• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
জাহাজ ছিনতাইয়ে শিশুদের কাজে লাগাচ্ছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা
পূর্ব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতা ও উচ্চ মাত্রার দারিদ্র্যতাসহ নানান কারণে জলদস্যুতার দিকে ঝুঁকছে দেশটির বাসিন্দারা। এমনকি কম বয়সী শিশু-কিশোররাও জলদস্যুতায় জড়িত হচ্ছে। ১৪ বছর আগে ‘এমভি জাহান মণি’ নামে একটি বাংলাদেশি জাহাজ সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল। সেটিতে জিম্মি নাবিকদের যারা পাহারা দিতেন তাদের মধ্যে ১৬-১৮ বছর বয়সী সশস্ত্র কিশোররা ছিলেন। সবশেষ গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু সমেত সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’। এই জাহাজটি ছিনতাইয়ের সময় সোমালি জলদস্যুদের ব্যবহার করা আরেকটি ‘জাহাজ এমভি রুয়েন’ এর জলদস্যুদের মধ্যেও ছিল শিশু-কিশোররা। ভারতীয় নৌবাহিনীর ৪০ ঘণ্টার অভিযানে জাহাজটি থেকে ৩৫ জলদস্যুকে আটকের পর আদালতে তোলা হলে তাদের মধ্যে আটজন নিজেদের বয়স ১৮ বছরের কম বলে জানায়। এরপর আদালত তাদের পৃথক জুভিনাইল জাস্টিস বোর্ডে হাজির করানোর নির্দেশ দেয়। এতে করে সোমালিয়া উপকূলে ‘সমুদ্রপথের আতঙ্ক’ হিসেবে পরিচিত সশস্ত্র জলদস্যুদের দলগুলোতে শিশু-কিশোরদের থাকার বিষয়টি আবারও সামনে আসে।  দ্যা মেরিটাইম এক্সিকিউটিভ ২০১৭ সালের মে মাসে ‘চিলড্রেন ইফেক্টেড বাই মেরিটাইম পাইরেসি: এ হ্যান্ডবুক ফর মেরিটাইম সিকিউরিটি সেক্টর এক্টরস’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে ২০১৪ সালে সোমালিয়া উপকূলে গ্রেপ্তার হওয়া জলদস্যুদের মধ্যে ২০ শতাংশের বয়স ছিল ১৮ বছরের কম ছিল বলে তথ্য দেওয়া হয়। অন্যদিকে ২০১১ সালের ১৭ মার্চ টাইমস অব ইন্ডিয়া’র এক প্রতিবেদন বলা হয়, ওই সপ্তাহে আরব সাগরে ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে গুলি বিনিময়ের পর আটক ৬১ সোমালি জলদস্যুর মধ্যে ২৫ জনই ছিল শিশু, যাদের বয়স ১৫ বছরের নিচে। এমনকি তাদের মধ্যে ৪ জনের বয়স মাত্র ১১ বছরের কিছু কমবেশি ছিল। সোমালিয়ার জলদস্যু দলে শিশু-কিশোরদের যুক্ত হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ উঠে এসেছে দ্যা জিওপলিটিক্স এবং দ্যা মেরিটাইম এক্সিকিউটিভ এর প্রতিবেদনে।  এতে বলা হয়, জলদস্যুতার প্রবণতা বাড়ার অন্যতম প্রধান কারণগুলো হল- সোমালিয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতা, উচ্চ মাত্রার দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও বারবার ঘটতে থাকা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যেখানে সোমালিয়ায় বছরে মাথাপিছু গড় আয় ৬০০ ডলারের মত। সেখানে জলদস্যুরা শুধু একটি জাহাজ ছিনতাই করে হাজার হাজার ডলার পেতে পারে।  ছোট নৌযান চালানো, ছোট জায়গা দিয়ে চলাচল করতে পারা এবং চটপটে স্বভাবের হওয়ায় জলদস্যু দলের প্রধানরা ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের এই কাজে প্রলুব্ধ করে। স্বাক্ষরতার হার কম হওয়ায় সহজে বেশি অর্থ উপার্জনের পথ হিসেবে শিশুরা এই কাজে আগ্রহী হয়।
২৭ মার্চ ২০২৪, ১৫:৩০

এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত জাহাজের গতিরোধ ভারতীয় নৌবাহিনীর
