• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo
বরেণ্য অভিনেতা মামুনুর রশীদের ৭৬তম জন্মদিন আজ
দেশের জনপ্রিয় বরেণ্য অভিনেতা মামুনুর রশীদের জন্মদিন বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি)। ১৯৪৮ সালের আজকের দিনেই পৃথিবীর আলো দেখেছেন তিনি। জীবনের ৭৫ বসন্ত পেরিয়ে ৭৬ পা রাখলেন এই অভিনেতা। তবে এখনও নিজকে ১৯ বছরের তরুণ বলেই মনে করেন মামুনুর রশীদ। অন্যান্যদের থেকে তার জন্মদিনের বিশেষত্ব হচ্ছে প্রতি বছর নয়, চার বছর পর পর আসে অভিনেতার এই বিশেষ দিন।    মামুনুর রশীদ একাধারে নাট্যকার, অভিনেতা ও নাট্য পরিচালক। মঞ্চ,  টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে সমান তালে কাজ করে দর্শকহৃদয়ে জায়গা করে নেন তিনি। ইতোমধ্যে পাঁচ দশকের বেশি সময় অভিনয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন এই অভিনেতা। মামুনুর রশীদ তার নাটকে শ্রেণিসংগ্রাম, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার অধিকার আদায়ের নানা আন্দোলনসহ বিভিন্ন সামাজিক ইস্যু তুলে ধরেন। লেখা ও নির্দেশনার মাধ্যমে হয়ে উঠেছেন নাট্যজগতে অপরিহার্য একজন।    ১৯৪৮ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি টাংগাইল জেলার কালিহাতির পাইকড়া গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ নেন মামুনুর রশীদ। অভিনেতার বাবা হারুনুর রশীদ ডাক বিভাগের একজন সরকারি চাকরিজীবী। সেই সুবাদে দেশের বিভিন্ন জেলার স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করেছেন। ঢাকা পলিটেকনিক থেকে পুরকৌশল বিভাগে ডিপ্লোমা করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ ও এমএ ডিগ্রি নিয়ে পড়াশুনা সম্পন্ন করেন মামুনুর রশীদ।  স্কুলজীবনে অভিনয় করতেন মামুনুর রশীদ। অভিনয়ের নেশা তখনই তৈরি হয় এই অভিনেতার। পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পড়ার সময়ই মামুনুর রশীদ তার প্রথম নাটক লেখেন। নাটকটির নাম— ‘মহানগরীতে একদিন’। তবে অভিনয় পেশা হবে, এমনটা কোনো দিন ভাবেননি তিনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভাবলেন, অভিনয়টাই জীবিকা হবে তার।  ১৯৬৭ সালে তিনি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে টেলিভিশনের জন্য নাটক লিখতে শুরু করেন মামুনুর রশীদ। তবে তার নাটকের বিষয়বস্তু ছিল মূলত পারিবারিক। সেসময় কমেডি নাটকও লিখতেন এই অভিনেতা। নাট্যশিল্পের প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা শুরু হয় টাংগাইলে তার নিজ গ্রামে যাত্রা ও লোকজ সংস্কৃতির সঙ্গে অভিনেতার নিবিড় পরিচয়ের সূত্র ধরে। ১৯৭১ সালে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন এবং জড়িত হন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সঙ্গে।  মুক্তিযুদ্ধকালীন তার প্রথম রচিত নাটক ‘পশ্চিমের সিঁড়ি’ কলকাতার রবীন্দ্রসদনে মঞ্চায়নের চেষ্টা করেন। কিন্তু তার আগেই ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীনতা অর্জন করায় নাটকটি আর তখন মঞ্চায়িত হয়নি।   পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে মঞ্চায়িত হয় নাটকটি। সেই সময়টাও তার নাট্যচর্চায় প্রতিফলিত হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। মুক্তিযুদ্ধের পর শুরু হয় তার আরেক নাট্যসংগ্রাম ‘মুক্ত নাটক আন্দোলন’। ১৯৭২ সালে কলকাতা থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরেই মামুনুর রশীদ তৈরি করেন ‘আরণ্যক নাট্যদল’।  মামুনুর রশীদের উল্লেখিত মঞ্চ ও টিভি নাটকগুলো হলো—  মঞ্চ- ‘পশ্চিমের সিঁড়ি’, ‘গন্ধর্ব নগরী’, ‘ওরা কদম আলী’, ‘অববাহিকা’, ‘জয় জয়ন্তী’, ‘সংক্রান্তি’, ‘বনাম রাঢ়াং’, ‘ভঙ্গবঙ্গ’।      ধারাবাহিক টিভি নাটক- ‘অলসপুর’, ‘সুন্দরী’ ও ‘মুর্দা ফরেশ’।  নাট্যকলায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০১২ সালে একুশে পদকে ভুষিত হন মামুনুর রশীদের। এছাড়া বাংলা একাডেমি পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী সম্মাননা, মাওলানা ভাসানী পুরস্কার, অনীক থিয়েটার সম্মাননা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।   
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৩০
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়