• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo
রোজায় সহবাসে মানতে হবে যেসব বিধান
চলছে পবিত্র রমজান মাস। এ মাসটি হলো কোরআন নাজিলের মাস, সংযমের মাস ও ত্যাগের মাস। এ মাসটি হলো ইবাদত-বন্দেগির মাস। আর মহিমান্বিত এই মাসে আমরা অনেকেই জেনে না জেনে সহবাসে লিপ্ত হই। এতে করে আমাদের রোজা ভেঙ্গে যায়। তাই চলুন, বরকতের এই মাসে সহবাস সংক্রান্ত বিধি বিধানগুলো জেনে নেই।     পবিত্র রমজান মাসে স্ত্রী সহবাস সম্পর্কে সূরা আল-বাকারা’র ১৮৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে, রোজার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করা তোমাদের জন্য সম্পূর্ণ হালাল করা হয়েছে। আর পবিত্র কোরআনের এই আয়াত থেকে এটা প্রমাণিত হয় যে, রোজাদারের জন্য দিনের বেলা সহবাস হালাল করা হয়নি।  সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্যে তোমাদের স্ত্রীদেরকে বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্যে এবং তোমরাও তাদের জন্যে পরিচ্ছদ। আল্লাহ জেনেছেন যে, তোমরা তোমাদের নিজেদের সঙ্গে খিয়ানত করছিলে, অতঃপর তিনি তোমাদের তওবা কবুল করেছেন এবং তোমাদেরকে মার্জনা করেছেন, সুতরাং এখন তোমরা তাদের সঙ্গে সংগত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্যে যা নির্ধারণ করে রেখেছেন (অর্থাৎ সন্তান) তা অন্বেষণ করো। আর তোমরা আহার করো ও পান করো যতক্ষণ তোমাদের জন্যে (রাত্রির) কালো রেখা থেকে ফজরের সাদা রেখা স্পষ্ট হয়ে যায়। এরপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করো। আর তোমরা মসজিদে ইতিকাফ অবস্থায় তাদের সঙ্গে সংগত হয়ো না। এগুলো আল্লাহর (নির্ধারিত) সীমা, সুতরাং এর নিকটবর্তী হইও না। এভাবেই আল্লাহ মানুষের জন্যে তার আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তারা তাকওয়া বা আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করতে পারে।’ (সূরা বাকারাহ-১৮৭) শরিয়তে যৌন সম্পর্ক বলতে পুরুষাঙ্গের সঙ্গে স্ত্রী-অঙ্গের মিলনকে বোঝানো হয়েছে। এখানে বীর্যপাত শর্ত নয়। এই দুই অঙ্গ সংস্পর্শে আসলেই ভেঙে যাবে রোজা। এমনকি বীর্যপাত না ঘটলেও। তবে যৌন মিলনের দ্বারা কেউ রোজা ভাঙলে সেটি পরবর্তীতে কাযা করতে হবে এবং কাফফারাও দিতে হবে। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে শারীরিক স্পর্শ বা শুধু চুমুর কারণে রোজা ভাঙবে না। তবে এর ফলে যদি বীর্যপাত ঘটে, সেক্ষেত্রে রোজা ভেঙে যাবে। তাই রোজার সময় এগুলো পরিহার করাটাই উত্তম। আবার, কেউ যদি স্বপ্রণোদিত হয়ে নিজের বীর্যপাত ঘটান, সেক্ষেত্রে তার রোজা ভেঙে যাবে। যেমন- নিজে বা স্ত্রী কর্তৃক হস্তমৈথুনের মাধ্যমে যদি বীর্যপাত ঘটে, এক্ষেত্রে রোজা ভেঙে যাবে। ইচ্ছেকৃতভাবে বীর্যপাত ঘটালে রোজা ভাঙবে। এ বিষয়ে বুখারি শরিফের একটি হাদিসে বলা হয়, সে (বান্দা) আমার জন্যই খাদ্য, পানীয় ও কামনা-বাসনা পরিত্যাগ করে। তবে এভাবে রোজা ভেঙে গেলে, কাযা করাই যথেষ্ট। সহবাসের ক্ষেত্রে যে কাফ্ফারা দিতে হয়, এক্ষেত্রে