• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo
জিম্মি জাহাজে সামরিক অভিযান চায় না মালিকপক্ষ
ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি ‘এমভি আবদুল্লাহ’ নামের জাহাজটিতে কোনো ধরনের সামরিক অভিযান চায় না মালিকপক্ষ। সোমবার (২৫ মার্চ) জাহাজটির মালিকানা প্রতিষ্ঠান কবির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (কেএসআরএম) মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, জাহাজের নাবিকদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ চলছে। তারা ভালো আছেন। নাবিকদের অক্ষত অবস্থায় মুক্ত করে আনা আমাদের লক্ষ্য। এ বিষয়ে জলদস্যুদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে।  মিজানুল ইসলাম বলেন, জিম্মি জাহাজে সোমালি পুলিশ কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেভাল ফোর্সসহ যেসব সামরিক অভিযানের কথা সামনে আসছে, এগুলো আমরা জানি না। তবে আমাদের বার্তা স্পষ্ট হলো, আমরা কোনো ধরনের সামরিক অভিযানের পক্ষে নই। সামরিক অভিযান চালিয়ে আমরা আমাদের নাবিকদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে চাই না। সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক মাধ্যমে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’। দস্যুদের কাছে জিম্মি হয় ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু। আটকের পর জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে দুই দফা স্থান পরিবর্তন করে জাহাজটিকে সবশেষ সোমালিয়ার গদভজিরান উপকূলের কাছে নোঙর করে রাখা হয়েছে। জাহাজসহ নাবিকদের উদ্ধারে নানানভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার ও জাহাজটির মালিকানা প্রতিষ্ঠানটি।
২৫ মার্চ ২০২৪, ১৭:১৩

জিম্মি জাহাজে বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র বসিয়েছে জলদস্যুরা
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেভাল ফোর্স (ইইউএনএভিএফওআর) যুদ্ধজাহাজ ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাইজ্যাক করা বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে। অন্যদিকে জলদস্যুরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। সেই সঙ্গে জিম্মি জাহাজে বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র বসিয়েছে তারা। এছাড়াও ইইউ জাহাজের উপস্থিতি নাবিকদের ওপর জলদস্যুদের চাপ বাড়াচ্ছে। শুক্রবার (২২ মার্চ) রাতে জিম্মি এক নাবিকের পরিবার এক সদস্য গণমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জাহাজে সুপেয় পানির সংকট দেখা দেওয়ায় নাবিকদের পানি ব্যবহার নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। জাহাজে সার্বক্ষণিক পাহারায় থাকা ৩০ থেকে ৩৫ জন সশস্ত্র জলদস্যু নাবিকদের ওপর নজরদারি বাড়িয়েছে। বর্তমানে কেবিনে থাকতে দেওয়া হচ্ছেনা নাবিকদের। খাবারের কষ্টের পাশাপাশি সবাইকে একটি টয়লেট ব্যবহার করতে হচ্ছে। দ্য ডেইলি সোমালিয়া ও ভারতীয় বিমান বাহিনীর এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে জলদস্যুদের বিমান বিধ্বংসী বন্দুকের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, বিমান বিধ্বংসী অস্ত্রগুলো কাপড় মুড়িয়ে সমুদ্রের দিকে তাক করে রাখা হয়েছে। ইইউএনএভিএফওআর সোমালিয়া উপকূলে জলদস্যু দমনে ‘অপারেশন আটলান্টা’ নামে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দিবাগত