• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি সব সময় খারাপ ছিল। মাঝে মাঝে একটু ভালো হয়, আবারও খারাপ হয়। দেশটির এ পরিস্থিতি সবসময় থাকবে না আশা করি। আমরা অতি দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে পারব। রোববার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা দেশের জন্য একটি বোঝা। মানবিক কারণে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ২০১৭ সালে সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন। ওই সময় কক্সবাজারের মানুষ তাদের হৃদয়ও খুলে দিয়েছিল। তবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কারণে ওই এলাকার মানুষ এখন মাইনরিটি হয়ে গেছে। সব রাইটসহ তাদেরকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোয় এ সমস্যার একান্ত সমাধান। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে আমরা চীনের সহযোগিতা কামনা করেছি। এ বিষয়ে চীন জানিয়েছে, মিয়ানমারের সঙ্গে এনগেজমেন্টের মধ্যে আছে চীন। বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করেছে। তারা মিয়ানমারকে বলছে, অন্তত বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাবর্তনটা শুরু করার জন্য।তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, মিয়ানমার হয়ত খুব দ্রুত প্রত্যাবর্তন শুরু করবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউক্রেন যুদ্ধ ও পরে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর সেদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি বেশি নিবদ্ধ হয়েছে। রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তাও অর্ধেকে নেমে এসেছে। আমি বলেছি, রোহিঙ্গা ইস্যু যেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্পটলাইটে থাকে। জাতিসংঘের কো-অর্ডিনেটর বলেছেন, এটি নিয়ে জেনেভায় আন্তর্জাতিক ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ করছে এবং এ নিয়ে বৈঠক আসন্ন।  তিনি বলেন, আমাদের পররাষ্ট্র নীতি হচ্ছে ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’। চীন, ভারত, রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক, তেমনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউকের সঙ্গেও চমৎকার সম্পর্ক। সকালে চীনের রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশে জাতিসংঘের প্রেসিডেন্টের কো-অর্ডিনেটর এবং নেপালের রাষ্ট্রদূত আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন আমাদের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী। দেশের বড় বড় ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও সেতু নির্মাণে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নির্বাচনের পরপরই দেশটির প্রেসিডেন্ট সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। দেশটির সঙ্গে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সহযোগিতা রয়েছে। চীন থেকে আমরা তিসি আমদানি করি এবং গম রপ্তানি করি। চীন বাংলাদেশ থেকে পাট, চামড়া, মাংস, সিফুড ও মাছ আরও বেশি আমদানি করতে চায়। সেই সঙ্গে আমও আমদানি করতে চায় তারা। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ বছরের সেকেন্ড হাফ অর্থাৎ জুলাই মাসের পর থেকে তারা আমদানি করতে পারে। আমরা যেহেতু গম রপ্তানি করি এবং চীন আমাদের বড় একটা মার্কেট, এজন্য শুল্কমুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনার মধ্যে আছি। আমরা যাতে চীনের শুল্কমুক্ত পণ্য প্রবেশের সুবিধা পাই। জাতিসংঘের কো-অর্ডিনেটর গুয়েন লুইসের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে ড. হাছান জানান, জাতিসংঘের মহাসচিব তার চিঠিতে ও আমার সাথে কাম্পালায় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুণনির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং বিশ্বনেতাদের কাছেও তার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। কিন্তু এর সাথে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল যে বিবৃতি দেয়, মাঝেমাঝে তা অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। এটি নিয়ে আমি তার সাথে আলোচনা করেছি।  হাসান মাহমুদ বলেন, পক্ষপাতদুষ্ট ও ভুল উৎস থেকে তারা যে সংবাদ পায়, সেটি যেন না হয়। তারা যাতে ভেরিফায়েড সোর্স থেকে তথ্য পায় এবং আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা, ঘুমন্ত মানুষকে দগ্ধ করা, ২৮ অক্টোবরের ঘটনাপ্রবাহ সেগুলো যে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের রিপোর্টে আসেনি সেটি আমি তাকে জানিয়েছি। জাতিসংঘের কো-অর্ডিনেটর বলেছেন বিষয়টি তিনি দেখছেন। নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভাণ্ডারীর সঙ্গে মানুষে-মানুষে যোগাযোগ, যাতায়াত বৃদ্ধি,  বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের উত্তরের সীমান্ত থেকে নেপাল মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে। ১ লাখ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতার সম্ভাবনার দেশ নেপালের সাথে ইতিমধ্যেই আমাদের বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তি হয়েছে, এর ট্যারিফ নিয়ে আলোচনা চলছে।
২৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯:০১
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়