সেটি দিতে হবে না। তবে বীর্যপাত যদি স্বতঃপ্রণোদিত না হলে, সেক্ষেত্রে রোজা ভাঙবে না। যেমনঃ স্বপ্নদোষের ফলে রোজা ভাঙবে না। তাছাড়া, কোনো ব্যক্তির চিন্তায় যদি আচমকা যৌন ভাবনার উদয় হয় যা সে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মাথায় আনেনি। এবং যদি বীর্যপাত ঘটে, সে ক্ষেত্রে রোজা ভাঙবে না। তাই আসুন আমরা শরিয়াতের বিধি বিধান মেনে চলি। রোজা রেখে দিনের বেলায় সহবাস থেকে বিরত থাকি। শারীরিক ও মানসিক শুদ্ধির মাধ্যমে রমজানের পবিত্রতা বজায় রাখি।   
২৩ মার্চ ২০২৪, ০০:৫৭

তারাবিহ নামাজের কাজা পড়ার বিধান
বাংলাদেশের আকাশে রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে রোজা। সে হিসেবে আজ রাতেই তারাবির নামাজ পড়বেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। রমজানের রোজা পালনের জন্য যেসব সুন্নতের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আমল করতে হয় তার একটি তারাবি নামাজ। তারাবি নামাজের বিশেষ ফজিলত বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। হজরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রমজান সম্পর্কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি রমজানে ঈমানের সঙ্গে সওয়াব লাভের আশায় কিয়ামে রমজান অর্থাৎ তারাবির নামাজ আদায় করবে তার পূর্ববর্তী গোনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে। (বুখারি, (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), হাদিস, ১৮৭৯) প্রাপ্ত বয়স্ক নারী ও পুরুষের জন্য তারাবি নামাজ আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। কোনো বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া তারাবির নামাজ ছেড়ে দেওয়া মাকরুহ। অসুস্থ ও রুগীর ওপর তারাবি জরুরি নয়, তবে কোনো কষ্ট না হলে তাদেরও পড়া মুস্তাহাব। তারাবির ইমাম প্রাপ্ত বয়স্ক ও সুস্থ মস্তিষ্ক পুরুষ হওয়া জরুরি। নাবালেগ হাফেজের পেছনে বালেগ পুরুষ-মহিলা কারও জন্যই ইক্তিদা করা বৈধ নয়। পুরুষদের মসজিদে জামাতের সঙ্গে তারাবি নামাজ আদায় করা উচিত। নারীদের জন্য কোনো মসজিদে বিশেষ ও নিরাপদ ব্যবস্থা থাকলে নারীরাও মসজিদে গিয়ে তারাবি নামাজ আদায় করতে পারবেন। তারাবির জামাতে অংশ নিতে দেরি হওয়ার কারণে যদি কারও তারাবির জামাত থেকে কিছু রাকাত ছুটে যায় তাহলে বেতরের নামাজের পর তা আদায় করে নেবে। তবে কোনো কারণে তারাবির নামাজ পুরোটাই ছুটে গেলে সম্ভব হলে এবং রাতে সময় পেলে তারাবি পড়ে নেওয়া উত্তম। কিন্তু তারাবির সময় তারাবির নামাজ পড়তে না পারলে পরবর্তীতে আর কাজা করতে হবে না। পরবর্তীতে কেউ তারাবির নামাজের কাজা পড়লে তা নফল হিসেবে গণ্য হবে। তারাবি নামাজের কাজা বলে গণ্য হবে না।
১১ মার্চ ২০২৪, ১৯:৩০

তিন লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে সংসদে গ্রাম আদালত বিল
