• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo
এক জনমে আর কত কষ্ট বাকি তোমার, লামিশার বাবাকে ডিআইজি
রাজধানীর বেইলি রোডের ভয়াবহ আগুনে পুলিশ সদরদপ্তরে কর্মরত অতিরিক্ত ডিআইজি মো. নাসিরুল ইসলামের মেয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কেমিকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী লামিশা ইসলাম মারা গেছেন।  ‘বাবা আমি আটকা পড়েছি, আমাকে বাঁচাও’- মৃত্যুর আগে লামিশা তার বাবাকে ফোন করে এই শেষ কথা বলেছিলেন। লামিশার চাচা রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, মেয়ের আকুতির সামনে অসহায় বাবা মেয়েকে হারিয়ে স্তব্ধ হয়ে গেছেন। জানা গেছে, ২০১৮ সালে লামিশার মা আফরিনা মাহমুদ মিতু মারা গেলেও মেয়ের দিকে তাকিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেননি নাসিরুল। তার বাঁচার অবলম্বন দুই মেয়েকে নিয়ে থাকতেন ঢাকার অফিসার্স ক্লাবে। তার যে শোক তাতে একইভাবে মর্মাহত তার সহকর্মীরাও। এমনই একজন নাসিরুলের জ্যেষ্ঠ সহকর্মী পুলিশের ডিআইজি রুহুল আমিন শিপার। যিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নাসিরুলকে নিয়ে আবেগঘন একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করেছেন। ‘অগ্নিপরীক্ষা’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে নাসিরুলের জীবনের কঠিন পথের নানা দিক তুলে ধরেছেন তিনি। পাঠকদের জন্য ডিআইজি রুহুল আমিন শিপারের পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো- #অগ্নি_পরীক্ষা প্রায় বছর ছয়েক আগের কথা। নাসির পাথরের মতো মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে। বিএসএমএমইউ (পিজি) হাসপাতালের ডি ব্লক-এর সামনে একটা ফ্রিজার ভ্যানে ওর স্ত্রীর মরদেহ রাখা। বিয়ের আগে ওরা মামাতো ফুপাতো ভাই-বোন ছিল। নাসিরের জিম্মায় ছোট্ট দুটি মেয়ে রেখে ভাবি একা চলে গেলেন। একটু পরে তখনকার আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী স্যার এলেন। এরপর দাফনের জন্য নারায়ণগঞ্জে নেওয়া হলো মরদেহ। ২২তম বিসিএস ব্যাচের অফিসার অতিরিক্ত ডিআইজি নাসির পদার্থবিদ্যা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে। আমার পাশের ফজলুল হক হলে থাকতো। এখনো আমরা একই কম্পাউন্ডে থাকি এবং একই অফিসে কাজ করি। কয়েক বছর আগের কথা। তখন বেনজীর আহমেদ স্যার র‌্যাবের মহাপরিচালক। পুলিশ সদরদপ্তরে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে নাসিরের একটা প্রেজেন্টেশন দেখে প্রকাশ্যে বলে ফেললেন, ইউ আর সো ইন্টেলিজেন্ট। কিন্তু আমি তোমাকে চিনি না কেন? এরপর বেনজীর স্যার আইজিপি হয়ে পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়া সংস্কারে হাত দিলেন। এআইজি রিক্রুটমেন্ট হিসেবে মেধাবী নাসির একটা অসাধারণ নিয়োগ কাঠামো তৈরি করে দেয়। যেখানে চাইলেও দুর্নীতি কিংবা পক্ষপাতিত্ব করা প্রায় অসম্ভব। বর্তমানে সেই কাঠামোতেই নিয়োগ চলছে। দুই মেয়ে নিয়ে নাসিরের একার সংসার। একদিন শুধু বলেছিলাম, আর বিয়েশাদি করলে না? একটু হেসে মাথা নেড়ে ও বললো, না, স্যার। ওর মেয়েরা খুবই মেধাবী। বড় মেয়ে সম্ভবত ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ফার্স্ট গার্ল ছিল। কলেজ শেষ করে সে বুয়েটে ভর্তি হয়েছিল। নাসিরের জীবনে ছয় বছর আগের সেই রাত আবার ফিরে এলো। গতরাতে (২৯ ফেব্রুয়ারি) আগুন লাগার সময় বেইলি রোডের সেই রেস্তোরাঁয় ওর বুয়েট পড়ুয়া মেয়েটা ছিল। সে আর ফেরেনি, চলে গেছে জীবনের ওপারে। বছর ছয়েক আগে স্ত্রী মরে যাওয়ার রাতে নাসিরের সেই চেহারার কথা স্পষ্ট মনে আছে আমার। এবার অবশ্য ওর সাথে দেখা হয়নি। মেয়ের মরদেহ নিয়ে ফরিদপুরের পথে আছে সে। ওকে ফোন দিতে মন চাইছে না। তাই হোয়াটসঅ্যাপে শুধু নিচের মেসেজটা দিয়েছি- ‘নাসির, আমার অন্তরটা ছিঁড়ে যাচ্ছে। বাসায় বসে এখন কাঁদছি। এক জনমে আর কত কষ্ট বাকি তোমার?’
