সড়কের মাঝে অর্ধশত বিদ্যুতের খুঁটি, প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা
নোয়াখালীর সেনবাগ-সোনাইমুড়ী সড়কের সোনাইমুড়ী অংশে দীঘিরজান বাজার থেকে বজরা বাজার পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়কে বিদ্যুতের প্রায় অর্ধশতাধিক খুঁটি রেখেই কার্পেটিং করেছে সড়ক বিভাগ। গত ৪ থেকে ৫ মাসের বেশি সময় ধরে সড়কের মাঝখানের মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে খুঁটিগুলো। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী সিএনজি, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলগুলো প্রতিদিন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। চলতি শীত মৌসুমে কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনা কয়েকগুণ বেড়েছে। এ পর্যন্ত দুর্ঘটনায় প্রায় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। বিকল হয়েছে ৮০টির বেশি যানবাহন।
সড়ক বিভাগ ও পল্লী বিদ্যুৎকে এ সমস্যার জন্য দায়ী করছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি, খুঁটি বসানো ও কার্পেটিংয়ের সময় একাধিকবার বলার পরও তাদের কাজ আটকানো যায়নি। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে এ খুঁটিগুলো অনত্রে অপসারণ করে সড়কটিতে যেন মানুষ চলাচলের জন্য স্বাভাবিক করা হয়।
সড়ক বিভাগ বলছে, কাজ শুরু করার আগে খুঁটিগুলো সরানোর জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে প্রয়োজনীয় বিল পরিশোধ করা হয়েছিলো, আর বিদ্যুৎ বিভাগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দ্রুত সময়ের মধ্যে খুঁটিগুলো সরানো হবে।
বিদ্যুতের খুঁটির সাথে নিজের অটোরিকশার দুর্ঘটনার কথা বলছিলেন মো. শাহজাহান (৫০)। সোনাইমুড়ীর নাটেশ্বর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিনি। গত ২০ বছর ধরে নিজের এলাকায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। গত ৪ মাস আগে দীঘিরজান বাজার থেকে অটোরিকশা নিয়ে বজরা যাচ্ছিলেন শাহজাহান। পথে খালেক হাজির ব্রিজ এলাকায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা দুটি অটোরিকশাকে সাইড দিতে গিয়ে সড়কের মাঝে থাকা বিদ্যুতের খুঁটির সাথে সংঘর্ষ হয় তার অটোরিকশাটির। দুর্ঘটনার পর কয়েক ঘণ্টা অচেতন ছিলেন তিনি। হাত, পা, বুক’সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় দুর্ঘটনার পর থেকে অটোরিকশা চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি।
সঠিক সময়ে খুঁটি না সরানোয় কাজে বেগ পাওয়ায় বিদ্যুৎ বিভাগের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সড়কের নির্বাহী প্রকৌশলী সৌম্য তালুকদার।
তিন বলেন, সেনবাগ থেকে সোনাইমুড়ি বজরা বাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৬ কিলোমিটার সড়কে বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণে প্রায় ৭০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে। কিন্তু দীঘিরজান থেকে বজরা বজার পর্যন্ত সড়কে খুঁটিগুলো সরায়নি তারা। ফলে খুঁটি রেখেই বাধ্য হয়ে কার্পেটিং করতে হয়েছে সড়ক বিভাগকে।
নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো. জাকির হোসেন বলেছেন, ইতোমধ্যে খুঁটি সরাতে সব প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে, চলতি মাসেই সরানো হবে সড়কের মাঝে থাকা ৩৯টি খুঁটি।
স্থানীয়রা বলছেন, বর্তমান শীতের সময় হওয়ায় সড়টিতে দিনের তুলনায় রাতে কুয়াশার মধ্যে দুর্ঘটনার পরিমাণ বেড়েছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে খুঁটিগুলো সরানো না হলে শুধু দুর্ঘটনা বা আহত নয়, প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটতে পারে।
২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:৩৬