মধ্যরাতে নিজেদের এক্স অ্যাকাউন্টে বাংলাদেশি ২৩ নাবিকসহ জিম্মি এমভি আবদুল্লাহকে ঘিরে তাদের কার্যক্রমের তিনটি ছবি ও একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ‘অপারেশন আটলান্টা’। তার মধ্যে একটি ছবিতে ইইউ নেভাল ফোর্সের অপারেশন আটলান্টার মোতায়েন করা যুদ্ধজাহাজটি থেকে বাংলাদেশের জিম্মি জাহাজটিকে দেখা যাচ্ছে। জাহাজটির দিকে তাকিয়ে আছেন ইইউ নেভাল ফোর্সের দুই সদস্য। যা যুদ্ধজাহাজটি থেকে এমভি আবদুল্লাহ’র খুব কম দূরত্বকেই নির্দেশ করে। অপর দুটি ছবি ও একটি ভিডিওতে যুদ্ধজাহাজ থেকে ইইউ নেভাল ফোর্সের একটি হেলিকপ্টারকে জিম্মি এমভি আবদুল্লাহর ওপর দিয়ে উড়ে যেতে দেখা যায়। উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা বোঝাই করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে উদ্দেশে রওনা হয় চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান কবির গ্রুপের জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে জাহাজটি। মোগাদিসু থেকে এক হাজার ১১১ কিলোমিটার পূর্বে ভারত মহাসাগর থেকে ছিনতাই করে বাণিজ্যিক কার্গো জাহাজটিকে প্রথমে নেওয়া হয় সোমালিয়ার গারাকাড এলাকায়। উপকূল থেকে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার দূরে নোঙর করা হয় সেটিকে। এরপর আবার অবস্থান বদলে আবদুল্লাহকে নেওয়া হয় গদবজিরান উপকূল এলাকায়। সেখান থেকে সরিয়ে নোঙর করা হয় উপকূলের মাত্র সাড়ে ৭ কিলোমিটার দূরে। তারপর আরও এগিয়ে উপকূলের পৌনে তিন কিলোমিটার দূরত্বে নেওয়া হয়েছে। জাহাজটিতে জিম্মি আছেন ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশি জাহাজটি গত তিনদিন ধরে সেখানেই নোঙর করা আছে।
২৩ মার্চ ২০২৪, ১২:২৪

জিম্মি জাহাজে অভিযানে মালিকপক্ষের আপত্তি
ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাইজ্যাক করা বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর অদূরে একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেভাল ফোর্স (ইইউএনএভিএফওআর)। এই মুহূর্তে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজটির বেশ কাছাকাছি অবস্থান করছে জাহাজটি। পাশাপাশি তাদের হেলিকপ্টার ঘন ঘন চক্কর কাটছে জিম্মি জাহাজটি ঘিরে। তবে সেখানে সামরিক অভিযানের পক্ষে নয় মালিকপক্ষ। তারা জিম্মি ২৩ নাবিক, জাহাজ ও জাহাজের পণ্যে নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে চায়। শুক্রবার (২২ মার্চ) জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সামরিক অভিযান হলে নাবিক, জাহাজ ও জাহাজের পণ্যের ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই আমরা আলোচনার মাধ্যমে নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে চাই। এর পর সামরিক অভিযান হলে আমাদের আপত্তি নেই। এখন নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনাই আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার। ইইউএনএভিএফওআর সোমালিয়া উপকূলে জলদস্যু দমনে ‘অপারেশন আটলান্টা’ নামে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দিবাগত মধ্যরাতে নিজেদের এক্স অ্যাকাউন্টে বাংলাদেশি ২৩ নাবিকসহ জিম্মি এমভি আবদুল্লাহকে ঘিরে তাদের কার্যক্রমের তিনটি ছবি ও একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ‘অপারেশন আটলান্টা’। তার মধ্যে একটি ছবিতে ইইউ নেভাল ফোর্সের অপারেশন আটলান্টার মোতায়েন করা যুদ্ধজাহাজটি থেকে বাংলাদেশের জিম্মি