গ্রাম আদালতের জরিমানা ৭৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত করা হচ্ছে।  মঙ্গলবার (৫ মার্চ) এমন বিধান রেখে গ্রাম আদালত (সংশোধন) বিল জাতীয় সংসদে তোলা হয়েছে। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বিলটি সংসদে তোলার পর সেটি পরীক্ষা করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলে বলা হয়, একজন চেয়ারম্যান ও উভয়পক্ষ মনোনীত দুজন করে মোট পাঁচজন সদস্য নিয়ে গ্রাম আদালত গঠন করা হবে। প্রত্যেক পক্ষ কর্তৃক মনোনীত দুজন সদস্যের মধ্যে একজন সদস্যকে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হতে হবে। ফৌজদারি এবং দেওয়ানি মামলার সঙ্গে কোনো নারীর স্বার্থ জড়িত থাকলে সংশ্লিষ্ট পক্ষ সদস্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে একজন নারীকে সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেবে। চারজন সদস্যের উপস্থিতিতে গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্ত দুই-দুই ভোটে অমীমাংসিত হলে চেয়ারম্যান নির্ণায়ক ভোট দিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। বিলের তফসিলে সাত ধরনের দেওয়ানি মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হলো-  ১. কোনো চুক্তি রসিদ বা অন্য কোনো দলিল মূল্যে প্রাপ্য অর্থ আদায়;  ২. কোনো অস্থাবর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার বা তার মূল্য আদায়ের মামলা;  ৩. স্থাবর সম্পত্তি বেদখল হওয়ার এক বছরের মধ্যে তার দখল পুনরুদ্ধারের মামলা;  ৪. কোনো অস্থাবর সম্পত্তির জবর দখল বা ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলা;  ৫. গবাদি পশু অনধিকার প্রবেশের কারণে ক্ষতিপূরণের মামলা;  ৬. কৃষি শ্রমিকদের পরিশোধ্য মজুরি ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলা; ৭. কোনো স্ত্রী কর্তৃক তার বকেয়া ভরণপোষণ আদায়ের মামলা। এসব বিষয় গ্রাম আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তিযোগ্য হবে।
০৫ মার্চ ২০২৪, ১৮:০৬

প্রচণ্ড শীতে ফরজ গোসল, অপারগতায় ইসলামের যে বিধান
এখন ভরা শীতের মৌসুম। প্রচণ্ড শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত। এই শীতে অনেকেরই ওজু ও আবশ্যক গোসলে সমস্যা হয়। যারা ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছে, তাদের জন্য নিয়মিত গোসল করা রীতিমতো বিপদের। যদি কারও নিয়মিত আবশ্যক ওজু-গোসলে সমস্যা হয়, তার জন্য ইসলামের বিধান কী? কীভাবে তিনি এই সমস্যার মধ্যে নামাজ-রোজা পালন করবেন। এ ক্ষেত্রে ইসলাম বলছে, গরম পানি কিংবা অন্য যেভাবে শরিয়তের বিধান মোতাবেক ওজু করা যায় সেটা করা। যদি আপনি অপারগ হন এবং ঠান্ডা অতি তীব্র হয়, পানি ব্যবহারে বিপদ ঘটার আশঙ্কা থাকে, পানি গরম করা বা আশপাশে কারও থেকে গরম পানি কেনার কোন উপায় না থাকে সেক্ষেত্রে আপনার ওজর গ্রহণযোগ্য এবং তায়াম্মুম করাই আপনার জন্য যথেষ্ট। আরবে অন্তরীণ শাইখ সালেহ আল মুনাজ্জিদের কাছে এক ব্যক্তি জানতে চেয়েছিল, ‘প্রচণ্ড শীতের দিনে গোসল ফরজ হলে আমি কি তায়াম্মুম করে নামায পড়তে পারি? উল্লেখ্য, যে সরঞ্জামাদি থাকলে আমি অবিলম্বে পবিত্র হতে পারি সেগুলো আমার কাছে নেই। তাছাড়া আমি ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত; আমার পিঠ রোগাগ্রস্ত, আমাকে সাংঘাতিক কষ্ট দিচ্ছে।’ উত্তরে তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, যে ব্যক্তির উপর গোসল ফরজ হয়েছে সে ব্যক্তি নামায পড়তে চাইলে তার উপর ফরয হচ্ছে, পানি দিয়ে গোসল করে নেওয়া। দলিল হচ্ছে- ‘আর তোমরা জুনুবি (অপবিত্র) হলে প্রকৃষ্টভাবে পবিত্রতা অর্জন করবে (সূরা মায়েদা, আয়াত: ৬)। তাই কেউ যদি পানি ব্যবহারে অক্ষম হয়, পানি না-থাকার কারণে কিংবা পানি থাকলেও এর ব্যবহারে রোগের ক্ষতি হতে পারে কিংবা তীব্র ঠান্ডার কারণে (তার কাছে পানি গরম করার মত কিছু না থাকলে); তাহলে সে ব্যক্তি পানি দিয়ে গোসল করার পরিবর্তে মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করতে পারেন। এর দলিল হচ্ছে আল্লাহ্‌র বাণী: “আর যদি তোমরা অসুস্থ হও বা সফরে থাক বা তোমাদের কেউ মলত্যাগ করে আসে বা তোমরা স্ত্রী সহবাস কর এবং পানি না পাও তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৬)।  এ আয়াতে দলিল রয়েছে যে, অসুস্থ ব্যক্তি পানি ব্যবহার করার ফলে যদি তার মৃত্যু ঘটা, কিংবা রোগ বেড়ে যাওয়া কিংবা আরোগ্য লাভ বিলম্ব হওয়ার আশংকা থাকে সেক্ষেত্রে তিনি তায়াম্মুম করবেন। আল্লাহ্‌ তাআলা তায়াম্মুমের পদ্ধতি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘তা দ্বারা মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ করবে (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৬)।    আমর বিন আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘জুতুস সালাসিল’-এর অভিযানে এক ঠান্ডার রাতে আমার স্বপ্নদোষ হয়ে গেল। আমি আশঙ্কা করলাম, আমি যদি গোসল করি তাহলে ধ্বংস হয়ে যাব। তাই আমি তায়াম্মুম করলাম। এরপর আমার সাথিদেরকে নিয়ে ফজরের নামায আদায় করলাম। আমার সাথিরা বিষয়টি নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে উল্লেখ করলে তিনি বললেন, হে আমর! তুমি কি জুনুবি (গোসল ফরজ হওয়া) অবস্থায় তোমার সাথিদের নিয়ে নামাজ পড়েছ? তখন আমি তাকে জানালাম কী কারণে আমি গোসল করিনি এবং আমি আরও বললাম, আমি শুনেছি আল্লাহ্‌ বলেন: ‘তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তোমাদের প্রতি দয়ালু (সূরা নিসা, আয়াত: ২৯)। তখন রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হেসে দিলেন, কোন কিছু বললেন না।  শাইখ আব্দুল আযিয বিন বায (রহ.) বলেন, যদি আপনার পক্ষে গরম পানি সংগ্রহ করা সম্ভব হয় কিংবা আপনি গরম করতে পারেন কিংবা প্রতিবেশী বা অন্য কারো থেকে কিনে নিতে পারেন তাহলে সেটা করা আপনার উপর আবশ্যকীয়। কেননা আল্লাহ্‌ বলেন, ‘তোমরা সাধ্যানুযায়ী আল্লাহ্‌কে ভয় করো (সুরা তাগাবুন, আয়াত: ১৬)। তাই আপনার কর্তব্য হচ্ছে ।  তথ্য সূত্র : ইমাম বাতায়ন
২১ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:১৮
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়