• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo
ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় রাশিয়ার অস্ত্র
রাশিয়ার অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনপিপি স্টার্টের আমন্ত্রণে মার্চ মাসে মস্কো সফর করেছিল ইরানের একটি প্রতিনিধিদল। অস্ত্র তৈরির কারখানা থেকে দরকারি সরঞ্জাম কেনাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ এ সফরের উদ্দেশ্য। সফরের শেষ দিন প্রতিনিধিদল যান অস্ত্র কারখানায়। এসব অস্ত্রের জন্যই দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় ছিল ইরান। এর মধ্যে রাশিয়ার উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ছিল অন্যতম, যা শত্রু যুদ্ধবিমানকে শনাক্তের পাশাপাশি উড়িয়ে দিতে পারে। খবর ওয়াশিংটন পোস্টের। রাশিয়ার ইয়েকাতেরিনবার্গের ওই অস্ত্র কারখানায় মোবাইল লঞ্চার, বিমানবিধ্বংসী অস্ত্র ছাড়াও রাশিয়ার উন্নত এস–৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তৈরি করা হয়। রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম মার্কিন ও ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান শনাক্ত ও তা ধ্বংস করার উপযোগী রুশ এই আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। এমনটাই মূল্যায়ন করেছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা। গত ফেব্রুয়ারি মাসে হ্যাকার গ্রুপের ফাঁস করা রুশ নথি ও ইরানের কিছু ই–মেইল অনুযায়ী, ইরানি কর্মকর্তাদের মার্চ মাসের রাশিয়া সফরের উদ্দেশ্য ছিল বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি রাশিয়ার পক্ষ থেকে ইরানকে কতটা উৎপাদন সক্ষম করে তোলা সম্ভব, তা খতিয়ে দেখা। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সফরের পর রাশিয়ার কাছ থেকে ইরান সরাসরি কোনো অস্ত্র কিনেছে কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি।  গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, এ সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারত্ব গভীর হয়েছে। ইসরায়েলে গত শনিবার ইরানের হামলার পর সম্ভাব্য পাল্টা হামলার আগে রাশিয়া-ইরান জোট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। রাশিয়া গোয়েন্দা সক্ষমতার কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাতে ইরানকে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে রাশিয়ার সবচেয়ে উন্নত এসইউ-৩৫ যুদ্ধবিমান ইরানকে দেওয়া হয়েছে কি না, তার এখনো কোনো প্রমাণ নেই বলেও প্রতিবেদনে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক এই সংবাদ মাধ্যমটি। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মস্কোকে সহায়তা করার জন্য ইরান ২০২২ সালে হাজারো ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে সম্মত হয়ে রাশিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের নতুন অধ্যায় খুলেছে। তাদের মধ্যে সম্পর্কের এই গভীরতা মস্কো ও তেহরানের মধ্যে চুক্তি শক্ত করতে সহায়তা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ও মধ্যপ্রাচ্যের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করে বলেছেন, রাশিয়া তার মিত্রকে উন্নত যুদ্ধবিমান ও আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দিয়ে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এতে ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য যেকোনো বিমান হামলায় প্রতিরক্ষা মজবুত করতে পারবে তেহরান। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মস্কোর পক্ষ থেকে কতগুলো আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে বা কতগুলো ইরানে বসানো হয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে রাশিয়ার প্রযুক্তি ইরানকে আরও শক্তিশালী ইসরায়েলি প্রতিপক্ষ তৈরি করতে পারে। এ অস্ত্র চুক্তি দুই দেশের জন্যই এখন সুফল বয়ে আনছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়া এখন তাদের গোপন চুক্তিকে উন্নত যুদ্ধবিমান সরবরাহের পর্যায়ে উন্নীত করছে। এ ছাড়া গোয়েন্দা সক্ষমতার কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাতে ইরানকে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের চাওয়া পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর সুরক্ষায় রাশিয়ার বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। তেহরান রাশিয়া এস-৩০০ কেনার চুক্তি করেছিল ২০০৭ সালে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর চাপে তা দিতে