জাহাজটিকে দেখা যাচ্ছে। জাহাজটির দিকে তাকিয়ে আছেন ইইউ নেভাল ফোর্সের দুই সদস্য। যা যুদ্ধজাহাজটি থেকে এমভি আবদুল্লাহ’র খুব কম দূরত্বকেই নির্দেশ করে। অপর দুটি ছবি ও একটি ভিডিওতে যুদ্ধজাহাজ থেকে ইইউ নেভাল ফোর্সের একটি হেলিকপ্টারকে জিম্মি এমভি আবদুল্লাহর ওপর দিয়ে উড়ে যেতে দেখা যায়। উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা বোঝাই করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে উদ্দেশে রওনা হয় চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান কবির গ্রুপের জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে জাহাজটি। মোগাদিসু থেকে এক হাজার ১১১ কিলোমিটার পূর্বে ভারত মহাসাগর থেকে ছিনতাই করে বাণিজ্যিক কার্গো জাহাজটিকে প্রথমে নেওয়া হয় সোমালিয়ার গারাকাড এলাকায়। উপকূল থেকে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার দূরে নোঙর করা হয় সেটিকে। এরপর আবার অবস্থান বদলে আবদুল্লাহকে নেওয়া হয় গদবজিরান উপকূল এলাকায়। সেখান থেকে সরিয়ে নোঙর করা হয় উপকূলের মাত্র সাড়ে ৭ কিলোমিটার দূরে। তারপর আরও এগিয়ে উপকূলের পৌনে তিন কিলোমিটার দূরত্বে নেওয়া হয়েছে। জাহাজটিতে জিম্মি আছেন ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশি জাহাজটি গত তিনদিন ধরে সেখানেই নোঙর করা আছে।  
২৩ মার্চ ২০২৪, ০৬:৫৯

জিম্মি জাহাজে উদ্ধার অভিযান নিয়ে যা বলল মালিকপক্ষ
সোমালিয়ার উপকূলে জিম্মি ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে উদ্ধার করতে দেশটির পুলিশ ও বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীর সদস্যরা অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সোমালিয়ার আধা স্বায়ত্তশাসিত পান্টল্যান্ড অঞ্চলের পুলিশের বরাত দিয়ে সোমবার (১৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স। বাংলাদেশি জাহাজটির মালিকপক্ষ বলেছে, জাহাজটিতে উদ্ধার অভিযানের বিষয়ে তারা কিছু জানেন না। জাহাজ উদ্ধারের চেয়ে নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনেই এখন প্রধান লক্ষ্য। তার ওপরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর মালিক কবির গ্রুপ। গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনা। এর আগে ১৪ মার্চ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী। তবে বাংলাদেশ সরকার তাতে সম্মতি দেয়নি বলে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে আলোচনায় জানিয়েছেন মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব খুরশেদ আলম। তিনি বলেন, নাবিকদের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে ওই প্রস্তাবে রাজি হয়নি সরকার ও মালিকপক্ষ। প্রসঙ্গত, ১২ মার্চ সোমালিয়ার জলদস্যুরা ভারত মহাসাগর থেকে বাংলাদেশি জাহাজটি ছিনতাই করে। জাহাজটি এখন সোমালিয়ার গদভজিরান উপকূলের কাছে নোঙর করা রয়েছে। বাংলাদেশি জাহাজটি ছিনতাই হওয়ার পর একটি যুদ্ধজাহাজ ও একটি দূরপাল্লার টহল জাহাজ মোতায়েন করেছিল ভারতীয় নৌবাহিনী। জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলে নেওয়া পর্যন্ত সেটির কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান নিয়ে অনুসরণ করেছিল ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ। এদিকে গত শনিবার সোমালি জলদস্যুদের কবল থেকে মাল্টার পতাকাবাহী কার্গো জাহাজ এমভি রুয়েন উদ্ধার করেন ভারতীয় নৌবাহিনীর সদস্যরা। সোমবার (১৮ মার্চ) পান্টল্যান্ড পুলিশ জানায়, এমভি আবদুল্লাহকে দখল করে রাখা জলদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ নিতে প্রস্তুত রয়েছে তারা। এক বিবৃতিতে পান্টল্যান্ড পুলিশ জানায়, আন্তর্জাতিক নৌ সেনারা জলদস্যুদের ওপর আক্রমণের পরিকল্পনা করছেন বলে খবর পাওয়ার পর প্রস্তুত রয়েছেন তারা। এ বিষয়ে রয়টার্সের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করেনি ভারতীয় নৌবাহিনী।  
