• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo
‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছাড়া, গণতন্ত্র পূর্ণতা পাবে না’ 
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছাড়া, গণমাধ্যমের বিকাশ ছাড়া গণতন্ত্রের পূর্ণতা পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। শুক্রবার (১ মার্চ) চাঁদপুর প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে প্রেসক্লাবের ২০২৪ সালের কার্যকরী কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, সকল বাস্তবতায় আমরা গণমাধ্যমকে পূর্ণাঙ্গভাবে সকল ধরনের সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। যতক্ষণ না গণমাধ্যম শক্তিশালীভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে আমরা সঙ্গে আছি। সেক্ষেত্রে আমরাও আপনাদের কাছ থেকে একই ধরনের সহযোগিতা চাই। কিভাবে আমরা পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে, গণমাধ্যম এবং সরকারের মধ্যে সমন্বয় করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা এবং আরো শক্ত ভিত্তির ওপর আমাদের গণমাধ্যমকে দাঁড় করানো যায় সে চেষ্টা করতে পারি।  প্রতিমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম কিভাবে সরকারকে সঠিক তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে জবাবদিহিতায় আনতে পারে, এমনকি সমালোচনাও করতে পারে সেটিকে আমরা স্বাগত জানাই। একই সঙ্গে আমি যে কথাটি গত কিছুদিন ধরে বলে আসছি এবং এখনো বলছি, আপনাদেরকে সঙ্গে নিয়ে ওই গুজব ও অপ্রপ্রচার প্রতিরোধ করতে চাই। এ দিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সমজাকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, সাংবাদিকতায় অনেক সময় নিরপক্ষেতার কথা বলতে গিয়ে দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া হয়। সবক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা হয় না। কারণ হত্যা এবং হত্যাকারীর বিষয়ে অপরাধীর পক্ষ নেওয়া যাবে না। তখন সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমরা যেন বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখি। অন্যায়কে কখনো প্রশ্রয় দেবো না। দীপু মনি বলেন, সত্যের পথ অনেক কষ্টের। যে কোন পেশার লোকজনের জন্যই সত্যের পথে থাকা খুবই কঠিন। যুগ পরিবর্তন হচ্ছে, পেশাগত কাজে আমাদের পরিবর্তন আসছে। তাই যারা গণমাধ্যমে কাজ করছেন তাদেরকে প্রযুক্তির সঙ্গে নিজেদেরকে দক্ষ করে তুলতে হবে। গণমাধ্যমে যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলো নিশ্চয়ই তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় অনুধাবন করেন এবং তা সমাধান করবেন। দীপু মনি বলেন, সাংবাদিকরা আমার খুবই আপনজন। কারণ বাবার কারণে শৈশব কেটেছে দৈনিক ইত্তেফাকের ছাপাখানায় ছুটোছুটি করে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ইত্তেফাকে জড়িত ছিলেন। আমি যখন চাঁদপুরে এসেছি তখন থেকেই সাংবাদিকদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত সেই সম্পর্ক অটুট রয়েছে। চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্তের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওসমান গণি পাটওয়ারী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বশির আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, ও চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান। অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা দেওয়া হয় চাঁদপুরের কৃতি সন্তান আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন অণুজীববিজ্ঞানী ড. সেঁজুতি সাহা, ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত গীতিকার ও সাংবাদিক কবির বকুল এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন মজমুদারকে। প্রধান অতিথি পরে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ২০২৪ সালের কার্যকরী পরিষদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন। অনুষ্ঠানে কবির বকুলের লেখায় প্রেসক্লাবের থিমসং পরিবেশন করেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শরীফ চৌধুরী, এএইচএম আহসান উল্লাহ, বর্তমান সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্ত, দপ্তর সম্পাদক শরীফুল ইসলাম, ও কন্ঠ শিল্পী সজন সাহা।
০২ মার্চ ২০২৪, ১৭:৩৪

জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়েই বিজয় পূর্ণতা পায় : রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র ও রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হলেও জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের বিজয় পূর্ণতা লাভ করে। বুধবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, ঐতিহাসিক ১০ জানুয়ারি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। দীর্ঘ ৯ মাস ১৪ দিন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দিজীবন শেষে ১৯৭২ সালের এই দিনে জাতির পিতা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেন। আজকের এদিনে আমি জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি এবং তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র ও রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হলেও জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের বিজয় পূর্ণতা লাভ করে। রাষ্ট্রপতি বলেন, বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে জাতির পিতার অবদান অতুলনীয় ও অনস্বীকার্য। ১৯৪৮ সালে মাতৃভাষার