পারেনি রাশিয়া। ২০১৬ সাল থেকে সে বাধা দূর হয়ে গেলে ইরান ২০১৯ সাল থেকে এস-৩০০ ব্যবহার শুরু করে। এরপর এস-৪০০ নিতে উৎসাহী হয় ইরান। রাশিয়া এগুলো তেহরানকে দিয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা মনে করেন, সরাসরি এস-৪০০ না দিলেও এর নকশা বা প্রযুক্তি ইরানের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে। যদি ইরান এ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পেয়ে থাকে, তবে ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আরও সুরক্ষিত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হাডসন ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ ফেলো কান কাসাপগলো বলেন, রাশিয়ার এসব অস্ত্রে ইরানের আকাশ আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। এদিকে সম্প্রতি মস্কো ও তেহরান যৌথভাবে নতুন ধরনের চালকবিহীন ড্রোন (ইউএভি) তৈরি শুরু করেছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও ফাঁস হওয়া নথিতে এসব তথ্য সামনে এসেছে। এসব নথি অবশ্য যাচাই করতে পারেনি ওয়াশিংটন পোস্ট। তবে বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা এসব নথির যথার্থতা যাচাই করছেন। রাশিয়া ও ইরান অবশ্য এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:১৩

প্রতিরক্ষা ভেদ করে ইরানের হামলায় ইসরায়েলে যে ক্ষয়ক্ষতি
ইরান ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় ইরানের ৯টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের দুটি বিমানঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে। ইসরায়েলের বিস্তৃত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এবং মিত্রশক্তিগুলোর ছোড়া গুলি ভেদ করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। ইরানের ৯টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে পাঁচটি ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের নেভাটিম বিমানঘাঁটিতে আঘাত হানে। এতে ইসরায়েলের একটি সি-১৩০ রসদবাহী বিমান, একটি রানওয়ে ও একটি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর ইসরায়েলের নেগেভ বিমানঘাঁটিতে বাকি চারটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। তবে এতে সেখানে উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের যৌথ উদ্যোগে অ্যারো-৩ বিশেষত হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করার জন্য তৈরি হয়। এবারই প্রথম ইসরায়েল অ্যারো-৩ নামের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ব্যবহার করেছে। এরপরও ইরানের নয়টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানাটা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।  উল্লেখ্য, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত ইরানি কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে আইআরজিসির দুই শীর্ষ কর্মকর্তাসহ প্রাণ হারান ইরানের সাতজন সামরিক কর্মকর্তা। সেই হামলার জবাবে শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে কয়েক ডজন ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। ‘ট্রু প্রোমিজ’ নামে অভিযানের আওতায় এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। ইসরায়েলের অপরাধের শাস্তি দিতেই এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে আইআরজিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আর ইসরায়েলের দাবি, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র গুলো ইসরাইলের আকাশসীমায় পৌঁছানোর আগেই ভূপাতিত করা হয়েছে। ৯৯ শতাংশ হামলাই প্রতিহত করা হয়েছে। তবে ইরান বলছে,হামলায় ইসরায়েলের একটি গোয়েন্দা কেন্দ্র ও একটি বিমান ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে। সূত্র : আল জাজিরা
১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৯

যৌথ উদ্যোগে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনের প্রস্তাব ভারতের
হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বলছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৫০ কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা ঋণচুক্তির বিষয়টিও প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে নেওয়ার অংশ। প্রতিরক্ষা উৎপাদনের সক্ষমতার বিস্তৃত দিকগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে আগ্রহী ভারত, যার মধ্যে সবচেয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিও রয়েছে। মঙ্গলবার ঢাকায় ‘ভারতীয় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম’ বিষয়ে এক সেমিনারে দেশটির হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা এমন সম্ভাবনার বিষয়ে কথা বলেন।  এই সেমিনারকে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বে ভারতীয় প্রতিরক্ষা শিল্পের আগ্রহের প্রতিফলন এবং ভারত-বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়ার একটি নিদর্শন হিসেবে বর্ণনা করেন হাই কমিশনার।  হাই কমিশনারকে উদ্ধৃত করে ভারতীয় হাই কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রতিরক্ষা উৎপাদন খাতে যৌথ উদ্যোগ গড়ে তোলার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে ‘পরবর্তী স্তরে’ উন্নীত করা হবে।  ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মেইক ইন ইন্ডিয়া’ এবং ‘মেইক ফর দ্য ওয়ার্ল্ড’ দর্শনে গত এক দশক ধরে পরিচালিত ভারতীয় প্রতিরক্ষা শিল্পের অগ্রগতির বিভিন্ন দিক সেমিনারে তুলে ধরেন প্রণয় ভার্মা।  তিনি বলেন, ওই দর্শনে পরিচালিত হওয়ায় ভারতীয় প্রতিরক্ষা উৎপাদন খাতে বিপুল বিনিয়োগ আকর্ষণের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা রপ্তানিও বাড়িয়েছে।  বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এম আর শামীমও সেমিনারে বক্তব্য দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, আধাসামরিক ও পুলিশ বাহিনীর প্রতিনিধিরা। ভারতের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন, দেশটির সরকারি ও বেসরকারি বেশ কয়েকটি প্রতিরক্ষা উৎপাদনকারী কোম্পানি। 
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২৩:২৯

নাভালনি শতভাগ সুস্থ ছিলেন জানিয়ে পুতিনের শাস্তি দাবি স্ত্রীর
রাশিয়ার প্রধান বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনি অসুস্থ হয়ে আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেননি বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া ও সমর্থকরা। একইসঙ্গে নাভালনির মৃত্যু সংবাদ সত্যি হয়ে থাকলে পরিকল্পিত খুনের দায়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইউলিয়া। নাভালনির স্ত্রী বলছেন, ‘আমি জানি না নাভালনির মৃত্যু সংবাদ সত্য কি না। আমরা পুতিন এবং তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনকে বিশ্বাস করতে পারি না। তারা সবসময় মিথ্যা বলে। তবে যদি এটি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে পুতিন, তার সব অনুগামী-অনুসারী, পুতিনের মিত্র এবং তার নেতৃত্বাধীন সরকারের সবাইকে এর দায় বহন করতে হবে।  আমাদের দেশ, আমার পরিবার এবং আমার স্বামীর সঙ্গে তারা যা কিছু করেছে তার জন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে তাদের।’ শুক্রবার জার্মানির মিউনিখ শহরে ইউরোপভিত্তিক জোট দাভোসের প্রতিরক্ষা বিষয়ক সম্মেলন শুরু হয়েছে। ‘দাভোস অব ডিফেন্স’ নামের তিন দিনের এই সম্মেলনে যোগ দিতে ইউরোপ এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে মিউনিখে উপস্থিত হয়েছেন শত শত রাজনীতিবিদ, সামরিক কর্মকর্তা এবং কূটনীতিক। যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হলে ইসরায়েল ও ইউক্রেন যুদ্ধের সম্ভাব্য পরিণতি কী হতে পারে— এ নিয়ে ইতোমধ্যে দুশ্চিন্তায় পড়েছে ইউরোপ। দাভোস অব ডিফেন্স সম্মেলন আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য এটিই। কিন্তু নাভালনির মৃত্যু সংবাদ সবকিছু ওলট-পালট করে দেয়। সম্মেলন শুরুর দিন শুক্রবার নির্ধারিত আলোচানা স্থগিত রেখে ইউলিয়া নাভালনায়াকে মঞ্চে বক্তব্য দেওয়ার আহ্বান জানান দাভোস অব ডিফেন্সের আয়োজকরা।  তিনি যখন বক্তব্য দেওয়ার জন্য মঞ্চে ওঠেন, সে সময় সম্মেলনে উপস্থিত সবাই দাঁড়িয়ে সম্মান জানান তাকে। নাভালনায়া বলেন, ‘এখানে আসার আগে দীর্ঘ সময় ধরে আমি ভেবেছি যে আমার কি এখানে আসা উচিত, না কি শিগগিরই মস্কোতে আমার ছেলে মেয়েদের কাছে যাওয়া উচিত। কিন্তু তখন আমার মনে হলো, এই অবস্থায় অ্যালেএক্সি থাকলে কী করতেন। আমি নিশ্চিত, তিনি এই মঞ্চে উপস্থিত থাকতেন।’ যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। কমলা বলেন, অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যু সংবাদ যদি সত্য হয়, তাহলে এটি হবে পুতিনের নিষ্ঠুরতার আরও একটি উদাহারণ। যদি সত্যিই এটি ঘটে থাকে, তাহলে অবশ্যই রাশিয়া এর জন্য দায়ী— এটা আমরা স্পষ্টভাবে বলছি। প্রসঙ্গত, গত বছরের শেষের দিকে রাশিয়ার আর্কটিক অঞ্চলের ইয়ামালো নেনত্স কারাগারে পাঠানো হয় নাভালনিকে। এই কারাগারটিকে রাশিয়ার সবচেয়ে কঠিন কারাগার বলে মনে করা হয়। শুক্রবার এক বিবৃতিতে ইয়ামালো নেনত্স কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ওইদিন সকালে কারাগারের ভেতর হাঁটার সময় হঠাৎ তিনি অসুস্থ বোধ করেন নাভালনি এবং প্রায় সঙ্গে সঙ্গে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে কারা চিকিৎকদের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়; তবে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাভালনিকে মৃত ঘোষণা করেন। ঠিক কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে, বিবৃতিতে তা স্পষ্ট করেনি কারা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অসুস্থতাজনিত কারণে নাভালনির মৃত্যু হয়েছে—সেকথা বিশ্বাস করতে পারছেন না তার মা ও স্ত্রীসহ অনেকেই। কারণ, মাত্র দুই দিন আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়ার উদ্দেশে একটি আবেগপূর্ণ ভিডিওবার্তা দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তাকে বেশ হাসিখুশি ও প্রাণবন্ত মনে হয়েছে। এছাড়া রুশ সংবাদপত্র নোভায়া গ্যাজেটের প্রতিবেদন অনুসারে, নাভালনির মা ল্যুডমিলা নাভালনায়া বলেছেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি যখন তিনি নাভালনিকে শেষবার দেখেছিলেন তখনও তিনি শতভাগ সুস্থ এবং হাসিখুশি ছিলেন।  নাভালনির সমর্থকদের একাংশের অভিযোগ, কারাগারে খুন করা হয়েছে নাভালনিকে এবং প্রশাসন সেটি আড়াল করতে অসুস্থতাজনিত আকস্মিক মৃত্যুর সংবাদ প্রচার করছে। নাভালনির প্রধান সহকারী লিওনিদ ভলকোভ বলেছেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রের প্রচারণা বিশ্বাস করার কোনও কারণ নেই। তার মৃ্ত্যুর খবর যদি সত্য হয়, তাহলে নাভালনি মরেননি। পুতিনই তাকে খুন করেছেন।’ উল্লেখ্য, রাশিয়ায় নাভালনিকেই একমাত্র বিরোধী নেতা বলে মনে করা হতো, যিনি সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিতে রাশিয়াজুড়ে বিপুল সংখ্যক মানুষকে একত্রিত করতে সক্ষম ছিলেন।  ২০২০ সালেও তাকে সাইবেরিয়ায় বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল। তবে সে যাত্রায় অল্পের জন্য বেঁচে যান তিনি। সে সময় পশ্চিমা দেশগুলো জানায় যে, তার ওপর স্নায়ুবিক এজেন্ট প্রয়োগ করা হয়েছিল।  
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:৩৫

আনসারের কার্যক্রম আরও বেগবান করতে হবে : রাষ্ট্রপতি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত উন্নত সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর কার্যক্রম আরও বেগবান করতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ‘বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং ৪৪তম জাতীয় সমাবেশ’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের সর্ববৃহৎ শৃঙ্খলা ও জনসম্পৃক্ত বাহিনী। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে মহান ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সব প্রয়োজনে আনসার বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এ সময় তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আত্মত্যাগকারী বীর আনসার সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং জননিরাপত্তা বিধানে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প এবং বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা বিধানে এ বাহিনীর সদস্যরা নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে থাকেন। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলায় এ বাহিনীর সদস্যরা সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে। নিয়মিত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি এ বাহিনী যুব ও নারীদের বিভিন্ন পেশায় বিনামূল্যে কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি ও আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত উন্নত সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে এ বাহিনীর কার্যক্রম আরও বেগবান করতে হবে। বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সব সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সেবার মহান আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে দেশের উন্নতি, অগ্রগতি ও জননিরাপত্তায় সদা নিয়োজিত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ৪৪তম জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন।
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:০০
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়