• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা, জাতিসংঘের সতর্কবার্তা
হামাস নির্মূলের নামে টানা ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। হামাসের সঙ্গে সম্পর্কের জেরে পশ্চিমা মদদপুষ্ট দেশটির লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে সিরিয়া ও লেবাননের ইরানপন্থী গোষ্ঠীগুলোও। ফলস্বরূপ গাজায় প্রতিনিয়ত হামলা ও অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি বিগত কয়েক মাসে সিরিয়া এবং লেবাননেও বিচ্ছিন্ন বেশ কয়েকটি হামলা চালায় দখলদার সেনারা। সবশেষ সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে বিমান হামলা চালায় তারা। এতে প্রাণ হারান ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী গার্ডের (আইআরজিসি) দুজন শীর্ষস্থানীয় কমান্ডারসহ ৭ জন ইরানি কর্মকর্তা। এ ঘটনার জেরে এবার ফুঁসে ওঠে ইরান। গত শনিবার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরাসরি ইসরায়েলের ভুখণ্ডে হামলা চালায় দেশটি।  অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জর্ডানের সহযোগিতায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়ে গেছে ইসরায়েল। এক্ষেত্রে দেশটির উন্নত প্রযুক্তির কয়েক স্তরের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও বড় ভূমিকা রেখেছে। ইরানের নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের বেশিরভাগই ধ্বংস হয়ে গেছে আকাশে। নয়টি ক্ষেপণাস্ত্র ও কয়েকটি ড্রোন ইসরায়েলে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে।  হামলায় ইসরায়েলের ক্ষয়ক্ষতি ততটা না হলেও মধ্যপ্রাচ্যে এর বড় প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালালে তাতে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হতে পারে দুই দেশের মধ্যে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে ইরানে পাল্টা হামলা চালানোর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। এ পরিস্থিতিতে সব পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।  ইসরায়েলে ইরানের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার জরুরি সভা হয় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে। সেখানে গুতেরেস বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের মানুষ একটি পূর্ণমাত্রার ধ্বংসাত্মক সংঘাতের মুখোমুখি। তারা যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে এই অঞ্চল বা বিশ্ব কেউই সামলাতে পারবে না। বিশেষ করে নিশ্চিতভাবে চরম বিপর্যয় নেমে আসবে ইতোমধ্যে ক্ষুধা-তৃষ্ণায় পর্যুদস্ত গাজাবাসীর ওপর। তাই এখনই সময় তাদের খাদের কিনারা থেকে ফিরিয়ে আনার। আর এ দায়িত্ব যৌথভাবে সবার।   এদিকে বিশ্ব ব্যবস্থায় বড় ধরনের অস্থিরতার শঙ্কায় ইরানে পাল্টা হামলা না চালানোর জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটির পশ্চিমা মিত্ররাও। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন কোনো যুদ্ধ চায় না। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি গতকাল সোমবারও ইসরায়েলের নেতাদের প্রতি সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা এখন পর্যন্ত ইরানের হামলার কঠিন জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল আছে। ইসরায়েল যদি এখন ইরানের ভূখণ্ডে পাল্টা হামলা চালায়, তাহলে পরিস্থিতি দ্রুত জটিল হতে পারে বলে মনে করেন ব্রাসেলসভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ইরানবিষয়ক প্রকল্পের পরিচালক আলী ভায়েজও। তিনি বলেছেন, এতে আগে থেকে অস্থিতিশীল থাকা একটি অঞ্চল আরও সংকটে পড়বে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক এই অধ্যাপক দাউদ কাত্তাব বলেন, ইসরায়েল ও ইরান যে সামরিক শক্তি প্রদর্শন করছে, তা আরব বিশ্বের অন্যান্য দেশকে ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছে। ভয়টা হলো, ইতোমধ্যেই বিধ্বস্ত এই অঞ্চলে আরেকটি যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার। আর এমনটা সত্যিই যদি ঘটে, তার প্রভাব বিশ্বব্যাপী পড়বে। সূত্র : বিবিসি
১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:৫৭

গাজার ত্রাণ কেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলা, জাতিসংঘের কর্মীসহ নিহত ৫
