• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
logo
‘পেনশন ব্যবস্থায় যুক্ত হলে শেষ বয়সে দুশ্চিন্তায় থাকতে হবে না’
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেছেন, সকল মানুষের কল্যাণের জন্য সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনকল্যাণে এটি প্রধানমন্ত্রীর একটি অনন্য উদ্যোগ। কেউ সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় যুক্ত হলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাকে দুশ্চিন্তায় থাকতে হবে না। এই পেনশন ব্যবস্থা অবসরকালীন সময়ে আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করবে এবং শেষ বয়সে কারও কাছে হাত পাততে হবে না।  সোমবার (২২ এপ্রিল) সকালে মৌলভীবাজার জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন আয়োজিত সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিষয়ক উদ্বুদ্ধকরণ সভা ও পেনশন মেলায় এসব কথা বলেন তিনি।  কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা অবসরে গেলে পেনশন পান। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যারা কর্মরত এবং দেশের অন্যান্য মানুষ পেনশনের সুবিধা পান না। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়, পরিবারের সদস্যরা বয়স্কদের ঠিকমতো দেখভাল করেন না, অনেকসময় বৃদ্ধাশ্রমে বয়স্কদের রেখে আসেন। শেষ বয়সে অনেকেই একটা ওষুধ কিনতে পারেন না। এক্ষেত্রে পেনশন স্কিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পেনশনে যুক্ত হলে শেষ বয়সে টেনশনে থাকতে হবে না। ছেলেমেয়ে দেখছে না বলেও অভিযোগ করতে হবে না। কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সমৃদ্ধির শিখরে উঠেছে। তার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যেই উন্নত সমৃদ্ধ হবে বাংলাদেশ। জেলা প্রশাসক উর্মি বিনতে সালামের সভাপতিত্বে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, পুলিশ সুপার মনজুর রহমান প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে জেলার সাতটি উপজেলার ৬৭টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ  বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার পাঁচ শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে একটি করে গাছের চারা উপহার প্রদান করে গাছ রোপণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। 
২২ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:২৯

মেহেরপুরে তীব্র তাপপ্রবাহ, দুশ্চিন্তায় বোরো ধান চাষিরা
মেহেরপুরসহ কয়েকটি জেলার ওপর দিয়ে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এতে বোরো ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলার চাষিরা। অন্যদিকে তীব্র তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ জনজীবন।  রোববার (২১ এপ্রিল) সকাল থেকে ঝলমলে রোদে তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। এর আগে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে। যা এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এ অঞ্চলে।  চাষিরা জানান, রাত দিন ২৪ ঘণ্টা চালানো হচ্ছে সেচ-পাম্প। তবুও সেচের জোগান হচ্ছে না। দিনের বেলায় তীব্র খরতাপে জমিতে সেচ দেওয়ার সঙ্গেসঙ্গেই তা শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে ধানের শীষ বের হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সময়ে চিটা পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে প্রচণ্ড তাপদাহের বিরূপ প্রভাব পড়েছে শ্রমজীবী আর কর্মজীবী মানুষের জীবনে।  গ্রামের চায়ের দোকানগুলোতে যেখানে মানুষ অবসর সময় আড্ডা দেয় সেখানের চিত্রও বদলে গেছে। সকাল ৯টার পর তেমন কাউকেই পাওয়া যাচ্ছে না। শহরের সড়কগুলোর মতো গ্রামের রাস্তাঘাট হয়ে যাচ্ছে ফাঁকা। শ্রমজীবী আর কর্মজীবী মানুষ তীব্র রোদ আর গরমে কাজ করতেও পারছে না। ফলে তাদের আয়-রোজগারে একটা বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে।  গ্রামের অনেকেই জানান, এক সময় গাছ গাছালিতে ভরপুর ছিল গ্রামগুলো। বড় বড় গাছ উজাড় করার কারণে শহুরে পরিবেশ বিরাজ করছে। যতটুকু শীতল ছায়া রয়েছে তা তীব্র গরমকে প্রতিরোধ করতে পারছে না।  
২১ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:৪২

একসঙ্গে চার কন্যাসন্তানের জন্ম, দুশ্চিন্তায় পরিবার
