• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
জাহান্নাম থেকে বাঁচাবে যেসব আমল
জাহান্নাম থেকে রেহাই পেয়ে জান্নাতে যেতে পারাই হবে মুমিনের জন্য সবচেয়ে বড় সাফল্য। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, প্রতিটি প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। আর অবশ্যই কিয়ামতের দিনে তোমাদের প্রতিদান পরিপূর্ণভাবে দেওয়া হবে। সুতরাং যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে সে-ই সফলতা পাবে। আর দুনিয়ার জীবন শুধু ধোঁকার সামগ্রী। (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫) জাহান্নাম থেকে বাঁচার আমল ভালো আচরণ রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি সহজ-সরল, নম্র-ভদ্র এবং বিনয়ী হয়, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেবেন।’ (মুসতাদরাক হাকিম: ৪৩৫) অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, আমি কি তোমাদের জানিয়ে দেব না, কোন ব্যক্তির জন্য জাহান্নাম হারাম এবং জাহান্নামের জন্য কোন ব্যক্তি হারাম? যে ব্যক্তি মানুষের কাছে সহজ-সরল, নম্রভাষী ও সদাচারী। (তিরমিজি: ২৪৮৮) দান-সদকা আদি ইবনে হাতিম (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচো। এরপর তিনি পিঠ ফেরালেন এবং মুখ ঘুরিয়ে নিলেন। আবার বলেন, তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচো। এরপর তিনি পিঠ ফেরালেন এবং মুখ ঘুরিয়ে নিলেন। তিনবার এরূপ করলেন। এমনকি আমরা ভাবছিলাম যে তিনি বুঝি জাহান্নাম সরাসরি দেখছেন। তিনি আবার বলেন, তোমরা এক টুকরা খেজুর দিয়ে হলেও জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচো। আর যদি কেউ সেটাও না পাও তাহলে উত্তম কথার দ্বারা হলেও (আগুন থেকে নিজেকে রক্ষা করো)। (বুখারি: ৬৫৪০) আল্লাহর পথে সময়দান রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহর পথে যে বান্দার দুই পা ধুলায় মলিন হয়, তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে এমন হতে পারে না।’ (সহিহ বুখারি: ৪/২৮১১) টানা ৪০ দিন জামাতে নামাজ আদায় রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে টানা ৪০ দিন তাকবিরে উলার (ইমামের প্রথম তাকবির) সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করবে, তাকে দুটি নাজাতের ছাড়পত্র দেওয়া হবে। ১. জাহান্নাম থেকে মুক্তি ২. মুনাফেকি থেকে মুক্তি।’ (তিরমিজি: ২৪১) রোজা রাখা আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় এক দিন রোজা রাখে, আল্লাহ তার বিনিময়ে জাহান্নাম থেকে তার মুখমণ্ডলকে সত্তর বছরের দূরত্বে রাখেন। (ইবনে মাজাহ: ১৭১৮) শিরকমুক্ত ইবাদত আবু আইয়ুব (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি নবী (স.)-এর খেদমতে হাজির হয়ে আরজ করল, আমাকে এমন একটি আমলের কথা বলে দিন, যে আমল আমাকে জান্নাতের কাছে পৌঁছে দেবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে। রাসুল (স.) বলেন, তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে, তার সঙ্গে কোনো কিছু শরিক করবে না, নামাজ কায়েম করবে, জাকাত দেবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখবে। সে ব্যক্তি চলে গেলে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, তাকে যে আমলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা দৃঢ়তার সঙ্গে পালন করলে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসলিম: ১৪) আরাফার দিনে দোয়া আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, এমন কোনো দিন নেই, যেদিন আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের আরাফার দিনের চেয়ে জাহান্নাম থেকে বেশি মুক্তি দিয়ে থাকেন। তিনি সেদিন বান্দাদের খুব নিকটবর্তী হন, তাদেরকে নিয়ে ফেরেশতাগণের কাছে গর্ববোধ করে বলেন, তারা কী চায়? (অর্থাৎ যা চায় আমি তাদেরকে তা-ই দেব)। (মেশকাত: ২৫৯৪) ইতেকাফ করা রসুল (স.) বলেন- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে এক দিন ইতেকাফ করবে আল্লাহ তায়ালা তার ও জাহান্নামের মাঝে তিন পরিখা পরিমাণ দূরত্ব সৃষ্টি করবেন; যার দূরত্ব দুই দিগন্তের দূরত্বের থেকে বেশি দূরত্ব হবে।’ (কানজুল উম্মাল: ২৪০১৯) জোহরের সুন্নত আদায় উম্মু হাবিবা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি জোহরের (ফরজের) আগে চার রাকাত নামাজ পড়ে, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেন।’ (তাবরানি আউসাত: ৭৫৪৭) উম্মু হাবিবা (রা.) থেকে বর্ণিত অন্য হাদিসে নবী (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জোহরের (ফরজের) আগে চার রাকাত এবং পরে চার রাকাত সালাত পড়ল, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেন। (আবু দাউদ, তিরিমিজি, ইবনে মাজাহ ইকামাতিস সালাহ: ১১৬০) আল্লাহর ভয়ে অশ্রু বিসর্জন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, যে মুমিন বান্দা  আল্লাহর ভয়ে দুই চোখ থেকে অশ্রু বিসর্জন করে, তা যদি মাছির মাথার পরিমাণও হয় এবং তা চেহারা বেয়ে পড়ে, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেন। (ইবনে মাজাহ, কিতাবুজ জুহুদ: ৪১৯৭)
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:৫১
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়