• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo
দুর্নীতির দায় নিয়ে ভিয়েতনাম প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ
মাত্র এক বছর দায়িত্ব পালনের পর পদত্যাগ করেছেন ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ভো ভ্যান থুং। নিজ প্রদেশে একটি কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।  তার পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ভিয়েতনামের জাতীয় পরিষদের একটি বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি বুধবার (২০ মার্চ) প্রেসিডেন্ট ভো ভ্যান থুংয়ের পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে বলেছে, থুং ‘লঙ্ঘন ও ত্রুটির’ জন্য দোষী এবং কেন্দ্রীয় কমিটিতে তার পদত্যাগ গৃহীত হয়েছে। পদত্যাগের বিস্তারিত কারণ প্রকাশ্যে আনা হয়নি।  ভিয়েতনাম বড় রাজনৈতিক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেলে ৫৩ বছর বয়সী ভো ভ্যান থুংয়ের নাটকীয় পতন ঘটে। তার পূর্বসূরিও দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। সে সময় বেশ কয়েকজন মন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা জালিয়াতি দুর্নীতির চেষ্টা করেছিলেন। দলের বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়ে ভিয়েতনাম নিউজ এজেন্সি (ভিএনএ) বলেছে, থুং অনির্দিষ্ট ‘নিয়ম’ লঙ্ঘন করেছেন এবং রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে একটি সঠিক উদাহরণ স্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ‘কমরেড ভো ভ্যান থুংয়ের লঙ্ঘন এবং ত্রুটিগুলো খারাপ জনমত সৃষ্টি করেছে, যা পার্টি, রাষ্ট্র ও ব্যক্তিগতভাবে নিজের সুনামকে প্রভাবিত করেছে। পার্টি, রাষ্ট্র ও জনগণের প্রতি (তিনি) তার দায়িত্ব সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন, তিনি তার অর্পিত পদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।’ ভিয়েতনামের জন্য বিরল পদক্ষেপে প্রেসিডেন্ট নগুয়েন জুয়ান ফুক পদত্যাগ করার পর গত বছরের ২ মার্চ থুং প্রেসিডেন্ট হন। দেশটিতে স্থিতিশীলতার ওপর জোর দিয়ে রাজনৈতিক পরিবর্তনগুলো দীর্ঘদিন ধরে সতর্কতার সঙ্গে সাজানো হয়েছে।  ফুকের আগে কেবল অন্য একজন কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি পদত্যাগ করেছিলেন এবং তা ছিল স্বাস্থ্যগত কারণে।  
২১ মার্চ ২০২৪, ১০:৫৫

হলমার্কের দুর্নীতির এক মামলার রায় আজ
হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তানভীর মাহমুদ ও তার স্ত্রী জেসমিন ইসলামের রায় ঘোষণার জন্য আজ দিন ধার্য রয়েছে।  মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ঢাকার ১ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আবুল কাশেম আদালত এই রায় ঘোষণা করবেন।  গত ১২ মার্চ ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. আবুল কাশেম রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। মামলায় আদালত অভিযোগপত্রে মোট ৮১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত।  হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তানভীর মাহমুদ ও তার স্ত্রী জেসমিন ইসলামসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলার আসামিদের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার তুষার আহমেদ, সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সাবেক জিএম মীর মহিদুর রহমান, উপ- মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. সফিজউদ্দিন আহমেদ, ডিএমডি মাইনুল হক, এজিএম মো. কামরুল হোসেন খান ও নকশী নিটের এমডি মো. আবদুল মালেক কারাগারে রয়েছেন।  পলাতক আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, প্যারাগন গ্রুপের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা, সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জিএম ননী গোপাল নাথ, প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির, সহকারী উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. সাইফুল হাসান, নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মতিন, ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের মালিক মীর জাকারিয়া, টি অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক তসলিম হাসান, ডিএমডি মো. আতিকুর রহমান ও সোনালী ব্যাংক ধানমন্ডি শাখার জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুন্নেসা মেরি। এছাড়া জামিনে রয়েছেন, উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শেখ আলতাফ হোসেন (সাময়িক বরখাস্ত) ও সাভারের হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন সরকার। ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাতে অভিযোগে রাজধানীর রমনা থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন দুদক।