০২ মার্চ ২০২৪, ০৪:১৭

পিলখানা ট্রাজেডির ১৫ বছর / বিচারের শেষ দেখা বাকি এখনও  
আজ রোববার, ২৫ ফেব্রুয়ারি। ২০০৯ সালের এই তারিখে ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস হত্যাযজ্ঞের সাক্ষী হয়েছিল দেশ। বিভিন্ন জায়গায় একযোগে বিদ্রোহ করে বসেন তৎকালীন বিডিআর সদস্যরা। নরকে পরিণত হয় রাজধানীর বিডিআর সদর দপ্তর। মাত্র ৩৬ ঘণ্টার ব্যবধানে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জনকে হত্যা করা হয় এ বিদ্রোহে। তাদের মধ্যে আছেন তৎকালীন বিডিআর প্রধান মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদও।  স্বাধীন বাংলাদেশে নৃশংসতম ঘটনা বলে বর্ণনা করা হয় সেদিনের বিডিআর বিদ্রোহকে। নারকীয় এ হত্যাকাণ্ডের ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি কোনও মামলার। আপিল বিভাগে ঝুলে আছে হত্যা মামলার বিচার। হাইকোর্টের রায়ের পর ছয় বছর হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত শুনানি হয়নি সর্বোচ্চ আদালতে। আর ২০১১ সালে শুরু হওয়া বিস্ফোরক আইনের মামলার বিচার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে ঢাকার আদালতে। তবে চলতি বছরের মধ্যে হত্যা মামলার আপিল শুনানি শুরু হতে পারে বলে আশা করছে রাষ্ট্রপক্ষ। আসামিপক্ষের প্রত্যাশা, আপিল বিভাগে বিচারক বাড়িয়ে আলাদা বেঞ্চ গঠন করে দ্রুত শুনানির ব্যবস্থা করা হবে। কী ঘটেছিল ১৫ বছর আগের এই দিনে সকাল ৯টা ২ মিনিট। বার্ষিক দরবার চলছিল তৎকালীন বিডিআর (বাংলাদেশ রাইফেলস) বাহিনীর। শুরুতেই উচ্চ পদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন বেশ কয়েকজন বিডিআর  জওয়ান। তাদের বক্তব্যের ভাষা ছিল ঝাঁঝালো। দাবি করেন সেনা কর্মকর্তাদের মতো সমান অধিকার। এরপরই বক্তব্য রাখেন তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর শাকিল আহমেদ। উত্তপ্ত দরবারের পরিবেশ।   ৯ টা ২৭ মিনিট। হঠাৎ দরবার হলে ঢুকে পড়েন একদল বিদ্রোহী সৈনিক। তাদেরই একজন বন্দুক তাক করেন  মেজর শাকিলের বুকে। সূচনা হয় ইতিহাসের সেই নৃশংসতম ঘটনার। সেনা কর্মকর্তাদের উপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন বিদ্রোহী সৈনিকরা। কর্মকর্তাদের হত্যা করেই ক্ষান্ত হন না বিদ্রোহী জওয়ানরা, জিম্মি করে ফেলেন কর্মকর্তাদের পরিবারগুলোকে। পুরো পিলখানায় সৃষ্টি হয় ভীতিকর পরিস্থিতি। চারটি প্রবেশ গেট নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আশপাশের এলাকায় গুলি ছুঁড়তে থাকেন বিদ্রোহীরা। দরবার হল ও এর আশপাশের এলাকায় সেনা কর্মকর্তাদের উপর গুলি করতে থাকেন তারা। একে একে লুটিয়ে পড়তে থাকেন সেনা কর্মকর্তারা। ৩৬ ঘণ্টা পর এ  অবসান হয় বিদ্রোহের। এক রক্তাক্ত প্রান্তরে পরিণত হয় পিলখানা। পরে ভেতরে আবিষ্কৃত হয় গণকবরও। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার মরদেহ। ৩৬ ঘণ্টার এ হত্যাযজ্ঞে ৫৭ সেনা কর্মকর্তা ছাড়াও নিহত হন এক সৈনিক, দুই সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী, ৯ বিজিবি সদস্য ও পাঁচ বেসামরিক ব্যক্তি। বহুল আলোচিত এ ঘটনায় দায়ের করা হয় দুটি মামলা। এর মধ্যে হত্যা মামলায় ১৩৯ জনকে ফাঁসি, ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন ও ২০০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। এরপর আসামিদের অনেকেই আপিল বিভাগে আপিল করেন, যার শুনানি এখনো শুরু হয়নি। আর বিস্ফোরক মামলাটির বিচার এখনো চলছে ঢাকার নিম্ন আদালতে। মামলা ও বিচারকার্য বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মামলা হিসেবে পরিচিত এটি। দীর্ঘ বিচার ও রায় শেষে ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পিলখানা হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। আদালত সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। পরে এসব মামলা নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়।  