• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে জাবি প্রক্টরের পদত্যাগ
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান। সোমবার (১৮ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বিষয়টি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন প্রক্টরের সাময়িক দায়িত্ব পেয়েছেন পরিসংখ্যান ও উপাত্তবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলমগীর কবীর। অফিস আদেশ বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ-উল-হাসানের লিখিত অনুরোধের প্রেক্ষিতে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে তাকে প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান ও উপাত্তবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবীরকে আজ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি প্রচলিত নিয়মে সুবিধাদি ভোগ করবেন। উল্লেখ্য, গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের একটি কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে হল-সংলগ্ন জঙ্গলে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে জড়িত ও সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে, নিপীড়কদের সহায়তাকারী হিসেবে অভিযুক্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাব্বির আলমের অপরাধ তদন্ত এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে প্রশাসনিক পদ থেকে তাদের অব্যাহতিসহ পাঁচ দাবিতে আন্দোলন করতে থাকেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ’।
১৮ মার্চ ২০২৪, ১৯:৩৮

ভ্রূণ হত্যা : জাবি শিক্ষককে বরখাস্তের পর শিক্ষিকার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি
ভ্রুণ হত্যার অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নন্দিতা সরকারের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত কমিটির সুপারিশে সিন্ডিকেট সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নৈতিক অসৎ চরিত্রের দায়ে সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমানকে দক্ষতা ও শৃঙ্খলা অধ্যাদেশের ৪(ঘ) ধারা অনুযায়ী চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই ঘটনায় পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নন্দিতা সরকারের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিতে আছেন উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম, রেজিস্ট্রার আবু হাসান, গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফরিদ আহমদ, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক আশরাফ-উল আলম। এর আগে, ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে এক নারী প্রভাষকের ছবি ফাঁস হয়। সেই সঙ্গে বিভাগের শিক্ষক পদে আবেদনকারী অন্য এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে কিছু কথোপকথন প্রকাশিত হয়, যেখানে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর তথ্য উঠে আসে।
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২৩:৪৪

জাবি ভর্তি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে কাল, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি)। এদিন ‘এ’ ইউনিট দিয়ে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে। আগামী ৫ মার্চ সি-১ ইউনিটের ব্যবহারিক পরীক্ষার মধ্যদিয়ে ভর্তি পরীক্ষা শেষ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) সৈয়দ মোহাম্মদ আলী রেজা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। পরীক্ষার সূচি অনুযায়ী, ২২ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) সকাল নয়টায় শুরু হয়ে মোট ৬ শিফটে ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা চলাকালীন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্যে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে : ওএমআর ফরমের বৃত্ত সাধারণ কালো বলপেন দ্বারা পূরণ করতে হবে। ওএমআর ফরম পূরণে ভুল হলে উত্তরপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে। যৌক্তিক কারণ ছাড়া পরীক্ষার্থীকে অতিরিক্ত ওএমআর ফরম দেওয়া হবে না। ওএমআর ফরম ভাঁজ করা, কাটাকাটি করা, অবাঞ্ছিত দাগ দেয়া, স্ট্যাপলার বা পিনআপ (Pin-up) করা এবং ফরমের ওপর পানি ফেলা যাবে না। ভর্তি পরীক্ষার রোল নম্বর, দিনের শিফট ও প্রশ্নপত্রের সেট কোড অবশ্যই ইংরেজিতে লিখতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট ঘর যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। পরীক্ষা শেষে ওএমআর শিট ও প্রশ্নপত্র পরিদর্শকের কাছে জমা দিতে হবে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার নির্ধারিত সময়ের অন্তত ১০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রের নির্ধারিত কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষার্থী কর্তৃক ডাউনলোড করা প্রবেশপত্রের মাধ্যমে পরীক্ষার আসন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবে। পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষাকেন্দ্রে ব্যাগ, বইপত্র, মোবাইল ফোন, ঘড়ি, ক্যালকুলেটর কিংবা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। সময় দেখার জন্য পরীক্ষার হলে ঘড়ির ব্যবস্থা থাকবে। পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা ছাড়া অন্য কেউ পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। ভর্তি পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীকে মাধ্যমিক পরীক্ষার মূল রেজিস্ট্রেশন কার্ড এবং ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র অবশ্যই সঙ্গে আনতে হবে। ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ ৭ (সাত) দিনের মধ্যে ju-admission.org এবং juniv.edu/admission থেকে জানা যাবে। ঢাকা শহর থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এ জন্য যেসব পরীক্ষার্থী ঢাকা শহর বা দূরবর্তী অন্য কোনো স্থান থেকে এসে পরীক্ষা দেবে, তাদের যানজটসহ অপ্রত্যাশিত দুর্ভোগ এড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে আসার পরামর্শ দেওয়া হলো। উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বাসে পরীক্ষার্থী বা তাদের অভিভাবকেরা আসা-যাওয়া করতে পারবেন না। এদিকে ২৫ ফেব্রুয়ারি (রোববার) সকাল নয়টায় প্রথম শিফটে ‘সি’-১ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরে সকাল ১০টা ২৫ মিনিট থেকে দ্বিতীয় শিফটে ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। একই দিনে পঞ্চম শিফটে ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ২৭ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) ও ২৮ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) দুই দিনে ‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ২৯ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) প্রথম দুই শিফটে ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরে সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন শেষ দুই শিফটে ‘ই’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া ৩ থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ব্যবহারিক পরীক্ষা এবং ৫ মার্চ চারুকলা বিভাগের ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া ৩ থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ব্যবহারিক পরীক্ষা এবং ৫ মার্চ চারুকলা বিভাগের ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:১৩

যৌন নিপীড়ন, জাবি শিক্ষক জনি বরখাস্ত
যৌন নিপীড়নের দায়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনিকে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এদিন রাত সাড়ে নয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও সিন্ডিকেটের সচিব আবু হাসান সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আবু হাসান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কর্তৃক গঠিত স্ট্রাকচার্ড কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এ বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, সিন্ডিকেট সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ায় আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি। মাহমুদুর রহমান জনির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে জাহাঙ্গীরনগর কিছুটা হালকা হলো। তবে নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত সকলকেই শাস্তির মুখোমুখি করে বিশ্ববিদ্যালয়কে কলংকমুক্ত করতে হবে। প্রভোস্ট এবং প্রক্টর জড়িত থাকায় তাদেরকে অব্যাহতি দিতে হবে। মাদক সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সারাদেশের ভর্তিচ্ছুদের কথা ভেবে আমরা পরিক্ষা আটকানোর সিদ্ধান্ত থেকে সড়ে দাড়াচ্ছি। তবে ভর্তি পরিক্ষার সময় আমাদের গণসংযোগ অব্যাহত থাকবে। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে নিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ও সেসময় সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রভাষক আনিকা বুশরা বৈচির একটি অন্তরঙ্গ ছবি (সেলফি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে পোস্টারিং করা হয়। এছাড়াও ঐ বিভাগের ৪৩ ব্যাচের আরেক ছাত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ও ভুক্তভোগী ছাত্রীকে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এছাড়াও, সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়ালে পূর্বে থেকে আঁকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি মুছে নতুন গ্রাফিতি অঙ্কনের ঘটনায় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি অমর্ত্য রায় ও সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলিকে এক বছর করে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়াও একই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে রাষ্ট্রীয় আইনে মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২:৪৯