১৯ মার্চ ২০২৪, ১০:১৫

দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিকে জানাই সাধুবাদ
প্রতিনিয়তই বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। নিম্ন আয়ের দেশের গ্লানি থেকে মুক্তি পেয়ে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। কিন্তু চলমান অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও উন্নয়নের পথে দুর্নীতি একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গিয়েছে। অর্থনীতির আকার যত বড় হচ্ছে, এই চ্যালেঞ্জ ততই বেশী দৃশ্যমান হচ্ছে । বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ৪৬০ বিলিয়ন ডলারের বেশি । এর যদি এক শতাংশও দুর্নীতি হয় তার প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী ।  দুর্নীতি একটি দেশের অর্থনীতিকে ভিতর থেকে ভঙ্গুর করে দেয় । অপর দিকে দুর্নীতি আন্তর্জাতিক মহলেও দুর্নাম বয়ে নিয়ে আসে যার সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের উপর। অনেক আর্থ-সামাজিক সমস্যার জন্য দুর্নীতি দায়ী। দুর্নীতির কারণেই সমাজের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে, ধনী-গরিবের মধ্যে ব্যবধান বাড়ে এবং সাধারণ নাগরিকদের দেশপ্রেম হ্রাস পায়।  দুর্নীতি একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত, যা থেকে পৃথিবীর কোনো দেশই মুক্ত নয়। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটের বাস্তবতায় বাংলাদেশও কোন ব্যতিক্রম নয়। অভাব-অনটন, নৈতিক অবক্ষয়, সুশিক্ষার অভাব, অস্বচ্ছতা, দুর্বল প্রশাসনিক কাঠামোসহ আরও অনেক কারণ দুর্নীতির জন্য দায়ী।  দুর্নীতি এক ধরনের অসততা যার বহিঃপ্রকাশ হলো  ঘুষ, স্বজনপ্রীতি, হয়রানি ও ক্ষমতার অপব্যবহার । তাই বিশাল ও জটিল এই সমস্যা মোকাবিলায় দৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কোন বিকল্প নেই।     দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা চতুর্থবারের মত দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার নিলো দেশের অন্যতম জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ।  চলতি মেয়াদে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সন্ত্রাস-মাদক-জঙ্গিবাদের মতো দুর্নীতির বিরুদ্ধেও আমাদের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’।  নতুন মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের এই নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতিমুক্ত সুশাসনের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারের অন্তর্ভুক্তি দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার দৃঢ় রাজনৈতিক সংকল্পেরই প্রতিফলন । সে অঙ্গীকার বাস্তবায়নে তিনি সচেষ্ট থাকবেন - এই বিষয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই । দুর্নীতির বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের এই কঠোর অবস্থান সুধী সমাজসহ সর্বমহলে প্রশংসিত হচ্ছে। দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে এমন কঠোর অবস্থানে আগে থেকেই ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত মেয়াদে তার নির্দেশনায় দেশজুড়ে চলেছে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান। ছাড় দেয়া হয়নি প্রভাবশালী এবং ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতাকে । দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়েছিল কঠোর ব্যবস্থা ।  করোনাকালে দুর্নীতির জন্য স্বাস্থ্য খাতের হর্তাকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা এবং কঠোর হস্তে অনিয়ম-দুর্নীতি দমনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তিনি। দেশের কয়েকটি স্থানে ত্রাণ বিতরণ নিয়ে দলের কয়েকজন নেতা ও জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর অবস্থান নেয়া হয়। এর মাধ্যমে সরকার ও দলের মধ্যে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার নীতির প্রতিফলন ঘটান তিনি। তিনি সকলকে এই বার্তা দিতে সক্ষম হয়েছিলেন যে দুর্নীতিবাজ যতই ক্ষমতাবান হোন না কেন তাকে কোনভাবেই রেহাই দেওয়া হবে না ।  