দাবিতে গঠিত সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বসহ ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালে জেনারেল আইয়ুব খানের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালে ৬-দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালে সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় সবই হয়েছিল তার নেতৃত্বে। প্রকৃতপক্ষে, বঙ্গবন্ধু হলেন বাঙালির স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীন বাংলার রূপকার। তিনি বলেন, ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতা হস্তান্তরে অনীহার কারণে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলার মুক্তিকামী মানুষ অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক ভাষণেই মূলত তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। রাজনীতির মহাকবি বঙ্গবন্ধু সেদিন দেশবাসীকে শোনান স্বাধীনতার অমর কবিতা ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। মো. সাহাবুদ্দিন বলেনে, ২৫ মার্চ কালরাত্রে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি নিধনযজ্ঞের নীলনকশা ‘অপারেশন সার্চলাইট’ এর মাধ্যমে গণহত্যা শুরু করে। এ প্রেক্ষাপটে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেন এবং সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার ডাক দেন। চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। এরপরই পাকিস্তানি জান্তারা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে এবং তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি করে রাখে। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তাকে রাষ্ট্রপতি করে মুজিবনগর সরকার গঠিত হয় এবং তাকে নেতৃত্বের আসনে রেখেই মুক্তিযুদ্ধ চলতে থাকে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা, দেশপ্রেম ও সাহসিকতার একমাত্র আশ্রয়স্থল ছিলেন বঙ্গবন্ধু। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। তিনি বলেন, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি সদ্যস্বাধীন দেশের মাটিতে পা রেখেই বঙ্গবন্ধু আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে সমবেত লাখো জনতার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু বলেন, আমার জীবনের সাধ আজ পূর্ণ হয়েছে। আমার সোনার বাংলা আজ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র’। পাকিস্তানে বন্দিকালীন তার ফাঁসির হুকুম হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ছিলেন তার লক্ষ্যে অটল ও অবিচল। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার সময় আমি বলব আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা। জয় বাংলা’। দেশ ও জনগণের প্রতি এমন অকৃত্রিম ভালোবাসার উদাহরণ বিশ্বে বিরল। রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিরা তাদের পরাজয় আঁচ করতে পেরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের শিল্প, কল-কারখানা, রাস্তাঘাট ও যোগাযোগসহ বিভিন্ন খাতে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় এবং দেশকে একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। দেশে ফেরার পর বঙ্গবন্ধুর ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। কৃষিনির্ভর অর্থনীতি গড়ার পাশাপাশি দেশের সার্বিক উন্নয়ন সঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছিলো। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে দৃশ্যমান অগ্রগতি সাধিত হয়। তিনি বলেন, এ সময় জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার স্বীকৃতি লাভ করে বাংলাদেশ। ‘সোনার বাংলা’ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে দেশ পরিচালনা করছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তার আদর্শ মুছে দিতে এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব খর্ব করতে অপচেষ্টা চালায়। থমকে দাঁড়ায় দেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রা। তবে বাঙালি বীরের জাতি, নিজেদের অধিকার আদায়ে তারা সদা জাগ্রত ও সোচ্চার। বাংলার মানুষের অস্তিত্ব ও ভালোবাসায় মিশে আছে বঙ্গবন্ধু। তাই বাংলার মানুষের হৃদয় থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলা সম্ভব নয়। তাইতো বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক এবং অভিন্ন সত্তা। যতদিন বাংলাদেশ ও বাঙালি থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধু সবার অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। করোনা মহামারি এবং নানাবিধ বৈশ্বিক সংকট আমাদের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাকে সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত করলেও থামিয়ে দিতে পারেনি। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এ পরিণত হবে, ইনশাল্লাহ্। রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গঠনে আমাদের নিরলস প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে। ২০২১ সালের মধ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠনের পথ পরিক্রমায় আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে আরও সাহস ও আত্মবিশ্বাসের সাথে এগিয়ে যাবো- বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে এ আমার প্রত্যাশা। সূত্র : বাসস
০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ২৩:৪০
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়