হত্যা মামলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২৩ বেসামরিক ব্যক্তিসহ প্রথমে ৮২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরে সম্পূরক অভিযোগপত্রে আরও ২৬ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করায় আসামির সংখ্যা বেড়ে হয় ৮৫০ জন। এছাড়া বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় ৮০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় সিআইডি। পরে আরও ২৬ জনকে অভিযুক্ত করে মোট ৮৩৪ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। রাজধানীর পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ইতিহাসের কলঙ্কজনক এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন, ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে (তিন বছর থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত) কারাদণ্ড, ২৭৮ জনকে খালাস দেওয়া হয়। এছাড়া চার আসামি বিচার চলাকালে মারা যাওয়ায় অব্যাহতি দেওয়া হয় তাদেরকে। আদালতের রায় ঘোষণার পর ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে যায়। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে আসামিরা দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল ও জেল আপিল করেন। এর মধ্যে ৬৯ জনকে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। গুরুত্বপূর্ণ এ মামলার শুনানির জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেন সুপ্রিম কোর্ট।  ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে দেন। দেশের ইতিহাসে আসামির সংখ্যার দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় এ মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের উপর ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে শুনানি শুরু হয়। মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিতরা সবাই বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (তৎকালীন বিডিআর) সদস্য ছিলেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিতদের মধ্যে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীও রয়েছেন। এর মধ্যে নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু ২০১৫ সালের ৩ মে রাজশাহী কারাগারে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। রায়ে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৫২ জন আসামির মধ্যে ১৩৯ জনের ফাঁসির রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আটজনের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করা হয় ও চারজনকে খালাস দেওয়া হয়। এছাড়া বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন পাওয়া ১৬০ জন আসামির মধ্যে ১৪৬ জনের সাজা বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এদের মধ্যে দুজন আসামির মৃত্যু হয়েছে এবং ১২ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। বিডিআর পুনর্গঠন ও বিজিবির আত্মপ্রকাশ দেশের সেনাবাহিনীর ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ এ বিদ্রোহের ঘটনায় সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে যায় বিডিআরের। শুরু হয় বিডিআর পুনর্গঠনের কাজ। পরিবর্তন করা হয় বিডিআরের নাম, পোশাক, লোগো ও সাংগঠনিক কাঠামো। পরিবর্তন করা হয় তাদের আইনও। বিডিআরের নতুন নাম হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।  জাতীয় সংসদে ২০১০ সালের ৮ ডিসেম্বর পাস হয় ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন, ২০১০’। ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর থেকে তা কার্যকর হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি বাহিনীর সদর দপ্তরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নতুন পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন এবং মনোগ্রাম উন্মোচন করেন। এর মধ্যদিয়ে শুরু হয় এ বাহিনীর নতুন পথচলা। দিনটিকে ঘিরে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর বা আইএসপিআর থেকে জানানো হয়েছে, নিহত সেনা সদস্যদের স্মরণে শাহাদাতবার্ষিকী হিসেবে রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে সেনাবাহিনী। বিদ্রোহে নিহত সেনা সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এছাড়া দিনটির স্মরণে রোববার ও সোমবার (২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি) নানা কর্মসূচি পালন করার কথা রয়েছে বিজিবির।
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:২৯

দুই পদে ৫৫১ জনকে চাকরি দিচ্ছে রেলওয়ে, আবেদনের বাকি ২ দিন
সম্প্রতি জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। দুই ক্যাটাগরির পদে মোট ৫৫১ জন নিয়োগ দেবে প্রতিষ্ঠানটি। আগ্রহীরা আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। ১. পদের নাম: সহকারী স্টেশনমাস্টার পদসংখ্যা: ৪১৭ গ্রেড: ১৫ বেতন স্কেল: ৯,৭০০-২৩,৪৯০ টাকা শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক ডিগ্রি। পদটিতে সব জেলার প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। ২. পদের নাম: সহকারী লোকোমোটিভ মাস্টার পদসংখ্যা: ১৩৪ গ্রেড: ১৭ বেতন স্কেল: ৯,০০০-২১,৮০০ টাকা শিক্ষাগত যোগ্যতা: এইচএসসি বা সমমান। পদটিতে পাবনা, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও কুষ্টিয়া জেলা বাদে সব জেলার প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। বয়সসীমা: ১৮ জানুয়ারি, ২০২৪ তারিখে ১৮ থেকে ৩০ বছর। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩২ বছর পর্যন্ত শিথিলযোগ্য। উল্লেখ্য, ১৪ থেকে ২০ গ্রেডে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মোট শূন্য পদের ৪০ শতাংশ পোষ্যদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। বাংলাদেশ রেলওয়েতে স্থায়ী পদে কমপক্ষে ২০ বছর চাকরি করেছেন, এমন কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত, জীবিত বা মৃত ব্যক্তির স্ত্রী ও সন্তান পোষ্য কোটার প্রার্থী হিসেবে গণ্য হবেন। আবেদন করবেন যেভাবে: আগ্রহী প্রার্থীরা http://br.teletalk.com.bd এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।  
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:৪৫

বাকি তিন টেস্ট থেকেও সরে দাঁড়ালেন কোহলি
ঘরের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে একটি করে জিতে সমতায় এনেছে ভারত। প্রথম দুই ম্যাচে খেলেননি বিরাট কোহলি। এবার পরের তিন ম্যাচে থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন এই তারকা ব্যাটার। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) লোকেশ রাহুল ও রবীন্দ্র জাদেজাকে ফিরিয়ে এনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের শেষ তিন টেস্টের জন্য ১৭ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। ইনজুরির কারণে দল থেকে ছিটকে পড়েছেন ব্যাটার শ্রেয়াস আইয়ার। এ ছাড়াও ব্যক্তিগত কারণে সিরিজের বাকি তিন ম্যাচ থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন খেলা বিরাট কোহলি।  