• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo
‘ঈদযাত্রায় মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি উঠলেই ব্যবস্থা’
উত্তরের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল করলে আর অদক্ষ চালক স্টিয়ারিং ধরলেই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান।  বুধবার (৩ এপ্রিল) সকালে হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় মহাসড়কে ঈদযাত্রার প্রস্তুতি পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন।  এ সময় তিনি বলেন, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম গোলচত্বর থেকে হাটিকুমরুল, হাটিকুমরুল থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ সমন্বিতভাবে কাজ করবে।  অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মহাসড়কের অবস্থা অনেক ভালো তাই ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের মানুষের ঈদযাত্রা স্বস্তির হবে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা। এ সময় সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডলসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
০৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:২৮

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথ  / ফিটনেসবিহীন ফেরি চলছে বছরের পর বছর, বাড়ছে দুর্ঘটনা
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার নামে পরিচিত ও গুরুত্বপূর্ণ কম সময়ে দ্রুত যোগাযোগের মাধ্যম রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌরুট। দক্ষিণবঙ্গের মানুষ সহজে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের যাতায়াতের জন্য এই নৌরুট ব্যবহার করে থাকে। এই নৌরুট দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন ও যাত্রী পারাপার হয়ে থাকে। পদ্মা সেতু চালু হবার আগে এই নৌরুটের যে পরিমাণ চাপ ছিল, এখন সেই চাপ না থাকলেও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০টি জেলা সহজে রাজধানীতে যাতায়াতের জন্য এই রুট ব্যবহার করে থাকে। তবে এই নৌরুটে চলাচলকারী বেশিরভাগ ফেরিই ফিটনেসবিহীন এবং ৩০-৩৫ বছরের পুরনো। আবার কোনো কোনো টির বয়স ৪৪-৪৬ বছরও হয়ে গেছে। যার ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে নানা ধরনের নৌ-দুর্ঘটনা। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে চলাচলকারী অধিকাংশ ফেরির ফিটনেস নেই। আবার কুয়াশার মধ্যে ফেরি চলাচলের জন্য ৫ কোটি টাকা খরচ করে যেসব ফগ লাইট বসানো হয়েছিল, সেটিও বিকল হয়ে পড়ে আছে। বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শীত মৌসুমে রাতে ঘন কুয়াশার মধ্যেও নির্বিঘ্নে ২০১৬ সালে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০টি ফেরিতে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ফগ লাইট বসানো হয়। একেকটি ৭ হাজার কিলোওয়াটের লাইট কিনতে ৫০ লাখ টাকার বেশি ব্যয় হয়। বলা হয়েছিল, এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। অথচ কয়েক দিন পরই অধিকাংশ লাইট নষ্ট হয়ে যায়। এই নৌরুটের খান জাহান আলী, শাহ আলী, কেরামত আলী, ভাষা শহীদ বরকত, কপোতি, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন, বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর, শাহ আমানত ও শাহ পরান ফেরিতে ফগ অ্যান্ড সার্চ লাইট বসানো হয়। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ছোট-বড় ১৬টি ফেরি চলাচল করে। এসব ফেরিত প্রতিদিন ১৭ থেকে ১৮শ যানবাহন পারাপার হয়। কিন্তু কুয়াশার কারণে প্রতিদিনই ৩ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্তও ফেরি চলাচল বন্ধ থাকছে। এসব কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে প্রায়ই ঘটছে নানা মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এতে একদিকে ঘটছে প্রাণহানি, অপর দিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসায়ীরা।   