শেখ হাসিনার সরকারই দুর্নীতি দমনের জন্যে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল প্রণয়ন করেছেন যা চারিত্রিক সাধুতা বা শুদ্ধতা অর্জন ও দুর্নীতি দমনের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জাতীয় একটি কৌশল-দলিল হিসেবে কাজ করছে। এই কৌশল বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক আইনকানুন ও বিধি-বিধানের সুষ্ঠু প্রয়োগ, পদ্ধতিগত সংস্কার ও উন্নয়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সবার চরিত্র নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গৃহীতব্য কার্যক্রমও চিহ্নিত করা হয়েছে।   বিভিন্ন সরকারি, আধা-সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার মধ্যে সমন্বয়, উন্নত নিয়ন্ত্রণ কাঠামো ও তদারকি ব্যবস্থা, বিভিন্ন স্তরে জাতীয় দুর্নীতি প্রতিরোধ কাঠামো, উন্নত শাসন ব্যবস্থা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণসচেতনতা তৈরির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক এবং কমিউনিটি পর্যায়ে বিভিন্ন পদ্ধতি গৃহীত হয়েছে।  ইতোমধ্যে সব স্তরে দুর্নীতি প্রতিরোধে ফৌজদারি আইন, স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন, তথ্যের অধিকার নিশ্চিতে তথ্য কমিশন, মানী লন্ডারিং আইন, সন্ত্রাসে অর্থায়ন বন্ধ, সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রতিরোধে পারস্পরিক আইনি সহায়তা, সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম প্রতিরোধসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও দুর্নীতি রোধে মনিটরিং, ব্যাংক হিসাব জব্দ, বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও সামাজিক অপরাধ রোধে সরকার কাজ করছে।  মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও সুশাসন খুবই জরুরী। তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে যেমন কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, তেমনি ৭ম জাতীয় বেতন স্কেলের মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা বাড়িয়েছেন। এছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার জন্য গণশুনানির ব্যবস্থাও করেছেন। এই সকল উদ্যোগ মাঠ পর্যায়ে দুর্নীতি দমনে সাহায্য করছে বলে মনে করা হচ্ছে । বর্তমান বিশ্বে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশকে একটি আদর্শ অর্থনৈতিক উন্নয়নের মডেল হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত এক দশকে যে কয়েকটি দেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকগুলোতে অনেককে পেছনে ফেলে এখন সামনের সারিতে বাংলাদেশ। এটা সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে ।  বাংলাদেশের পরবর্তী লক্ষ্য ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের কাতারে যাওয়া এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশ হিসেবে গড়ে উঠা। তবে এই কঠিন লক্ষ্যে পৌঁছানোর একটি পূর্বশর্ত হচ্ছে দুর্নীতি সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া।  তাই তো, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যথার্থই দেশের উন্নয়ন‐অগ্রগতির মূল চ্যালেঞ্জটিকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করেছেন এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। এ কারণে দেশের সুশীল সমাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতিবিরোধী দৃঢ় প্রতিশ্রুতিকে সাধুবাদ জানায় এবং প্রত্যাশা করে যে সরকারের ইতিমধ্যে গৃহীত দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপগুলি বর্তমান মেয়াদেও অব্যাহত থাকবে, এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে ।  তবেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের বর্তমান রাজনৈতিক অঙ্গীকার দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক সাফল্যে রূপান্তরিত হবে বলে সচেতন মহলের দৃঢ় বিশ্বাস।  লেখক : পরিচালক, আইকিউএসি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর-১৭০৬
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:৫৮

দুর্নীতির সূচকের তুলনামূলক বিশ্লেষণ
সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অব বাংলাদেশ দুর্নীতির ধারণা সূচক প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশরে অবস্থান গত বছরের তুলনায় দুই ধাপ হ্রাস পেয়েছে বলা হচ্ছে। কিন্তু এই সূচক হ্রাস-বৃদ্ধির সাথে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমান্বয়ে কতটুকু সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে সেটি বিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি। ১৯৯৫ সাল থেকে বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল দ্বারা প্রতি বছর দুর্নীতির ধারণা সূচক  প্রকাশ করে। ২০০১ সালে বাংলাদেশ প্রথম তালিকাভুক্ত হয়। ঐ সালে বাংলাদেশের দুর্নীতির ধারণা সূচক  (সিপিআই) স্কোর ছিল ০.৪ এবং বিশ্বে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ১ নাম্বার জায়গা করে নিয়েছিল।  পরবর্তীতে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ১ নাম্বারে অবস্থান করে ২০০৬ সালে কিছুটা উন্নীত হয়ে ৩য় হয়েছিল। এভাবে ২০০৮ সাল পর্যন্ত অবস্থান ১০-এর উপরে উঠতে পারেনি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সিপিআই-এ বাংলাদেশের অবস্থান প্রথমবারের মত ১০ এর উপরে ওঠে আসে।  এরপর এক দশকে দুর্নীতি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান নিম্নক্রম হিসেবে কখনো ১২তম হয়েছে কখনো ১৩তম বা ১৪তম। এভাবে ঘুরপাক খেয়েছে।  গতবছর ২০২২ সালে আমরা দেখি সেই অবস্থান দাঁড়িয়েছিল ১২তম এবং এবছর ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন সিপিআই অনুযায়ী বাংলাদেশের স্কোর ২০২২ সাল পর্যন্ত ২৫ থেকে ২৮ এর মধ্যে আবর্তিত ছিল। কিন্তু ২০২৩ সালে বাংলাদেশ গত বছরের তুলনায় আরও এক পয়েন্ট কমে এক যুগের মধ্যে সর্বনিম্ন ২৪ স্কোর এবং নিম্নক্রম ও ঊর্ধ্বক্রম উভয় দিক থেকেই দুই ধাপ অবনমন হয়ে যথাক্রমে ১০ম ও ১৪৯তম অবস্থানে রয়েছে।  ২০২৩ সালের সিপিআই  হিসেব অনুযায়ী শুধু বাংলাদেশ নয় দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের মধ্যে পাঁচটি দেশ এবছর ২০২২-এর তুলনায় কম স্কোর করেছে আর অবশিষ্ট দুটি দেশের স্কোর কিছুটা বেড়েছে।  তবে বাংলাদেশের মত এই সিপিআই সূচক বৃহৎ অর্থনীতির দেশ আমেরিকারও উঠানামা করে। ২০২১ সালে যেখানে আমেরিকার অবস্থান ছিল ২৭তম কিন্তু ২০২৩ সালে এসে দেখা যায় ২৪তম হয়ে গেছে।  আমেরিকার জিডিপি ২৩.৩২ ট্রিলিয়ন ইউএসডি,  এই বৃহৎ অর্থনীতি সঠিক ব্যবস্থাপনার মধ্যেও দুর্নীতি হচ্ছে। তবে সেটা কমিয়ে নিয়ে আসতে পারাটা সরকারের সক্ষমতাকে প্রমাণ করে। বাংলাদেশের অর্থনীতিও ক্রমান্বয়ে বড় হচ্ছে।  ২০০১-০২ সালে বাংলাদেশের বাজেট বিয়াল্লিশ হাজার তিনশত ছয় কোটি টাকা ছিল। সেটি ২০০৮-০৯ সালে দাঁড়িয়েছে নিরানব্বই হাজার নয়শত বাষট্টি কোটি টাকা এবং বর্তমানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেটের আকার হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা ( দৈনিক ইত্তেফাক, ৩জুন ২০২১)।  যা ২০০১-০২ সালের তুলনায় ১৮গুন বাজেট বড় হয়েছে আবার সিপিআই সূচক বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ গুন। বর্তমানে এই অর্থ ব্যয় হচ্ছে ৪৩টি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যা ২০০১ সালে ছিল ২৮টি। সুতরাং এই ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি পরিচালনার পরিসরও বেড়ে গিয়েছে।  দৃঢ়ভাবে পরিচালনার অঙ্গিকার করা হলেও ত্রুটি থেকে যাচ্ছে যা কাম্য নয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০১৮ সালের নির্বাচনের ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছিল, আবার সরকার মানি লন্ডারিং প্রতিরোধের জন্য মানি লন্ডারিং বিরোধী আইন-২০১৩ প্রণয়ন করেছে কিন্তু আশানুরুপভাবে এগুলো বন্ধ হচ্ছে না।  সরকার প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা দিয়ে যেমন পদ্মা সেতু প্রকল্প, ৩৪ হাজার কোটি টাকার মেট্রোরেল প্রকল্প সম্পন্ন করে সাহসী ভূমিকা রেখেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধেও সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে বীরদর্পে এগিয়ে যেতে হবে। লেখক : প্রভাষক, ইতিহাস বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:৪২

সরকারি খাতে দুর্নীতির ব্যাপকতা বেড়েছে : টিআইবি