১৯ মার্চ ২০২৪, ০২:০৩

জিম্মি জাহাজে বিস্ফোরণের শঙ্কা
সোমালি জলদস্যুদের হাতে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ জিম্মির ঘটনার সপ্তাহ হতে চললেও এখনও কূল-কিনারা হয়নি। এদিকে জাহাজটি যেকোনো সময় বিস্ফোরণের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে থাকা ৫৫ হাজার টন কয়লাই এ আশঙ্কার মূল কারণ। জানা গেছে, কয়লাবাহী জাহাজ মেরিটাইম খাতে ঝুঁকিপূর্ণ কার্গো হিসেবে পরিচিত। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় কয়লার কনসেন্ট্রেশন মেপে দেখতে হয়। ফোর্স মেইনটেইন করে মাত্রাতিরিক্ত গ্যাস বের করে দিতে না পারলে জাহাজে যেকোনো সময় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। যদিও এমভি আবদুল্লাহতে টেকনিক্যাল পারসন আছে, তবে এ বিষয়ে এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের কাছ থেকে কোনো তথ্য না পাওয়ায় আশঙ্কা আরও বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাগরে বাল্ক জাহাজে কয়লা দাহ্য জাতীয় খনিজ পদার্থ পরিবহনে ৫ ধরনের বিপদের শঙ্কায় থাকে। এ জন্য বেশ কিছু নিরাপত্তা পদক্ষেপ মেনে চলতে হয়। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় জাহাজের খোলের ভেতরে মিথেন, কার্বন মনোক্সাইড এবং অক্সিজেনের পরিমাপ মেপে নির্ধারিত মাত্রার বেশি গ্যাস বের করে দিতে হয়। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ না করা গেলে এসব গ্যাস বেড়ে বিস্ফোরণ ঘটায়। বদ্ধ জায়গায় কয়লা থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছড়িয়ে পড়া মিথেনের পরিমাণ বাড়লে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। সেই সঙ্গে কার্বন মনোক্সাইড বেড়ে জাহাজে থাকা নাবিকদের প্রাণহানিও ঘটতে পারে। এ বিষয়ে মাস্টার মেরিনার ক্যাপ্টেন এম আনাম চৌধুরী বলেন, ‘মিথেন খুবই দাহ্য একটি গ্যাস। যেকোনো সময় এতে আগুন ধরতে পারে। সাধারণত এমন পরিস্থিতিতে আমরা কাউকে ডেকে সিগারেটও খেতে দেই না। কারণ, সামান্য সিগারেটের আগুন থেকে সেখানে বড় বিস্ফোরণ হতে পারে।’ উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি পতাকাবাহী এমভি আবদুল্লাহর নিয়ন্ত্রণে নেয় সোমালি জলদস্যুরা। সবশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দস্যুদের পক্ষ থেকে এখনও যোগাযোগ করা হয়নি। এর মধ্যে জাহাজটির অবস্থান বারবার পরিবর্তন করা হচ্ছে।
১৮ মার্চ ২০২৪, ২০:৩২

ছিনতাই হওয়া জাহাজে ছিল ৮০ কোটি টাকার কয়লা
সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি ‘এমভি আব্দুল্লাহ’ জাহাজে রয়েছে ৮০ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৫৫ হাজার টন কয়লা।  আর এসব কয়লা মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নেওয়ার পথে ২৩ নাবিক ও ক্রুসহ জাহাজটিকে নিজেদের দখলে নিয়েছে সোমালিয়ান জলদস্যুরা।   রোববার (১৭ মার্চ) জাহাজে কয়লার পরিমাণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেএসআরএম গ্রুপের মুখপাত্র ও গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম। জাহাজে থাকা কয়লার দাম জানতে চাইলে গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা আমরা জানা নেই। তবে পণ্যের পরিমাণ প্রায় ৫৫ হাজার টন।’  জাহাজের নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কেএসআরএম গ্রুপের মুখপাত্র বলেন, জাহাজে জিম্মি থাকা নাবিক ও ক্রুদের সঙ্গে খুব সীমিত পরিসরে কথা হয় আমাদের। সেখানে বিস্তারিত কিছু জিজ্ঞেস করার সুযোগ থাকছে না। আজ সারাদিন নাবিকদের কারো সঙ্গে আমরা কথা বলার সুযোগ পাইনি। গতকাল শনিবার দিনভর ছিল এমন যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা। রাত আটটার দিকে একজন নাবিকের সঙ্গে অল্প সময় কথা বলার সুযোগ পাই আমরা।  এ দিকে তথ্যসূত্র বলছে, জাহাজে থাকা এসব কয়লার মূল্য প্রায় ৮০ কোটি টাকা বা ৬৬ লাখ ডলার। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ডলার কয়লার দাম ১১০ থেকে ১২০ ডলারে ওঠানামা করছে। নিউক্যাসেল কোল ইনডেক্স অনুযায়ী প্রতি টন কয়লার দাম ১৩০ থেকে ১৪০ ডলার। আবার ইন্দোনেশিয়া কোল ইনডেক্স অনুযায়ী প্রতি টন কয়লার দাম ১১৫ থেকে ১২০ ডলার।   বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন জানান, সাগরে চলাচল করা কার্গো জাহাজে বিভিন্ন ধরনের পণ্য থাকে। কিছু পণ্য নির্ধারিত সময়ে খালাস না করলেও কোনো সমস্যা হয় না। আবার কিছু পণ্য আছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খালাস করে ফেলতে হয়। কোনো কারণে খালাস করতে দেরি হলে তা বিভিন্ন ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। জাহাজের ভেতরে দাহ্য পদার্থ থাকলে এই ঝুঁকির মাত্রা বেড়ে যায় কয়েকগুণ।  উল্লেখ্য, এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজে থাকা প্রায় ৫৫ হাজার টন কয়লা দু-তিনদিনের মধ্যে আরব আমিরাতের দুবাইয়ে খালাস করার কথা ছিল। কিন্তু এখন এসব কয়লা কখন খালাস হবে, জিম্মিরা কবে মুক্তি পাবে- তা জানে না কেউই। গত মঙ্গলবার তাদের জিম্মি করে জলদস্যুরা জাহাজটিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রিত জলসীমায় নিয়ে গেছে। এমভি আব্দুল্লাহ ও এর জিম্মিদের মুক্তি দিতে কেউ এখনো মুক্তিপণ চেয়ে যোগাযোগ করেনি। তবে মুক্তিপণ ছাড়া মুক্তি মিলবে না বলে নিশ্চিত হয়েছে জাহাজটির মালিকপক্ষ।
১৮ মার্চ ২০২৪, ০৩:০৪

জিম্মি জাহাজে অভিযানে ঢাকার অনুমতি চেয়েছিল ইইউ
বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’ জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার মুহূর্তে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি জাহাজ অ্যাকশনে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের অনুমতি চেয়েছিল। তবে নাবিক, ক্রু এবং অন্যদের প্রাণনাশের আশঙ্কায় বাংলাদেশ সরকার অ্যাকশনের অনুমতি দেয়নি। শনিবার (১৬ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের প্রধান রিয়ার এডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম গণমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ঘটনার পরপরই ভারতীয় নৌবাহিনীর বিমান পুরো এলাকা সার্চ করে আমাদের জাহাজটি সোমালি দস্যুদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে সেই তথ্য নিশ্চিত করে। সেখানে কাছাকাছি ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি জাহাজ তাৎক্ষণিক দস্যুদের