জাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো প্রশাসনিক ভবন অবরোধ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্তপূর্বক নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা এবং র্যাগিং সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবিতে প্রশাসন ভবন অবরোধ করেছে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ’।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো পাঁচ দফা দাবি নিয়ে এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এরপর বেলা ১১টার দিকে বুধবার পুনরায় প্রতীকি অবরোধের ঘোষণা দিয়ে আজকের অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা।
অবরোধ কর্মসূচিতে হাসিব জামানের সঞ্চালনায় সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট বলেছিল ৫ কর্মদিবসের মধ্যে অছাত্রদের বের করে দিবে কিন্তু প্রশাসন তা পারেনি। রাজনৈতিক যে রুমগুলো আছে সেখানে তারা যাচ্ছে না। রাষ্ট্রে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে তার ছোঁয়া এখানেও পড়েছে। হলের যারা প্রশাসন আছে তারা অনেকেই ক্যাম্পাসের বাইরে থাকেন তাহলে তো হলে অরাজকতা সৃষ্টি হবেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে ৫ দফা দাবি করেছে সেই দাবি গুলো যৌক্তিক। যদি দাবি মানা না হয় এই আন্দোলন চলতেই থাকবে।
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, সন্ত্রাস ও মাদক কারবারের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। অছাত্রদের বের করে দেয়ার জন্য সিন্ডকেটে নেওয়া সিদ্ধান্তের পাঁচ কর্মদিবস পার হয়ে গেলেও আমরা কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখিনি। অছাত্রদের বের না করে বরং প্রশাসন নিয়মিত শিক্ষার্থীদের হয়রানি করছে। নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিচার নিশ্চিতসহ তাকে সহায়তাকারী প্রক্টরের পদত্যাগ নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দাবি না মানা হলে কঠোর আন্দোলনে যাবো। প্রশাসন দায় এড়িয়ে যেতে পারবেনা।
নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের নাটক ও নাটকতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী কনোজ কান্তি রায় বলেন, একজন বৈধ শিক্ষার্থী হলে সিট পায়না, চেয়ার টেবিল পায় না, পড়াশোনার ভালো পরিবেশ পাচ্ছে না। অন্যদিকে কিছু অবৈধ শিক্ষার্থী ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে তাদের সঙ্গে লেজুড়বৃত্তি করে হলে থাকছে, যার ফলে বৈধ শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকের ব্যবসা, চোরাচালান, মাদক সেবন কীভাবে ছড়িয়ে গেছে তা সামনে এসেছে। র্যাবের ব্রিফিং থেকে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনের পর দিন যে পাশবিক ঘটনাগুলো ঘটছিল, তা এই অছাত্ররা করছিল। প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে, তারা এসব ঘটনার দায় এড়াতে পারে না।
এ সময় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলী, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমেনা ইসলাম, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক নূরুল ইসলাম প্রমুখ।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:০৫