তবে দলের নতুন মুখ ডান-হাতি পেসার আকাশ দীপ। হায়দারাবাদে সিরিজের প্রথম টেস্টে ইনজুরিতে পড়ায় বিশাখাপতমে দ্বিতীয় ম্যাচ থেকে ছিটকে যান রাহুল ও জাদেজা। সিরিজের বাকী তিন টেস্টের জন্য দলে সুযোগ হলেও, শর্তসাপেক্ষে নেওয়া হয়েছে তাদের। বিসিসিআইর মেডিকেল টিমের ছাড়পত্র পেলেই খেলতে পারবেন রাহুল ও জাদেজা। দ্বিতীয় টেস্টে পিঠের ইনজুরিতে পড়ে পুরো সিরিজের বাকি ম্যাচ থেকেই ছিটকে গেছেন আইয়ার। তার জায়গায় খেলার সুযোগ পেতে পারেন রজত পাতিদার ও সরফরাজ খানের মধ্যে কেউ। দ্বিতীয় টেস্টে অভিষেক হওয়া পাতিদার দুই ইনিংসে মোট ৪১ রান করেছেন। সম্প্রতি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে বল হাতে দারুণ পারফম্যান্সের সুবাদে প্রথমবারের মত টেস্ট দলে সুযোগ পেলেন দীপ। ভারত ‘এ’ দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১১ উইকেট শিকার করেন তিনি। সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ভারতের ওয়ানডে দলে সুযোগ পেলেও অভিষেক হয়নি দীপের। প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে ২৯ ম্যাচে ১০৩ উইকেট শিকার করেছেন এই ডান হাতি পেসার। ভারত দল : রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), যশস্বী জয়সওয়াল, শুভমান গিল, লোকেশ রাহুল, সরফরাজ খান, রজত পাতিদার, রবীন্দ্র জাদেজা, লোকেশ রাহুল (উইকেটরক্ষক), ধ্রুব জুরেল (উইকেটরক্ষক), অক্ষর প্যাটেল, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, কুলদীপ যাদব, ওয়াশিংটন সুন্দর, জসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ, মুকেশ কুমার ও আকাশ দীপ।  
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:২২

হজ নিবন্ধনের বাকি টাকা ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ
প্রাথমিক নিবন্ধনকারী সকল হজযাত্রীকে নিবন্ধনের অবশিষ্ট টাকা আগামী ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সৌদি সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের হজযাত্রীদের জন্য মিনায় তাঁবু গ্রহণ, মোয়াল্লেম গ্রহণ, বাড়ি বা হোটেল ভাড়া, পরিবহন চুক্তি প্রভৃতি আবশ্যিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। এ কারণে ২০২৪ সালে ২ লাখ ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধনকারী হজযাত্রীদেরকে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিবন্ধনের অবশিষ্ট টাকা জমা দিতে হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, নিবন্ধন শেষে এখনও কোটা খালি রয়েছে ৪৪ হাজার ৪৩টি। এ বছর বাংলাদেশের জন্য এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮টি কোটা নির্ধারণ করে দেয় সৌদি আরব। এর মধ্যে সরকারিভাবে হজে যেতে নিবন্ধন করেছেন চার হাজার ২৬০ জন। বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন। সবমিলিয়ে মোট নিবন্ধন করেছেন ৮৩ হাজার ১৫৫ জন। বাকি ৪৪ হাজার ৪৩টি কোটা ফেরত যাবে। এবার হজের নিবন্ধন শুরু হয় ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর, যা ১০ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা ছিল। প্রত্যাশিত সাড়া না মেলায় প্রথম দফায় সময় বাড়ানো হয় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর দ্বিতীয় দফায় ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়। তৃতীয় দফায় ২৫ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ায় ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এতেও হজ নিবন্ধনে কাঙ্ক্ষিত সাড়া না মেলায় শেষ দফায় ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়। চলতি ২০২৪ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার দুটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন প্যাকেজের মূল্য পাঁচ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা। বিশেষ প্যাকেজের মূল্য নয় লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা।  অপরদিকে, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি প্যাকেজের মূল্য যথাক্রমে পাঁচ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা এবং আট লাখ ২৮ হাজার ৮১৮ টাকা। যদিও গত বছরের চেয়ে এ বছর সর্বনিম্ন প্যাকেজের মূল্য এক লাখ চার হাজার ১৬০ টাকা কমানো হয়েছে। এরপরও বর্তমান হজ প্যাকেজের মূল্যকে অনেক বেশি মনে করছেন হজে যেতে আগ্রহীরা।