ভারত মহাসাগরের সোমালিয়া উপকূলে জলদস্যুদের ব্যবহৃত মাল্টিজ-পতাকাবাহী বাল্ক কার্গো জাহাজ রুয়েনকে রুখে দিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী। বর্তমানে এই জাহাজে থাকা সোমালি জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ এবং সেখানে কোনো জিম্মি থাকলে তাদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনীর সদস্যরা। ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাইয়ে জলদস্যুরা এ জাহাজটি ব্যবহার করেছিল।    শনিবার (১৬ মার্চ) ভারতীয় নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ভারতীয় নৌবাহিনী সোমালি জলদস্যুদের দস্যুতার কাজে ব্যবহৃত কার্গো জাহাজ রুয়েনকে বাধা দিয়েছে। ১৪ ডিসেম্বর সোমালি জলদস্যুরা কার্গো জাহাজটি ছিনতাই করে। দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার (১৫ মার্চ) নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ মাল্টিজ পতাকাবাহী বাল্ক কার্গো জাহাজটিকে বাধা দেয়। জলদস্যুদের দখলে থাকা জাহাজটি ভারতীয় যুদ্ধজাহাজে গুলি চালায়। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভারতীয় নৌবাহিনী জাহাজে থাকা জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ করতে বলেছে এবং জাহাজটিতে আটকে থাকা বেসামরিক নাগরিকদের ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। এই অঞ্চলে সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং নাবিকদের নিরাপত্তার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে যোগ করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী বৃহস্পতিবার জানায়, সোমালি জলদস্যুরা গত ডিসেম্বরে মাল্টিজ জাহাজ রুয়েন দখল করে। তারা এ সপ্তাহে সোমালিয়ার উপকূলে বাংলাদেশের পতাকাবাহী একটি কার্গো জাহাজ দখলে এটি ব্যবহার করে থাকতে পারে। ব্রিটিশ মেরিটাইম সিকিউরিটি ফার্ম অ্যামব্রে বলছে, এমভি আবদুল্লাহকে যখন ছিনতাই করা হয়, তখন রুয়েন মাত্র ২৯৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল এবং পূর্বদিকেই যাচ্ছিল। মেরিটাইম সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকা এ সংস্থাগুলোর শঙ্কা, মাল্টিজ জাহাজ রুয়েনকে জলদস্যুরা ছিনতাইয়ের কাজে মাদার ভ্যাসেল হিসেবে ব্যবহার করছে। যদিও একজন বাদে ওই জাহাজের ১৬ নাবিক এখনো জিম্মি আছেন। গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। সে সময় জাহাজটি সোমালিয়া উপকূল থেকে ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছিল। দস্যুদের কাছে জিম্মি হয় ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু। বৃহস্পতিবার দুপুরে সোমালিয়ার গারাকাড উপকূল থেকে ২০ মাইল দূরে জাহাজটি নোঙর করে। পরে সেটি আরও এগিয়ে উপকূলের ৭ মাইলের মধ্যে অবস্থান নেয়। কিন্তু শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ জাহাজটি আরারও চলতে শুরু করে। সর্বশেষ ২৩ নাবিকসহ জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজটিকে সোমালিয়ার গারাকাড থেকে গোদবজিরান উপকূলে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আগের অবস্থান থেকে এটি প্রায় ৫০ নটিক্যাল মাইল উত্তরে। বর্তমানে জাহাজটি উপকূল থেকে মাত্র ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে রয়েছে।
১৬ মার্চ ২০২৪, ১৬:২৪
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়