চ্যালেঞ্জ করার জন্য আমাদের অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু আমাদের লোকজনের প্রাণরক্ষায় আমরা সে পথে যাইনি। এখন নেগোশিয়েশন চলছে কীভাবে শান্তিপূর্ণ উপায়ে নাবিক, ক্রুদের কোনো রকম ক্ষতি ছাড়াই জাহাজটি উদ্ধার করা যায়। তিনি আরও বলেন, জাহাজ চলাচল নির্বিঘ্ন এবং নিরাপদ রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি দেশের টহল জাহাজ গভীর সমুদ্রে থাকে। এসব জাহাজের বিশেষ কাজ জলদস্যুতা প্রতিরোধ করা। তবে হুতিদের প্রতি এটেনশন দিতে কিছু জাহাজ ব্যস্ত থাকার গ্যাপে সুযোগ নিয়েছে সোমালিয়ান জলদস্যুরা। বেশ কয়েক মাস যাবত তারা বড় জাহাজ জিম্মি করার অপেক্ষায় ছিল। সাগরের প্রায় ১৩০০ নটিক্যাল মাইল ভেতরে গিয়ে তারা আক্রমণটি করেছে। ওই পথে জাহাজ চলাচলে সতর্কতা অবলম্বনের একটি নোটিশ থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাহাজ সঠিক পথেই ছিল। বৃটেনের তরফে সেটা জারিকৃত সেই ডেঞ্জার জোনের একশত নটিক্যাল মাইল দূর দিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশের জাহাজটি। তবে ২৫০ থেকে ৩০০ নটিক্যাল মাইল ভেতর দিয়ে গেলে হয়তো বিপদ এড়ানো যেতো।  সবশেষ প্রাপ্ত তথ্যমতে, দ্বিতীয় দফায় গ্যারাকাড উপকূল থেকে ৪৫-৫০ নটিক্যাল মাইল উত্তরে সোমালিয়ার ‘গোদবজিরান’ উপকূল থেকে ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে জাহাজটি নোঙর করা হয়েছে। জলদুস্যদের পক্ষ থেকে শনিবার পর্যন্ত জাহাজের মালিকপক্ষ বা সরকারি কোনো সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি।’
১৭ মার্চ ২০২৪, ১২:৫৪

জিম্মি জাহাজে উঠল আরও সশস্ত্র জলদস্যু
জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’ সোমালিয়ার উপকূল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জাহাজটিতে আরও কয়েকজন সশস্ত্র জলদস্যু উঠেছে। ফলে পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। শনিবার (১৬ মার্চ) বিকেলে জাহাজটির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিডেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, জাহাজাটি সোমলিয়া উপকূল থেকে ৭ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করলেও শুক্রবার বিকেলে অবস্থান বদল করে। বর্তমানে এটি ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছে। জাহাজটিতে নতুন করে আরও ১৩ জন সশস্ত্র জলদস্যু উঠেছে। বর্তমানে জাহাজটিতে ২২ জন জলদস্যু অবস্থান করছে। মেহেরুল করিম বলেন, নতুন করে জাহাজে আরও জলদস্যু ওঠায় বর্তমানে পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। তবে জলস্যুদের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত মুক্তিপণ দাবি করা হয়নি। এর আগে, গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। সে সময় জাহাজটি সোমালিয়া উপকূল থেকে ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছিল। দস্যুদের কাছে জিম্মি হয় ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু। বৃহস্পতিবার দুপুরে সোমালিয়ার গারাকাড উপকূল থেকে ২০ মাইল দূরে জাহাজটি নোঙর করে। পরে সেটি আরও এগিয়ে উপকূলের ৭ মাইলের মধ্যে অবস্থান নেয়। কিন্তু শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ জাহাজটি আরারও চলতে শুরু করে। সর্বশেষ ২৩ নাবিকসহ জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজটিকে সোমালিয়ার গারাকাড থেকে গোদবজিরান উপকূলে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আগের অবস্থান থেকে এটি প্রায় ৫০ নটিক্যাল মাইল উত্তরে। বর্তমানে জাহাজটি উপকূল থেকে মাত্র ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে রয়েছে।