৮০ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন জাবি ছাত্রলীগের ২ নেতা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি মুছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কনের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচার দাবিতে আমরণ অনশনে বসার আশি ঘণ্টা পর উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভেঙেছেন ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক এনাম ও রিয়াজুল ইসলাম। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত নয়টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার পাদদেশে উপস্থিত হয়ে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলে ডাবের পানি পান করার মধ্য দিয়ে অনশন ভাঙ্গেন ছাত্রলীগ নেতা এনাম ও রিয়াজুল। এসময় উপাচার্য আগামী ২০ ফেব্রুয়ারির সিন্ডিকেট সভায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। দাবিগুলো হলো- বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবমাননাকারীদের অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা, বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় আইনে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, আট দিন পার হলেও জড়িতদের ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা বিষয়ে তদন্ত করা। এ সময় অনশনে থাকা ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক এনাম বলেন, আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি বঙ্গবন্ধুকে অবমাননাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং একটা পরিষ্কার বার্তা যেন আসে বঙ্গবন্ধুকে অমান্য করে কেউ পার পাবে না। আমি একটা দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে চাই। উপাচার্য আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন ২০ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য সিন্ডিকেট সভায় বিষয়টি উত্থাপন করবেন এবং তাদের শাস্তি নিশ্চিত করবেন। তবে যদি দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা দেখতে না পাই আমি আবার অনশনে বসবো। শুধু আমি না, ছাত্রলীগ সভাপতি নিজে বলেছেন, আরো কঠিন পদক্ষেপে যাবেন। অপরাধীদের শাস্তির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি চাই তাদেরকে যেন অন্তত সাময়িক বহিষ্কার করে বা যেভাবেই হোক দৃশ্যমান একটা পদক্ষেপ যেন নেওয়া হয়। সেটাই আমার চাওয়া, বাকি সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেট নেবে। উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম বলেন, আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য সিন্ডিকেটে সভায় বঙ্গবন্ধুর দেয়ালচিত্র মুছে দেওয়ার বিষয়টি উত্থাপন করে ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে অনশনকারীরা। যদিও সেটা তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার ওপর নির্ভর করছে। তবুও আশা করছি, আগামী সিন্ডিকেট সভায় এই বিষয়টি উত্থাপন করে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবো। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর একটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার পাদদেশে অবস্থান নিয়ে আমরন অনশন শুরু করেন শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনাম। পরে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে তার সাথে যোগ দেন শাখা ছাত্রলীগের উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম। প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের দেয়ালে পূর্বে আঁকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি মুছে একটি গ্রাফিতি অঙ্কন করে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদে এ গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। গ্রাফিতিতে একটি নারীর অবয়ব, ছয়টি মাথার খুলিসহ একটি পতাকা আঁকা হয়। এর পাশেই লিখা হয় ‘ধর্ষণ ও স্বৈরাচার থেকে আজাদী’। এছাড়া গ্রাফিতির নিচে ছাত্র ইউনিয়নের নাম লিখা হয়। নারীর অবয়বের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পূর্বের প্রতিকৃতি মুছে ফেলার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে অনশনে বসেন শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনাম। তবে এ ঘটনায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২:০৭

জাবি ছাত্রলীগ নেতার আমরণ অনশন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি মুছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কনের প্রতিবাদে ও জড়িতদের শাস্তিসহ তিন দফা দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের বেদিতে আমরণ অনশন শুরু করেন তিনি। অনশনরত ছাত্রলীগ নেতার নাম এনামুল হক এনাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি। অনশনরত ছাত্রলীগ নেতার উত্থাপিত তিন দফা দাবিগুলো হলো- বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবমাননাকারীদের অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় আইনে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, ৮ দিন পার হলেও জড়িতদের ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা তদন্ত করতে হবে।  অনশনের বিষয়ে জানতে চাইলে এনাম বলেন, ঘটনার ৮ দিন হয়ে গেলেও এটার সঙ্গে জড়িতদের ওপর কোনো ব্যবস্থা নেয় নি প্রশাসন। আমাদের চাপাচাপির পর তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এখানে যে দল গ্রাফিতি এঁকেছে তারা অহংকারবোধ থেকে আবার বিবৃতিও দিয়েছে, তাদের পেইজ থেকে প্রচারও করেছে। তাহলে তদন্ত কমিটি কিসের জন্য। এখানে নাটক করা হচ্ছে, অপরাধীদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে।  