গত কয়েক বছরে সরকারি খাতে দুর্নীতির ব্যাপকতা বেড়েছে বলে দাবি করেছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবিক অর্থে কার্যকরভাবে প্রয়োগ হয়নি।  মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) ২০২৩ সালের পরিস্থিতি বিবেচনায় তৈরি ‘দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই)’ তুলে ধরে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের গবেষণা অনুযায়ী ২৪টি পূর্ণ গণতান্ত্রিক, ৪৮টি ত্রুটিপূর্ণ গণতান্ত্রিক, ৩৬টি হাইব্রিড গণতান্ত্রিক ও ৫৯টি কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রের গড় সিপিআই স্কোর যথাক্রমে ৭৩, ৪৮, ৩৬ ও ২৯। অথচ বাংলাদেশের স্কোর ২৪। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গত কয়েক বছর সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এই সময়ে দুর্নীতির ব্যাপকতা ঘনীভূত ও বিস্তৃত হয়েছে। সরকারি ক্রয় ও বিতরণ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে দুর্নীতির অসংখ্য তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া অর্থ পাচারের আশঙ্কাজনক চিত্র উঠে এলেও দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি দমনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে কার্যকরতা দেখাতে পারেনি। বরং দুদকসহ বিভিন্ন জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক প্রভাব ব্যাপকতর হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল, টিআইবির উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) শেখ মনজুর-ই-আলম, সমন্বয়ক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ২৩:০৬

দুর্নীতি আর দুর্নীতির ধারণা যারা এক করছে, তাদের উদ্দেশ্য স্বচ্ছ নয়
এবারও দুর্নীতির ধারণা সূচকের প্রতিবেদন প্রকাশ করলো ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল। এবার ২৪ স্কোর পেয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১০ নম্বর। ২০২৩ সালে ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী বিশ্বের ১৮০টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৭ নম্বরে। অর্থাৎ বিশ্বে বাংলাদেশের চেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ মাত্র ১৭০টি। এভাবেই বলা হয় সবসময়। অথচ প্রতিবেদনে লেখা হয় এটা দুর্নীতির ধারণা সূচক। কিন্তু উপস্থাপন করা হয় দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসাবে। খুব সুক্ষ্মভাবে ধারণা শব্দ এড়িয়ে যাওয়া হয়। পরিস্কার করে বলা হয় না যে দুর্নীতি ও দুর্নীতির ধারণার বিষয়টি এক নয়। এবারও তাই হয়েছে।  এ নিয়ে সুন্দর একটি উদাহরণ দিয়েছেন কয়েকজন গবেষক। তারা বলছেন এটা অনেকটা, আপনার একটি বাড়ির মূল্য নির্ধারণ করতে গিয়ে ব্যাংক, ইন্সুরেন্স কোম্পানি এবং সিটি কর্পোরেশন ভিন্ন ভিন্ন ধারণা তৈরি করার মত। তারা প্রত্যেকেই যার যার প্রয়োজন অনুযায়ী আপনার বাড়ীর দাম ঠিক করবে এবং কারো সঙ্গে কারণা ধারণা মিলবে না। একটি বাড়ীর ভিন্ন ভিন্ন দাম। এপ্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সবচেয়ে প্রচলিত জোকসটি হলো অনেকটা এরকম। আমার বন্ধুবান্ধবের ধারণা আমার বেতন কোটি কোটি টাকা। আর আমার পরিবারের ধারণা আমাকে অফিস থেকে কোনো বেতনই দেওয়া হয় না। অথচ ব্যক্তি কিন্তু সেই আমি।  অর্থাৎ বাস্তবতা আর ধারণা ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ভিন্ন হতে পারে। একই ভাবে একটি দেশের দুর্নিতী নিয়ে একটি দেশের সম্পর্কে একেক সংগঠনের ধারণা একেক রকম হতে পারে। বাংলাদেশ নিয়ে গত ১৪/১৫ বছর ধরে টিআইবির দুর্নীতির ধারণা সূচক একই জায়গায় স্থির হয়ে আছে। অথচ এর মধ্যে বাংলাদেশে নীতি এবং কাঠামো উভয় ক্ষেত্রেই অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেই দুদকের ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। ডিজিটাল কেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম প্রবর্তন, অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা এবং সচেতনতামূলক কর্মসূচি প্রসারিত করেছে। শুধু তাই নয়, হুইসেল ব্লোয়ার আইন, তথ্য অধিকার আইন ও কমিশন প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনেক নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সাথে সারাদেশে ডিজিটাইজেশন করা এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে দুর্নীতি ও হয়রানি অনেক কমানো হয়েছে।  