• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
logo
দুই দিনের সফরে ঢাকায় কাতারের আমির
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেল ৫টায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান তিনি। সফরে কাতার ও বাংলাদেশের মধ্যে ছয়টি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হওয়ার কথা রয়েছে। চুক্তিগুলো হলো- দ্বৈতকর পরিহার, আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা, সাগরপথে পরিবহন, বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা, দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বদলি ও যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন।   সমঝোতা স্মারকের মধ্যে রয়েছে- শ্রমশক্তি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক, বন্দর পরিচালনা, উচ্চ শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা, যুব ও ক্রীড়া সহযোগিতা এবং কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ সহযোগিতা।   এর আগে রোববার (২১ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানান, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাতারের আমিরের সফরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে জ্বালানি বিষয়ে দুদেশের মধ্যে বহুমুখী আলোচনা হবে। এ ছাড়া বিপুল অঙ্কের সার্বভৌম তহবিল রয়েছে কাতারের এবং বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনাময় বিনিয়োগের উৎস হতে পারে ওই তহবিল। একইসঙ্গে বাংলাদেশের জন্য জ্বালানি আমদানির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসও কাতার।   তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও কাতারের বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর, বন্ধুত্বপূর্ণ ও বহুমুখী। কাতার বঙ্গবন্ধুর সরকারকালীন ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া অন্যতম মুসলিম রাষ্ট্র। প্রধানমন্ত্রীর বিগত ২০২৩ সালের মার্চ ও মে মাসে দুবার কাতার সফরের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সুদৃঢ় অবস্থানে উপনীত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কাতারের আমিরের এ সফর। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও কাতারের বন্ধুত্বের নিদর্শনস্বরূপ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন মিরপুরের কালশী এলাকায় বালুর মাঠে নির্মিতব্য পার্ক ও মিরপুর ইসিবি চত্বর থেকে কালশী উড়াল সেতু পর্যন্ত সড়কটি আমিরের নামে নামকরণ করার কার্যক্রম চলছে। আগামী ২৩ এপ্রিল বিকেল ৩টায় কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির এ দুটি স্থাপনা উদ্বোধনের কথা রয়েছে। উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নতুন সরকার গঠনের পর মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশ থেকে এটিই প্রথম উচ্চপর্যায়ের সফর।
২০ ঘণ্টা আগে

তিন দিনের সফরে ইরানের প্রেসিডেন্ট পাকিস্তানে 
তিন দিনের সফরে পাকিস্তানে পা রেখেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ নির্বাচনের পর পাকিস্তানে এটিই প্রথম কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের সফর। সোমবার (২২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন। এদিন সকালে নূর খান বিমানঘাঁটিতে ইরানি প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানান পাকিস্তানের গৃহায়ন ও পূর্তমন্ত্রী মিয়া রিয়াজ হোসেন পীরজাদা। প্রতিবেদনে রেডিও পাকিস্তানের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট রাইসি আজ সোমবার পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে দেখা করবেন এবং দুই দেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনাও হবে। প্রধানমন্ত্রী হাউসে পৌঁছালে সফররত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। এ ছাড়া আর্থ ডে উপলক্ষে দুই রাষ্ট্রপ্রধান প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে একটি চারা রোপণ করবেন। দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন তারা। রেডিও পাকিস্তান বলেছে, ‘দুই নেতা ইসলামাবাদে একটি হাইওয়েকে ইরান এভিনিউ নামকরণসংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। তারা একটি প্রেস টক করবেন এবং প্রধানমন্ত্রী ইরানের প্রেসিডেন্ট এবং তার প্রতিনিধিদলের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজেরও আয়োজন করবেন।’ ইরানি প্রেসিডেন্টের এ সফর প্রসঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, পাকিস্তান-ইরান সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে এবং বাণিজ্য, সংযোগ, জ্বালানি, কৃষি, এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য উভয় পক্ষের বিস্তৃত এজেন্ডা থাকবে। সন্ত্রাসবাদের অভিন্ন হুমকি মোকাবিলায় আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিভিন্ন ঘটনা এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা করবেন তারা। উল্লেখ্য, গত কয়েক দশক ধরে পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইরান নজিরবিহীন ভাবেই পাকিস্তানের ভূখণ্ডে বিমান হামলা করে। জবাবে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীও ইরানে প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়।উভয় হামলাতেই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। মূলত এটিই ছিল গত কয়েক দশকের মধ্যে এই দুই প্রতিবেশীর মধ্যে প্রথম কোনো বড় ধরনের উত্তেজনা। অবশ্য দ্বিপাক্ষিক দৃষ্টিভঙ্গি বাদ দিলেও প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির পাকিস্তানে এই সফরটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, গত কয়েক দিন ধরে ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলাসহ উত্তেজনা চলছে। এ ছাড়া সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও গত সপ্তাহে পাকিস্তানে সফর করেছিলেন।
২২ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:০৪

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহের তীব্রতা বাড়তে পারে এবং অব্যাহত থাকতে পারে। তাই তিন দিনের জন্য হিট অ্যালার্ট দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক এ সতর্কবার্তা জানিয়েছেন। তিনি জানান, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপ প্রবাহ আজ (১৯ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। অন্য এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৯টা পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলা সমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে। রোববার (২১ এপ্রিল) সকাল ৯টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ এবং সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে। সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল ৯টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে। সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। বর্ধিত ৫ (পাঁচ) দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:৩২

জিম্মিদশার ৩১ দিনের লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন জাহাজের ক্যাপ্টেন
ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে ৩১ দিন জিম্মি থাকার পর মুক্তি পেয়েছেন বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ নাবিক। গত শনিবার দিবাগত রাতে চট্টগ্রামের কেএসআরএম গ্রুপের এই জিম্মি জাহাজ থেকে নেমে যায় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। কীভাবে কাটলো ৩১ দিন। সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন জাহাজের মাস্টার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) হোয়াটসঅ্যাপে গণমাধ্যমের কাছে জিম্মিদশার বর্ণনা দেন তিনি।  ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, মার্চের ১২ তারিখ সকালে ২৩ বাংলাদেশি নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ নীল সাগরে ছুটে চলছিল। কেবিনে অফিসের কাজ সেরে সকাল সাড়ে ৯টায় জাহাজ পরিচালনা কক্ষ- ব্রিজ থেকে মাস্টারের চেয়ারে গিয়ে বসি। বসেই জাহাজের দায়িত্বে থাকা তৃতীয় কর্মকর্তাকে বলি, সব ঠিকঠাক আছে তো?  মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে কয়লা বোঝাই করে সোমালিয়ার উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগর হয়ে যাওয়ার পথে তৃতীয় কর্মকর্তা জানালেন, ‘স্যার, জাহাজের ডান পাশে অনেক দূরে একটি ফিশিং বোট দেখা যাচ্ছে।’ দৃশ্যমান সেই ফিশিং বোট থেকে ব্যবধান বাড়িয়ে দিতে জাহাজটি বাঁয়ে ঘুরিয়ে দিয়ে নৌযানটি আমরা পর্যবেক্ষণ শুরু করি। হঠাৎ করে দেখি, নৌযান থেকে একটি স্পিডবোট সাগরে ভাসানো হয়েছে। তখনই আমরা নিশ্চিত হয়ে যাই, জলদস্যুরা আসছে। এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে কয়লাবোঝাই থাকায় আমাদের গতি ছিল কম। ঘণ্টায় সাড়ে ১০ নটিক্যাল মাইল। স্পিডবোটটি কাছাকাছি চলে এলে ঢেউ সৃষ্টি করে এবং উচ্চচাপে পানি ছিটিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। আবার ডানে-বাঁয়ে জাহাজ ঘুরিয়ে স্পিডবোটটির গতি কমানোর চেষ্টা শুরু করি। এ সময় যুক্তরাজ্যের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনে যোগাযোগ করি। সেখানে কেউ ফোন ধরেননি। সে সময় যোগাযোগ করে কাছাকাছি কোনো যুদ্ধজাহাজও পাইনি।  জলদস্যুরা উঠে যাবে বুঝতে পেরে আমরা জাহাজের সুরক্ষিত কক্ষ- সিটাডেলে আশ্রয় নেওয়ার শেষ চেষ্টা করি। নাবিকের সিটাডেলে যাওয়ার নির্দেশ দিই। তবে চারজন জলদস্যু অস্বাভাবিক গতিতে ব্রিজে ওঠে পড়তে সক্ষম হয়। তারা প্রথমে দ্বিতীয় কর্মকর্তার মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ‘মাস্টার মাস্টার’ বলে চিৎকার করে। আমাকে খুঁজতে থাকে। দ্বিতীয় কর্মকর্তা ভয় পেয়ে যান। আমি দ্রুত সেখানে চলে এসে হাত তুলি। তখনই জলদস্যুরা ‘অল ক্রু’ বলে চিৎকার করতে থাকে। এরপরই আমি সব নাবিককে ব্রিজে চলে আসার নির্দেশ দিই। নাবিকরা শুরুতে বেশ ভয় পেয়ে যান। জলদস্যুরা জাহাজের ইঞ্জিন বন্ধ করার কথা বলে। ইঞ্জিন বন্ধ করার পর মাছ ধরার নৌযানটি আমাদের জাহাজের সঙ্গে বাঁধা হয়। ওই নৌযানে একজন পাকিস্তানি এবং বাকিরা ছিলেন ইরানের জেলে। নৌযানে থাকা সব জলদস্যু জাহাজে ওঠে। মোট ১২ জন সশস্ত্র জলদস্যু আমাদের জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। আমাদের কাছ থেকে মুঠোফোন কেড়ে নিলেও ল্যাপটপ ও কয়েকটি মুঠোফোন আমরা লুকিয়ে রেখেছিলাম। এ সময় জলদস্যুরা আনন্দ উল্লাস করতে থাকে। ফাঁকা গুলি ছোড়ে। ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর থেকে জলদস্যুদের নির্দেশনায় চলতে থাকে জাহাজটি। এবার তাদের নির্দেশে আমরা এমভি আবদুল্লাহর ইঞ্জিন চালু করি। সোমালিয়ার উপকূলের দিকে যাওয়ার নির্দেশনা দেয় জলদস্যুরা। সে সময় একজন জলদস্যু একটি নম্বরে যোগাযোগ করতে বলে। কল দেওয়ার পর ‘আহমেদ’ পরিচয় দিয়ে ফোনের অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, ‘হাউ আর ইউ ক্যাপ্টেন এভরিথিং ইজ ওকে’ এরপরই জাহাজটি কীভাবে কোথায় নিতে হবে, তার পথনির্দেশনা দিয়ে দেয় জলদস্যুনেতা। সে অনুযায়ী জাহাজ চলতে থাকে। রোজার দ্বিতীয় দিনে ইফতারের আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অপারেশন আটলান্টার একটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহর পিছু নেয়। যুদ্ধজাহাজ থেকে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ভিএইচএফে জলদস্যুদের নির্দেশনা দেওয়া হয়, ‘তোমরা জাহাজ ছেড়ে যাও। না হলে অভিযান চালানো হবে।’ নির্দেশনায় কোনো কাজ হয়নি। যুদ্ধজাহাজ থেকে একটি হেলিকপ্টার আকাশে ওড়ানো হয়। একপর্যায়ে এমভি আবদুল্লাহর চারপাশে পানিতে হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণ করা হয়। তাতেও কোনো কাজ হয়নি।  