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে একসঙ্গে চার সন্তান জন্ম দিয়েছেন সোনিয়া পারভিন (২২) নামের এক গৃহবধূ। বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেন তিনি। সোনিয়া পারভিন উপজেলার খুকনী ইউনিয়নের ব্রাহ্মণ গ্রামের সবুজ শেখের স্ত্রী। সবুজ শেখ পেশায় ভ্যানচালক। ওই হাসপাতালের পরিচালক গোলাম মোস্তফা জানান, মা ও নবজাতকদের জেলার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। পরিবার সূত্র জানায়, ১১ মাস আগেও একটি কন্যাসন্তান জন্ম দেন এই গৃহবধূ। এদিকে একসঙ্গে চার মেয়ে সন্তানের জন্ম হওয়ায় পরিবার ও স্বজনদের পাশাপাশি শিশুদের চিকিৎসা ও পরবর্তী লালন-পালনের খরচ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ভ্যানচালক সবুজ শেখ।   হাসপাতালের চিকিৎসক ইফতেয়ার উদ্দিন বলেন, এ চারটি বাচ্চার ওজন খুবই কম। এ জন্য বাচ্চা ও মায়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অবজারবেশনে থাকা প্রয়োজন। তাই আমরা রেফার্ড করেছি।
০৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৯

বাংলাদেশি শ্রমিক সংকটে দুশ্চিন্তায় মালয়েশিয়ার চাষিরা
অপ্রত্যাশিত বিদেশি শ্রমিক সংকটে আগামী কয়েক মাসে সবজি চাষ কমিয়ে আনার চিন্তা করছে মালয়েশিয়ার ক্যামেরুন হাইল্যান্ডের সবজি খামারিরা। শুক্রবার (১৫ মার্চ) ক্যামেরুন হাইল্যান্ড মালয় ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দাতুক সৈয়দ আবদুল রহমানের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে মালয়েশিয়ার নিউ স্ট্রিট টাইমস। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের বিদেশি শ্রমিকদের কোটা বাতিল করার পদক্ষেপ চলতি বছরের মে বা জুন থেকে দেশটির অর্থনীতিতে একটি বড় প্রভাব পড়বে। ক্যামেরুন হাইল্যান্ডসে প্রায় ৬০০০ জন ভাড়া করা বিদেশি শ্রমিক ছিল। এপ্রিল শুরুর আগেই বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার বেশির ভাগ শ্রমিক ঈদে তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছে। যেসব শ্রমিক ১০ বছর খামারে কাজ করছেন তাদের অধিকাংশের ওয়ার্ক পারমিট আর রিনিউ হবে না। যাদের বৈধ পারমিট আছে তারা এখনও ১০ বছর কাজ করতে পারবেন কিন্তু ঈদের পরে মালয়েশিয়ায় না ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা, যা খুবই খুবই হতাশাজনক। এতে বলা হয়েছে, দেশটির পাইকারি বাজারের জন্য দৈনিক ১০০০ টন সবজি উৎপাদন করে ক্যামেরুন হাইল্যান্ড। কিন্তু শ্রমিকের ঘাটতি এ উৎপাদনকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করবে। খামারিরা বলেন, শ্রমিকের অভাবে অল্প জমি চাষ করবেন তারা। যদি একজন খামারির ১.৬ হেক্টর জমি থাকে, তবে তিনি ০.৮ হেক্টর চাষ করবেন। ফেডারেশন অব ভেজিটেবল ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন অব মালয়েশিয়ার চেয়ারম্যান লিম সের কুই বলেন, বিদেশি শ্রমিক কোটা বাতিল করায় বাজারে সবজির দাম বাড়বে। সৈয়দ আব্দুল রহমান বলেন, বিদেশি শ্রমিকের অভাব এবং পরবর্তীতে উৎপাদনে হ্রাস সরকারকে দাম স্থিতিশীল করতে বাইরে থেকে সবজি আমদানি করতে হবে। কর্মীর অভাব রোধে দেশটির সবজি অ্যাসোসিয়েশন সরকারের কাছে বিদেশি শ্রমিকদের আনার মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করার চিঠি দিয়েছে।  
১৫ মার্চ ২০২৪, ১৭:০৭

ঘন কুয়াশায় বোরোর বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক
ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে যশোরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বোরো ধানের বীজতলা ব্যাপক হারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চারা বিবর্ণ হয়ে হলুদ ও লালচে রং ধারণ করছে। কৃষকরা চারা রক্ষায় কোথাও বীজতলায় ছাই ছিটিয়ে, কোথাও ওষুধ ছিটিয়ে, কোথাও রাতে বোরো বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখে চারা রক্ষার চেষ্টা করছেন। জমিতে চারা রোপণের আগেই শীত ও কুয়াশায় বীজতলা নষ্ট হওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। এছাড়া কিছু বীজতলায় চারা বের হয়নি। কোনো বীজতলায় আবার চারা মারা যাচ্ছে। এতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে চাষির কপালে। যশোর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটি নিয়ন্ত্রিত আবহাওয়া কার্যালয় জানায়, গত রোববার যশোরে তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার ও শুক্রবার ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেখা মেলেনি সূর্যের। এদিকে, বোরো ধানের বীজতলা সবেমাত্র বড় হতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে শীত ও কুয়াশার কারণে নষ্ট হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। সদর উপজেলার শেখহাটি গ্রামের কৃষক কামরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিনের কুয়াশার কারণে ধানের চারা হলুদ হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় তারা রাতের বেলায় পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখছেন। শীত ও ঘন কুয়াশা যদি আরও বাড়তে থাকে তাহলে বীজতলা কোল্ড ইনজুরি থেকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, শীত ও কুয়াশা তীব্র হলে অর্থাৎ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে ধানের চারা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তবে যশোরে এই মুহূর্তে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির উপরে আছে। তিনি বলেন, যশোরে এই মুহূর্তে ৭৫ হেক্টর জমিতে প্লেটে করে বিশেষ প্রযুক্তিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এসব বীজতলা ক্ষতির কোনো সম্ভাবনা নেই। সাধারণ পদ্ধতিতে যে বীজতলা করা হয়েছে সেগুলোকে রক্ষা করতে দিনের বেলায় ক্ষেত থেকে পানি সরিয়ে রাতে সেচ দেওয়াসহ সূর্য না উঠা পর্যন্ত পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে যশোর জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার ৫০০ হেক্টর। এর মধ্যে ১ লাখ ৩০ হাজার উফশী জাতের এবং হাইব্রিড জাতের ৩০ হাজার ৫০০ হেক্টর। এরই মধ্যে কৃষক ৮ হাজার ৭৩ হেক্টর জমিতে বীজতলা প্রস্তুত করেছে। এদিকে, বগুড়ার বেশির ভাগ উপজেলাতেই বীজতলার ক্ষতি হওয়ায় বোরো চাষের আবাদ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় প্রতিকূল আবহাওয়া সহনশীল শুকনা বীজতলা তৈরি করেছেন বহু কৃষক। নানা সুবিধার কারণে শুকনা বীজতলা করতে কৃষক আগ্রহ বাড়ছে। বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বীজতলা তৈরি হয়েছে ৯ হাজার ৬৭১ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে আড়াই হেক্টর জমির বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরেজমিনে বগুড়ায় সারিয়াকান্দি, গাবতলী, সোনাতলা, শিবগঞ্জ ও সদর উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ মাঠের বীজতলাই বিবর্ণ রূপ ধারণ করেছে। কোথাও হলুদ, কোথাও কালচে এবং লাল বর্ণ ধারণ করেছে চারা। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় সূর্যের দেখা মিলছে না। দিন-রাত থাকছে কুয়াশা। তাই এই উপজেলার বেশির ভাগ ধান চাষির কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।  উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, কৃষিবিদ মোশারফ হোসেন জানান, ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রা বীজতলার জন্য ক্ষতিকর। আমরা কৃষকদের বীজতলা পলিথিনে ঢেকে দেওয়া, পানিতে ডুবিয়ে রাখা, সালফারযুক্ত ওষুধ ছিটানো, জিপসাম ও ইউরিয়া সার ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছি। এদিকে, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় শুকনা বীজতলা করতে প্রতিবছর কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানানো হয়েছে, এবারের মৌসুমে উপজেলায় মোট এক হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে নানা জাতের বোরো ধানের বীজতলা করা হয়েছে। এর মধ্যে সাত হেক্টর জমিতে শুকনা বীজতলা করা হয়েছে। উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমী বলেন, শুকনা বীজতলায় বীজ ধান মাটিতে ফেলার পর থেকে জমিতে লাগানোর আগে চারা তোলা অবধি পুরো বীজতলা পলিথিনে ঢেকে রাখতে হয়। শুকনা বীজতলায় বীজ ধান থেকে খুবই ভালো হারে চারা বের হয়ে থাকে। এ ছাড়া ঘন কুয়াশা ও শীতজনিত রোগ থেকে বীজতলার চারা পুরোপুরি রক্ষা পায়। গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চারদিকের বীজতলাগুলোর বিবর্ণ চিত্র। কৃষকদের স্বপ্নের এই চারা বাঁচাতে নানাভাবে চেষ্টা করছেন তারা। গত ১০ দিন ধরে গাইবান্ধা জেলাজুড়ে শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে কৃষিমাঠে বোরো বীজতলার চারা সবুজ থেকে ক্রমশ হলদে রঙসহ শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ফলে এসব বীজতলা রক্ষায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়ছেন কৃষক।  জেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা যায়, শষ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত গাইবান্ধা জেলার অধিকাংশ মানুষ কৃষি ফসলের ওপর নির্ভশীল। এসবের মধ্যে তাদের প্রধান ফসল ইরি-বোরো ধান। এ দিয়ে জীবিকা নির্বাহের স্বপ্ন দেখেন তারা। এবারও তা ব্যর্তয় ঘটেনি। চলতি মৌসুমে ১ লাখ ২৮ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হেক্টর জমিতে সমলয় চাষাবাদ করা হবে।  