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের একটি ত্রাণ কেন্দ্রে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় জাতিসংঘের একটি সংস্থার এক কর্মীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২২ জন। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। বিবিসি বলছে, বুধবার ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের পূর্ব দিকে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা করে বলে জানা গেছে, যা রাফাহের পূর্ব অংশে অবস্থিত।  এ ঘটনায় ১৫ বছর বয়সী এক ছেলে ও ২৭ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সী চারজন পুরুষ নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন মোহাম্মদ আবু হাসনা নামে পরিচিত। ইউএনআরডব্লিউএ জানায়, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরে একটি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে তাদের একজন কর্মী নিহত এবং আরও ২২ জন আহত হয়েছেন। সংস্থাটির প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের নির্লজ্জ অবহেলার কারণে আমাদের স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ এখন সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে।’ ইউএনআরডব্লিউএ’র মুখপাত্র জুলিয়েট তোমা বলেন, হামলার সময় ৬০ জন মানুষ এই স্থাপনাটিতে কাজ করছিলেন বলে আমরা মনে করছি। এ ছাড়া এই স্থাপনাটিকে খাদ্য ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জামের গুদাম হিসাবেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ইসরায়েলি বাহিনী এই হামলার জন্য দায়ী। আমাদের দল ঘটনাস্থলে রয়েছে এবং তারাই হতাহতদের সংখ্যা জানিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহত পাঁচজনের নামের তালিকায় মোহাম্মদ আবু হাসনা নামের একজন ব্যক্তিও রয়েছেন। যাকে  ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হামাস কমান্ডার হিসেবে ধারণা করছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, তারা ‘নির্দিষ্ট হামলা’ চালিয়ে হামাস কমান্ডারকে হত্যা করেছে। মোহাম্মদ আবু হাসনা রাফাহ এলাকায় হামাসের সামরিক শাখার ‘কমব্যাট সাপোর্ট অপারেটিভ’ ছিলেন বলে ইসরায়েলের অভিযোগ। দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরে বর্তমানে আনুমানিক ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি অবস্থান করছেন। তারা ইসরায়েলের আক্রমণ থেকে বাঁচতে গাজার অন্যান্য স্থান থেকে এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান এবং স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। হামলায় সেখানকার হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনে এখন পর্যন্ত ৩১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এ ছাড়া হামলায় ৭২ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
১৪ মার্চ ২০২৪, ১১:১৭

জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা বাংলা করার প্রসঙ্গে যা জানালেন মুখপাত্র
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, মাতৃভাষা দিবস খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিন। ভাষা এবং সংস্কৃতির বৈচিত্র্য ঘিরে আমাদের বহুমুখী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। তবে জাতিসংঘের ছয়টি দাপ্তরিক ভাষার সাথে সপ্তম ভাষা হিসেবে বাংলাকে যোগ করার ব্যাপারটি একান্তভাবেই সাধারণ অধিবেশনের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংকালে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’, বাংলা ভাষার গুরুত্ব এবং বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষায় পরিণত করার একটি পুরনো অনুরোধের বিষয়ে মুখপাত্রকে প্রশ্ন করেন একজন বাংলাদেশি সাংবাদিক। তার প্রশ্নের জবাবে স্টিফেন ডুজারিক এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মূল অনুপ্রেরণা হিসেবে জাতিসংঘের সদর দফতর প্রাঙ্গণে শহীদ মিনার নির্মাণের কোনও সম্ভাবনা আছে কি?- এ প্রশ্নের জবাবে স্টিফেন ডুজারিক বলেন, শহীদ মিনার বা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য জাতিসংঘে সদস্য রাষ্ট্রের স্থায়ী মিশন থেকে একটি প্রক্রিয়া শুরু করতে হয়। অর্থাৎ, এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মিশনকে প্রস্তাব উপস্থাপন করতে হবে। প্রসঙ্গত, বেশ আগেই জাতিসংঘে বাংলাদেশের তৎকালীন স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে এ মোমেন মিশনের মাধ্যমে প্রস্তাব উপস্থাপন করেছিলেন। সেসময় আর্থিক অজুহাতে রেজ্যুলেশনটি পাস না হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল।  মিয়ানমারে চলমান সংঘর্ষ এবং ভারত-বাংলাদেশের নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা বিচলিত এবং উদ্বিগ্ন। সম্প্রতি মিয়ানমার সামরিক জান্তার লেলিয়ে দেওয়া বিমান বাহিনী কর্তৃক স্কুলে হামলার ঘটনাটি সত্যি দুঃখজনক। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তামূলক কার্যক্রমকেও আমরা সীমিত করা হয়েছে। তবে পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ অবসানের লক্ষ্যে আমার সর্বত্র আলাপ-আলোচনা চালাচ্ছি।
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:৩৬

জাতিসংঘের এই উদ্বেগ কতটা নৈতিক?