ছাত্রলীগের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ করে তিনি বলেন, যেখানে বঙ্গবন্ধু ১৮ কোটি বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা। সেখানে তার প্রতিকৃতি মুছে দেয়া হলো, ছাত্রলীগ কি এত দূর্বল নাকি? এটা তো তাদের সাংগঠনিক দায়িত্ব। এটা একটা প্রহসন। এখানে নাটক করা হচ্ছে। আমরা বারবার সভাপতি-সম্পাদককে আল্টিমেটাম দিলেও, তারা কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেয় নি। জানা যায়, কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের দেয়ালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি প্রতিকৃতি আঁকা ছিল। তবে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত নারী ধর্ষণের ঘটনার পর সে স্থানে ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিটি মুছে একটি গ্রাফিতি অঙ্কন করে ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের নেতাকর্মীরা। এ অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন ৪৭ ব্যাচের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অমর্ত্য রায় ও ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলী। গ্রাফিতি অঙ্কনের বিষয়টি স্বীকার করে ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন জোগাতে এবং নিপীড়কদের হুঁশিয়ার করতে নতুন গ্রাফিতি আঁকা হয়েছে। প্রায় তিন বছর পার হওয়ায় আগের ছবি অস্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এছাড়া পাশের দেয়ালে শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বিশাল, স্পষ্ট এবং নান্দনিক চিত্রকর্ম দৃশ্যমান ছিল। চলমান ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনের প্রাসঙ্গিকতার ভিত্তিতে এ গ্রাফিতি আকাঁ হয়েছে। এ ঘটনায় চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আন্তজার্তিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফীকে সভাপতি করে চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে রয়েছেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক খন্দকার শামীম আহমেদ ও চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এম এম ময়েজউদ্দীন। এছাড়া কমিটিতে সদস্য-সচিব হিসেবে রয়েছেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন-২) এ বি এম আজিজুর রহমান। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল বলেন, সে যে দাবিগুলো জানিয়েছে আমরাও প্রশাসনের কাছে একই দাবি জানিয়েছি। আমরাও অভিযুক্তদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও রাষ্ট্রীয় আইনে বিচার দাবি করেছি। প্রশাসন আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে তারা ব্যবস্থা নিবেন। আমরা প্রশাসনের ব্যবস্থা দেখে পরবর্তী কর্মসূচিতে যাব।
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:৩১

ক্যাম্পাসে ধর্ষণের দায় এড়াতে পারে না জাবি কর্তৃপক্ষ : র‍্যাব
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে রেখে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনার দায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। কারণ বিভিন্ন সময় সেখানে মাদক, ধর্ষণসহ নানা অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় বহিরাগতদের প্রবেশের দায় কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এলিট ফোর্সটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ কথা বলেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া বক্তব্য অনুযায়ী বিষয়টি খুবই এলার্মিং (বিপজ্জনক)। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এখনই আরও কঠোর হতে হবে। কারণ আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি, ক্যাম্পাসে মাদকসহ নানা অবৈধ কাজ ঘটে। এসব ঘটনা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ের বিষয় রয়েছে। তারা যদি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, সহযোগিতা চান, আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করব। আমরা দেশের ভবিষ্যত সম্পদ, জাতির আগামী দিনের ভবিষ্যতকে এভাবে নষ্ট হতে দিতে পারি না।  অপর এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মঈন বলেন, শিক্ষার্থীদের অপরাধে জড়ানোর বিষয়ে আগেই সতর্ক হওয়া দরকার ছিল। আমরা সবাইকে খারাপ বলবো না। কারণ যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে তারাই তো আগামী দিনে দেশ পরিচালনা করবে। তাই আমরা মনে করি, শুধু এখনই নয়, সব সময় তাদের নজরদারিতে রাখা উচিত। কারণ শিক্ষার্থীদের বয়স অনেক কম। মামুনের মতো লোকেরাই নিজেদের স্বার্থে, নিজেরাই অপকর্ম করার জন্য শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করছে। কোমলমতি শিক্ষার্থী যারা আছে তাদের এমন করে বিপথে নেওয়ার দায়-দায়িত্ব আমাদের সকল স্টেকহোল্ডারদের নিতে হবে। অভিভাবক, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক সমাজ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যমকেও এর দায় নিতে হবে। প্রসঙ্গত, একজনকে মীর মশাররফ হলে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে পাশের জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান এবং তার সহযোগী বহিরাগত মামুনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী আশুলিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে মূল অভিযুক্তসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:০৩

