• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo
মাদক-আধিপত্য নিয়ে দ্বন্দ্বে খুন হন ফয়সাল, গ্রেপ্তার ১০
মাদক ও আধিপত্যের দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষ কিশোর গ্যাং গ্রুপের হামলায় রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী থানার সাড়ে ১১ নম্বর এলাকায় নিহত হন কারচুপি কারিগর ফয়সাল। একই ঘটনায় ছুরিকাঘাতে আহত রানা ওরফে রানু নামের অপর এক তরুণ চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর বিভাগ।    রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা এবং পটুয়াখালী ও নেত্রকোনা জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন- শাহিন ওরফে নাডা শাহিন (২৪), মো. মুরাদ হোসেন (২৪), পারভেজ আহম্মেদ (২২), মো. ইয়াসিন (২০), মো. সাইফুল ইসলাম সাইমন (৩০), মো. নাসির উদ্দিন (২০), মো. হৃদয় ওরফে সাফি গন্ডার (২০), মো. রাজিব মিয়া (২৫), শাহনেওয়াজ ওরফে কাল্লু (২৮) এবং তানজিলা (২৩)। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতি, রামদা ও ছুরি উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।  তিনি বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী থানা এলাকায় ফয়সাল নামের একজন নিহত হন। এ ঘটনায় করা মামলার তদন্তে নেমে জানা যায়, প্রথমে একই গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। পেপার সানী গ্রুপের সদস্য মো. শাহিন ও তার বোন তানজিলার সঙ্গে গত ১৫ মার্চ বিকেলে মাদকের টাকা ভাগাভাগি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গ্রুপের সদস্য ফয়সাল ও রানা ওরফে রানুর সঙ্গে মারামারি হয়। এই ঘটনার পরে পেপার সানী গ্রুপের সদস্য শাহিন ওরফে নাডা শাহিন ঘটনার প্রতিশোধ নিতে সায়মুন গ্রুপের রাব্বী ওরফে গালকাটা রাব্বীকে জানান। পরদিন ফয়সাল ও তার বন্ধু রানা এবং আরও দুই বন্ধু পল্লবীর কমিউনিটি সেন্টারে ইফতার শেষে রিকশায় করে বাসায় ফিরছিলেন। পথে চাপাতি, তলোয়ার, রামদা, সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে কুপিয়ে তাদের আহত করা হয়। এরপর ফয়সালের মা এসে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফয়সালকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ফয়সালের বন্ধু রানা ওরফে রানু আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহত ফয়সালের বাবা শাহাদাত হোসেন এ ঘটনায় পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যায় জড়িত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।     গোয়েন্দাপ্রধান আরও বলেন, মিরপুর এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা প্রায়ই মাদক ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মারামারি করে থাকেন। একই ঘটনা উত্তরায় ঘটছে। উত্তরা এলাকায় বেশ কিছু বড় ভাইদের নাম পেয়েছি, যারা কিশোর গ্যাং গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি মোহাম্মদপুরেও বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং গ্রুপ সক্রিয়। রাজধানীর কোনো এলাকায় বড় ভাইদের বিস্তার করতে দেওয়া হবে না। কোনো বড় ভাইয়ের নামে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হবে না। আমাদের গোয়েন্দা পুলিশের প্রত্যেকটি টিম রাজধানীর সব এলাকায় কাজ করছে, যোগ করেন হারুন অর রশীদ। ডিবির মিরপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) রাশেদ হাসান ফয়সাল হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নেতৃত্ব দেন। তিনি বলেন, মিরপুরের পল্লবী এলাকায় একাধিক কিশোর গ্যাং সক্রিয়। এ ঘটনা ছাড়াও অতীতেও কিশোর গ্যাং সদস্যরা বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটিয়েছে।  ধারাবাহিক অভিযান চলছেজড়িতদের ধরতে।  
২২ মার্চ ২০২৪, ১৯:০০

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ 
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। মিয়ানমারে রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক শোষণ ও তীব্র বৈষম্যের কারণে বেশ কয়েকবার রোহিঙ্গারা বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আর তাতে রোহিঙ্গাদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের ক্যাম্পগুলোতে অবস্থান নিয়ে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। আর তাতে স্থানীয় জনগোষ্ঠী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। খুন, হত্যা, মাদক, চাঁদাবাজি—এ রকম নানা অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। আর তা সামাল দিতে বেগ পেতে হয় নিরাপত্তায় নিয়োজিত বাহিনীর।   গত এক মাস ধরে মিয়ানমার সীমান্তে ভয়াবহ সহিংসতা চলছে। এরই মধ্যে আরও রোহিঙ্গা যেন অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেদিকে সতর্ক বাংলাদেশ। গত বারের অনুপ্রবেশের ঢলের পর তাদের দেশে ফেরাতে আন্তর্জাতিক দৃশ্যমান উদ্যোগ না থাকায় এবার বেশি সতর্ক থাকতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কয়েকবার বিশ্ব নেতৃবৃন্দের জানিয়েছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এই অঞ্চলের মানবিক সংকট ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তিনি বলেন, দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের মাধ্যমেই কেবল রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান সম্ভব। আশা করি, শিগগিরই মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেবে। সম্প্রতি মিয়ানমারের সংঘাতের পরে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য ওপারে সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে অনেক রোহিঙ্গা। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত-সংলগ্ন এলাকায় যুদ্ধ জোরালো করেছে আরাকান আর্মিসহ কয়েকটি গোষ্ঠী। তারা সম্মিলিতভাবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। এরমধ্যেই কোনো কোনো সীমান্ত শহর দখল করে নিয়েছে।  বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের বিজিবি ক্যাম্পে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কয়েকজন সদস্য পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের বিদ্রোহী দল আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে পালিয়ে এসেছেন। তাদের অস্ত্র ও গুলি বিজিবির কাছে জমা রাখা আছে। বান্দরবান সীমান্ত থেকে গোলাগুলির আওয়াজ এখনও আসছে। সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের এই লড়াইয়ের ঘটনায় বাংলাদেশের একজন নাগরিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ভয় আর আতঙ্কে সীমান্তঘেঁষা পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ ও মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ। শনিবার থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত মিয়ানমারের ছোড়া দুটি মর্টারশেল ও একাধিক গুলি এসে পড়েছে তুমব্রু সীমান্তের কোনার পাড়ায়। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কে গ্রাম ছেড়েছে অনেকে। যদিও সীমান্তের ওপারে চলমান সংঘর্ষ ও উত্তেজনায় বিজিবির পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানানো হয়। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের রেশ বাংলাদেশের সীমান্তে পড়ছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, মিয়ানমারে আরাকান আর্মিদের সঙ্গে কনফ্লিক্টের (দ্বন্দ্ব) জন্য আমরা ক্ষতিগ্রস্ত। তিনি বলেন, আমাদের সীমান্ত থেকে প্রায়শই গোলাগুলির আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়। একটা আতঙ্ক তো ছড়ায়। যুদ্ধটা আমাদের সঙ্গে না, এটা ওদের অভ্যন্তরীণ সংঘাত যার প্রভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশিদ বলেন, বিভিন্ন ফ্রন্টে বিরোধী সশস্ত্র গ্রুপের তুমুল প্রতিরোধের কারণে জান্তা সরকার কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি। প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা আমাদেরও কাঁধে। নতুনভাবে যাতে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে—এটা নিশ্চিত করতে সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে হবে। উল্লেখ্য, ১৯৪২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত চারটি বড় আকারের রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ সংঘটিত হয়েছে। ১৯৭৮ সালে প্রায় ২ লাখ, ১৯৯১-৯২ সালে ২ লাখ ৫০ হাজার, ২০১৬ সালে প্রায় ৮৭ হাজার এবং ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে ২০১৮ সালের জানুয়ারির মধ্যে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বর্তমানে প্রায় ৯ লাখ ৬১ হাজার ৭২৯ জন বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় অবস্থান করছে। সাম্প্রতিক সময়ের সংঘাতে আরও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে সীমান্তে।    রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারণে কক্সবাজার-টেকনাফ এলাকা দিনদিন অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠছে। রোহিঙ্গাদের কারণে মাদকের পাশপাশি অস্ত্রের চোরাচালান বেড়েছে এই সীমান্ত এলাকায়। সর্বশেষ গত আগস্টে অস্ত্রের কারখানা সন্ধানের পর র‍্যাব জানতে পারে, অস্ত্রের চালান যেত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:২৭

মুক্তাগাছায় টাকা ভাগাভাগির দ্বন্দ্বে খুন হন শামীম
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় অটোরিকশা চালক মো. শামীম হকের (২৬) মরদেহ উদ্ধার করে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে সক্ষমতা দেখিয়েছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ ঘটনায় ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মো. রাকিবুল ইসলাম (২৩) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার (২১ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টায় ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার (এসপি) কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শামীম আহম্মেদ। পুলিশ সুপার জানান, নিহত শামীম হক এবং খুনি রাকিবুল ইসলাম দুজনেই উপজেলার তারাটি চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তারা পেশায় অটোচালক। এর মধ্যে খুনি রাকিবুল ঋণগ্রস্ত  হওয়ায় সে কিস্তির টাকা পরিশোধ করা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ ছিলেন। অন্যদিকে নিহত শামীমও মোবাইল কেনার জন্য টাকার অভাবে ভুগছিলেন। এই অবস্থায় তারা দুজনেই পরিকল্পনা করে শামীমের ভাড়ায় চালিত অটোরিকশাটি বিক্রি করে টাকা ভাগ করে নেবে এবং মালিককে বলবে অটোরিকশা চুরি হয়ে গেছে। ওই পরিকল্পনামতেই তারা গত শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) ওই অটোরিকশাটি নিয়ে পার্শ্ববর্তী জামালপুর সদর উপজেলার নরুন্দি বাজারে গিয়ে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। পরে শামীম দুই হাজার টাকা দেয় রাবিকবুলকে। এতে রাকিবুল ক্ষিপ্ত হয়ে শামীমকে খুনের পরিকল্পনা করেন। পরে মুক্তাগাছা উপজেলার বিরাশি গ্রামের একটি নির্জন স্থানে গিয়ে তার জ্যাকেটের ফিতা খুলে শামীমের গলায় পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ ফেলে পালিয়ে যায় রাকিবুল। তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় অটোরিকশাটি এখনও উদ্ধার করা যায়নি। বিস্তারিত পরে জানানো হবে। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাহমিনা আক্তার, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মো. ফারুক হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে শনিবার দুপুরে উপজেলার বিরাশি গ্রামের একটি ধানখেত থেকে অটোরিকশা চালক শামীম হকের মরদেহ উদ্ধার করে মুক্তাগাছা থানা পুলিশ। পরে ওইদিনই নিহতের বাবা মো. সিরাজ মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞতাদের আসামি করে এই মামলা দায়ের করলে ঘটনার তদন্ত শুরু করে ডিবি পুলিশ।
২১ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:৪৩
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়