বাংলাদেশ নিয়ে আবারও উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ। এবারের ইস্যু ড. ইউনূস। জাতিসংঘের অফিসে মহাসচিব আন্থোনিও গুতেরেসের হয়ে তার মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক তাদের নিয়মিত প্রেসব্রিফিংএ জনিয়েছেন এই উদ্বেগ। তিনি বলেন, ইউনূস জাতিসংঘের অত্যন্ত মর্যাদাসম্পন্ন এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশে যা ঘটছে, তা চরম উদ্বেগের। এর একদিন আগে ঢাকায় ইউনূস গ্রামীণ টেলিকমসহ আটটি প্রতিষ্ঠান দখল হওয়ার দাবি করে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি বলেন, আমাদের আটটি প্রতিষ্ঠান জবরদখল হয়ে গেছে। গ্রামীণ ব্যাংক এখন নিজেদের মতো করে এসব প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছে। ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্রামীণ ব্যাংক ভবনে তালা মেরে রেখেছে। নিজের বাড়িতে অন্য কেউ যদি তালা মারে, তখন কেমন লাগবে? দেশে আইন–আদালত আছে কিসের জন্য? ঢাকার এই সংবাদে সম্মেলনে সূত্র ধরে জাতিসংঘের নিয়মিত প্রস ব্রিফিংএ প্রশ্ন করেন, সরকারের বিপক্ষে বিদেশিদের উস্কানোর সেই পরিচিত মুখ মুশফিক ফজল আনসারি। তিনি বলেন, সরকার সব গ্রামীণ কার্যালয় দখল করে নিয়েছে। ইউনূসের বিরুদ্ধে নতুন করে আরেকটি মামলা দায়ের করেছে ক্ষমতাসীন সরকার। তার এই আশঙ্কাজনক পরিস্থিতির নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব কী অবগত রয়েছেন? জবাবে গুতেরেসের মুখপাত্র ডুজারিক বলেন, তারা সব জানেন। জাতিসংঘের কাছে খুব মর্যাদাবান ব্যক্তি ইউনূস। তিনি জাতিসংঘের অনেক কাজ করে দেন। তাঁকে নিয়ে বাংলাদেশে যেসব ঘটনা ঘটছে তাতে তারা চরমভাবে উদ্বিগ্ন।  এখন আমরা দেখে নিতে পারি, ঠিক কোন বিষয়ের ওপর কেন জাতিসংঘ উদ্বিগ্ন। এর জন্যে আমাদের ভিভিন্ন সময়ের গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য উপাত্ত দেখতে হবে। যে অভিযোগ ইউনূস সাহেব করছেন এর গোড়ায় কী ছিল? ১৯৮৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংক গঠন করা হয়েছিল। এসময় গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যদের পরিশোধিত মূলধন শূন্য ছিল । অর্থাৎ এর মূলধন ছিল পুরোটাই সরকারের। সেসময় আইনে গ্রামীণ ব্যাংককে কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান করার কোনো এখতিয়ার দেওয়া হয়নি। তাই আজ যে প্রতিষ্ঠানগুলো দখলের কথা বলা হচ্ছে সেগুলো তৈরির সময়ই আইন ভাঙা হয়েছিল।   প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ শক্তি, গ্রামীণ সামগ্রী, গ্রামীণ ফান্ড, গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশন; গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশন এবং গ্রামীণ উদ্যোগ। গ্রামীণ ব্যাংক অনুসন্ধান কমিটির ২০১২ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মোট ৪০ টি প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হয়। তবে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অর্থায়নে মোট ৫৪ টি প্রতিষ্ঠান এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে বলছে দেশের গণমাধ্যমগুলো। প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকই পরিচালনা করছিল। গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালকরাই প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালক ছিলেন। তবে সম্প্রতি ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি না থাকায় এবং ব্যাংকে ইউনূসপন্থী পরিচালকদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় নতুন ম্যানেজমেন্ট তার আওতাভুক্ত অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর ম্যানেজমেন্টেও পরিবর্তন এনেছে।  ১৯৮৩ সালের আইন মেনে নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠানে যে পরিবর্তন এনেছে এটিকেই দখল বলছেন ইউনূস সাহেব। তার দাবি এই প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রামীণ ব্যাংকের টাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়নি। অথচ বিদেশি কোম্পানি টেলিনরের সঙ্গে গ্রামীণ টেলিকমের শেয়ার বিতর্কের সময় তিনি নিজেই বলেছিলেন, গ্রামীণ টেলিকম গ্রামীণ ব্যাংকের টাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গণমাধ্যমে বহুবার এসব বক্তব্য ছাপা হয়েছে। সম্প্রতি গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের বেতন ভাতা নিয়ে চলমান মামলায় আদালতে উত্থাপিত নথি থেকেও প্রমাণ পাওয়া যায়, প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে। সংগঠনগুলোর ওয়েবসাইটেও একই তথ্য দেখা যায়। ২০০৬ সালে অ্যাশডেন পুরস্কার বিজয়ের সময় গ্রামীণ শক্তি অ্যাশডেনকে নিজেদের যে পরিচিতি দেয়, তাতে বলা হয়েছে, এ্ই প্রতিষ্ঠানটি সহজে গ্রামের মানুষের কাছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি পৌঁছে দেয়ার জন্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এটি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। আর এখনকার সুর ভিন্ন। ইউনূসের আরও নানা কৌশল এরই মধ্যে গণমাধ্যমগুলো প্রকাশ করেছে। একেক কৌশল একেক কারণে করেছেন তিনি। এর কোনটি ব্যবহার করেছেন কর ফাঁকি দিতে। কোনটা করেছেন কর্মচারিদের ন্যায্য পাওনা না দেয়ার জন্যে, আবার কোন টা বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক বাাড়াতে। এমনকী তাঁর মিথ্যাচার আদালতের বাইরে মিটমাট করার তথ্য প্রামাণিত হয়েছে। এরইমধ্যে পুরো বিষয়গুলোই প্রকাশ্য ।  এত সব জানা তথ্য সাবার সামনে। অথচ জাতিসংঘেষের সংবাদ সম্মেলনে ডুজারিককে কেউ জিজ্ঞাসা করলো না, ইউনূস সম্পর্কে আনসারি যেটা বললো, এর বাইরে কোন সত্য আছে কী না? জাতিসংঘের জন্যে কেউ কোন কাজ করলে, তার জন্যে যেকোন অপরধ করা বৈধ কী না? কোন ঘটনার আদ্যপান্ত না জেনে একটি স্বাধীন দেশ সম্পর্কে মন্তব্য করা কূটনৈতিক সভ্যতার মধ্যে পড়ে কী না? এমন কী জাতীসংঘ কী এনিয়ে কোন তদন্ত করেছে কী না? ইউনূসের ঢাকার সংবাদ সম্মেলন আর জাতিসংঘের সংবাদ সম্মেলন এক সূত্রে গাঁথা কী না?  এরইমধ্যে গ্রামীণ ব্যাংক এবং সরকার আলাদাভাবে এই দুই সংবাদ সম্মেলনের জবাব দিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রী পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছে, ইউনূসের নামে যে মামলা হয়েছে, এতে তাদের কোন হাত নেই। বিষয়ের পুরোটা এনবিআর, দুদক এবং গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মচারীদের এখতিয়ার। গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকেও সাংবাদিকদের তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করা হয়েছে। অর্থাৎ জাতিসংঘ কথা বলেছে বিচারধীন একটি বিষয় নিয়ে। যেখানে পরিস্কার পক্ষ-বিপক্ষ আছে। আমার প্রশ্ন, জাতিসংঘের মত একটি আন্তর্জাতিক সার্বজনিন সংগঠনের এরকম পক্ষপাতদুষ্ট উদ্বেগ কতটা নৈতিক?       ইউনূস সাহেবের বর্তমান তৎপরতা নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। তিনি দীর্ঘদিন নিজেই একটি পক্ষ। তার সাম্প্রতিক সংবাদ সম্মেলনেও তার সঙ্গে ছিলেন সরকারবিরোধী সুশীল আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। যিনি সরকারের বিরুদ্ধে গুজব ছড়িয়ে জেলে গিয়েছিলেন। ২০০৯ সালে যাকে কুড়িগ্রামের রৌমারি সীমান্ত থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল বিনা অনুমতিতে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া উপেক্ষা করার। আরও যারা ছিলেন সবাই আগে থেকে সরকার বিরোধী হিসাবে চিহ্নিত। তারা সরকারের বিরোধিতা করবেন এটাই স্বাভাবিক। এমনকী আনসারি সাহেবের উস্কানীও আমার অস্বাভাবিক মনে হয় না। আমার অস্বাভাবিক লাগে জাতিসংঘের এরকম একপাক্ষিক আচরণ। অসহায় লাগে যখন দেখি লবিস্ট ফার্মগুলো জাতিসংঘের মহাসচিবকেও টলিয়ে দিচ্ছে। লেখক: গণমাধ্যম কর্মী  
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৩০

ড. ইউনূস ইস্যুতে জাতিসংঘের স্পষ্ট বার্তা