১৬ মার্চ ২০২৪, ২০:০৬

মায়ের কাছে আকুতি জিম্মি জাহাজে থাকা প্রকৌশলীর
‘আম্মু, ওরা মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। যেভাবেই হোক, আমাদের ছাড়ানোর ব্যবস্থা করেন, আম্মু।’- ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের চতুর্থ প্রকৌশলী তানভীর মা জোছনা বেগমকে এই আকুতি জানিয়েছেন। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাত আটটায় সর্বশেষ ছেলের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন জোছনা বেগম। এরপর আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। মোবাইলে তানভীর মাকে বলেন, ‘আম্মু, ওরা মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। এখনও ইফতার করি নাই। তারা খাবার দিলে ইফতার করব। কবির গ্রুপের চাচার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যেভাবেই হোক, আমাদের ছাড়ানোর ব্যবস্থা করেন, আম্মু।’ ছেলের চিন্তায় জোছনা বেগম বুধবার (১৩ মার্চ) সকালে ছুটে আসেন চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে কবির গ্রুপের কার্যালয়ে। এ সময় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ‌‘যেভাবেই হোক তার ছেলেকে যেন ফিরিয়ে আনা হয়।’- এই আকুতি জানিয়েছেন তিনি। জোছনা বেগম বলেন, মোবাইল কেড়ে নেওয়ার আগে ছেলের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা হয়। জাহাজটি সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে দস্যুরা। তবে তারা কারও গায়ে হাত তোলেনি। নাবিকদের জন্য দোয়া করতে বলেছে। ভারত মহাসাগরে ‘এমভি আবদুল্লাহ’ নামে বাংলাদেশি একটি জাহাজ মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে জলদস্যুদের কবলে পড়েছে। সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি আছেন জাহাজটির ২৩ জন নাবিক। এরই মধ্যে ভয়ানক হুমকির খবর ভেসে এসেছে জিম্মি জাহাজটি থেকে। 
১৩ মার্চ ২০২৪, ১৫:২৯

জিম্মি হওয়া জাহাজে কতদিনের খাবার আছে?
আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে ‘এমভি আবদুল্লাহ’ নামে বাংলাদেশি পতাকাবাহী একটি জাহাজ। সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি আছেন জাহাজটির ২৩ জন নাবিক। এরই মধ্যে ভয়ানক হুমকির খবর ভেসে এসেছে জিম্মি জাহাজটি থেকে। এরেই মধ্যে পর্যাপ্ত খাবার  ও সুপেয় পানির সংকট নতুন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দস্যুদের কবলে পড়া জাহাজটি ২৫ দিনের মতো খাবার রয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ২০০ টনের মত বিশুদ্ধ পানি রয়েছে বলে জানা গেছে। জাহাজটির প্রধান কর্মকর্তা (চিফ অফিসার) মো. আতিক উল্লাহ খান সর্বশেষ এক অডিও বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, আমাদের জাহাজে ২০-২৫ দিনের খাবার আছে। প্রায় ২০০ টনের মতো বিশুদ্ধ খাবার পানি আছে। সবাইকে বলেছি, এগুলো একটু সাবধানে ব্যবহার করতে। শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়ব আমরা। তবে একটা সমস্যা হচ্ছে আমাদের জাহাজে কিছু কোল্ড কার্গো আছে। প্রায় ৫৫ হাজার টন। এগুলো একটু ডেঞ্জারাসও। ফায়ারেরও ঝুঁকি আছে। মিথেন বাড়ে। লাস্ট যখন অক্সিজেন মেপেছি তখন ৯-১০ শতাংশ লেভেল পেয়েছি। এটি