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:২৫

একজনকে নিয়ে চলছে পাঠদান, বাকি কক্ষগুলো ফাঁকা
একজন ছাত্র নিয়ে শ্রেণিকক্ষে চলছে পাঠদান। বিদ্যালয়ের বাকি কক্ষগুলো পড়ে আছে ফাঁকা। এমন চিত্র নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার কাদরা ইউনিয়নের নন্দীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। গত কয়েক বছর ধরে প্রতি শিক্ষাবর্ষে ৫-১০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে এভাবে চলে আসছে বিদ্যালয়টির পাঠদান কার্যক্রম। স্থানীয়রা বলছেন বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অশোভন আচারণ ও অব্যবস্থাপনার কারণে এমন পরিস্থিতি। তবে প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ কমিটি ও চেয়ারম্যানের অসহযোগিতার কারণে লোকজন তাদের বাচ্চাদের এ বিদ্যালয়ে দিচ্ছে না। সরেজমিনে গত রোববার বিদ্যালয়টি ঘুরে দেখা গেছে, বেলা ১১টা নিয়মানুসারে প্রাথমিকের পাঠদান চলার কথা। কিন্তু সেই সময় প্রধান শিক্ষকসহ ৩ জন শিক্ষক অফিস কক্ষে বসে আছেন। একজন প্রাক-প্রাথমিকের পাঠ পরিকল্পনা প্রস্তুত করছেন। আর সহকারী শিক্ষক জহিরুল আলম সকালে এসে স্বাক্ষর দিয়ে বের হয়ে গেছেন। ওইসময় বিদ্যালয়েল প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সকল শ্রেণিকক্ষ শিক্ষার্থী শূন্য। সাংবাদিক দেখে অফিস কক্ষ থেকে দুইজন সহকারী শিক্ষক তড়িঘড়ি করে বের হয়ে আসেন। মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে থাকা মোস্তাফিজুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থীকে প্রথম শ্রেণির কক্ষে ঢুকিয়ে বেঞ্চে এনে বসান। তখনও বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক থেকে অপর কক্ষগুলো শিক্ষার্থী শূন্য। সোজা কথায় বিদ্যালয়ে ৪ জন শিক্ষকের বিপরীতে শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন মাত্র ১ জন। কিছুক্ষণ পর একজন শিক্ষক প্রথমে মোস্তাফিজকে গণিত, পরে আরেকজন ইংরেজি পড়ান। দুপুর ১২টার দিকে চতুর্থ শ্রেণিতে ২জন ও তৃতীয় শ্রেণির আরও ১ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসে। রোববার প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট উপস্থিত ছিল ৪ জন শিক্ষার্থী। এছাড়া বিদ্যালয় চলাকালে বেশ কিছু বখাটে বিদ্যালয়ের বারান্দায় এবং শ্রেণি কক্ষে ঢুকে আড্ডা দিতেও দেখা গেছে। আবার প্রধান শিক্ষক তাদের দিয়ে বিভিন্ন কাজও করান। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ২০০৬ সালে অবসরে যাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পান সহকারী শিক্ষক রাশেদা আক্তার। কিন্তু এরপর থেকে তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়মিত কোনো ক্লাস নিতেন না, গত ৪-৫ বছর ধরে তা একবারেই বন্ধ হয়ে যায়। তার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে বিদ্যালয়টিতে কমতে থাকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব অবহেলার কারণে সহকারী শিক্ষক যারা আছেন তারাও নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন না। যার ফলে এখানে বাচ্চাদের দিলে তাদের লেখাপড়ার কোনো উন্নতি হয় না, তাই বাধ্য হয়ে তাদের অনত্রে নিয়ে যেতে হয়। নতুন বছর আসলে প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে নতুন শিক্ষার্থী সংগ্রহে বাড়ি বাড়ি গেলেও এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কখনও কারো বাড়িতে যান না। সহকারী শিক্ষকরা যেতে বললেও তাদের নিষেধ করে দেন। গত দুই বছর ধরে এলাকার লোকজন ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির লোকজনের সঙ্গে খারাপ আচরণসহ বিভিন্ন কারণে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কারও সম্পর্ক ভালো না। সকল অনিয়মের অবসানের মাধ্যমে ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পদচারণায় ও সুন্দর এবং স্বাভাবিক পাঠদানের মধ্য দিয়ে আবারও মুখোরিত হয়ে উঠবে এমন প্রত্যাশা স্থানীয়দের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলে হাসান একটি মাদরাসায় পড়ালেখা করতো। স্কুলের পাশে তার দোকান হওয়ায় গত এক বছর আগে তাকে এ বিদ্যালয়ে এনে ভর্তি করেন। কিন্তু গত এক বছরে সে এখনও পর্যন্ত বই দেখে রিডিং পড়তে পারে না। যার ফলে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জহিরুল আলমকে আমি হাসানকে প্রাইভেট পড়াতে বলি। এ বিষয়টি নিয়ে তিনি অসম্মান বোধ করেছেন বলে আমার ছেলে হাসানকে ক্লাসে মারধর করেন। এজন্য এখানে কেউ তাদের বাচ্চাদের ভর্তি করে না। কাগজে-কলমে তারা এখানে ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী দেখালেও বিদ্যালয়ে ৪-৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী কখনও হয় না। তাছাড়া প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব অবহেলার এবং তদারকি না থাকায় এ শিক্ষক নিয়মিত বিদ্যালয়েও আসেন না। আসলেও অনেক সময় স্বাক্ষর দিয়ে চলে যান। বিদ্যালয়টির তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এ বিদ্যালয়ে নতুন করে ৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। যারমধ্যে প্রাক-প্রাথমিকে একজন, প্রথম শ্রেণিতে দুই ও তৃতীয় শ্রেণিতে একজন। বর্তমানে বিদ্যালয়ে কাগজে-কলমে মোট শিক্ষার্থী ১৭ জন। কিন্তু উপস্থিতি হয় প্রতিদিন গড়ে ৪ থেকে ৫ জন। শিক্ষার্থী কম থাকায় অবসর সময় কাটাতে হয় শিক্ষকদের। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) রাশেদা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, পরিচালনা কমিটির সভাপতি কোনো মিটিং এ আসেন না। তাকে বিভিন্ন তহবিল থেকে কমিশন দিতে বলেন। সেটা না দেওয়ার কারণে তিনি কমিটির অন্য সদস্যদের এবং এলাকাবাসিকে স্কুলে ছেলে-মেয়ে দিতে নিষেধ করে দিয়েছেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও কমিটির সভাপতির কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কম। কমিটির সভাপতি মানিক মিয়া জানান, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে কাজ না করে বিভিন্ন ভুয়া ভাউচারে স্বাক্ষর করার জন্য আমাকে চাপ প্রয়োগ করে। সেখানে স্বাক্ষর না করায় এবং তার কথা মতো ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন না করায় সে আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করছে। সরকারি টাকা লুটপাটে বাধা দেওয়া সে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। স্থানীয় কাদরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলার জেরে কমিটি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দ্বন্দ্বের কারণে আজ বিদ্যালয়টি প্রায় শিক্ষার্থী শূন্য হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় লোকজন আমাকে জানিয়েছে ওই শিক্ষককে স্থায়ীভাবে এখান থেকে অপসারণ না করলে তারা তাদের বাচ্চাদের বিদ্যালয়ে ভর্তি করবেন না। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনছুর আলী চৌধুরী বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম, শিক্ষার্থী সংকট, বিদ্যালয়ের বহিরাগতদের আড্ডাসহ অনেকগুলো অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একজন ব্যক্তির জন্য একটি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা যাবে না।
২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯:২৮
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়