যুদ্ধজাহাজ যাতে দ্রুত চলে যায়, তা বলার জন্য আমাকে জলদস্যুরা ভয় দেখায় অস্ত্র তাক করে। আমি ভিএইচএফে জানাই, ‘আমরা অস্ত্রের মুখে আছি। তোমরা দূরে চলে যাও। প্রায় আধা ঘণ্টা পর যুদ্ধজাহাজ দূরে চলে যায়। যুদ্ধজাহাজ পিছু নেওয়ায় দুই দফা নোঙর তুলে তৃতীয় দফায় সোমালিয়া উপকূলের জেফলের দিকে এমভি আবদুল্লাহকে নিয়ে যায় জলদস্যুরা।  তিনি বলেন, মোট ৩৫ জন জলদস্যু জাহাজে ওঠে। যুদ্ধজাহাজ পিছু নেওয়ায় জলদস্যুরা জাহাজে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আসে। রকেট লঞ্চার, মেশিনগান, এম-সিক্সটিনসহ নানা রকমের অস্ত্র। মনে হয়েছে, যেন যুদ্ধক্ষেত্রে আছি। জলদস্যুদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার না করে উপায় নেই। ভালো ব্যবহার করায় তারা আমাদের কেবিনে থাকার সুযোগ দেয়। কবে মুক্তি পাবো, মনে মনে শুধু সেই ভাবনা ভিড় করে।  আমরা ১৬ জানুয়ারি জাহাজ নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে যাত্রা শুরু করেছিলাম। পথে শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দর হয়ে মোজাম্বিকের মাপুতো থেকে কয়লা বোঝাই করেছিলাম। চট্টগ্রাম ছেড়ে যাওয়ার আগে প্রায় ১৪ লাখ টাকার বাজারসদাইয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল জাহাজটির মালিকপক্ষ এসআর শিপিং (কেএসআরএম গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান)। জাহাজে তিন মাসের খাবার ছিল। জলদস্যুরা জাহাজে দুম্বা নিয়ে আসত। গরম পানিতে সেদ্ধ করে লবণ ও কিছু মসলা মিশিয়ে তারা তা খেতো। এগুলো আমাদের জন্য খাওয়ার অযোগ্য ছিল। একপর্যায়ে তারা নিজেদের রান্না করার জন্য লোক নিয়ে আসে জাহাজে। আমরা ইফতারের সময় লেবুসহ নানা ধরনের শরবত পান করতাম। সেহরিতে ভাতের পাশাপাশি দুধ থাকতো। জাহাজে পানি শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়ব—এমন আশঙ্কায় শুধু খাবার পানি সরবরাহ ঠিক রাখতাম আমরা। এদিকে, গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি দেখে জলদস্যুরা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়। তাদের সন্দেহ হয়, নিশ্চয়ই নাবিকদের কাছে মুঠোফোন আছে। আহমেদ বলতে থাকে, ‘তোরা এই ছবি পাঠিয়েছিস’ পরে আমরা বলি, ‘মুঠোফোন নয়, ল্যাপটপ দিয়ে ছবি পাঠানো হয়েছে।’ পরে ল্যাপটপ কেড়ে নেয় জলদস্যুরা। জলদস্যুদের ভিডিও করার বর্ণনা দিয়ে মোহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, মুক্তি পাওয়ার দুই দিন আগে হঠাৎ আহমেদ এসে সবাইকে ডেকে নিয়ে দাঁড়াতে বলে। সে আমাদের ভিডিও করতে শুরু করে। তার কথা অনুযায়ী, আমি নাবিকদের নাম জিজ্ঞাসা করে পরিচয় করে দিই। শুনেছি, এই ভিডিও তারা কেএসআরএম গ্রুপের কাছে পাঠিয়েছে। আমরা যে সুস্থ আছি, তা দেখতে চেয়েছে কেএসআরএম গ্রুপ। আমাদের মনে তখন আশার সঞ্চার হয়। এর দুদিন পর আবার সব নাবিককে ডেকে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখে জলদস্যুরা। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর দেখি, ছোট আকারের একটি উড়োজাহাজ আসছে। অদূরে দুটি যুদ্ধজাহাজ। আমরা ভয় পেয়ে যাই। কারণ, তখন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে ৬৫ জন জলদস্যু। তাদের কাছে ভারী অস্ত্রশস্ত্র আছে। জলদস্যুদের নির্দেশে এমভি আবদুল্লাহর নোঙর তুলে পেছনের দিকে সরিয়ে নিতে থাকি। জাহাজ পেছনের দিকে সরিয়ে নেওয়া হতে থাকে। একপর্যায়ে দেখতে পাই, রাতে তীর থেকে জাহাজের দিকে আলো ফেলে ইশারা দেওয়া হচ্ছে। জলদস্যুদের নির্দেশে জাহাজের ইঞ্জিন বন্ধ করা হয়। এ সময় পাঁচটি স্পিডবোটে করে সব জলদস্যু অস্ত্রসহ জাহাজ থেকে নেমে যায়। তখন সোমালিয়ার সময় ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাত ১২টা ৮ মিনিট অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল প্রথম প্রহর।  