কিন্তু টিআইবি’র রিপোর্ট দেখে মনে হয় গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে কোনো কাজই হয়নি। অথচ এর মধ্যে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ৫৪৩ ডলার থেকে ২৭৯৩ ডলারে বৃদ্ধি পেয়েছে, জিডিপি ৪ লক্ষ কোটি টাকা থেকে ৫০ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে। মুড়ির টিনের লক্করঝক্কর জার্নি থেকে দেশ মেট্রোরেলে ব্যবস্থায় রূপান্তর হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়ন, শিশুস্বাস্থ্য, দুর্যোগ মোকাবেলা এবং সামাজিক নিরাপত্তায় বাংলাদেশের সাফল্যের স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্ব সংস্থাগুলো। অথচ টিআইবির প্রতিবেদনে উল্টো চিত্র।  বিশ্বজুড়ে টিআইবির মূল সংগঠন টিআই এর সমালোচকরা বলেন, এদের রিপোর্ট সব সময় একটি রাজনৈতিক দল বা বিশেষ কোন গোষ্ঠীর পক্ষে যায়।  অবশ্য এটা প্রমাণের জন্যে বাংলাদেশের চেয়ে বড় উদাহরণ তো আর হয় না। ২০১২ সালে দূার্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের পয়েন্ট যেখানে ছিল ২.৬, ২০২৪ সালে এসে তা কমে হয়েছে…। বিএনপির চরম দুর্নীতিগ্রস্ত ২০০৬ সালেও বাংলাদেশের পয়েন্ট এমনই ছিল। অথচ ২০০৬ সালের বাংলাদেশ আর ২০২৪ সালের বাংলাদেশের মধ্যে আকাশপাতাল ব্যবধান। অথচ টিআই এরকমই ধারণা সূচক তৈরি করছে বছরের পর বছর। তাই সারা পৃথিবীর একাডেমিশিয়ান এবং উন্নয়ন গবেষকরা এই ধারণা সূচক নাকচ করে দিয়েছেন। তাদের মূল অভিযোগ, টিআই কেন, কার কাছ এবং কিভাবে এই ধারণার তথ্য নিচ্ছে, তার কোনো ব্যাখ্যা দেয় না।  বিশ্ববিখ্যাত ব্রিটিশ উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ অ্যালেক্স কোবহ্যাম বলেন, টিআই-এর রিপোর্টগুলো সুশীল সমাজের কথা বলে দুর্নীতির জনপ্রিয় ও বিভ্রান্তিকর ধারণাগুলো সামনে নিয়ে আসে, যা একটি রাষ্ট্র সম্পর্কে অন্য রাষ্ট্রের কাছে ভুল বার্তা দেয়। আরেক বিশ্ববিখ্যাত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক পল হেইউড বলেন, অনেক বছর ধরেই টিআই রিপোর্ট করছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। পদ্ধতিগতভাবে টিআই-এর গবেষণায় অনেক ভ্রান্তি আছে। এই গবেষনা বরং সংশ্লিষ্ট দেশগুলিতে 'দুর্নীতির ফাঁদ' তৈরি করার ঝুঁকি বাড়ায়। এসব কারণেই বিশ্বব্যাপী টিআই-এর ধারণা সূচক একটি অগ্রহণযোগ্য প্রতিবেদনে পরিণত হয়েছে।  গত কয়েক বছরে টিআই নিজেই অনেক দুর্নীতিতে জড়িত ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এগুলো কোনো ধারণা নয়। প্রামাণ্য দুর্নীতি। যেমন ২০১৪ সালে সিমেন্স কোম্পানি থেকে ৩ মিলিয়ন ডলার ফান্ড টিআইবি নেয়। যে কোম্পানি ২০০৮ সালে বিশ্বে দুর্নীতির জন্য সর্বোচ্চ ১.৬ বিলিয়ন ডলার জরিমানা দিয়েছে। ২০১৫ সালে টিআইবির ‘ওয়াটার ইন্টেগ্রিটি নেটওয়ার্কের’ আর্থিক লেনদেন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিষয়টি প্রমাণ হওয়ায় মিজ আনা বাজোনি নামের এক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়। দুর্নীতির অভিযোগে টিআই-এর আমেরিকা এবং ক্রোয়েশিয়া চ্যাপ্টার বাতিল করা হয়। সংস্থার ভেতরে দুর্নীতি এবং হুইসেল ব্লোয়ারদের ব্যবহার করার অভিযোগ তুলে সংস্থার এমডি প্যাট্রিসিয়া মোরেইরা ২০২০ সালে পদত্যাগ করেন। তার পূর্বসূরি আরেক এমডি ডি সোয়ার্ত ২০২১ সালে এই একই অভিযোগ নিয়ে একটা বই লিখেছেন। ২০২২ সালে ব্রাজিলে টিআই এর বিরুদ্ধে একটি নির্দিষ্ট দলের পক্ষ নিয়ে রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা চালানোর অভিযোগ ওঠে। টিআই ব্রাজিলের কয়েকজন কর্মকর্তার একটি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে টাকা নেয়ার প্রমাণ ও কথোপকথন ফাঁস হয়। এ অভিযোগে টিআই-এর বিরুদ্ধে মামলা চলছে ব্রজিলে। অথচ বাংলাদেশের টিআই এর প্রধান সব সময় বলার চেষ্টা করেন, টিআইবি কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে কাজ করে না। ড. ইফতেখারুজ্জামান ক’দিন আগে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পরও এমন কথা বলেন। এবারও নিশ্চয়ই বলবেন।  যাই হোক লেখা শুরু করেছিলাম, দুর্নীতি এবং দূর্নীতির ধারণার সূচক বিষয়ক ধোঁয়াশা নিয়ে। এসে গেলো টিআইবির জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পেক্ষাপট। এবারের রিপোর্ট প্রকাশের আগেও তারা সেই ধোঁয়া পরিস্কার করেনি। আমার মনে হয় না করে ভালই করেছেন। এই সার্বিক আলোচনায় সাধারণ মানুষের কাছে তাদের এত সুশীল প্রীতির বিষয়টি নিশ্চয়ই পরিস্কার হয়েছে। সারা বিশ্বের মত তারাও নিশ্চয়ই এখন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের ট্রান্সপারেন্সি বা স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবেন।      লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।
৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:৩৮

রেলে দুর্নীতির কোনো ‘কালো বিড়াল’ থাকবে না : রেলমন্ত্রী
রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম বলেছেন, রেলে দুর্নীতির কোনো ‘কালো বিড়াল’ থাকবে না। চেষ্টা করব রেলকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে।   বুধবার (১৭ জানুয়ারি) রেল মন্ত্রণালয়ের নিজ দপ্তরে একটি গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন নবনিযুক্ত এ মন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, আমরা সবাই দেশকে ভালোবাসি। সবার আন্তরিকতায় রেলকে এগিয়ে নিতে হবে। চেষ্টা করব রেলকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে। প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি চান, তাহলে রেলকে লাভজনক করতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। রেল একটি প্রাচীন প্রতিষ্ঠান। নতুন লাইন, ট্রেন, সেতু, অবকাঠামো উন্নয়ন চলমান। এখন সবাই মিলে চেষ্টা করতে হবে রেলে যেন লস (লোকসান) না হয়। প্রধানমন্ত্রীও রেলকে এগিয়ে নিতে চান। রেলমন্ত্রী আরও বলেন, আমার কাজ হলো প্রধানমন্ত্রীর এই ইচ্ছা পূরণ করা। প্রধানমন্ত্রী সব জেলায় রেলকে নিয়ে যেতে চান। বাংলাদেশ রেলওয়ে ও রেল মন্ত্রণালয়ের সবার প্রতি আবেদন থাকবে সবাই মিলে চেষ্টা করলে রেল দুর্নীতি মুক্ত হবে। রেলের বহুল আলোচিত কালো বিড়াল দূর করতে সব উদ্যোগ নেওয়া হবে। রেলের বেদখল  জমি উদ্ধারের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, দখল হওয়া জমি উদ্ধারে সব জায়গায় শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে। সিন্ডিকেশন ওভারকাম করতে হবে। এ জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করব। দুর্নীতির বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, দায়িত্ব নিয়েই আমি রেলের সবার সঙ্গে বৈঠক করেছি। প্রথম দিনেই বার্তা দিয়েছি দুর্নীতি করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। দুর্নীতির মূল উৎপাটন করতে হবে। মূল কথা হলো দুর্নীতি করলে কোনো ছাড় নয়, এটিই বড় বার্তা।  এ সময় ট্রেনের টিকিট সংকটের  রেলমন্ত্রী বলেন, উন্নত টিকিটিং ব্যবস্থা যদি থাকে, সে বিষয়টি বাস্তবায়নের চিন্তা করব। যদিও ট্রেনের টিকিটের চাহিদা অনেক বেশি। সবাইকে টিকিট দেওয়া সম্ভব হয় না।
১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:৫০

প্রথম দিনেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা পরিবেশমন্ত্রীর
পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। বায়ু দূষণ প্রতিরোধ ও বন সংরক্ষণ করতে হবে। এখানে কোনো দুর্নীতি বা অনিয়ম প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। রোববার (১৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এদিন প্রথম অফিস করেন সাবের হোসেন চৌধুরী। পরিবেশমন্ত্রী বলেন, আমি চাই এটা যেন এক নম্বর মন্ত্রণালয় হয়। আমার পক্ষ থেকে আইনের প্রতি শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেব। মিডিয়া ও অন্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করব। আমি সাতদিনের মধ্যে একশ দিনের পরিকল্পনা দিতে চাই। তিনি আরও বলেন, আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার পূরণ করব। নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়মিত মনিটরিং করা হবে। কাজের জন্য কোনো কাঠামো বদলের প্রয়োজন হলে, সেটা করতে হবে। রোববার প্রথম দিনের মতো অফিস করছেন নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। এর আগে, বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে শপথ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। এরপর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রণালয় বণ্টনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এবার প্রধানমন্ত্রীসহ নতুন মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়িয়েছে ৩৭ জনে। এরমধ্যে ২৫ জন মন্ত্রী এবং ১১ জন প্রতিমন্ত্রী।
১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:১৪

