• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo
দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হাতিয়ার কমলার দিঘি সমুদ্রসৈকত 
কেউ চড়ছেন ঘোড়ার পিঠে, কেউ কাটছেন সাঁতার। হাঁটু পানিতে নেমে ছোট শিশুরা করছেন দুরন্তপনা। সঙ্গে থাকা পরিবারের নারী সদস্যরা নদীর তীরে দাড়িয়ে তুলছেন ছবি। সবাই আনন্দে আত্মহারা। তীব্র রোদ কাউকে থামাতে পারেনি। মাঝে মধ্যে কেওড়া বাগানে এসে একটু স্বস্তি নিয়ে আবার যে যার মতো করে আনন্দে মেতে উঠছেন। ঈদ পরবর্তী গত কয়েক দিন ধরে নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ঐতিহ্যবাহী কমলার দিঘি সমুদ্রসৈকতে একই চিত্র বিরাজ করছে। হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নের পূর্বপাশে বেড়িবাঁধের বাহিরে এই সমুদ্রসৈকতের অবস্থান। উপজেলা সদর থেকে পাকা রাস্তায় ৫-৬ কিলোমিটারের দূরত্বে হওয়ায় অনেকে এখানে আসছেন। গণপরিবহন চলাচল না করায় সবাই নিজ নিজ ব্যক্তি মালিকানা গাড়ি নিয়ে এসেছেন এই সমুদ্রসৈকতে।  সরেজমিনে দেখা যায়, ব্যক্তি মালিকানা সারি সারি গাড়ির বিশাল বহর রাখা কেওড়া বাগানের ফাঁকে ফাঁকে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সবাই এখানে অবস্থান করে অন্ধকার হওয়ার আগেই সবাই যে যার মতো বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা চরঈশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম চৌকিদার শঙ্কর চন্দ্র সাহা জানান, ঈদের দিন থেকে এখানে প্রতিদিন মাত্রাতিরিক্ত মানুষের সমাগম হচ্ছে। প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ হাজার মানুষ আসছেন এখানে। বেড়ি থেকে পূর্ব দিকে সরু রাস্তায় চারচাকার গাড়ি এলে যানজট সৃষ্টি হয়। এ জন্য সবাই মোটরসাইকেল নিয়ে আসেন। দুই যুগেরও বেশি সময় এই স্থানে দর্শনার্থীদের পদচারণা থাকলেও এবার সবচেয়ে বেশি মানুষ এখানে আসছেন। নিঝুম দ্বীপসহ হাতিয়ার অন্য বিনোদন কেন্দ্রে যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ায় মানুষজন এখানে বেশি আসছেন।  ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে ঈদ উদযাপন করতে আসা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আলাউদ্দিন পরিবার নিয়ে এসেছেন। তিনি জানান, অনেকের কাছে এই কমলার দিঘির গল্প শুনেছেন। সত্যিই দেখার মতো জায়গা এটি। ছোট শিশুরাও আনন্দে আত্মহারা। সহজে নদীতে নামা যায়, কোনো কাদা লাগে না। তীব্র গরমে বনের মধ্যে একটু দাঁড়ালে প্রশান্তি চলে আসে। বিদ্যুতের সরবরাহ নেই। এরপরেও সবাই ক্লান্তিহীন। স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল শহিদ জানান, গত কয়েক বছর এখানে মানুষজন আসছেন। তবে এবার যে পরিমাণ মানুষ এসেছে, তা বিগত বছরগুলোতে কখনো আসেনি। কিন্তু অতিরিক্ত মানুষের চাপে কিছুটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। ঈদের দিন তীব্র যানজট ছিল। বেড়ি থেকে পূর্বদিকে সৈকতের যাওয়ার রাস্তাটি সরু হওয়ায় অনেকে ভিন্ন ভিন্ন পথে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যাওয়া লাগছে। চরঈশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন জানান, ২০২৩ সালে হরিণের খাওয়ার পানি জোগান দেওয়ার জন্য এখানে একটি দিঘি তৈরি করা হয়। মাটি কাটা এক নারী শ্রমিকের নামানুসারে এর নাম রাখা হয় কমলার দিঘি। এর পাশে বনবিভাগ কেওড়া বাগান ও পরে ঝাউবাগান সৃজন করেন। এতে স্থানটি দর্শনীয় হয়ে ওঠে। গত তিন বছর আগে কেওড়া বাগানের পাশে নদীর কোল ঘেঁষে বিশাল বিচ তৈরি হয়; যা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক লোক আসছেন। গত কয়েক বছর সরকারি-বেসরকারি ঊর্ধ্বতন অনেক কর্মকর্তা এখানে আসেন। তিনি আরও জানান, মানুষের আনাগোনা বেশি দেখে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। পরে কয়েকটি ছাতা ও একটি শৌচাগার নির্মাণ করে দেওয়া হয়। এবার ঈদে মানুষের অতিরিক্ত চাম সামাল দিতে গ্রাম চৌকিদার নিয়োজিত করা হয়। তারা প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন সময় দায়িত্ব পালন করছেন। তবে ইউনিয়ন পরিষদের বাজেট অনেক কম হওয়ায় অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজও করা যাচ্ছে না। সরকারিভাবে পর্যটন করপোরেশন থেকে লোকজন এসেছেন। তারা একটি পরিকল্পনা হাতে নিলে এই স্থানটি পর্যটন খাতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে।
১৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:১৭

অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত আজরাইল দিঘি
অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে ফেনীর দাগনভূঞার আজরাঈল দিঘি। প্রতিবছর এ দিঘিতে শীতে আশ্রয় নেয় শত শত অতিথি পাখি। সরেজমিনে উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের উত্তর আলামপুর গ্রামে গিয়ে জানা যায়, স্থানীয়ভাবে আজরাঈল দিঘি বলেই পরিচিত দিঘিটি পূর্বে হাজেরা খাঁ দিঘি নামেও পরিচিত ছিল। নীরব নিস্তব্ধ এই দিঘিটি এখন নানা জাতের অতিথি পাখির কিচিরমিচিরে মুখরিত।  স্থানীয়রা জানান, গত বছরের চেয়ে এবার বিপুল পরিমাণ পাখির আগমন ঘটেছে দিঘিটিতে। এসব পাখি দেখতে অনেক দর্শনার্থী ওই এলাকায় ভিড় করেন। অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দে প্রতিদিন আশপাশের লোকজনের ঘুম ভাঙছে। উপজেলার পূর্ব চন্দ্রপুর ইউনিয়নের দর্শনার্থী আবুল হাসান বলেন, প্রতিবছর এখানে বেশ কয়েকবার ঘুরতে আসি। বিশেষ করে শীতের সময়টা অনেক ভালো লাগে। অতিথি পাখিরা আসে, তাদের কিচিরমিচির শব্দ একটা সুরের পরিবেশ সৃষ্টি করে। পাখির আগমনে জায়গাটির সৌন্দর্য আরও ফুটে উঠেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য জহিরউদ্দিন বলেন, গত কয়েক বছর ধরে এসব পাখি এই দিঘিতে আসে। পাখিরা এখানে অনেক নিরাপদ। দিঘিটি পাখির একটি নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে গড়ে উঠেছে। এ দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতিদিন শত শত মানুষ আসে এখানে।  দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিবেদিতা চাকমা বলেন, এর সৌন্দর্য রক্ষা এবং উপভোগ করা সবারই দায়িত্ব। কারও বিরুদ্ধে পাখি শিকারের অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:৪৯
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়