জলদস্যুরা নেমে যাওয়ার পর জাহাজটি ঘুরিয়ে সোমালিয়া উপকূল ত্যাগ করতে শুরু করি। সবাই পরিবার ও স্বজনদের কাছে মুক্তির বার্তা দিতে ধাকে। এ সময় সবার মধ্যে জীবন ফিরে পাওয়ার আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। রাতের বেলায় জাহাজ চলছে। দুই পাশে তখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর দুটি যুদ্ধজাহাজ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীতে থাকা চিকিৎসকেরা আমাদের সব নাবিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। স্প্যানিশ নৌবাহিনীর একজন নারী চিকিৎসক আমাকে বলেন, ‘সব নাবিক সুস্থ আছেন।’ তিনি বলেন, আমরা জলদস্যুদের হাত থেকে এত দ্রুত মুক্তি পাব তা কল্পনাও করিনি। সোমালিয়ার উপকূল থেকে জিম্মি জাহাজের এক মাসের মধ্যে মুক্তি পাওয়ার ঘটনার নজির খুব একটা নেই। জিম্মিদশার পর থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদর দপ্তর সার্বক্ষণিক আমাদের জাহাজের অবস্থানের ওপর নজর রেখেছে। তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে সব সময় আমাদের পাশেই ছিল।  এমভি আব্দুল্লাহর বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গতকাল মঙ্গলবারও জাহাজটি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে ছিল। তবে বুধবার সেই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা অতিক্রম করবে। সে ক্ষেত্রে ২২ এপ্রিল দুপুরের মধ্যে জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছাতে পারে।  এই মুক্তির জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা সহযোগিতা না করলে মুক্তি সম্ভব হতো না বলে মনে করেন ক্যাপ্টেন আবদুর রশিদ।
১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪৭

দ্বিতীয় দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান চলছে বঙ্গবাজারে  
রাজধানীর বঙ্গবাজারে বহুতল নতুন ভবন নির্মাণের জন্য দ্বিতীয় দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযানে ভেঙে ফেলা হচ্ছে অস্থায়ী সব দোকান।  মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকেই এই কার্যক্রম শুরু করে সিটি কর্পোরেশন।  সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বঙ্গবাজারের সামনের অংশে একটি ভেকু দিয়ে বাঁশের কাঠামো সরিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত থেকে বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে সেখানে উপস্থিত থেকে মোবাইলে উচ্ছেদ অভিযানের দৃশ্য ধারণ করতে দেখা যায়। তবে বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি কেউ। এর আগে গতকাল (১৫ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বঙ্গবাজারের অস্থায়ী দোকানগুলো উচ্ছেদের কার্যক্রম শুরু হয়। সংস্থাটির সম্পত্তি বিভাগের উদ্যোগে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। গত বছরের ৪ এপ্রিল ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়ে যায় রাজধানীর সবচেয়ে পুরোনো ও জনপ্রিয় পাইকারি কাপড়ের মার্কেট বঙ্গবাজার। পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজারের আধুনিকায়ন করে সেখানে ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। সেখানে ১.৭৯ একর জায়গার ওপর ১০ তলাবিশিষ্ট একটি আধুনিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা সিটি কর্পোরেশনের। সেইসঙ্গে বঙ্গবাজারের নাম পরিবর্তন করে রাখা হচ্ছে বঙ্গবাজার পাইকারি নগর বিপণিবিতান।  পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১০ তলা বিশিষ্ট ভবনটিতে গ্রাউন্ড ফ্লোর ও বেজমেন্ট ছাড়াও থাকবে মোট আটটি ফ্লোর। ভবনে থাকবে তিন হাজার ৪২টি দোকান। প্রতিটি দোকানের আয়তন হবে ৮০-১০০ স্কয়ার ফুট। ভবনটিতে থাকবে আটটি লিফট। এর মধ্যে চারটি থাকবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য। আর বাকি চারটি কার্গো লিফট থাকবে মালামাল ওঠানো-নামানোর জন্য। এছাড়া থাকছে গাড়ি পার্কিং, খাবারের দোকান, সমিতির অফিস, নিরাপত্তাকর্মী এবং সেখানকার কর্মীদের আবাসন ব্যবস্থা। ভবনটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৮ কোটি টাকা। ডিএসসিসির সংশ্লিষ্ট দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১০ তলাবিশিষ্ট আধুনিক এ ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে মোট ৩৮৪টি, প্রথম তলায় ৩৬৬টি, দ্বিতীয় তলায় ৩৯৭টি, তৃতীয় তলায় ৩৮৭টি, চতুর্থ তলায় ৪০৪টি, পঞ্চম তলায় ৩৮৭টি, ষষ্ঠ তলায় ৪০৪টি ও সপ্তম তলায় ৩১৩টি দোকান থাকবে। এ ছাড়া, অষ্টম তলায় দোকান মালিক সমিতির অফিস, কর্মচারী ও নিরাপত্তাকর্মীদের আবাসনের ব্যবস্থা রাখা হবে। ভবনের পার্কিংয়ে একসঙ্গে প্রায় ১৮৫টি গাড়ি ও ১১০টি মোটরসাইকেল পার্কিং করা যাবে। ভবনটিতে ২২টি খাবারের দোকান রাখা হবে। সেইসঙ্গে নকশায় আরও ৮১টির বেশি দোকান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।  বঙ্গবাজারের পুরাতন মার্কেটটি মূলত বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, আদর্শ ইউনিট, মহানগর ইউনিট ও গুলিস্তান ইউনিট নিয়ে গঠিত ছিল। গত ৪ এপ্রিল ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মার্কেটগুলো পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়। এছাড়া, মহানগর শপিং কমপ্লেক্স, এনেক্সকো টাওয়ার, বঙ্গ হোমিও মার্কেট এবং বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটের কিছু অংশেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডে তিন হাজার ৮৪৫ ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৩০৩ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। এতোদিন পর্যন্ত পুড়ে যাওয়া মার্কেটের ফাঁকা স্থানে শামিয়ানা ও ছোট ছোট চৌকি বসিয়ে কোনোমতে ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।  
১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩৯

লঞ্চ দুর্ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু, আসামিরা ৩ দিনের রিমান্ডে
সদরঘাটে লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে পাঁচ যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার ৫ আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) আসামিদের আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদরঘাট নৌথানার উপপরিদর্শক নকীব অয়জুল হক। রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিন আবেদনের বিরোধিতা করা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফা চৌধুরী হিমেলের আদালত প্রত্যেকের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুল। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে সদরঘাট ১১ নং পন্টুনের সামনে এমভি তাশরিফ-৪ নামে একটি লঞ্চ ও এমভি পূবালী-১ নামে আরও একটি  লঞ্চ রশি দিয়ে পন্টুনে বাঁধা ছিল। এ দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে ফারহান নামে আরেকটি লঞ্চ ঢুকানোর সময় এমভি তাশরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে গেলে পাঁচ যাত্রী লঞ্চে ওঠার সময় গুরুতর আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে বিআইডব্লিউটিএ। মামলার আসামিরা হলেন, এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার মো. মিজানুর রহমান (৪৮) ও দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার মো. মনিরুজ্জামান (২৪) এবং এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার মো. আব্দুর রউফ হাওলাদার (৫৪), দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার মো. সেলিম হাওলাদার (৫৪) ও ম্যানেজার মো. ফারুক খান (৭৬)।
১২ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:৩১

‘মা নেই, তাই ঈদের দিনের সব রান্না আমিই করি’