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্থোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানিয়েছেন, নোবেলজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসের প্রতি সরকারের আচরণে জাতিসংঘ চরমভাবে উদ্বিগ্ন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ড. ইউনূসের গ্রামীণের একাধিক কার্যালয় জোর করে দখলে নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। মুখপাত্র ডুজারিক বলেন, বাংলাদেশে ড. ইউনূসের প্রতি সরকারের বিদ্বেষমূলক আচরণে উদ্বেগের বিষয়টি স্পষ্ট। ড. ইউনূস জাতিসংঘের অত্যন্ত মর্যাদাসম্পন্ন এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে যা ঘটছে, তা চরম উদ্বেগের। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সরকার দলীয় লোকেরা তার সব গ্রামীণ কার্যালয় দখল করেছে। সেই সঙ্গে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে নতুন করে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই সাংবাদিক এসব বিষয় উল্লেখ করে স্টিফেন ডুজারিককে প্রশ্ন করেন- ‌‘এ বিষয়ে আপনি জাতিসংঘ মহাসচিব কী অবগত রয়েছেন?’ জবাবে ডুজারিক বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে আবগত। ড. ইউনূস জাতিসংঘের কাছে খুব মর্যাদাবান। তিনি জাতিসংঘের একজন অংশীদার হিসেবে বছরজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচীতে দূত হিসেবে অংশ নেন। এমডিজি, এসডিজি গোলসহ সংস্থার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচিগুলোতে তিনি সহযোগিতা করেন। ড. ইউনূসকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যেসব ঘটনা ঘটছে তা আমাদের চরমভাবে উদ্বিগ্ন করে তুলছে। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মিরপুর গ্রামীণ টেলিকম ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস অভিযোগ করেন, গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা পরিচয়ে কয়েকজন গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্রামীণ টেলিকম ভবন অবরুদ্ধ করে রেখেছে। হঠাৎ কী হলো বাইরের কিছু লোক এসে তা জবরদখল করছে। আমরা কোথায় যাবো, কী করবো? পুলিশ আমাদের কথা শুনছে না। তিনি বলেন, নিজের অফিসে ঢুকতে পারবো কি না- এটা এখন বাইরের লোকের এখতিয়ার হয়ে গেছে। আমি দুঃখ-কষ্টে পড়ে গেছি। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে আছি। এ ভবনটা আমরা করেছি এটা আমাদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন। হঠাৎ চারদিন আগে বাইরের লোক এসে জবরদখল শুরু করে আর আমরা বাইরের লোক হয়ে গেলাম।
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:২১

জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থায় চাকরির সুযোগ
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। সংস্থাটি আইটি অপারেশন অ্যাসোসিয়েট পদে একাধিক লোকবল নিয়োগ দেবে। আগ্রহীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। যা যা প্রয়োজন- প্রতিষ্ঠানের নাম : জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) পদের নাম : আইটি অপারেশন অ্যাসোসিয়েট পদসংখ্যা : নির্ধারিত নয় শিক্ষাগত যোগ্যতা : কম্পিউটার বিজ্ঞান বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অন্যান্য যোগ্যতা : সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা থাকতে হবে অভিজ্ঞতা : কমপক্ষে ৬ বছর চাকরির ধরন : চুক্তিভিত্তিক কর্মক্ষেত্র : অফিসে প্রার্থীর ধরন : নারী-পুরুষ (উভয়) শর্ত : শুধু বাংলাদেশি নাগরিকরা আবেদন করতে পারবেন কর্মস্থল : বাংলাদেশের যে কোনো জায়গায় বেতন : আলোচনা সাপেক্ষে অন্যান্য সুবিধা : সংস্থাটির নীতিমালা অনুযায়ী আবেদন যেভাবে : আগ্রহী প্রার্থীরা আবেদন করতে ও বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তিটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন। আবেদনের শেষ সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত।
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৩৬

জাতিসংঘের বিবৃতি ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪
এ বছর ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে ২২৩টি আসনে জিতে টানা চতুর্থবারের মত সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। দেশের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও গণমাধ্যমে এই মুহূর্তে চলছে নির্বাচন পরবর্তী নবগঠিত সরকার কে কেন্দ্র করে মিশ্র আলোচনা।  বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সংস্থার বিবৃতিসমূহ বিশ্লেষণ করে দেখা যায় প্রত্যেকেই যার যার মতো করে সংবাদ ও মতামত উপস্থাপন করে যাচ্ছে। যে যেভাবেই বিশ্লেষণ করুক না কেন বাংলাদেশ নামক সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য এই নির্বাচন ছিল সাংবিধানিক ধারা অক্ষুণ্ণ রেখে জাতিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং নানামুখী সংকটের হাত থেকে জাতিকে রক্ষা করার জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়া এরইমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। যার মাধ্যমে পুরো জাতি একটি সংকটময় পরিস্থিতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। এবারের এই নির্বাচন নিয়ে নানা মহলের মিশ্র প্রতিক্রিয়া এখনো অব্যাহত রয়েছে। নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করলেও বাংলাদেশের ইতিহাসে এত অধিকসংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থীর জয়লাভ করা এবারেই প্রথম। এই নির্বাচনের আলোচিত নানা ঘটনাসমূহের মধ্যে একটি হচ্ছে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)র নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা। তবে ইতিপূর্বেও নানা কারণ দেখিয়ে বেশ কিছু নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করেনি। এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার কারণ হিসেবে তারা দলীয় সরকারের পরিবর্তে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিতে তারা আগ্রহী। কিন্তু বাংলাদেশের সাংবিধানিক ভিত্তি মোতাবেক দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ রয়েছে।  এসব ঘটনার পাশাপাশি অতি সম্প্রতি মানবাধিকার সুরক্ষায় অগ্রাধিকার দিয়ে বড় ধরনের সংস্কার পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্যোগী হতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের একদল বিশেষজ্ঞ। তাঁরা বলেছেন, বর্তমান সরকার টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় এসেছে। দেশটিতে বিদ্যমান দমনমূলক পরিস্থিতি থেকে সরে এসে অংশগ্রহণমূলক রাজনীতি ও সংলাপের পথে ফিরতে ওই সংস্কার করতে হবে। জাতিসংঘের মানবাধিকার—বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ‘নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর আক্রমণ, হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানোর ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন।’  এবারে আসা যাক জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণে, তারা বেশকিছু বিষয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যার মধ্যে ছিল মানবাধিকার সুরক্ষা, নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা, বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দলের নির্বাচন বর্জন করার মতো বিষয়গুলো। তবে যে বিষয়টি লক্ষণীয় তা হলো বাংলাদেশের সাংবিধানিক ধারা বজায় রাখার ব্যাপারে কোন কিছুই তারা বলেননি। মজার ব্যাপার হলো জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার এই উদ্বেগের তীরের লক্ষ্যবস্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নির্ধারিত হয়ে থাকে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর দিকেই। অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ তথাকথিত উন্নত বিশ্বের নেতৃত্বে ইরাক, কুয়েতে, লিবিয়া, আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন স্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কর্মকাণ্ড ইতিপূর্বে সংঘটিত হয়েছে সে ব্যাপারে কোন মন্তব্য বা বিবৃতি নেই বিশ্ব বিবেকখ্যাত জাতিসংঘ বা তাদের সহযোগী সংস্থার। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন ও নির্বিচারে নিরীহ নারী ও শিশু হত্যার ব্যাপারে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রদান করেছে অনেকটা লোকদেখানো বাংলা সিনেমার শেষ দৃশ্যে সকল মারামারি শেষ হলে পুলিশ এসে যেভাবে বলে আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না ব্যাপারটা অনেকটা সেরকম। আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলো ব্যাপারে জাতিসংঘের ভূমিকা অনেকটা যাত্রাপালার বিবেক চরিত্রের মতো যার আগমন হয় সব কিছু শেষ হয়ে যাবার পরে। এবারের নির্বাচনে বিএনপি সহ কয়েকটি দল অংশগ্রহণ না করার ফলে তাদের সমর্থক কিছু সংখ্যক ভোটার ভোট প্রদান থেকে বিরত থাকে। অথচ নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি আশানুরূপ না থাকার জন্য হরতালের নাম দিয়ে শান্তিপ্রিয় জনগণের মনে ভীতি সঞ্চারের জন্য ভোট গ্রহণের আগমুহূর্তে ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করে নিরীহ মানুষকে হত্যার মতো জঘন্যতম নিন্দনীয় কাজ করতেও দ্বিধাবোধ করেনি নির্বাচন বিরোধীরা। এ ব্যাপারে কিন্তু জাতিসংঘ তাদের প্রদেয় বিবৃতিতে কোনরূপ মন্তব্য করেনি। কিন্তু জাতিসংঘের ভূমিকা হবার কথা ছিল একবারেই নিরপেক্ষ। নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে এ ব্যাপারে তারা বিবৃতি দিলেও কেন ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে সে ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেননি। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে বলেছেন, ‘নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর আক্রমণ, হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানোর ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন।’ কিন্তু নিরীহ সাধারণ জনগণ যে প্রাণ হারালো সে ব্যাপারে তারা কিন্তু অনেকটাই নির্বিকার। তবে জাতিসংঘের এ ধরণের একপাক্ষিক মনোভাব নতুন কিছু না। তারা সর্বদাই প্রথম বিশ্বের উন্নত দেশগুলো পক্ষে থাকে এবং তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কর্মকাণ্ডসমূহ টিনের চশমা পরে পর্যবেক্ষণ করেন আর পক্ষান্তরে তৃতীয় বিশ্বেও উন্নয়নশীল দেশগুলোর ব্যাপারে বরাবরই প্রেসক্রাইবড বিবেকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। যা কোনভাবেই কাম্য নয়। কিন্তু এতকিছুর পরেও প্রতিবেশী দেশ ভারত, রাশিয়া সহ বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানগণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করায় এরই মধ্যে অভিনন্দন জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল থেকেও অভিনন্দনের এ ধারা এবং নির্বাচন নিয়ে তাদের সন্তোষ প্রকাশ অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাক তার আপন মহিমায়। সেই সাথে জাতিসংঘও সকলের প্রতি সাম্যের দৃষ্টি নিয়ে সত্যিকারের বিশ্ববিবেক হিসেবে ভূমিকা রাখুক এটাই হোক আমাদের প্রত্যাশা। লেখক : সহকারী অধ্যাপক, শিক্ষা বিভাগ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:০৮

জাতিসংঘের ১৯০ কর্মী হামাসের সঙ্গে জড়িত বলে দাবি ইসরায়েলের
জাতিসংঘের ১৯০ জন কর্মী হামাসের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেছে ইসরায়েল। দেশটির দাবি, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অভিযানের সময় অপহরণ এবং হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল সংস্থাটির বেশ কিছু কর্মী। ইসরায়েল তাদের ৬ পৃষ্ঠার গোয়েন্দা নথিতে এই দাবি করেছে। ইতোমধ্যে ইসরায়েলের এই অভিযোগের জেরে ফিলিস্তিনে নিযুক্ত জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর অর্থায়ন স্থগিত করেছে বেশ কিছু দেশ। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের ৬ পাতার গোয়েন্দা নথিটি রয়টার্স দেখেছে। এতে অভিযোগ করা হয়েছে, শিক্ষকসহ ইউএনআরডব্লিউএ-এর প্রায় ১৯০ জন কর্মী হামাস বা ইসলামিক জিহাদের সদস্য হিসাবে কাজ করছে। নথিতে তাদের ১১ জনের নাম ও ছবিও রয়েছে। এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের এই গোয়েন্দা নথির অনুলিপি পায়নি। যদিও অভিযোগ সামনে আসার পর ইউএনআরডব্লিউএ তাদের কিছু কর্মীকে বরখাস্ত করেছে এবং অভিযোগগুলো তদন্ত করার কথা জানিয়েছে। ইসরায়েলের গোয়েন্দা নথিতে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ১১ জনের মধ্যে একজন হচ্ছেন স্কুল কাউন্সেলর। তিনি ইসরায়েলে হামাসের হামলার সময় এক নারীকে অপহরণের জন্য তার ছেলেকে সহায়তা করেছিলেন। ইসরায়েলের