গত ১৭ জানুয়ারি সকালে কুয়াশায় আটকে থাকা ছোট ইউটিলিটি ফেরি ‘রজনীগন্ধা’র তলা ফেটে পানি উঠে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটের অদূরে ৯টি ট্রাক নিয়ে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া রজনীগন্ধা ফেরিটিরও ফিটনেস ছিল না বলে ফেরিতে থাকা ট্রাকের চালক ও হেলপাররা অভিযোগ করেছেন। এর আগে, ২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর ‘আমানত শাহ’ নামের একটি ফেরি ১৭টি যানবাহন নিয়ে দৌলতদিয়া থেকে ছেড়ে পাটুরিয়ার উদ্দেশ্য গেলে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ফেরি ঘাটের কাছে ডুবে যায়। সেই ফেরিও ফিটনেসবিহীন ছিল। ফেরিটি প্রায় ৪১ বছরের পুরাতন ছিলো। সর্বশেষ ২০১২ সালে ডকিং মেরামত হয়েছিল আমানত শাহ ফেরিটির। এরপর থেকে কোনো ফুল ডকিং করা হয়নি। এছাড়া কোনো সার্ভে সার্টিফিকেট ছিল না ফেরির। ফলে ফেরিটি চলাচলের অনুপযুক্ত ছিল। জানা গেছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের অধিকাংশ ফেরির বয়স ৩৫ বছরের বেশি। রজনীগন্ধার বয়স ছিল ৪৭ বছরের বেশি। রোরো ফেরি ‘খান জাহান আলী’ তৈরি হয় ১৯৮৭ সালে। আরেক রোরো ফেরি ‘কেরামত আলী’ ৩৬ বছরের পুরনো। ‘বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর’ ফেরি তৈরি হয় ১৯৯২ সালে। বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, এই সংস্থার আওতাধীন ৫৩ ফেরির মধ্যে ৪৭ টিরই সনদ নেই। বেশিরভাগ ফেরি ৪০ বছরের বেশি পুরাতন। এছাড়াও ১৮টি রোরো ফেরির (বড় ফেরি) মধ্যে ১৪ টিরই ফিটনেস সনদ নেই। এছাড়াও নেই বেশির ভাগ ফেরিতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি। অনেক ফেরির বয়স ৪০ বছর পার হয়ে গেছে। আইন অনুযায়ী ৪০ বছরের বেশি বয়সী নৌযানের ফিটনেস সনদ দেয় না বাংলাদেশ নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর। তারপরেও চলছে ফেরি সার্ভিস। ফলে মাঝেমধ্যেই ঘটছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। কয়েকজন ফেরি মাস্টার জানান, প্রতিটি ফেরির বয়স ৩৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। নাব্যতা সংকটের কারণে ধীরে ধীরে চললেও কুয়াশার কারণে প্রতিদিনই ৩ থেকে ১২ ঘণ্টা ফেরি বন্ধ রাখতে হয়। ফগ লাইট লাগানো হলেও তা কাজে আসেনি। নদীপথ অস্পষ্ট হয়ে গেলেই ফেরি বন্ধ করে দেয় ঘাট কর্তৃপক্ষ। অথচ কোটি টাকা খরচ করে এই কুয়াশার কারণে ফেরিতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ফগ লাইট লাগানো হয়েছিল, যা কোনো কাজেই আসছে না। গত ১৭ জানুয়ারি রজনীগন্ধা ফেরি ডুবির দুর্ঘটনার দিন ওই ফেরির আরোহী ছিলেন ট্রাকচালক আশিক। তিনি বলেন, ফেরিটির কোনো নৌযানের সঙ্গে ধাক্কা লাগেনি। তলা দিয়ে পানি ঢুকে কাত হয়ে ৯টি ট্রাক নিয়ে ডুবে যায়। ফেরিটি অনেক পুরাতন ও ফিটনেসবিহীন ছিল। এছাড়াও ফেরি কর্তৃপক্ষ অবহেলার কারণে রজনীগন্ধা ফেরিটি ডুবে যায়। রজনীগন্ধা ফেরি ডুবির প্রত্যক্ষদর্শী আরেক ট্রাকের চালক মজনু বলেন, রাতে দৌলতদিয়া থেকে রওনা হবার পর মাঝ নদীতে এসে কুয়াশার কারণে ফেরি নোঙর করে রাখা হয়। পরে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ফেরিতে পানি উঠতে থাকে। এ সময় ফেরির লোকজন পানি নিষ্কাশন করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ বলেন, এ নৌরুটে মেয়াদোত্তীর্ণ কোনো ফেরি নেই। ফেরি রজনীগন্ধার কাগজপত্র সব ঠিক ছিলো, ফিটনেস ছিলো, সার্ভে ছিল। অনেকেই বলেছে যে ফিটনেস ছিল না। তারা এটা না জেনে বলেছে। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ৯টি রো-রো ফেরি, ৩ টি ইউটিলিটি ফেরি, ১ টি কে-টাইপ ফেরি ও ৩ টি ছোট ফেরি রয়েছে। প্রত্যেকটি ফেরিরই ফিটনেস কাগজপত্র ঠিক রয়েছে।     
২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:০২
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়