ঈদ মানেই আনন্দ। প্রতিবছর ঈদকে ঘিরে নানান আয়োজনে মেতে ওঠে সবাই। শপিং থেকে শুরু করে প্রিয়জনদের জন্য উপহার কেনা, ঈদের দিন রান্নাবান্না সব মিলিয়ে যেন আনন্দের কোনো সীমা নেই। তরুণদের কাছে এসে ঈদ আরও বর্ণিল হয়ে ওঠে। আর মাত্র একদিন পরেই ঈদুল ফিতর। তাই ঈদকে স্বাগত জানাতে এবং উৎসবকে আরও আনন্দময় করে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সবাই। পিছিয়ে নেই জনপ্রিয় অভিনেত্রী প্রার্থনা ফারদিন দীঘিও।  সম্প্রতি দেশের একগণমাধ্যমে আসন্ন ঈদকে ঘিরে নিজের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন দীঘি। এসময় অভিনেত্রী জানান, ‘মা নেই,  তাই ঈদের দিনের সব রান্নাবান্না তিনিই করেন।   দীঘি বলেন, ঈদের দিন ইন্দিরা রোডের বাসাতেই থাকব। একটা বেসরকারি টিভি চ্যানেলে ঈদ স্পেশাল সেলিব্রিটি অনুষ্ঠানে থাকব ঈদের দিন। তবে ঈদের দিন সবচেয়ে যার কথা ভেবে সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে, তিনি আমার মা ইফতে আরা ডালিয়া দোয়েল। ২০১১ সালে মায়ের মৃত্যুর পর মা-বাবা বলতে এখন বাবা সুব্রত বড়ুয়া আমার সব। ছোটবেলায় মাকে হারানোর পর বাবাকেই মায়ের ভূমিকায় পেয়েছি।  শুধু মাত্র আমার জন্যই নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন বাবা। তাই বাবার প্রতি বাড়তি আবেগ আর অসীম শ্রদ্ধা কাজ করে। মা যখন অসুস্থ, তখন বাবা হাসপাতালের বিছানায় মাকে সামলেছেন, আবার আমাকেও সামলেছেন। পরিবারের সঙ্গেই কেটেছে আমার শৈশব ও কৈশোরের বর্ণিল ঈদগুলো। এখনও ঈদ আসে। তবে আগের মতো করে ঈদ উদযাপন করতে পারি না।   অভিনেত্রী আরও বলেন, আগে যেমন পাখির মতো ডানা মেলে উড়তে পারতাম, এখন তেমনটা পারি না। ঈদ এলে ঠিকই আনন্দে মেতে উঠি। ঘটা করে চলে কেনাকাটার পাশাপাশি ঈদের দিনের পরিকল্পনাও।  মায়ের কথা স্মরণ করে দীঘি বলেন, শৈশবের ঈদের দিনে মায়ের হাতের রান্না খেতাম মজা করে। জগতের সব মায়ের মতো আমার মাও রান্না করতেন অনেক মজা করে। আজ মা নেই। তাই এখন ঈদের দিনের সব রান্না আমিই করি। কেবল রান্নাবান্না নয়, ঘর গোছানো থেকে শুরু করে ঈদের দিনের সব কাজ একাই সামলাই বলা যায়! ইন্দিরা রোডের বাসায় বন্ধুরা আসে। তাদের নিয়ে আড্ডা দিই। খাওয়া-দাওয়া করি। তিনি বলেন, ছোটবেলার ঈদের দিনের পরিকল্পনাগুলোর কথা মনে পড়লে এখন হাসিই পায়। কিন্তু অন্যরকম এক ভালো লাগাও কাজ করে মনের মধ্যে। কত সহজ-সরল আর ভাবনাহীন ছিল শৈশবের ঈদ। সকালে গোসল সেরে বড়দের সালাম দিয়ে শৈশবের ঈদ শুরু হতো।    দীঘি বলেন, বড়দের সালাম দিয়ে সালামির জন্য দাঁড়িয়ে থাকতাম! সালামি নিয়ে সে কত কত স্মৃতি, কত কী কিনতাম! তখন একমাত্র সালামির টাকাগুলোকেই নিজের টাকা মনে হতো। এ ছাড়া তেমন টাকাই হাতে পেতাম না। তাই সালামি হাতে পেয়েই নানান পরিকল্পনায় বসতাম। যদিও শেষ পর্যন্ত তেমন কিছুই করা হতো না সালামির টাকা দিয়ে।    
১০ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:০৮

দিনের বেলায় আমিরাতের আকাশে ঈদের চাঁদ
মধ্যপ্রাচ্যে সোমবার ঈদের চাঁদ দেখার প্রস্তুতি নেওয়া হলেও এদিন চাঁদ দেখা না যাওয়ায় ওই অঞ্চলে বুধবার (১০ এপ্রিল) ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে চাঁদটি দেখা গেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। খবর খালিজ টাইমসের। জানা গেছে, আমিরাতের আকাশে সকাল বেলাই উঁকি দেয় অস্পষ্ট ঈদের চাঁদ। এটির ছবি প্রকাশ করেছে অ্যাস্ট্রোনোমি সেন্টার। আল-খাত জ্যোতির্বিদ্যা পর্যবেক্ষণাগার থেকে চাঁদের ছবিটি তোলা হয়েছে। ছবিটি এমন সময় তোলা হয় যখন মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে এটি খালি চোখে দেখা যাচ্ছিল না। এদিকে, আমিরাতের সাধারণ মানুষ ঈদে টানা ৯দিনের ছুটি পেয়েছেন। ছুটি বেশি পাওয়ায় দেশটিতে ঈদ উৎসবের মাত্রাও বৃদ্ধি পেয়েছে। ঈদের উৎসবের সময় আমিরাতে আবহাওয়া মেঘাচ্ছন্ন থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  প্রসঙ্গত, আমিরাতের মতো সৌদি আরবেও ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা যায়নি সোমবারন। এরপর দেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয় বুধবার উদযাপিত হবে মহাখুশির ঈদ।
০৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:২৭

টানা পাঁচ দিনের ছুটিতে দেশ
পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বুধবার থেকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি শুরু হচ্ছে। যদিও অনেকে ৮-৯ এপ্রিল দুদিনের ছুটি নিয়ে ঈদের আনন্দ জমিয়ে উপভোগ করছেন টানা ১০ দিন।  মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, আবেদন করে অনেকেই দুদিন ছুটি নিয়ে ইতোমধ্যে যার যার গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন। যারা ছুটি পাননি বা নেননি তারা মঙ্গলবার অফিসে হাজিরা দিয়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। যারা দুদিনের বাড়তি ছুটি নিয়েছেন এবার তাদের ঈদের ছুটি শুরু হয়েছে ৫ এপ্রিল থেকে। সরকারি ক্যালেন্ডারের হিসাব অনুসারে ৫ ও ৬ এপ্রিল শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি ও ৭ এপ্রিল পবিত্র শবে কদরের ছুটি। আর যারা যারা বাড়তি দুদিনের ছুটি নেননি, তাদের ঈদ এবং পহেলা বৈশাখের ছুটি মিলিয়ে পাঁচ দিনের ছুটি কার্যকর হচ্ছে বুধবার ১০ এপ্রিল থেকে।  এদিকে, ৮ ও ৯ এপ্রিল সরকারি অফিস আদালত ব্যাংক-বিমা খোলা থাকবে। তবে সে ক্ষেত্রে ৮ ও ৯ এপ্রিল দুই দিনের ছুটি নিলেই ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ১০ দিনের ছুটি ভোগের সুযোগ রয়েছে। কারণ ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১০, ১১ ও ১২ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদুল ফিতরের সরকারি ছুটি। আবার ১৩ এপ্রিল শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি এবং ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখের ছুটি। তাই মাঝখানের মাত্র দুদিনের ছুটি নিয়েই একসঙ্গে ১০ দিন ছুটি কাটাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ ব্ছর সংবাদপত্রেও ছুটি থাকছে ছয় দিন। সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নিউজপেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) ৯ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছে। এ কারণে ১০ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে কোনও সংবাদপত্র প্রকাশিত হবে না।  তবে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় দেশের অনলাইন গণমাধ্যম ও টেলিভিশনগুলো খোলা থাকছে। 
১০ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০১

চাঁদের ওপর নির্ভর করবে ২ দিনের ট্রেনের টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত
বাংলাদেশ রেলওয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে দুই দিনের টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদি মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) চাঁদ দেখা যায় তাহলে সন্ধ্যার পর থেকে ১১ ও ১২ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে। আর যদি চাঁদ দেখা না যায় তাহলে ১০ ও ১২ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সকালে ঢাকা রেলস্টেশনের  ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান। তিনি বলেন, ঈদের দিন সব আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে দুই দিনের টিকিট বিক্রি করা হয়। মাসুদ সারওয়ার বলেন, ঈদে ট্রেনে নিরাপদে গত ছয়দিন বাড়ি ফিরতে পেরেছেন মানুষ। আজ এখন পর্যন্ত যেসব ট্রেন স্টেশন ছেড়েছে তাতে কোনো বিলম্ব হয়নি। শুধু একটি ট্রেনের আধা ঘণ্টা বিলম্ব হয়েছে। সোমবার (৮ এপ্রিল) কিছু বিশেষ অঞ্চলের ট্রেনে ব্যাপক চাপ হয়েছিল। বিশেষ করে গার্মেন্টস শ্রমিক একসঙ্গে এসে উঠেছে। আজ সকালে উত্তরাঞ্চলের একটাই ট্রেন ছিল, রংপুর এক্সপ্রেস। সেটাতেও অনেক চাপ পড়েছে। এ ছাড়া পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেসেও ব্যাপক চাপ লক্ষ্য করা গেছে। যাত্রী সাধারণের কোনো অভিযোগ-আপত্তি নেই। দিনের বাকি সময়ও নিরাপদ যাত্রা হবে বলে আশা করছি। ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের ব্যাপক চাপ বিষয়ে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আপনারা জানেন উৎসবমুখর পরিস্থিতির বাস্তবতায় তাদের ছাদ থেকে নামানো যায়নি।
০৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:০৪
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়