• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo
রাবিতে দুই দিনব্যাপী ‘আনর্ত’ নাট্যমেলা শুরু
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দ্বিতীয়বারের মতো শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী আনর্ত নাট্যমেলা-২০২৪। এতে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশ ও ভারত থেকে আসা অনেক নাট্যকার। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের সামনের মেলাচত্বরে ‘থিয়েটার এক জ্যামিতিক জীবন বহুকোণে হয় তার স্বরূপে সমর্পণ..’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত এই মেলার উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট নাট্য পরিচালক মামুনুর রশীদ। উদ্বোধনী শেষে নাট্যকার মামুনুর রশীদ বলেন, আমরা আমাদের বাংলাদেশকে সংস্কৃতিক রাষ্ট্রে গড়ে তুলেছিলাম। সেই সংস্কৃতিক রাষ্ট্র এখন আর নেই। সেটি রাজনীতির কাছে চলে গেছে। তার মধ্যে আনর্ত যে সাহস দেখিয়েছে, যে বিশাল নাট্যকর্মীদের একত্রীত করেছে এটা আমাদের জন্য পরম গৌরবের, পরম আনন্দের বিষয়।  মামুনুর রশীদ আরও বলেন, আমাদের এই শীতের সকালকে উষ্ণ করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা নাট্যকর্মীরা। যেখানে একটা সময় মানুষ সংস্কৃতিকে মনে প্রানে স্মরণ করতো, সেই কাল এখন ক্ষীয়মান, অতীত। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, নাটক আমাদের সমাজ পরিবর্তনের একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আসলে সমাজ পরিবর্তন হঠাৎ করে করা যাবে না। আমাদের যে মনোজাগতিক পরিবর্তনে বাঙ্গালীর যে লুকায়িত সাহিত্য- সংস্কৃতি, তা যদি আমরা বর্ধিত করতে পারি, তবেই মনে হয় আমরা আবার ফিরে আসবো বাঙালির সংস্কৃতিতে। যা বিশ্বের অন্যান্য অন্যতম ও প্রাচীন সংস্কৃতি। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে নাট্যজন তারিক আনাম খান, মলয় ভৌমিক, গাজী রাকায়েত, বন্যা মির্জা, আব্দুস সেলিম, আহমদ ইকবাল হায়দার, মোহাম্মদ বারী, মাসুম রেজা, সালাউদ্দিন লাভলু, অরুণা বিশ্বাস, ওয়াহিদা মল্লিক জলি প্রমুখ এবং ভারত থেকে অংশুমান ভৌমিক, মলয় মিত্র, সঞ্চয়িতা বসু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় থিয়েটার পত্রিকা আনর্ত’র এই আয়োজনে আছে ‘নাট্য আড্ডা: নাট্যচর্চায় নাটকীয় স্মৃতিচারণ’, ‘নাট্যচর্চার পঞ্চাশ বছর: কী পেয়েছি, কী পাইনি’, ‘থিয়েটারের কাগজ: যতরকম দায়’ শীর্ষক বৈঠক; আনর্ত স্বীকৃতি ২০২৪ প্রদান;  মঞ্চনাটক ‘পারো’ (দেশ নাটক, ঢাকা), ‘ওয়ান ফ্রাইডে মর্নিং’ (মধ্যমগ্রাম নৃত্যবিতান, ভারত), ‘কহে ফেসবুক’ (আরণ্যক, ঢাকা) ও ‘মূল্য-অমূল্য’ (অনুস্বর, ঢাকা); পালানাটক ‘কালিন্দীর গীত’ (সারথি থিয়েটার, গাইবান্ধা), পথনাটক ‘সুনাগরিকের সন্ধানে’ (অনুশীলন, রাবি) ও ‘বহমান’ (সমকাল, রাবি); গানের আসর ও দর্শক-অভিনেতা-নির্মাতার আড্ডা ইত্যাদি। সরেজমিনে দেখা যায়, মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকাল নাট্যচক্র, অ্যাসোসিয়েশন ফর কালচার অ্যান্ড এডুকেশন (এস), আবৃত্তি সংগঠন স্বনন, অনুশীলন নাট্যদল, মুকাভিনয়, তীর্থক নাটক, বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার রাজশাহী, উদীচী, বঙ্গবন্ধু সংস্কৃতিক জোট ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ড্রামা অ্যাসোসিয়েশন (রুডা) সংগঠনের স্টল রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের সংগঠনগুলোর মধ্যে আছে রাজশাহী থিয়েটার, রাজশাহীর হেরিটেজ আর্কাইভস, বগুড়া থিয়েটার, নাটোরের ভোর হলো ও ইঙ্গিত থিয়েটার, সান্তাহারের চৌপাশ থিয়েটার ও পাবনার ড্রামা সার্কেল। এছাড়া, তথ্য সরবরাহের জন্য মেলায় রয়েছে ‘সূত্রসন্ধান ও টিকেট’ স্টল। রয়েছে ‘বইয়ের হাট’। নাট্যমেলায় আসা দর্শনার্থীরা এখানের নাট্য সংশ্লিষ্ট নানা রকমের বই, ম্যাগাজিন, ছোট পত্রিকা কিনতে কিংবা পড়তে পারবেন।
২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ২০:২৩
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়