দাবি, হামাসের সেই হামলায় ১২০০ জন নিহত হয় এবং আরও ২৫৩ জনকে বন্দি করা হয়েছে। তাদের গোয়েন্দা নথিতে ইউএনআরডব্লিউএ-এর আরেক কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের এক সেনার মরদেহ গাজায় নিয়ে যাওয়ার কাজে তিনি জড়িত ছিলেন। এছাড়া হামাসের হামলাকারী এবং তাদের অস্ত্র বহনের জন্য পিক-আপ ট্রাক চলাচলের গতিবিধিও এই ব্যক্তি সমন্বয় করেছিলেন। গোয়েন্দা নথিতে তৃতীয় আরেকজন ইউএনআরডব্লিউএ-কর্মীকে ইসরায়েল সীমান্তের বিরি গ্রামে তাণ্ডব চালানোর জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে। সেই হামলায় ওই গ্রামের দশ ভাগের এক ভাগ বাসিন্দা হামাসের হাতে নিহত হয়েছিল। এছাড়া চতুর্থ একজনের বিরুদ্ধে রেইমের সেনা ঘাঁটিতে আক্রমণে অংশ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ইসরায়েলের দাবি, গানের অনুষ্ঠানেও হামলায় জড়িত ছিলেন তিনি। সেখানে ৩৬০ জনেরও বেশি লোক মারা গিয়েছিল। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনির পদত্যাগ করা উচিত। ‘ইউএনআরডব্লিউএর কর্মীরা গত ৭ অক্টোবরের গণহত্যায় অংশগ্রহণ করেছিল। লাজারিনির উচিত চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং পদত্যাগ করা।’ এদিকে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাতায়েহ ইসরায়েলকে সংস্থাটির ওপর ‘পূর্বপরিকল্পিত রাজনৈতিক আক্রমণ’ করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। একইসঙ্গে জাতিসংঘের এই সংস্থাটির সাহায্য তহবিল পুনরায় চালু করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। রয়টার্স বলছে, ইসরায়েলের এই গোয়েন্দা নথিটি এমন একটি সূত্র তাদেরকে দিয়েছেন যার নাম বা জাতীয়তা চিহ্নিত করা যায়নি। তবে ওই সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলের গোয়েন্দারা এই নথি তৈরি করেছে এবং পরে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দিয়েছে। এরপরই যুক্তরাষ্ট্র গত শুক্রবার ইউএনআরডব্লিউএ-তে অর্থায়ন স্থগিত করেছে। উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্মসংস্থান সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ গাজায় কাজ পরিচালনা করা জাতিসংঘের বৃহত্তম সংস্থা। সংস্থাটি গাজা, পশ্চিম তীর, জর্ডান, লেবানন এবং সিরিয়ার ফিলিস্তিনিদের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা প্রদান করে। গাজার অভ্যন্তরে সংস্থাটির প্রায় ১৩ হাজার কর্মী রয়েছে।
৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:২৭

বাংলাদেশে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির আহ্বান জাতিসংঘের
বাংলাদেশে রাজনৈতিকভাবে কারাগারে বন্দি থাকাদের ‍মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডোজারিক। তিনি বলেন, রাজনৈতিক মত প্রকাশের কারণে মানুষদের কারাগারে প্রেরণ, এটা হতে পারে না বলে আমরা নীতিগতভাবে বিশ্বাস করি। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডোজারিক এই আহ্বান জানান। জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ এবং কারাগারে আটক বিরোধীদলগুলোর হাজার হাজার নেতাকর্মীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জানতে চাইলে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই আহ্বান জানান। বাংলাদেশি সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘বাংলাদেশে বিভিন্ন মামলায় কিংবা মামলা ব্যতীত আটক সব রাজনৈতিক দলের কর্মীদের আন্তর্জাতিক আইন মেনে অবিলম্বে এবং নিঃশর্তভাবে মুক্তি দিতে সরকারকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা যে আহ্বান জানিয়েছেন সেই আহ্বানের সঙ্গে মহাসচিব কী একমত? এ বিষয়ে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডোজারিক বলেন, আমরা অনতিবিলম্বে আটককৃতদের মুক্তির আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, রাজনৈতিক মত-প্রকাশের কারণে মানুষদের কারাগারে প্রেরণ, এটা হতে পারে না বলে আমরা নীতিগতভাবে বিশ্বাস করি।  
৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০১
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়