• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
শিল্পী সমিতির মারামারি / যেমন নেতা-নেত্রী, তেমন কর্মীরাও : বাপ্পারাজ
কাজ নয়, সমিতি চর্চায় ব্যস্ত বিএফডিসির সংগঠনগুলো। প্রায়ই জ্যেষ্ঠ শিল্পীদের মুখে এ নিয়ে ক্ষোভের কথা শোনা যায়। দেশে অবাধ হিন্দি সিনেমা আমদানি হচ্ছে। ক্ষমতার জোরে এক-দুই দিনে হয়ে যাচ্ছে সেন্সরও। শিল্পী সমিতিসহ ১৯ সংগঠন হিন্দি সিনেমা আমদানিতে ভূমিকা রাখছে। নির্বাচন এবং পিকনিক নিয়ে ব্যস্ত এখনকার এফডিসির বেকার মানুষেরা। সংস্কৃতি আগেই শেষ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক বাপ্পারাজ। তিনি বলেন, এখন আমরা সমিতির নির্বাচন, পিকনিক—এসব নিয়ে আছি। আমরা বাঙালিরা বিদেশে গেলে বিএনপি, আওয়ামী লীগ হয়ে যাই। আমরা তখন আর বাঙালি থাকি না। বিদেশের মাটিতে মারামারি করি। আমরা ফিল্মের লোকজন এখন আওয়ামী লীগ, বিএনপি হয়ে গেছি। এখন আর শিল্পী নই আমরা, সিনেমায়ও নেই। একসময় আমরা শিল্পী, পরিচালক, প্রযোজকসহ কলাকুশলীরা বসতাম। আড্ডা হতো, সিনেমার কথা হতো। এখন সেটি আর নেই। এখন আমরা গ্রুপে গ্রুপে বিভক্ত। এ বলে ওর সঙ্গে বসব না, ও বলে এর সঙ্গে বসব না। ছিন্নবিচ্ছিন্ন এক অবস্থা সিনেমা জগতের। এই বিরোধ সিনেমাকে আরও পিছিয়ে দিয়েছে বলে মনে করেন এই অভিনেতা। ‘বুক ভরা ভালোবাসা’ সিনেমার এই নায়ক বলেন, এমনিই তো আমাদের সিনেমা পিছিয়ে গেছে। এসবের প্রভাবে আরও খারাপ হবে। আর এসব যারা করছেন, তারা তো করার জন্যই এখানে আসছেন। তাদের কোনো কাজকর্ম নেই। শিল্পীদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি করে নিজেদের কাজে লাগাচ্ছেন। এখন যারা বেকার, কাজকর্ম নেই—এমন সব মানুষকে ব্যবহার করে এসব বিভক্তি করানো হচ্ছে। এই বিভক্তিতে চলচ্চিত্রের বড় ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে ‘জবাব চাই’ সিনেমার বাপ্পারাজ বলেন, গত পিকনিকে কোনো তারকা, ভালো শিল্পীদের দেখেছেন? দেখেননি। কারণ, অনেকেই যাননি। যারা গেলেন, খেলাধুলা করলেন, আবার মারামারিও করলেন। বুঝেছেন, আমাদের সিনেমার মানুষের কী হাল! সিনেমার মান এখন ওই অবস্থায় চলে গেছে। যেমন নেতা–নেত্রী, তেমন কর্মীরাও। কারণ, আমাদের মতো যারা আছেন, তাদের নেতা-নেত্রী তো তারা হতে পারবেন না। কারণ, তাদের সেই যোগ্যতা নেই। আর আমরা এ ধরনের নেতা-নেত্রীকে মানবই বা কেন? যারা পিকনিকে গিয়ে মারামারি করতে পারেন, সেই মানের কর্মীদের নেতা–নেত্রী হওয়াই তাদের যোগ্যতা। আমি আমার মানের নিচের একজনকে তো নেতা হিসেবে মানব না, অনুসরণও করব না। আমাদের সমিতির অবস্থা এখন এমনই, বেকার মানুষেরা নেতা-নেত্রী সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পরিচালক সমিতিতে যান, সিনেমা নেই কিন্তু নেতা হয়ে বসে আছেন। শিল্পী সমিতিতে যান, প্রযোজক সমিতিতে যান—সবখানে একই চিত্র। কোনো কাজ নেই, সবাই নেতা। যারা নেতা-নেত্রী হচ্ছেন তারা কেবল ব্যক্তি হিসেবে লাভবান হচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, একেবারেই ব্যক্তি লাভবান হচ্ছেন। সিনেমার জন্য কোনো কিছুই হচ্ছে না। সরকারি দাওয়াতপত্র পাচ্ছেন, সেখানে যাচ্ছেন, খাচ্ছেন। আবার নেতা-নেত্রী হয়ে নিজেদের কোনো ব্যবসা–বাণিজ্য থাকলে সেখানেও সুবিধা পেতে পারেন। ১৯ সংগঠন নেতা যারা আছেন, তারা কারা? তারা হিন্দি সিনেমা আসার জন্য ছাড়পত্র দিচ্ছেন। ছাড়পত্র দেওয়ার তারা কে? ‘তুমি বন্ধু আমার চির সুখে থেকো’, ‘আমি তো একদিন চলে যাব’, ‘তোমরা সবাই থাকো সুখে’সহ বেশ কিছু বিরহ ঘরানার গান আজও দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এসব গানে ঠোঁট মিলিয়েছেন চিত্রনায়ক বাপ্পারাজ। এসব গানে কষ্টের মাঝে এক ফালি হাসি দিয়ে হাজারো দর্শকের হৃদয় জয় করেছেন তিনি। এক সময়ের ব্যস্ত এই অভিনেতা এখন অভিনয়ে অনিয়মিত। তবে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আয়োজনে দেখা মেলে তার।
১২ মার্চ ২০২৪, ১৯:১৬
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়