ইবির ভিসি-রেজিস্ট্রারের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে ইউজিসি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানাবিধ দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এসব অভিযোগ তদন্তে পৃথক দুইটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক জামিনুর রহমান ও উপ-পরিচালক ইউসুফ আলী খান দুটি অফিস আদেশেই স্বাক্ষর করেছেন। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) ইউজিসির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র কমিটির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ইউজিসির একটি প্রতিনিধি দল শিগগিরই ক্যাম্পাসে আসবে বলেও সূত্র জানিয়েছে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামে বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটিতে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. আবু তাহেরকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। এ কমিটির সদস্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমান ও সদস্য-সচিব একই বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী খান। রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসানের বিরুদ্ধে গঠিত কমিটিতে জেনারেল সার্ভিসেস, এস্টেট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পরিচালক জাফর আহমদ জাহাঙ্গীরকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটিতে সদস্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক জনাব মৌলি আজাদ ও সদস্য-সচিব একই বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী খান। অফিস আদেশে আরও বলা হয়েছে, কমিটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উল্লিখিত পত্রের সংযুক্তিতে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তপূর্বক দ্রুত সম্ভব কমিশন কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন দাখিল করবে। তদন্তের স্বার্থে কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনও নথি ও আনুষঙ্গিক কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারবে এবং প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট যে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। অফিস আদেশগুলো তদন্ত কমিটির ব্যক্তিবর্গ, ইউজিসির দপ্তর ও ইবি রেজিস্ট্রার দফতর বরাবর পাঠানো হয়েছে। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান। তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি পাইনি এখনো। অভযোগ বা অনিয়ম পেলে ইউজিসি তদন্ত করতেই পারে।
১২ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:৪০

আমার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ নেই : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৭৭ জন এমপি-মন্ত্রীকে আওয়ামী লীগর মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। আমি চতুর্থবার নৌকার মনোনয়ন পেয়েছি। আমার বিরুদ্ধে কোনো অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নেই। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) রাজশাহী-৬ আসনের বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নে পথসভা ও গণসংযোগকালে তিনি এসব কথা বলেন। শাহরিয়ার আলম বলেন, গত ১৫ বছর আমি স্বচ্ছতার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার প্রতিনিধি হিসেবে দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে এগিয়ে নিতে সহায়তা করেছি। আমার ও নৌকার বিরুদ্ধে ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ষড়যন্ত্র হয়েছিল। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হতে পারেনি। ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নৌকার বিরোধিতা করে আওয়ামী লীগ নেতা দাবি করা কাউকে সুযোগ দেওয়া যাবে না। নৌকার বিরোধিতাকারীদের থেকে দূরে থাকতে হবে। তারা বিএনপি-জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে চক্রান্ত করছে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, নৌকার বিরোধীদের আগামী ৭ জানুয়ারি ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দিতে হবে। পুনরায় নৌকায় ভোট দিয়ে দেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ দেন।
০২ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:১১
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়