা। পাশাপাশি ভোট দেওয়া শেষে আনন্দও প্রকাশ করেছেন তিনি।
জানা গেছে, ছেলে শেখ আব্দুল কাদির নিয়ে এবং ১৪ বছর বয়সী নাতি শেখ মিনাজুল ইসলাম তাজ ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসেন জাহানারা বেগমকে।
ভোট দিয়ে জাহানারা বেগম বলেন, রাতেই ছেলে ও নাতিকে বলে রেখেছি ভোট দিতে যাব। তাই সকাল সকাল উঠে ভোট দিতে আসি। সুন্দর পরিবেশে ভোট দিতে পেরে ভালো লাগছে।
জাহানারা বেগমের নাতি তাজ বলেন, সকালে উঠে আমাদের আগে রেডি হয়ে বসে ছিল। পরে আমি আর আব্বু দুজনে দাদিকে ধরে ভোট দিতে কেন্দ্রে নিয়ে যাই। তবে ভোটার না হলেও কেন্দ্রে আসতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে আমার।
শুধু জাহানার বেগমই নন, একই এলাকার ৯০ বছর বয়সী জ্যোৎস্না বিশ্বাসও ছেলে শংকর বিশ্বাসের সঙ্গে লাঠিতে ভর করে ভোট দিতে কেন্দ্রে আসেন। তবে একই বয়সী আকলিমা বেগম একাই কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়েছেন।
কেন্দ্রে দায়িত্বরতদের সহযোগিতায় ভোট দেওয়া শেষে গণমাধ্যমে তিনি বলেন, নির্বাচিত ব্যক্তি যেন তার পাশে থাকেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৩ (দৌলতপুর-খালিশপুর-খানজাহান আলী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এস এম কামাল হোসেন, জাতীয় পার্টির মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাতেমা জামান সাথী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই আসনে ১১৬টি কেন্দ্রে ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ৪৫ হাজার জন।
উল্লেখ্য, ইসির দেওয়া তথ্যমতে, নির্বাচন ঘিরে সারাদেশে পাঁচ লাখ ১৬ হাজার আনসার, এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ পুলিশ, ৪৬ হাজার ৮৭৬ বিজিবি, দুই হাজার ৩৫০ কোস্টগার্ড এবং ৭০০ এর বেশি র্যাব টহলে থাকবে। তাদের সঙ্গে ভোটের মাঠে থাকবে সশস্ত্র বাহিনী। এ ছাড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরাও মাঠে থাকবে। প্রতিকেন্দ্রে থাকবেন ১৫ থেকে ১৭ জন নিরাপত্তা সদস্য।
এবার নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৭ লাখ। এর মধ্যে ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন পুরুষ, ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন নারী এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা ৮৫২। মোট ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১০৩টি। ভোটকক্ষ ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি। ভোট হচ্ছে ব্যালট পেপারে।
এবারের নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ভোট হবে ২৯৯ আসনে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। নির্বাচনে ২৮টি দল অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে দলীয় প্রার্থী ১ হাজার ৫৩৪ জন এবং স্বতন্ত্র ৪৩৬ জন। নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ২৬৬ জন প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬৫ জন প্রার্থী দিয়েছে জাতীয় পার্টি এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৩৫ জন প্রার্থী রয়েছেন ‘সোনালী আঁশ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে আসা তৃণমূল বিএনপি।
এদিকে বিএনপিসহ ৬০টি দল নির্বাচন বর্জন করেছে। দলটি সরকার পতনের এক দফা দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে সফলতা না পেয়ে নির্বাচনের দুই মাস আগ থেকে হরতাল-অবোরধের পথ বেছে নেয়। এতে সরকারকে চাপে ফেলতে না পেরে ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর ‘অসহযোগ আন্দোলনের’ ডাক দেয় দলটি। পাশাপাশি সরকারকে সকল প্রকার কর, খাজনা, পানি, গ্যাস এবং বিদ্যুৎ বিল দেওয়া স্থগিত রাখার অনুরোধ জানায় দলটি।
০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:৪৫