• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo
ভাইকে বলেছিলাম আমি একুশে পদক নেব না!
না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন কিংবদন্তি রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী, শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক সাদি মহম্মদ। বুধবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার মোহাম্মদপুরের নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেন তিনি। গুণী এই শিল্পীর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তার ছোট ভাই প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী শিবলী মহম্মদ। শিবলী নিজেই প্রথমে ঘরের দরজা ভেঙে ভাইয়ের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। যে মুহূর্ত কোনোভাবেই ভুলতে পারছেন না তিনি। বড় ভাই সাদি মহম্মদকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে শিবলী মহম্মদ বলেন, আমার ভাই মনে কষ্ট নিয়ে চলে গেছে। সে মনে করত, তাকে মূল্যায়ন করা হয়নি। কত মানুষ কত পদক পাচ্ছে, এসব তাকে খুব ভাবাতো। সে বড্ড অভিমানী ছিল। আমরা তাকে বোঝাতাম, আমাদেরকে মানুষ ভালোবাসে। পদক দিয়ে কী হবে? কিন্তু তার মনে চাপা কষ্ট ছিল। সেই কষ্ট নিয়েই চলে গেল। ইফতার করে ভাই নিজের রুমে গিয়ে গানের রিহার্সেল করছিল। এরপর তার সহকারীকে বলেছে, তুমি বাইরে যাও আমি রিহার্সেল শেষ করে ফোন করলে এসো। তখন আমি তার রুমের সামনে গিয়ে দেখতে পাই ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। যেটা আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়। কারণ, তিনি কখনোই রুমের দরজা বন্ধ করেন না রিহার্সেলের সময়। এরপর কড়া নাড়লেও ভেতর থেকে কোনো শব্দ মেলে না। পরে আমি বলি দরজা ভাঙো। দরজা ভেঙে ভেতরে যে দৃশ্য আমি দেখলাম....। আমার জীবনে কেন এই দৃশ্য দেখতে হলো! আমার ভাই রাষ্ট্রীয় কোনো স্বীকৃতি পেলে একটু তৃপ্তি পেত। সাদি মহম্মদ তো আমার বড়, তার সামনে যখন আমি একুশে পদক পাই সেটা ছিল আমার জন্য বিব্রতকর। আমি ভাইকে বলি, একুশে পদক নেব না। কিন্তু সে আমাকে বলে, কেন নিবি না? তুই তো নাচের জন্য বাংলাদেশে কম কিছু করিস নি। পরে তাকে যখন একুশে পদক অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য কার্ড দিলাম, সে বললো, না থাক রে। তুই যা। আমি সেখানে যাব না। গেলে অনেকেই প্রশ্ন করবে, আমি কেনো পদক পাই না। এগুলো আমাদেরকে বিব্রত করবে।
১৫ মার্চ ২০২৪, ১৩:৪৬
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়