• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo
ফিলিপাইনে স্বর্ণখনিতে ধস : ৫৪ প্রাণহানি, নিখোঁজ ৬৩
ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ দাভাও দে ওরোতে একটি স্বর্ণখনিতে ধসের পর এ পর্যন্ত সেখান থেকে ৫৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া  এখনও নিখোঁজ আছেন অন্তত ৬৩ জন খনি শ্রমিক।  রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) প্রাদেশিক প্রশাসন কর্মকর্তা এডওয়ার্ড ম্যাকাপিলির বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। ম্যাকাপিলি সংবাদমাধ্যমকে জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার ধস নামে স্থানীয় মাকো শহরের কাছে অবস্থিত ওই স্বর্ণখনিতে। তার কিছু সময় পরই উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের কর্মীরা। তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের তিনশোরও বেশি কর্মী ওই খনিতে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন এখনও। গত ৫ দিনে ৫৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে এবং ধারণা করা হচ্ছে, কাদা-জঞ্জালের স্তূপের নিচে এখনও আটকা পড়ে আছেন অন্তত ৬৩ জন মানুষ।’ ম্যাকাপিলি জানান, ওই এলাকায় ভারী বর্ষণ হচ্ছে কয়েকদিন ধরে। কাদায় পুরো খনি এলাকা ঢেকে গেছে এবং আরও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে উদ্ধার তৎপরতায় কাঙ্ক্ষিত গতি আনা যাচ্ছে না। কাদা-জঞ্জালের তলায় চাপা পড়াদের মধ্যে কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে কি না জানতে চাইলে ম্যাকাপিলি বলেন, ‘তেমন সম্ভাবনা খুবই কম। তবে আমাদের উদ্ধারকারী বাহিনীর কর্মীরা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে।'
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৪৭

ঢাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ফলাফলে ধস নামানোর অভিযোগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপকের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১২তম ব্যাচের সার্বিক ফলাফলে ভয়াবহ ‘ধ্বস’ নেমেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ জন্য উপাচার্য বরাবর ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত অধ্যাপকের নাম  ড. নাদির জুনাইদ। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উপাচার্যের বাসভবনে গিয়ে অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের হাতে কয়েকজন শিক্ষার্থী লিখিত এ অভিযোগ দেন।  অভিযোগপত্রের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট ব্যাচের ২৮ জন শিক্ষার্থীর সই যুক্ত করেন। অভিযোগটি আমলে নিয়ে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারের কাছে শিক্ষার্থীদের পাঠিয়েছেন উপাচার্য। অভিযোগপত্রে বলা হয়, আমরা আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী। আমাদের স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় সেমিস্টারের কোর্সের সমন্বয়ক ছিলেন অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদ। ফলে তিনি স্নাতকোত্তর পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ও সমন্বিত কোর্সের (এমসিজে-৫২৭) প্রথম পরীক্ষক ছিলেন। একইসঙ্গে ওই কোর্সের ভাইভা বোর্ডেও ছিলেন তিনি। স্নাতক পর্যায়ের ফলাফলে প্রথম দশজনের (যারা ভালো ফলের জন্য অধ্যাপক সিতারা পারভীন পুরস্কার লাভ করেছেন) মধ্যে ছয়জন স্নাতকোত্তরে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে মাত্র একজন সর্বোচ্চ ২.৭৫ পেয়েছেন। অন্যরা পেয়েছেন ২.৫০-এরও নিচে। সমন্বিত কোর্সে এমন ফল বিপর্যয় এর আগে কখনও দেখা যায়নি। এই ফল আমাদের সবাইকে হতবাক করেছে। স্বয়ং বিভাগের শিক্ষকরাও একে ‘নজিরবিহীন’ বলছেন। ভাইভাতে অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করে পরীক্ষার্থীদের ভীতসন্ত্রস্ত করে ফেলেন অধ্যাপক নাদির জুনাইদ। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে জানা প্রশ্নের উত্তরও ভুল হয়ে যাচ্ছিল। যেমন, ব্যাচের শিক্ষার্থী শামস রহমানকে জিজ্ঞেস করেন- কপিল দেব, ১৯৮৩ বিশ্বকাপে যার রেকর্ড ভেঙ্গেছিলেন, সেই খেলোয়াড়ের দেশের সঙ্গে পরের বিশ্বকাপে ভারত দুটি রেকর্ড করে। রেকর্ডগুলো কী কী? আরেক শিক্ষার্থী শাফাত রহমানকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল- ইন্দিরা গান্ধীর সন্তান কতজন? অন্য এক শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞেস করেন- কুকুরের কয়েকটি জাতের নাম বল। এসব ঘটনায় স্পষ্ট যে, তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের ব্যাচকে টার্গেট করে নিজে নম্বর কম দিয়েছেন। এমনকি প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ভাইভার পুরোটা সময়জুড়ে অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করে আটকানোর চেষ্টা করেন। এর মধ্য দিয়ে অন্য পরীক্ষকদের প্রভাবিত করে নম্বর কমানোতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। আমাদের জানামতে, ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার আগে পরীক্ষা কমিটির সদস্যবৃন্দের তা নিয়ে মন্তব্য করার কোনো সুযোগ নেই। অথচ অধ্যাপক নাদির জুনাইদ পরীক্ষা কমিটির সভাপতি হওয়া সত্ত্বেও আমাদের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পূর্বেই ১৩তম (বর্তমান স্নাতকোত্তর) ব্যাচের ক্লাসে তা নিয়ে মন্তব্য করেছেন। ওই ব্যাচের ক্লাসে তিনি বলেছেন- ১২ ব্যাচের রেজাল্টটা দেখবে কী অবস্থা। কয়েকজন ফেল করতে করতে পাস করে গেছে। একজন শিক্ষককে আমরা সততার প্রতীক হিসেবে দেখি। এক্ষেত্রে দেশের পথপ্রদর্শক প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকের কাছে আমাদের প্রত্যাশা আরও বেশি। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন ও নম্বর প্রদানের ক্ষেত্রে তিনি কোনো অনুরাগ বা বিরাগে প্রভাবিত না হয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই প্রত্যাশিত এবং নৈতিক মূল্যবোধের দাবি। অথচ অধ্যাপক নাদির জুনাইদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভাগের শিক্ষার্থীদের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে অনুসরণ করেন। এমনকি, কিছু শিক্ষার্থীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কোন পোস্টে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন, সেগুলোর স্ক্রিনশট সংগ্রহ করেন তিনি। এর মাধ্যমে তিনি কোন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কেমন আচরণ করবেন, তা নির্ধারণ করেন। ফেসবুকে কার্যক্রম অনুসরণ করে পরীক্ষায় মূল্যায়ন করা, এমনকি তিনি হুমকিও দিয়েছেন ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের। লিখিত অভিযোগে উপাচার্যের কাছে তিনটি দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো- সিন্ডিকেটের মাধ্যমে স্বতন্ত্র ও নিরপেক্ষ কমিটি গঠন করে ভাইভা পুনর্গ্রহণ ও সম্পূর্ণ ফলাফল পুনর্মূল্যায়ন করা, অধ্যাপক নাদির জুনাইদের কৃতকর্মের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা এবং শিক্ষক মূল্যায়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় যে যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তা দ্রুত চালু করা। অভিযোগের বিষয়ে জানতে অধ্যাপক ড. নাদির জুনায়েদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কম্প্রিহেনসিভ কোর্স আমি নিই না। সারা বছর যা পড়ে, সব কোর্সের ওপরে তাদের কম্প্রিহেনসিভ পরীক্ষা নেওয়া হয়। ইচ্ছাকৃতভাবে একটা কোর্সে একজন শিক্ষক কীভাবে ফলাফল কমিয়ে দিতে পারে- শিক্ষার্থীরা কি এটা বোঝে? পরীক্ষার নম্বর তো একজন শিক্ষক দেন না। আর ভাইভাতেও তো একজন শিক্ষক থাকেন না।’ ফলাফল প্রকাশ করার আগেই নিচের ব্যাচগুলোকে তাদের রেজাল্ট বলে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। বলেন, ‘না, এমনটা আমি করিনি। আমি প্রতি ব্যাচকেই বলি তোমাদের কিন্তু রেজাল্ট ভালো হচ্ছে না। আমি প্রতি সপ্তাহেই প্রেজেন্টেশন নিই। প্রেজেন্টেশনের দিনই সন্ধ্যায় আমি রেজাল্ট দিয়ে দেই। আমি তখন বলি- দেখো, রেজাল্ট কমে গেল; কত কমে গেল? এমন হলে তো ভালো রেজাল্ট হবে না। আমি বলি- দেখ, তোমাদের সিনিয়রদের গত বছরও এই কোর্স পড়িয়েছি। তারা নিশ্চয়ই ভুলে গেছে। তারা কিন্তু খারাপ করছে; তোমরা কিন্তু এমন করো না।’ ড. নাদির জুনায়েদ বলেন, ‘আসলে তারা বানিয়ে বানিয়ে এসব কথা বলছে। আমি তো বলিনি- কে প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় হয়েছে। এটা দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। তারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে কেন? কারণ, আমি ক্লাসে ওদের অনেক কড়া কড়া কথা বলি? অন্য শিক্ষকদের মতো ঢালাওভাবে নম্বর দিই না, এজন্য আমার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ?’ এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা আমলে নিয়েছি। এ ধরনের কাজ হয়ে থাকলে তা খুব দুঃখজনক। কোনো শিক্ষক এটি করতে পারেন না। বিষয়টি উপাচার্যও অবগত। আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি।’
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৩৮
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়