টানা চতুর্থ দিনের মতো ‘ধর্ষণ বিরোধী’ আন্দোলনে উত্তাল জাবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের একটি কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে পাশের জঙ্গলে নিয়ে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার বিচারের দাবিতে টানা চতুর্থ দিনের মতো ‘ধর্ষণ বিরোধী’ আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচার, আবাসিক হল থেকে অছাত্রদেরকে বের করা, বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে গৃহীত সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন এবং নিপীড়নমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে দিনব্যাপী মানববন্ধন, প্রশাসনিক ভবন অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিলে উত্তাল ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। দিনব্যাপী আন্দোলনের মধ্যে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটের রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধিদের মানববন্ধন কর্মসূচি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন, ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ’ এর ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রশাসনিক ভবন অবরোধ কর্মসূচি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল এবং সাংস্কৃতিক জোটের মানববন্ধন কর্মসূচি ইত্যাদি। সিনেটরদের মানববন্ধন  ধর্ষণের সঙ্গে জড়িতদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটের রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধিরা। সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। সিনেট সদস্য অধ্যাপক শামছুল আলম বলেন, ‘সংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে যারা অপকর্ম করে তাদের বিতাড়িত করতে হবে। একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধেও উত্থাপিত অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু তাকে এখনও বহিষ্কার করা হয়নি। অবিলম্বে সেই শিক্ষকের শাস্তি দাবি করছি।’ সিনেট সদস্য আশীষ কুমার মজুমদার বলেন, ‘হলে অছাত্ররা আয়েশে অবস্থান করছেন আর বৈধ শিক্ষার্থীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আমরা দেখতে চাই, পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে অবৈধ ছাত্ররা হল ছেড়ে দিয়েছে।’ সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির বলেন, ‘ন্যাক্কারজনক ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের ফাঁসি দেওয়া হোক। হলগুলোতে প্রায় পাঁচ হাজার অবৈধ ছাত্র অবস্থান করছে। অবিলম্বে হল থেকে গণরুম উচ্ছেদ করে শিক্ষার্থীদের সিট নিশ্চিত করা হোক। হলের প্রভোস্ট ও ওয়ার্ডেনদের হলে থাকতে হবে। রাতে নির্দিষ্ট সময়ে যেন ছেলেমেয়েরা ফিরে আসে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।’ উপাচার্যকে হুঁশিয়ার করে তিনি আরও বলেন, ‘আপনি আমাদের ভোটে নির্বাচিত উপাচার্য। আপনি কেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ভয় পান? মনে রাখবেন, পাঁচ দিন মানে পাঁচ দিন। এরপরে যেন একজনও অছাত্র, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, বহিরাগত আবাসিক হলে স্থান না পায়।’ শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন ধর্ষণের প্রেক্ষিতে নেওয়া সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তসমূহ দ্রুত বাস্তবায়ন, বহিরাগত ও অছাত্র মুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। বুধবার বেলা ১২টায় শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে শতাধিক শিক্ষকের উপস্থিতিতে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহেদ রানার সঞ্চালনায় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলি বলেন, ‘ধর্ষকের বিচারের পাশাপাশি ধর্ষণে সহায়তাকারী সকলকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। যদি প্রভোস্ট ও প্রক্টরের সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদেরও বিচার করতে হবে। ঘটনায় জড়িত সকলের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের জাগ্রত থাকতে হবে।’ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেন, ‘কিছু কুলাঙ্গার আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি বিশ্ব পরিমণ্ডলে পদদলিত করেছে। আমরা এর থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। পৈশাচিক এই ঘটনাকে বিছিন্ন ঘটনা বলে মনে করার সুযোগ নেই। এর আগেও দেখেছি, প্রেপ্তার হলেও শেষ পর্যন্ত দোষীরা বেরিয়ে আসে। সরকারের কাছে আমি দাবি জানাই, এদের যেনো প্রকৃত বিচার হয়।’ ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ’ এর বিক্ষোভ মিছিল ধর্ষণ ও নিপীড়নমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর। বুধবার দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ’ এর ব্যানারে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশ থেকে বক্তারা চার দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো, ধর্ষক ও তার সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্তপূর্বক নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা, নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিচার নিষ্পত্তিসহ ক্যাম্পাসে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা এবং নিপীড়কদের সহায়তাকারী প্রক্টর ও হল প্রভোস্টের অপরাধ তদন্তপূর্বক তাদেরকে প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা। নিপীড়নবিরোধী আন্দোলনের সংগঠক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন বলেন, ১৯৯৮ সালে আমরা যখন জাহাঙ্গীরনগরে ছিলাম, তখন ধর্ষণের বিরুদ্ধে দিনের পর দিন আন্দোলন গড়ে উঠেছে। সেদিন জাবিতে ধর্ষণের ঘটনা শুনে আমার হৃদয় কেঁদে উঠেছে। এই ঘটনা কেন তদন্ত সেলের কাছে আসেনি?  আামি প্রশাসনকে বলবো, যদি সহযোগিতা চান, আমাদের অভিজ্ঞতা আপনাদের কাজে লাগবে। ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত এ ক্যাম্পাস নিরাপদ না হবে, ততদিন পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলবে। ধর্ষক, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ী মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে।’ সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ: ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৪ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিকাল ৩ টায় এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে উত্থাপিত দাবিগুলো হলো, ধর্ষণে অভিযুক্ত ও পলায়নে সহায়তাকারীদের দ্রুততম সময়ে রাষ্ট্রীয় আইনে বিচার নিশ্চিত করা, মীর মশাররফ হোসেন হল ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের প্রভোস্ট এবং হল প্রশাসনের বিরুদ্ধে পলায়নে সাহায্য করার অভিযোগের তদন্তে কমিটি গঠন করা, সকল আবাসিক হল থেকে অছাত্রদের বের করা, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা শাখার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল কার্যকর করা। জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের বিক্ষোভ সমাবেশ: চলমান ধর্ষণের ঘটনার সুষ্ঠু সুরাহা এবং জড়িত সকলকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনাসহ ৫ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট। বিকাল ৪ টায় শহীদ মিনারের পাদদেশে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। দাবিগুলো হল- যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল কার্যকর করে পূর্বের সকল অভিযোগ নিষ্পত্তির বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারপূর্বক দায়িত্ব অবহেলাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে, হল থেকে অছাত্রদের বিতাড়ন করে সিট সংকট নিরসন করতে হবে, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের দৌরাত্ম্য নিরসনে পদক্ষেপ নিতে হবে। এসময় সাংস্কৃতিক জোটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, গত শনিবার রাত সাড়ে নয়টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ৩১৭ নম্বর কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে কৌশলে স্ত্রীকে হল সংলগ্ন জঙ্গলে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন আসামি মোস্তাফিজুর রহমান ও মামুনুর রশীদ মামুন। এ ঘটনায় মোস্তাফিজসহ পলায়নে সহায়তাকারী তিনজনকে পরদিন সকালে গ্রেফতার করে সাভার থানা পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত মামুন ও পলায়নে সহায়তাকারী মুরাদকে গ্রেফতার দেখাতে পারেনি পুলিশ।
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:৫০

৪ দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীদের ধর্ষণ বিরোধী মিছিল
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণধর্ষণের প্রতিবাদে চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।  মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সপোর্ট চত্ত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে শহীদ মিনার ও সকল ছাত্রী হল হয়ে পুনরায় ট্রান্সপোর্ট চত্ত্বরে এসে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘ছাত্রলীগ ধর্ষণ করে, প্রশাসন কি করে’, ‘ধর্ষকদের পাহারাদার, হল প্রশাসন চমৎকার’,  ‘ধর্ষকদের পাহারাদার, ধিক্কার ধিক্কার’, ‘যে প্রশাসন ধর্ষকদের পাহারা দেয়, সেই প্রশাসন চাই না’, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে আমরাই থাকবো, অছাত্ররা থাকবে না’, ‘জাহাঙ্গীরনগরের মাটিতে, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘হল থেকে দল থেকে, ধর্ষকদের বহিষ্কার করো’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।  মিছিল শেষে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইজা মেহজাবিন প্রিয়ন্তীর সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী রাবেয়া বসরী তাপস্বী বলেন, ‘সেঞ্চুরি মানিক থেকে মোস্তাফিজ পর্যন্ত যে ঘটনা ঘটে গেছে সেটা বিচ্ছিন্ন হতে পারে না। একটা নির্দিষ্ট দল এই সব ঘটনার সাথে যুক্ত সে বিষয়ে আমরা সবাই অবগত আছি। কিন্তু প্রশাসন কখনো উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা করে না।জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সকলের জন্য নিরাপদ হোক। বহিরাগত বলে আমরা যাদের ট্যাগ দিয়েছি, যাদের টাকায় আমাদের ক্যাম্পাস চলে তাদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা হোক।’ আইআইটি বিভাগের শিক্ষার্থী সোয়াতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কিন্তু ইনজাস্টিসের কথা কখনো বলেন নি। আর ছাত্রলীগ যদি ন্যায়ের পক্ষে থাকে তবে ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার সাথে সাথেই তাদের হল ছেড়ে দেয়া উচিত।  অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী অনামিকা নূরাইন বিত্ত বলেন, ‘ঘুরেফিরে কেন ছাত্রলীগের কর্মীরাই ক্যাম্পাসে ও ক্যাম্পাসের বাইরে অপকর্ম গুলো ঘটায়। আমি আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, ধর্ষণ একটি পাওয়ার প্র্যাকটিস। ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে সবচেয়ে বেশি পাওয়ার প্র্যাকটিস করে। ছাত্রলীগের কর্মীদের ক্যাম্পাসে শিখানো হয় কিভাবে বাপ মা ছেড়ে আসা একজন শিক্ষার্থীকে কিভাবে টর্চার করতে হয়। সেখান থেকে তারা ক্ষমতার স্বাদ পায়। এবার রেপ হয়েছে পরবর্তীতে হবে রেপ অ্যান্ড মার্ডার। আমাদের দাবিগুলো প্রশাসনের মানতে হবে, অভিযুক্তদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত করা, সার্টিফিকেট সাময়িক স্থগিত করার এই প্রহসন বন্ধ করতে হবে। সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে।’ সংক্ষিপ্ত সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি জানায়। দাবিগুলো হলো: ধর্ষণে অভিযুক্ত ও পলায়নে সহযোগিতাকারীদের রাষ্ট্রীয় আইনে বিচার দ্রুততম সময়ে নিশ্চিত করতে হবে, মীর মশাররফ হোসেন হল ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের প্রোভোস্ট এবং হল প্রশাসনের বিরুদ্ধে আসা পলায়নে সাহায্য করার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে, সকল আবাসিক হল থেকে অছাত্রদের তাড়াতে হবে, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা শাখার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে। বুধবার দুপুর ১ টায় শহীদ মিনারের পাদদেশে কালো পতাকা মিছিলের ঘোষণা দিয়ে সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।   
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২:৪৩

স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ, উত্তাল জাবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।  রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় এই অবরোধ শুরু করেন তারা।  অবরোধের একপর্যায়ে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ সময় উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাকযুদ্ধ হয়। শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কাছে তিনটি দাবি উত্থাপন করেন। সেগুলো হলো- এক ঘণ্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে বাদী হয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা করা, তিন দিনের মধ্যে হলগুলোতে থাকা অছাত্রদের বের করতে হবে এবং ধর্ষক ও তার সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এসব দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জরুরি সিন্ডিকেট সভা করে বিষয়টি নিরসনের আশ্বাস দেন। কিন্তু এ প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে মামলা করার পর জরুরি সিন্ডিকেটে বসার প্রস্তাব করেন শিক্ষার্থীরা। এক ঘণ্টার মধ্যে মামলা করা না হলে সিন্ডিকেট সভা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন তারা। এর আগে, শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে স্বামীকে আটকে রেখে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ও বহিরাগত যুবক মামুন (৪৫)। এরমধ্যে মোস্তাফিজুর মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক এবং শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, একই বিভাগের সাগর সিদ্দিকী ও হাসানুজ্জামান এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জানা গেছে, ওই দম্পতির বাড়িতে ভাড়া থাকতো অভিযুক্ত মামুন। এর প্রেক্ষিতে শনিবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর স্বামীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে আসে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এলে তাকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ‘এ’ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটকে রাখে অভিযুক্তরা। এরপর তার স্ত্রীকে দিয়ে নিজের রেখে আসা জিনিসপত্র আনতে বলে মামুন। মামুনের জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন ভুক্তভোগী নারী। পরে জিনিসপত্র নিয়ে মামুন হলের ওই কক্ষে রেখে আসে। এরপর তার স্বামী অন্যদিক থেকে আসবে বলে ওই নারীকে হল-সংলগ্ন জঙ্গলে নিয়ে যায়। পরে সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওই নারীর। সাভার মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুর রাসিক গণমাধ্যমকে বলেন, ভুক্তভোগী থানায় উপস্থিত হয়ে ঘটনা জানিয়েছেন। মামলা হয়েছে। চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:১২
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়