নিয়মিত মনিটরিং করতে হয়। কোনো কারণে অক্সিজেন লেভেল বেড়ে গেলে বিশেষজ্ঞের মতামত নিতে হবে। এটার একটু ব্যবস্থা করবেন, স্যার। মঙ্গলবার রাতে স্ত্রীর কাছে পাঠানো ওই বার্তায় তিনি বলেন, আমাদের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। টাকা না দিলে তারা একে একে আমাদের সবাইকে মেরে ফেলবে। তাদের যত তাড়াতাড়ি টাকা দেবে, তত তাড়াতাড়ি ছাড়বে বলেছে। এই বার্তাটা সবদিকে পৌঁছে দিয়ো। এর আগে, জাহাজটি জিম্মি হওয়ার পর মালিকপক্ষের কাছে একটি অডিও বার্তা পাঠান আতিক উল্লাহ খান। সেখানে তিনি বলেন, আজকে (মঙ্গলবার) সকালে জাহাজের সময় আনুমানিক সাড়ে ১০টার (বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টা) সময় একটা হাইস্পিড বোট আমাদের দিকে আসছিল। সঙ্গে সঙ্গে আমরা এলার্ম দিয়ে ব্রিজে গেলাম। ওখান থেকে পরে সিটে চলে গেলাম। ক্যাপ্টেন স্যার ও সেকেন্ড অফিসার ব্রিজে ছিল। আমরা ঝিকঝাক কোর্স করলাম। তারপর এএসএস-এ করলাম। ইউকে এমটিকেও ট্রাই করলাম। কিন্তু তারা ফোন রিসিভ করেনি। এরমধ্যে জলদস্যুরা চলে আসল। চলে আসার পর ওরা ক্যাপ্টেন স্যার ও সেকেন্ড অফিসারকে জিম্মি করে আমাদের ডাকল। আমরা সবাই আসলাম। আমাদের ডেকে কিছু গোলাগুলি করল। আমরা একটু ভয় পেয়েছি। সবাই ব্রিজে বসে ছিলাম। কারও গায়ে হাত তোলেনি। শুধু সেকেন্ড অফিসারকে একটু মারধর করেছে। তারপর আরেকটি স্পিডবোটে করে আরও কয়েকজন চলে আসল। এভাবে মুহূর্তেই প্রায় ১৫-২০ জন চলে আসে। এর কিছুক্ষণ পরে একটি বড় ইরানিয়ান ফিশিং বোট নিয়ে আরও জলদস্যু চলে আসে। ইরানিয়ান ওই ফিশিং বোটটি এক মাস আগে তারা জিম্মি করেছিল। এটি দিয়ে তারা এক মাস ধরে নতুন কোনো জাহাজ জিম্মি করার জন্য সাগরে ঘোরাঘুরি করছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সামনে পড়ে গেলাম। এই ফিশিং বোটের তেল শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমাদের জাহাজে থাকা পাম্প দিয়ে কিছু ডিজেল নিয়ে ওই বোটে দিয়েছে তারা। তেল দেওয়ার পর আমাদের জাহাজে উঠে জিম্মি করা ফিশিং বোটটিকে ছেড়ে দেয়। তারপর ওরা আমাদের সেকেন্ড ও থার্ড অফিসারকে নিয়ে জাহাজের ইঞ্জিন রুমে যায়। তাদের নিয়ে গিয়ে জাহাজের ইঞ্জিন বন্ধ করে দেয়। এখন পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে কারও কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। জাহাজের কোনো ক্ষতি হয়নি। আমাদেরও কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে সবাই ভয়ে আছি। ওরা খুব ভয় দেখাচ্ছে। আমাদের জন্য দোয়া করবেন, স্যার। আমাদের পরিবারকে একটু দেখবেন, স্যার। সান্ত্বনা জানাবেন, স্যার। আসসালামুলাইকুম। দেশের শীর্ষ শিল্প গ্রুপ কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজ এটি। ২০১৬ সালে তৈরি জাহাজটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্ত ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। প্রথমে জাহাজটির নাম ছিল ‘গোল্ডেন হক’। বাংলাদেশের কেএসআরএম গ্রুপের বহরে যুক্ত হওয়ার পর এর নাম হয় ‘এমভি আবদুল্লাহ’। এটি একটি বাল্ক কেরিয়ার। উল্লেখ্য, ২০১১ সালের মার্চে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হয় বাংলাদেশি ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রী। নানাভাবে চেষ্টার পর ১০০ দিনের মাথায় জলদস্যুদের কবল থেকে উদ্ধার করা হয় তাদের।
১৩ মার্চ ২০২৪, ১৪:৩৭
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়