এসব জমির চারা চাহিদা পূরণে বীজতলা করা হয়েছে ৬ হাজার ৫৬৫ হেক্টর। কৃষকের স্বপ্নের এই বীজতলা থেকে ইতোমেধ্য গঁজিয়ে উঠছে ধানগাছ। এসব চারা উঠিয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হওয়ার কথা। স্থায়ী শৈত্যপ্রবাহের কারণে কৃষকের অন্যান্য ফসল ক্ষেতসহ বোরো বীজতলায় নানা রোগবালাই দেখা দিয়েছে। টানা কুয়াশার দাপটে চারা পোড়া বা ঝলসানো রোগের দিকে যাচ্ছে বলে জানান তারা।  রাঙ্গা মিয়া নামের এক কৃষক জানান, দেড় একর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মাঠে বীজ বপণ করেছেন। এসব বীজ গজিয়ে ওঠার পর ভালোমানের চারা উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখা দেয়।  এরই মধ্যে প্রচন্ড শীতের কুয়াশায় বীজতলায় সবুজ রঙ থেকে হদলদে রঙে পরিণত হচ্ছে। সেই সাথে গাছগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে কৃষি বিভাগের লোকজনকে জানানো হলেও কেউ পরামর্শ দিতে আসেনি। ওইসব বীজতলা নষ্ট হলে কীভাবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে সেই চিন্তায় ভুগছে এই কৃষক। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তাহের মিয়া বলেন, শীতের কুয়াশার সময় বীজতলায় পানি ধরে রাখাসহ পলিথিনের ছাউনি দিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢেকে রাখতে হবে। আর বীজতলার পানি সকালে বের করে দিয়ে আবার নতুন পানি দেওয়া আবশ্যক। সেই সাথে দৈনন্দিন সকালে রশি টেনে চারা থেকে কুয়াশার শিশির ঝরে ফেলা জরুরি।  এ বিষয়ে গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, চলতি মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রা থেকে ইতোমধ্যে সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর অর্জন হয়েছে। সেই সাথে শৈত্যপ্রবাহে যেন বীজতলা নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। এদিকে, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কথা হয় কৃষকদের সঙ্গে। তেরাইল গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে সূর্যের আলো না পাওয়ার কারণে চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।  তেরাই গ্রামের আরেক ধানচাষি আজগর আলি বলেন, চারাগুলো সামান্য বড় হয়েছিল। এরই মধ্যে ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে হলুদ হয়ে যাচ্ছে। দ্রুত ঘন কুয়াশা কেটে না গেলে চারার ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাবে। তখন চারা কিনে জমিতে লাগাতে গেলে খরচ অনেক বেড়ে যাবে। চাষি মো. মজনুল হক বলেন, ‘এক কাঠা ধানের বীজতলা তৈরি করতে ২ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হয়। যে কুয়াশা আর শীত পড়ছে তাতে চারা নষ্ট হয়ে গেলে চারার দাম অনেক বেড়ে যাবে। কৃষি অফিসের পরামর্শ পেলে আমরা এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারব।’  বামন্দী মাঠের মো. সোজা আলী বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কীটনাশক স্প্রে করছি তারপরও যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে চারা কিনে ধান লাগাতে গেলে খরচ আরও বেড়ে যাবে। এমনিতেই সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আর ঘন কুয়াশার কারণে সরিষা ও গমের ক্ষতি হচ্ছে। গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় বোরোর বীজতলা ৪ শ ৭ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে উফশী ৩ শ ৫৭ হেক্টর আর হাইব্রিড ৫০ হেক্টর। বোরোর বীজ জমিতে লাগানো হলে মোট রবি ফসল হবে ২৭ হাজার ১ শ ১৪ হেক্টর। অতিরিক্ত কুয়াশার কারণে কিছু বীজতলার চারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে চাষিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।  গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, শৈত্যপ্রবাহের সময় স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে দিতে হবে। চারার মাথায় জমে থাকা শিশির ঝরিয়ে দিতে হবে। তাহলে বোরোর চারায় কোনো ক্ষতি হবে না। সরিষার কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। তবে কৃষি অফিস থেকে চাষিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া অন্য কোনো ফসলের ক্ষতি হবে না।  
১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:৫৪
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়